āĻŦুāϧāĻŦাāϰ, ā§Šā§Ļ āĻŽে, ⧍ā§Ļā§§ā§Ž

4962

গল্প:স্যারের সাথে বিয়ে>পর্ব:১
লেখা:মল্লিকা মলি(দুষ্টু পেত্নী)
.
.
আমি মল্লিকা মলি। দশম শ্রেনীতে পড়ি,, এখনো কারো প্রেমে পড়িনি।আজ হঠাৎ স্কুলে একটা ছেলেকে দেখে ক্রাশ খাইলাম।পরে জানতে পারলাম ওটা আমাদের নতুন স্যার,আজকেই জয়েন করেছে।মনডাই খারাপ হইয়া গেলো একটা ছেলের উপ্রে প্রথম বার ক্রাশ খাইলাম সে আবার স্যার ধুর ভালোই লাগে না।

ক্লাশে গেলাম, তারপর দেখি ক্রাশ স্যার আসলো আমাদের ক্লাশে।প্রথমদিন জন্য বেশি ক্লাস না করিয়ে শুধু পরিচয় দেওয়া নেওয়া করেই চলে গেলো।

আমার মনে স্যারের প্রতি ভাল লাগা কাজ করছে কিন্তু কাউকে বলছি না বললেই তো বাঁশ খেতে হবে সবার কাছে,,বান্দবীদের কাছে আরো বেশি কারন আমাদের দলে প্রেম ভালবাসা চলে না আমরা প্রেম করি না,যে করে তারে টাইট দেই ভালো করে কিন্তু নিজেইতো ফ্যাইসা গেছি তাও আবার স্যারের উপ্রে এখন আমার কি হপ্পে :'(

স্যারের সম্পর্কে একটু খোজ খবর নিয়ে জানতে পারলাম সে নাকি আমার এক ক্লাসমেট এর কাজিন, তো যাই হোক আমি আর কিছু ভাবিনি স্যার কে নিয়ে,স্যার হয়তো কি আর ভাবতাম ভালুবাসাকে ব্যাঙের বাচ্চার মতো বড় হওয়ার আগেই গলা টিপে মেরে ফেলার চেষ্টা করছি।তাই আর কিছু বলিনি।স্যার স্যারের মতো চলছে আর আমি আমার মতো।
এস এস সি টেষ্ট দিলাম,তারপর বিদায় অনুষ্ঠানের দিন অনেক কান্না করছিলাম কারন আজকের পর থেকে আর স্কুলে আসতে পারবো না রোজ রোজ আর দেখা হবে না।আর আমিতো স্কুলেই যেতাম না ক্রাশ খাওয়ার পর প্রতিদিন যেতাম একটা টানে আহা দিলের টানে যাইতাম গো আজ থেকে আর দেখা হইবো না আমার পরানের পাখির সাথে।মমতাজের গানডা গাইতে মন চাচ্ছে ফাইটা যায় বুকটা ফাইটা যায়।কান্না করে বিদায় নিয়ে বাড়ি ফিরে আসলাম।

এস এস সি পরিক্ষা শেষ। রেজাল্ট দিয়েছে 'এ গ্রেড 'পাইছি।আমি যে এ তো ভালো রেজাল্ট কেমনে করলাম বুঝবার পারলাম না আমারতো ফেইল করার কথা। যতো ভালো ছাত্রী আমি।স্যারদের কাছে মোটামুটি ভালো ছাত্রী আমি কিন্তু কেনো যে বুঝি না। আমি তো পড়িই না,,যাইহোক রেজাল্ট তো ভালো হয়েছে আর কি চাই।সবাই আমার কাছে এ প্লাস আশা করে আর আমি কোনমতে পাশ করলেই বাঁচি।

নতুন কলেজে এডমিশন নিবো তাই স্কুলে গেলাম মার্কশিট আর প্রশংসা পত্র তুলতে,,আমার যদি সত্যি প্রশংসা করতে পারতো স্যারেরা তবে প্রশংসার থেকে কি কি দোষ করছি আমরা সেগুলোর লম্বা লিষ্ট দিতো।যাইহোক সেসব কথা বাদ এখন বড় হয়েছিতো ভদ্র হতে হবে নতুন কলেজে যাবো।
স্যার:কি ব্যাপার মল্লিকা,, কেমন আছো,,রেজাল্ট কেমন?

