গল্পঃ হুমকি
লেখকঃ ফয়সাল আহমেদ ইমন।
.
(ছেলেটার কথা)
অনেক কষ্টে একটা বাসা ঠিক করতে পারলাম। ব্যাচেলারদের এই এক মহা প্রবলেম। বাসা পাওয়া আর আসমানের চাঁদ হাতে পাওয়া একই কথা। জহির অ্যাঙ্কেল ( আমার ফ্রেন্ডের বাবা) এর সুপারিশের কারনেই বাসাটা পেলাম। আমার পরিচয়টা দেওয়া দরকার। ইমন, এবার ঢা. বিতে শেষ বর্ষে আছি। সব কিছু গুছিয়ে একদম ক্লান্ত হয়ে গেলাম আর অনেক গরমও করছে। তাই টি শার্ট টা খোলে বিছানায় একটু পিঠটা লাগালাম। সাথে সাথে কলিং বেল বেজে ওঠলো। ভাবলাম সালমান আঙ্কেল হবে (বাড়ি ওয়ালা) তাই তাড়াতাড়ি করে দরজা খোললাম। দরজা খোলেতো আমি পুরাই বোকা হবার দশা। একটা মেয়ে দরজার সামনে আর এদিকে আমার খালি গা। তাড়াতাড়ি করে দরজা লাগিয়ে দিলাম। তারপর টি শার্টটা পড়ে দরজা খোললাম আবার।
কি চাই?
আমি বাড়িওয়ালার মেয়ে, দেখতে আসলাম রুম কিভাবে সাজিয়েছেন?
জ্বি, অ্যাসসালামুআলাইকুম। আসুন।
দরজা থেকে না সরলে, আসব কি করে?
ও, স্যরি। আসুন।
দুইটা রুমই ভালো করে ঘুছিয়েছি, ওই গুলো ঘুরে ঘুরে দেখছিলো সে। পর্যবেক্ষক শেষে কোন ভুল ত্রুটি না পেয়ে বিঙ্গদের মত উপদেশ দেওয়া শুরু করলো,
হুম ঠিক আছে সব, দেয়ালে কিন্তু কোন ছিদ্র করা যাবে না, আর কোন দাগ ভরানো যাবে না ভুলেও।
জ্বি।
পানি খরচ কম করবেন, অযথা পাখা, বাতি জ্বালোনো যাবে না।
জ্বি আচ্ছা।
যদি কোন অনিয়ম দেখি চান্দু মিয়া, বাবা কে বলে বের করে দিব।
জ্বি আচ্ছা, আপনার মনে হয় একটু ভুল হচ্ছে?
কি ভুল? হুম।
না মানে, আমার নাম ইমন, চান্দু মিয়া না।
ভ্রু কোচকে বলল, দেখেতো মনে হয় ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানেন না? চালাকি করেন, না?
না, মানে না।
আপনাকে আমি চান্দু মিয়া বলেই ডাকব, কোন সমস্যা?