আমি:আলহামদুলিল্লাহ ভালো স্যার। আমি স্যারকে সালাম দেইনা। স্যার হিসেবে মানিই না সামথিং সামথিং আছে তো।

আমি:স্যার কতজন প্লাস পেয়েছে,,?

স্যার:বিশ জনের মতো পেয়েছে,,তুমিওতো প্লাস পাইছো তাই না,?

আমি:হা,,কি বলেন স্যার,,আমি আর প্লাস,,!

স্যার:হুম,শুনলাম তুমিও প্লাস পাইছো?

আমি:না স্যার আমি প্লাস পাইনি,,আপনি ভুল শুনছেন আমিতো '৪.৯১' পেয়েছি,,আমাকে দিয়ে ঐসব প্লাস সেলাই পাওয়া সম্ভব না।

স্যার:হাহাহাহা,,কেনো সম্ভব না,,? একগাল হেসে বললাম কথাগুলো।

আমি:এমনি সম্ভব না স্যার,,আমাকে দিয়ে সত্যিই এতো ভালো কিছু সম্ভব না।

স্যার: হাহাহা,,সম্ভব হবে হবে,,চেষ্টা করলে সবই সম্ভব।

স্যারের কাছে থেকে কথা বলে শেষে স্কুলে যে যে কাজ ছিলো সেড়ে নিয়ে বাড়ি চলে আসলাম।

শুয়ে শুয়ে স্যার আর আমার আজকের কথা গুলো ভাবছিলাম।স্যারের শেষ কথাটি খুব ন্যাড়া দিল মনে,কি বললো স্যার চেষ্টা করলে সব সম্ভব।আমি কি আমার আর স্যারের ব্যাপারটা নিয়ে কিছু ভাববো,,স্যার হয় জন্য বেশিদুর এগোয়নি। এইবার একটু এগোতে ইচ্ছে করছে।ভাবলাম চেষ্টা করে দেখি কি হয়।

নতুন কলেজে ভর্তি হইলাম।একটা বান্ধবীও নাই।সবগুলো ডাইনী আমারে একা করে দিয়ে অন্য কলেজে ভর্তি হলো।আর আমারে এই গরু হাটি চৌধুরী আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজে ভর্তি করিয়ে দিলো সবাই।আহারে কতো ইচ্ছে ছিলা বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে পড়বো,,তা আর হলো না। আমার আশায় লাল বাত্তি জ্বালায় দিলো সবাই।কি আর করবো কলেজে নতুন নতুন বান্ধবী পাতালাম।তাদের সাথে সব কথা শেয়ার করলাম।তারা বললো একবার চেষ্টা করে দেখ কি হয়,,হতেও তো পারে।কিন্তু আমার মনে ভয় ছিলো যে যদি কাজ না হয়,তবে ব্যাপার টা কি রকম একটা হয়ে যাবে স্যার কি ভাববে,!

মিশন শুরু স্যার কে পটানোর।আমার যে ক্লাসমেটের স্যার কাজিন হয় ওর কাছে থেকে অতিকষ্টে সিফাতের মানে স্যারের নাম্বার নিলাম।এতোক্ষন তো আপনাদের নামটাই বলিনি স্যারের,,স্যারের নাম হলো সিফাত।।যাইহোক ফোন নাম্বার নিয়ে ভাবলাম যে কল করি কিন্তু করতে পারলাম না।কি যেনো বাধা দেয়।

অবশেষে ভয়ে ভয়ে একটা মেসেজ দিয়েছিলাম।

আমি:কেমন আছেন,,মেসেজে।

সিফাত:কে,,আপনি,, রিপ্লে দিলাম।

আমি:আর রিপ্লে দিলাম না।

একটুপর ফোনটা বেজে উঠলো।কে আবার ফোন করলে,ফোনে তাকিয়ে দেখি ওরে আল্লাহ এটাতো স্যার ফোন করছে এবার কি হবে,ভয় লাগছে খুব।ভয়ে ভয়ে ফোনটা রিসিভ করলাম।

আমি:হ্যা,,হ্যালো,,!

সিফাত:কে,,আপনি,,?

আমি:মানে আমি আসলে আ আমি,,,!

সিফাত:কি ব্যাপার এভাবে কথা বলছেন কেন,, এভাবে আমতা আমতা না করে বলুন কে আপনি?

আমি :একটু সাহস নিয়ে বললাম আমি মল্লিকা।

সিফাত:কোন মল্লিকা,,চিনতে পারলাম না তো,,?

আমি:হায় আল্লাহ কয় কি,,?আমি যারে সারাদিন ভাবি সে আমারে চিনতে পায় না।মনে মনে বললাম।স্যার আমি সেই মল্লিকা ২০১৪ সালে এস এস সি দিয়েছি,,আর টেষ্টে ফেল করেছিলাম।

সিফাত:ও হ্যা মনে পরেছে,,তুমি সেই মেয়েটি না।টেষ্টে ফেল করে পরে সেই কি কান্না,, সবাই তেমায় কি বকবে উল্টে তোমায় সান্তনা দিচ্ছে।সবাই বলছে যে টেষ্টে ফেল করেছো তো কি হয়েছে ফাইনালে ভালো করো,,কান্না না করে ভালো করে পড়ো।তারপরো তোমার কান্না থামছিলোই না হাহাহাহা পাগলি মেয়ে।

আমি:স্যার তখন খুব ছোটো ছিলাম তো তাই।

সিফাত:তো কেমন আছো,?

আমি:এইতো আছি ভালোই,,আপনি কেমন আছেন?

সিফাত:হুম,,বেশ ভালোই আছি,,তারপর তোমার পড়াশুনার কি খবর,,কেমন চলছে পড়াশুনা,,?

আমি:এইতো চলছে স্যার মোটামুটি ভালোই।

সিফাত:আচ্ছা ভালো থেকো তাহলে,,ভালো করে পড়াশুনা করো,,আগের মতো দুষ্টুমি করো না।তোমাদের তো রেকর্ড আছে এই স্কুলে দুষ্টুমির দিক দিয়ে।

আমি:হুম,,আচ্ছা,,!

সিফাত:আচ্ছা ভালো থাকো আল্লাহ হাফেজ বলে ফোনটা কেটে দিলাম।

স্যারের সাথে কথা বলে মনটা খুব হালকা লাগছে।

মাঝে মধ্যে স্যারের সাথে কথা হয়। এভাবেই চলতে লাগলো দিন,,সময়গুলো আমার এখন খুব ভালোই কাটে।

আমি আর আমার মনের কথা গুলো গোপন রাখতে পারলাম না।বলেই দিলাম একদিন ফোনে সব।

আমি:স্যার আমি আপনাকে ভালোবাসি,প্রথমদিন স্কুলে দেখেই ভালো লেগে যায়। তারপর ভালোবেসে ফেলি।

কথাটি শোনা মাত্রই স্যার রেগে গেলো।

সিফাত:ফাজলামি করো আমার সাথে,,আমাকে কি তোমার ফাজলামির পাত্র মনে হয়,,?