ইয়ে মানে, কোন সমস্যা নেই। ডাকতে পারেন।
গুড বয়, বলে চলে গেল।
(বাপরে কি জল্লাত মেয়ে, বাসা বাচাতে হলে নিয়ম মানতেই হবে, এর সাথে কথা বলতে বলতে প্রায় ঘেমে গেলাম)
ঘুম থেকে ওঠে দেখি সকাল ৯.৩০ বেজে গেছে আর দশটায় আমার ক্লাস। তাড়াতাড়ি করে রেডী হয়ে গিয়ে দেখি লিফট বন্ধ। তাই সিড়ি দিয়েই নামলাম। ক্লাস শেষে ডায়েরীটা বের করতে যাব, চেয়ে দেখি ব্যাগে ডায়েরী নেই। ডাইরীটা আসলে কবিতার। আমার একটু আবার কবিতা লিখার দিকে জোঁক আছে যদিও সায়েন্স এর ছাত্র। প্রতি সপ্তাহে ই নতুন একটা কবিতা পত্রিকা অফিসে জমা দেই। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটাও ছাপানো হলো না। আসলে পত্রিকা অফিসটাও টাকার গোলাম হয়ে গেছে, দুইটাকা ছাড়লেই কাজ করে দিবে। আমিও অপেক্ষায় আছি। বিরক্ত হয়ে হলেও তো একদিন ছাপাবে। মনে হয় বাসায় রেখে এসে পড়েছি। আজ আর কবিতা জমা দেওয়া হবে না।
বাসায় ফিরে দুপুরের খাবার খেয়ে একটা ঘুম দিলাম। একেবারে বিকেলের ঘুম ভাঙল। হঠাৎ ডায়েরীর কথাটা মনে পড়ে গেল। খোজতে লাগলাম, কিন্তু সাড়া ঘর তন্যতন্য করার পরেও ডায়েরী কোথাও পেলাম না। আমার এত দিনের প্রিয় একটা ডায়েরী হারিয়ে যাবে চিন্তা করতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। আবার এইসময় কলিং বেল কে বাজায়। একটু সসয় নিয়েই দরজা খোললাম,
দেখি ওই জল্লদি মেয়েটা।
আসসালামুআলাইকুম, সব গোছানো আছে। দেখে যান।
ওয়ালাইকুম সালাম, আজ আর দেখবো না। চান্দু মিয়া আপনি না সায়েন্স এর ছাত্র?
জ্বি, হ্যা (এই মেয়েকে দেখলেই কেন জানি আমার নার্ভাসনেস বেড়ে যায়)
তাহলে এত সুন্দর কবিতাও লিখতে পারেন?
কোথায় পেলেন কবিতা আমার? পত্রিকায় ছাপা হয়েছে?
জ্বি না, এই যে আপনার ডায়েরী। সিড়িতে পড়েছিলো। ভাগ্যিস আমার হাতে এসে পড়েছে।
জ্বি, অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ওই মিয়া এত জ্বি জ্বি করেন কেন?
জ্বি, না, মানে।
অকে, জ্বি এর রোগটা ঠিক করেন, না হলে বাবাকে বলে বের করে দিব, বলে চলে গেল।
(একিরে বাবা , জ্বি বললেও বের করে দিবে। কি জল্লাদি মেয়ে। ইমন! তুই কোন নরকে এসে পড়লিরে?)
এভাবে চলতে থাকলো দিন কাল, তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে তার নিত্য নতুন আইন কানুন। তবে এখন আর আমি তার আইন কানুন গুলাকে ভয় পাই না, তবে ভালো লাগে তার পাগলামো গুলা। তাই নিজে থেকেই একটু আকটু ভুল করি যেন, তার চোখে ধরা পরে। আর সেটা পড়বেই। তেমনি আরেকদিনের একটা ঘটনা,
ভার্সিটি যাবার সময় শার্টের কলারটার এক পাশ আলগানো ছিলো। সেটা তার চোখকে ফাকি দিতে পারে নি। সামনে এসে দাড়িয়ে বলল,
মিস্টার চান্দু, শার্টের কলারটা ঠিক করুন। তানাহলে বাবাকে বলে বের করে দিব। আবার তার পছন্দের কালারের কাপড় পড়তে হবে, যদি না হয়, বাবাকে বলে বের করে দিবে। হা হা, আরো কত যে হুমকি রয়েছে।
আরেকদিনের ঘটনা,
পড়তে পড়তে মাথাটা কেমন জানি হ্যাং মেরে গেল। আর কাজ করছে না। তাই একটু ছাদে গেলাম। ছাদে গিয়ে, হেডফোন টা কানে দিয়ে ফেসবুকিং করতে ছিলাম। হঠাৎ ওনার আগমন ঘটলো। কিছুক্ষন আশে পাশে তাকিয়ে রাগে ফুসফুস করতে করতে বলল, নাম্বার দেওয়া নেওয়া হচ্ছে, না?
কি?
কিছু না বলে, মোবাইলটা হাত থেকে নিয়ে একটা আছাড়ই দিল।
অবাক চোখে তার দিকে তাকিয়ে বললাম,
এটা কি হলো?