আমি:না স্যার কি বলেন আপনি আমি ফাজলামি কেন করবো আপনার সাথে,সত্যিই আমি আপনাকে ভালো বাসি।

সিফাত:চুপ একদম চুপ,কিসের ভালোবাসা হ্যাঁ,, ভালোবাসার বোঝো কি তুমি পুচকে একটা মেয়ে,ভাকবাসার কথা বলে,,নেক্সটবার আর এই কথা মুখে আনবে না।আর ভুলে যেওনা আমি তোমার স্যার আর তুমি আমার ছাত্রী।

আমি:কি বলবো বুঝতে পারছি না ,, কান্না আসছে খুব স্যারের কথাগুলো শুনে।নিজেকে কন্ট্রোল করে বললাম স্যার এরকমতো অনেক হয় শিক্ষক ছাত্রীর বিয়ে,আর আমাদের হলে সমস্যা কি আমি আপনাকে,,,!

সিফাত:চুপ একদম চুপ ওকে কথাটা পুরোপুরি বলতে না দিয়ে আমি বলা শুরু করলাম, অনেক হয় তো কি হয়েছে, অনেকের হয় আমাদের হবে না ব্যাস।আর আমার বিয়েতে এলার্জি আছে।বিয়ে করার ইচ্ছে নেই আমার, সেটাও আবার ছাত্রীকে কখনোই না। তোমার আর কিছু বলার আছে থাকলে বলো,,নইলে ফোন কাটব আমি,!

আমি:না,, আর কিছু বলার নেই ববলতেই ফোনটা কেটে গেলো।

আমার চোখের পানি থামছে না। অনেক কান্না করছিলাম।এতদিনেরএকটু একটু করে দেখা স্বপ্ন একনিমেষেই শেষ হয়ে গেলো।

স্যারকে আর কখনো ফোন করিনি সেদিনের পর থেকে কোন কথায় হয়নি স্যারের সাথে,নিজেকে সামলিয়ে নিয়েছি। স্যারকে নিয়ে আর কিছু ভাবিনি,,কলেজ আর বাড়ি,,বাড়ি আর কলেজ এভাবে কাটতে লাগলো দিন।

আমি এখন অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ি,তবে এবার গরুহাটী তে পড়ছি না। আমার স্বপ্নের কলেজে ভর্তি হতে পেরেছি আমি,,খুব খুশি আমি।

আমার একটা বিয়ের সম্বন্ধ এলো। পাত্রের বাবা,মা আমাকে দেখে গেলেন।আমায় পছন্দ হয়েছে ওনাদের। বিয়ের দিন ঠিক হয়ে গেলো।আমাকে বরের একটা ফটো দিয়ে ছিলো।কিন্তু আমি দেখিনি।আমার বিয়েতে ইচ্ছে নেই খুব কষ্ট হচ্ছে যাকে ভালবাসি তাকে পেলাম না।কিন্তু কি করবো বিয়ে তো করতেই হবে যাকে ভালবাসি সেতো আর ভালোবাসেনা আমায়।তাই বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম।বরকে এখনো দেখিনি দেখার ইচ্ছেও জাগেনি।
#চলবে,,

গল্প>স্যারের সাথে বিয়ে >পর্ব:২ ও শেষ
লেখা>মল্লিকা মলি(দুষ্টু পেত্নী)
.
.
আজ বিয়ে হয়েছে আমার। আমি এখন শশুড়বাড়িতে বাসর ঘরে বসে আছি। দরজা খোলার শব্দ পেলাম। মনে হলো আমার বর ঘরে এসেছে।

বিছানা থেকে নেমে সালাম করে বরের মুখের দিকে তাকাতেই যেন মনে হলো আমি অজ্ঞান হয়ে যাবো।পুরো থমকে গেছি।কে এটা আমি স্বপ্ন দেখছি নাতো।এটাতো স্যার, তার মানে স্যার আমার স্বামী , আমিতো অবাক এটা কিভাবে সম্ভব ভাবছি।তখনি একটা ধমকে কেপে উঠলাম।

সিফাত:কি ব্যাপার কি তুমি এখানে বউ সেজে কি করছো,?