এখানে থাকতে হলে, মোবাইল ছাড়া থাকতে হবে। তানাহলে বাবাকে বলে বের করে দিব, বলে রাগে ফুসফুস করতে করতে চলে গেল।
আমিওতো পুরাই বোকা হয়ে গেলাম। কি করলাম, আমি আবার। সামনের দিকে চোখ যেতেই দেখি একটা মেয়ে আমাকে হাতে ইশারা করছে।
তারমানে এই বজ্জাত মেয়েই সব কিছুর মূল। দ্যাততরি! তবে একটা জিনিস ভেবে খুব ভালো লাগছে, তার রাগ করার কারনটা। তাকেও যে, আমি ভালবাসি না, তা নয়? সেই প্রথম দেখাতেই তার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। আস্তে আস্তে তার পাগলামো গুলোর প্রেমেও পড়লাম। কিন্তু বাসা হারাবার ভয়ে তা প্রকাশ করার সাহস হয় নি?
সন্ধার বেশ কিছুক্ষন পরে বসে বসে কবিতা লিখার চেষ্টা করছিলাম তখন কলিং বেলটা বেজে ওঠলো,
দরজা খোলে দেখি, সিয়াম( আরহীর ছোট ভাই, তার নাম আরহী ছিলো)
কি ভাইয়া পি সি আবার নষ্ট হয়ে গেছে নাকি? (সারাদিন গেইমস খেলবে সে। আর প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে এক একটা সিস্টেম ড্যামেজ করে আমার কাছে আসবেই, তা ঠিক করে দেওয়ার জন্য)
না, আপুনি আপনাকে এটা দিয়েছে।
হাতে নিয়ে দেখি একটা মোবাইলের প্যাকেট। তার হাতে দিয়ে বললাম, তোমার আপুকে বল এটা লাগবে না আমার।
জানতাম একটু পরে সে আসবেই, এবং এসেই সব রাগ কলিং বেলের উপর দিয়ে চালাতে লাগলো।
দরজা খোলতেই, সমস্যা কি আপনার?
কই, নাতো।
মোবাইল নিলেন না কেন?
আপনি যে, বললেন মোবাইল চালালে আপনার বাবাকে বলে বের করে দিবেন?
ডং করেন?
একদম না।
ধরেন এটা, এর ভেতরে আমি একটা সিম কার্ড রেখেছি, এটা ছাড়া যদি অন্যকোন সিম ইউজ করতে দেখি বাবাকে বলা লাগবে না, আমি নিজেই বের করে দিব।
সে চলে গেল আর আমি একাই হাসতে থাকলাম।
সর্বশেষ একটা ঘটনা বলি,
আমি সিড়ি দিয়ে উপরে উঠছিলাম, সামনে চেয়ে দেখি আরহী শাড়ি পড়ে নিচে নামছে, সাথে হালকো সাজোগোজে। বললে বিশ্বাস করাতে পারব কিনা জানি না, এত সুন্দর লাগছিলো যে, আমার চোখগুলোকে সড়াতে পারছিলাম না। সে কিছু না বলে মাথা নিচু করে হেটে যাচ্ছিলো। মনে হয় এভাবে চেয়ে থাকতে দেখে লজ্জা পেয়েছে। তবে যেভাবে শাড়ি পড়েছে কোন সময় না জানি পড়ে যায়। বলতে না বলতেই কান্ডটা ঘটে বসলো। শাড়ি পায়ের সাথে আটকে গিয়ে পড়ে যাবার মুহূর্তে হাতটা ধরে ফেলতে পেরেছি। ভাবতেই ভেতরটা কাপছে। এখান থেকে পড়ে গেলে, আর রক্ষা ছিলো না।
ভয়ে সে তার চোখ গুলো বন্ধ করে ফেলেছে, চোখ বন্ধ অবস্থায়, ঠিক বাচ্চাদের মত লাগছিলো। তার ভীত মুখটা দেখে হাসি পাচ্ছিলো, যতটা সম্ভব না হেসে বললাম, সাবধানে যাও। এখনতো পড়লেই সব শেষ ছিলো।
কার সব শেষ ছিলো?
কার আবার আমার।
তাই?
হুম।
বাব্বাহ, চান্দু মিয়া এত রুমান্টিক হলো কবে?