আমি:হা করে তাকিয়ে আছি।আর ভাবছি এটাও কি সম্ভব।

সিফাত:কি হলো উত্তর দিচ্ছো না কেনো,,তুমি এখানে কেনো,,?

আমি:আজ আমার বিয়ে হয়েছে,এটা আমার শশুড়বাড়ি আর এটা আমার আর বরের বাসর ঘর।

সিফাত:তার মানে তুমি আমার বউ, আমি তোমাকে বিয়ে করেছি,,তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। এটা তোমার প্লান।তুমি প্লান করে আমার সাথে বিয়ে করেছে। কি ভেবেছো এভাবে বিয়ে করে আমাকে স্বামী হিসেবে পেয়ে যাবে কখনোই না।আমি কোনোদিনো তোমাকে বউ বলে মানবো না।

আমি:কি যাতা বলছেন কখন থেকে হ্যাঁ,আমি কেনো প্লান করতে যাবো আমিতো জানতামই না আপনার সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে।

সিফাত:এই মেয়ে ন্যাকামি করো নাতো,,আমি ভালো ভাবেই বুঝতে পেরেছি এসব তোমার প্লান।সেদিন বারন করেছিলাম জন্য তুমি এতোদিন প্লান করছো যার ফলাপল স্বরুপ আজ বিয়ে করেছো।

আমি:ওকে ফাইন,,হুম আপনিই ঠিক এসব আমার প্লান।কিন্তু আপনি আমাকপ কেনো বিয়ে করলেব।বিয়ে ভেংগে দিতে পারেন নি।

সিফাত:আমিতো জানতাম না যে তোমার সাথে বিয়ে হচ্ছে,,আমিতো তোমায় দেখিনি।

আমি:কেনো দেখেনি আপনাকে তো আমার ফটো দেওয়া হয়েছিলো,,?

সিফাত:আমার এখন বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে ছিল না।বাবা জোড় করে বিয়েতে রাজি করিয়েছে তাই রাগে ফটো দেখিনি।

আমি:তাহলে এতে আমার কোনো দোষ নেই।

সিফাত:কে বললো তোমার দোষ নেই তোমারি সব দোষ। যাইহোক তোমাকে আমি বউ হিসেবে মেনে নিবো না।বর হ্যাঁ আমার ওপর বউয়ের অধিকার দেখাতে আসবে না বলে রুম বেরিয়ে চলে আসলাম।

আমি:নির্বাক হয়ে বসে থাকলাম।কিছুই বুঝতে পারছি না।কি হতে কি হলো,,সারারাত একাই ঘরে তাকলাম উনি আসেনি।বসে থাকতে থাজতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি জানি না।

সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি স্যার বিছানায় একটু দুরে ঘুমাচ্ছে। আমি উঠলাম একটু ফ্রেশ হয়ে আসলাম উনি এখনো ঘুমাচ্ছে হয়তো অনেক রাতে ঘুমিয়েছে তাই ঘুম ছারছে না।এরমধ্যেই শাশুরিমায়ের ডাক,,,বৌমা সিফাত কে নিয়ে নাস্তা করতে এসো।আসছি মা বলে উনাকে ডাকতে লাগলাম।

আমি:এই যে উঠুন,, মা ডাকছে নাস্তা করতে।

উনি উঠে আমার দিকে রাগী চোখে তাকালো,,শুধু তাকালো কিন্তু বললো না কিছুই।

নাস্তা করে রুমে আসার পর বললো, এভাবে আমাকে ডেকে তুলবে না।আমিও উনার কথা শুনে থাকলাম, উনাকে আর ডাকি না।উনি সারাক্ষণ আমার সাথে কড়া কথা বলে।আমি মেনে নেই সব।

এভাবে অনেকদিন কেটে গেলো।উনি ইদানীং আর আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে না।সবসময় স্বাভাবিক থাকে।

একদিন রাতে শাড়ী পরে আয়নার সামনে বসে একটু সাজুগুজু করছিলাম আয়নাতে দেখি উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

আমি:কি ব্যাপার,ওভাবে তাকিয়ে কি দেখছেন,,?