আমি কোন উত্তর দিলাম না, কারন কিছু কথার উত্তর না দিলেও তার উত্তর বোঝা যায়।
.
.( মেয়টার কথা )
.
.
কলেজ থেকে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে বাবার কাছ থেকে শুনলাম, উপরের ফ্লাটে একটা নতুন ব্যাচেলর উঠেছে। অনেক ভদ্র আর শান্ত নাকি। বাবা বলল, তার চেহারার মধ্যে নাকি ইনোসেন্ট ভাব রয়েছে। তাই দেখতে গেলাম,
প্রথমবার কলিংবেল বাজতেই দরজা খোলে দিল, চেয়ে দেখি শরীরে কাপড় নেই আর ট্রাউজারের একপা উপরে উঠানো। আমাকে দেখে সাথে সাথে দরজা বন্ধ করে দিলো। তার এই অবস্থা দেখে হাসব না কাদব বোঝতে পারতেছি না। একটুপর টিয়া কালরের একটা টি শার্ট পড়ে বের হলো। দেখতে সামান্য বোকা বোকা, তবে চেহারায় ইনোসেন্ট একটা ভাব রয়েছে। টি শার্টটাতে তাকে দারুন মানিয়েছে। এই প্রথম কারো উপর ক্রাশ খেলাম। ঘোর ভাঙল তার ডাকে
কি চাই?
আমি বাড়ি ওয়ালার মেয়ে, দেখতে আসলাম ঘর কিভাবে সাজিয়েছেন।
জ্বি, আসসালামুআলাইকুম, আসেন।
বেটায়, দরজার সামনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে আমাকে বলে, ভেতরে আসতে।
দরজার সামনে দাড়িয়ে থাকলে, আসব কি করে?
ও, স্যরি। আসুন।
বলতে হবে, ছেলোটা অনেক ঘুছানো। সুন্দর করে সব কিছু গোছিয়েছে। কোন ভুল ত্রুটি পেলাম না, তাই কি আর করার কিছু সাজেশন দিয়ে যাই।
হুম, সবই ঠিক আছে। দেয়ালে কিন্তু কোন রকম ছিদ্র করা যাবে না আর ভুলেও দাঘ ভরানো যাবে না?
জ্বি।
অকারনে পাখা আর বাতি জ্বালানো যাবে না।
জ্বি।
হুম, যদি কোন অনিয়ম দেখি চান্দু মিয়া। বাবাকে বলে বের করে দিব বলে হুমকি দিলাম।
জ্বি, আপনার মনে হয় একটু ভুল হয়েছে?
কি? হুম।
না মানে, আমার নাম ইমন, চান্দু মিয়া না।
(এইবার দেখি বোকাটার মুখে কথা ফোটেছে)
চালাকি করেন, না?
না, মানে, না।
আমি আপনাকে চান্দু মিয়া বলেই ডাকব। কোন সমস্যা?
না, মানে হ্যা।ডাকতে পারেন। কোন সমস্যা নেই।
ওনার বোকা বোকা কথা শুনে হাসি আর ধরে রাখতে পারতেছিলাম না, তাই চলে এসে রুমে কতক্ষন একা একা হাসলাম। আমার হাসি দেখে সিয়াম গিয়ে, আম্মুকে বলতে থাকলো, আম্মু আপু পাগল হয়ে গেছে।
ও, হ্যা আমি আরহী, এবার ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার্থী।
কলেজ থেকে ফেরার সময় দেখি, সিড়িতে একটা ডায়েরী পড়ে আছে। হাতে নিয়ে প্রথম পেজটা উল্টাতেই নামটা চোখে পড়ল, ইমন ফয়সাল। তার মানে চান্দু মিয়ার ডায়েরী। কৌতুহল জাগল কি জানি, কি লিখেছে। রুমে এসে বের করে দেখি কবিতার ডায়েরী। বাব্বাহ চান্দু মিয়া কবিতাও লিখতে পারে? যাই বলি না কেন, কবিতাগুলো অনেক ভাল লাগল আমার। তার মধ্যে একটা কবিতা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগলঃ
তুমি না বললেও একটা নুপুর কিনব।
হাটতে হাটতে যখন ঘাসের উপর পা মেলে বসে পড়বে, তখন তা পড়িয়ে দিব।
পাশ দিয়ে নীল রঙের একটা প্রজাপতি উড়ে গিয়ে তোমার কাধে মাথা পেতে একটু বিশ্রাম নিবে।
যখনই তুমি তা ধরতে যাবে আস্তে করে সে ডানা মেলে উড়াল দিবে।
অজান্তেই ঠোটের কোনে একচিলতি হাসি ভেসে উঠবে তোমার।
যা শুধু আমিই দেখতে পাব।
.