সিফাত:তোমাকে দেখছি,,সত্যিই তুমি অনেক সুন্দরী,!

আমি:আমি জানি আমি সুন্দরী,আর আপনি এটা আজ বুঝতে পারলেন 😒

সিফাত:অনেক আগেই বুঝেছি।শোনো একটু ছাদে যাবে,?

আমি:হুম,, চলুন,!

অতঃপর ছাদে গেলাম দুজনে।দুজনেই চাঁদ দেখছি সাথে নিরবতা। হঠাৎ খেয়াল করলাম আমার হাতের মধ্যে সিফাতের হাত,আঙুলের ভিতর আঙুল দিয়ে শক্ত করে ধরে আছে আমার হাত।

সিফাত:সত্যিই আমায় তুমি খুব ভালোবাসো তাই না,,আর আমি তোমায় বুঝিনি।

আমি:হুম,,আজ বুঝেছেনতো,,?

সিফাত:হুম আজ বুঝেছি আমার এই ছাত্রীটা আমায় কতটা ভালবাসে।

এই কথাটি বলে জড়িয়ে ধরলো আমায়,আমি একটা সস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। এইভেবে সত্যিই আমি পেরেছি তার ভালবাসা জিততে,হারায়নি আমার ভালবাসাকে।অনেকটা খুশি আমি।

সমাপ্ত

ভালো থাকুক প্রত্যেকটা মানুষ তাদের ভালবাসার প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে সারাজিবন শুধু আমি ছাড়া।
Mollika Moly(দুষ্টু পেত্নী)