কবিতাগুলো পড়তে পড়তে আমারই কেমন জানি, লজ্জা করছে। মনে হচ্ছে সব কিছু যেন, আমাকে নিয়ে লেখা।
বিকেলের দিকে ওর রুমের দিকে গেলাম, ডায়েরীটা ফেরত দিতে। যাইহোক এই ফাকে ক্রাশটাকে দেখে আসতে পারব। ভাবতেই ভালো লাগছে।
দুই, তিনবার বেল বাজানোর পরে আসল। মুখে চিন্তার ছাপ।
আসসালামুআলাইকুম, সব গোছানোই আছে, আসুন।
না আজ আর আসব না, চান্দু মিয়া আপনি না সায়েন্স এর ছাত্র?
হুম।
তাহলে এত সুন্দর কবিতা লিখেন কিভাবে ?
কোথায় পেলেন কবিতা? পত্রিকায় ছাপা হয়েছে?
জ্বি না। এই যে, আপনার ডায়েরী। সিড়িতে পড়েছিলো। ভাগ্যিস আমারর হাতে এসে পড়েছে।
জ্বি, অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ওই মিয়া এত জ্বি জ্বি করেন কেন?
জ্বি, না, মানে।
অকে, এই রোগটা সাড়াতে হবে। তানাহলে বাবাকে বলে বের করে দিব, বলে চলে আসলাম। ভাবলাম ডায়েরীটা আমার হাতে এসে ভালই হয়েছে। উপরের তালায় কয়েকটা বজ্জাত মেয়ে আছে, ওদের হাতে গেলে আমার কপালে দূর্ভাগ্য ছিল।
এভাবে প্রতি দিন উনাকে অ্যাটক করতাম। আর নতুন নতুন হুমকি দিতাম। একদিন দেখলাম ক্ষেত মার্কা কালারের একটা শার্ট পড়ে ভার্সিটিতে যেতেছে, তার সাথে কলারের একপাশ আলগানো। ভাবলাম আজকের সুযোগটা পেলাম,
ওনার সামনে গিয়ে দাড়াতেই ভয় পেয়ে গেল।
কলার ঠিক করেন, আর এই কালারের শার্ট পড়ে বাইরে বের হতে পারবেন না? কয়েকটা আমার ফেভরিট কালারের লিস্ট দিয়ে হুমকি দিয়ে বললাম, না পড়লে বাবাকে বলে বের করে দিব।
জ্বি আচ্ছা।
তিনি চলে গেলেন, আর আমি মন খোলে হাসতে থাকলাম।
ভালই চলছিলো সব কিছু, আরেকটা ঘটনা বলি,
আজকে কোন সুযোগ পাইনি তাকে অ্যাটাক করার। ভাবলাম রুম দেখার ভান করে কথা বলে আসি। রুমের সামনে গিয়ে দেখি উনি উপরে যাচ্ছেন। সন্দেহ হলো কৈ যায়। উপরের তালার ফাজিল মেয়েগুলার সাথে ডেটিং মারতে নয়তো?
উনি ফাস্টলি সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলেন এবং ছাদে গেলেন। আমার একটু দেরী হলো যেতে।
ছাদে গিয়েতো আমার মাথায় আগুন ধরে গেল। তিনি উল্টো দিক ফিরে মোবাইল টিপছেন আর উনার সরাসরি সামনের দিকে অন্য ছাদের একটা মেয়ে উনাকে ইশারা করছে।
নাম্বার দেওয়া নেওয়া হচ্ছে, না?
কি?
মেজাজ এতই খারাপ হলো যে, কিছু না ভেবে মোবাইলটা উনার হাত থেকে নিয়ে দিলাম এক আছাড়।
এটা কি হলো?
এখানে থাকলে মোবাইল চালানো যাবে না, তাহলে বাবাকে বলে বের করে দিব।
দ্যাততরি রাগ উঠতেছে অনেক, তাই চলে আসলাম।
রাগ যখন কমল ভাবলাম, তিনি একদমই এমন হতে পারে না। আর ফাজিল মেয়েটা ইশারা করলে কি হবে? তিনিতো রেসপন্স করেন নি। আবার মায়াও হচ্ছে, যখন মোবাইলটা ভেঙে ফেলেছিলাম তখন উনার মুখটা দেখার মত ছিলো। জমানো টাকা দিয়ে একটা মোবাইল কিনে আনলাম আর একটা সিমকার্ড। সন্ধার একটু পরে সিয়াম কে দিয়ে উনার কাছে মেবাইলটা পাঠালাম। মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল যখন, দেখি উনি আবার মোবাইলটা ফেরত পাঠিয়েছে। তাই নিজেই গেলাম।
দরজার সামনে গিয়ে বেল চাপলাম। দেরী হচ্ছে তাই এক নাগাড়ে চাপতে থাকলাম। দরজা খোলার পরে,
কি সমস্যা আপনার?
কই না তো।
মোবাইল নিলেন না কেন?
আপনি না বললেন, মোবাইল চালালে আপনার বাবাকে বলে বের করে দিবেন?
ডং করেন?
একদম না।
ধরেন এটা, এর ভেতরে একটা সিম আছে, এটা ছাড়া যদি অন্যকোন সিম ইউজ করতে দেখি, বাবকে বলতে হবে না। নিজেই বের করে দিব বলে চলে আসলাম।
সর্বশেষ একটা ঘটনা বলি,
বাবা আম্মুর জন্য একটা নতুন শাড়ি এনেছে। সবসময় নতুন শাড়িটা আম্মু আমাকে পড়িয়ে দেয়। আজও তার ব্যাতিক্রম হলো না। শাড়ি পড়ে হালকা সাজোগোজো করলাম। একটু পর গিয়ে গিয়ে দেখে আসি চান্দু মিয়া আসছে কি না। প্রায় আধা ঘন্টা বসে আছি। শাড়ি পরে থাকা এত কষ্টকর, দ্যাততরি এখনও আসছে না। বেশ কিছুক্ষন পরে দরজায় চোখ দিয়ে দেখি উনি উপরে ওঠতেছে। তাড়াতাড়ি করে দরজা খোলে নিচে নামতে থাকলাম উনার সামনে দিয়ে। একবার আড় চোখে চেয়ে দেখি চান্দু মিয়া হা করে তাকিয়ে আছে। এমন ভাবে তাকিয়ে আছে, আমি লজ্জায় মাথা উঠাতে পারতেছি না। বিপদ ঘটলো ঠিক তখনই। তবে আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে। যেমনটা হলো তখন,
শাড়ির সাথে পা আটকে গিয়ে হোচট খেয়ে পড়ে গেলাম। ভয়ে চোখ বন্ধ হয়ে আসল। হঠাৎ অনুভব করলাম আমি পড়ে যাই নি। একজোড়া শক্ত হাত আমাকে ধরে নিয়েছে। চোখ মেলে দেখি মিস্টার চান্দু মিয়া, না আর চান্দু ডাকব না ইমন। মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝতে পারলাম আমার চেয়ে বেশি উনিই ভয় পেয়েছে।
সাবধানে যাও, এখন পড়ে গেলেইতো সব শেষ ছিলো।
কার সব শেষ ছিলো?
কার আবার? আমার।
তাই?
হুম।
বাব্বাহ, চান্দু মিয়া এত রুমান্টিক হলো কবে থেকে?
সে কিছু বলল না, শুধু একটা মিষ্টি হাসি দিল। যার উত্তর আমি জেনে গেছি।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