4961

গল্প: শুধুই ভালবাসা
.
Mahir

পরী, আয় তোকে আঁকি, আমার আঙ্গুল হবে তুলি, আর তুই
ক্যানভাস ...
: ভাগ, অসভ্য কোথাকার, তোর মুখে কোন ভাল কথা নাই?
: কি আজিব, অসভ্যতা কই করলাম, একটা রোমান্টিক কথা
বললাম ...
: আহা ... আমি তোকে চিনিনা? সারাক্ষণ তোর মাথায়
অসভ্যতা কিলবিল করে, এই কথার মধ্যেও নিশ্চই কোন অসভ্যতা
আছে
: জ্বি না, ইউ এন্ড ইয়োর ডার্টি মাইন্ড ...
: আর নিজে খুব সাধু, স্বামী বিবেক ওবেরয় আসছেন
: বিবেক ওবেরয় না বিবেকানন্দ?
: পঞ্চাশ ষাট বছর আগে জন্মাইলে বিবেকানন্দ হইতে পারতি,
এখন না
: আল্লাহ বাঁচাইছে হই নাই, গেরুয়া বসন পইড়া বৃক্ষতলে
অবতরণের কোন ইচ্ছা আমার নাই
: সেই জন্যেই তো গাছে গাছে ঝুলতে থাকো
: মানে কি? কি বলতে চাস?
: মানে তুই একটা অসভ্য বান্দর জঙ্গলি উল্লুক
: তাই? তাহলে আমাকে বনে ছেড়ে দিয়ে আয়, গলায় শিকল
দিয়ে আটকিয়ে রেখে সারাক্ষণ ঝাড়ি মারস কেন?
: রাজামশাইয়ের বান্দরের গল্প মনে আছে?
: কোনটা?
: এক রাজার সিংহাসনের পাশে একটা বাঁদর বাধা থাকতো।
রাজা মশাই রোজ দরবারে বসার পর একটা চাবুক দিয়ে
বাঁদরটার পিঠে সপাং করে একটা বাড়ি দিতেন। বাঁদরটা ব্যথায়
কিচকিচ করতে থাকতো, তারপর চুপচাপ বসে থাকতো বাকিটা
সময়। দিনের পর দিন এই কাণ্ড দেখে একদিন দরবারীরা বললেন -
"রাজা মশাই, এত ভাল একটা বানরকে আপনি রোজ চাবকান
কেন?" রাজা বললেন - "এটা আমার খুব প্রিয় বানর, সে জন্য ওকে
আমার পাশেই রাখি, আর কেন প্রতিদিন মারি সেটা কি
আপনারা দেখতে চান?" পরদিন দরবারে বসে রাজা আর
বানরটাকে মারলেন না। বানর সারা দিন চুপ করে বসে থাকল।
পরদিনও বারা বানরটাকে মারলেন না। তৃতীয় দিনে বানর
নড়াচড়া শুরু করল। চতুর্থ দিনে সে রাজার সিংহাসনের হাতলে
চড়ে বসলো, পঞ্চম দিনে রাজার ঘাড়ে, ষষ্ঠ দিনে রাজার
মাথায় আর সপ্তম দিনে রাজসিংহাসনে রাজার মুকুট কেড়ে
নিয়ে বসে পড়ল। সেদিন রাজা আবার চাবুক হাতে নিলেন। বানর
কিচ কিচ করতে করতে তার স্থানে ফিরে গেল ... তুই হইলি সেই
প্রজাতির বান্দর, তোরে টাইটের উপর না রাখলে মাথায় উঠবি।
: খাইছে আমারে, তাইলে তুই রাজা মশাই, থুক্কু, রানী মশাই আর
আমি বান্দর?
: হুমমমম
: এহ্ ... কি ভাব ...
: ভাব তো নিবই, আমি দেখে এখনও একটা বান্দরের সাথে ঝুলে
আছি, অন্য কেউ হইলে কবে ভাগতো
: কেন, আমি কি কামড়াই?
: আবার অসভ্য কথা, তরে তুইলা একটা আছার দিব, ভাগ অসভ্য
: হে হে হে হে হে
: হাসবিনা, ব্যাক্কল কোথাকার
: আচ্ছা হাসবোনা, পরী ... জোসনা খাবি?
: উ... খাব, ফিল্টারের পানি দিয়ে ভাল করে ধুয়ে দে, বাতাসে
অনেক ধুলা
: পারবনা, নিজে ধুয়ে খা
: দে না রে বাপ, জোসনা খেতে ইচ্ছে করছে তো, কি সুন্দর
হাওয়াই মিঠাইয়ের মত জোসনা
: মোটেও না, মাখনের মত জোসনা, আইসক্রিমের মত
: না, হাওয়াই মিঠাইয়ের মত
: আচ্ছা যা, তোর টাই ঠিক
: হি হি হি ... আই, অই কথাটা বলনা একবার ...
: কোন কথাটা?
: যেই কথাটা তুই লজ্জায় বলিসনা
: ভাগ, আমার অনেক লজ্জা লাগে
: আমি মেয়ে, আমার তো লজ্জা লাগেনা, তোর লাগে কেন? এই
দেখ আমি বলি - ভালবাসি, ভালবাসি, ভালোওওওওওওওবাসি
: আমি তোর মত বেলাজ, বেহায়া, বেশরম না, আমি লজ্জাবান
পুরুষ মানুষ, লজ্জা নারীর ভূষণ আর পুরুষের অলঙ্কার
: আহা ... কি আমার অলংকার পড়া পুরুষ রে
: হু ... পরী ... তুই আমার বউ হবি কবে?
: জীবনেও না, সেই আশা বাদ দে
: ভেরী গুড, আচ্ছা, তুই চিন্তা কর তো - আমি আরেকটা মেয়ের
সাথে প্রেম করতেছি, মেয়েটা সারাক্ষণ আমার দিকে
তাকিয়ে আছে
: কাটা চামচ দিয়া চোখ তুইলা নিবো, সারা জীবন আর কিছু
দেখতে পারবেনা
: কেন? আমার তো একটা বউ লাগবে, না কি? আমারও তো
বিছানায় শুয়ে শুয়ে মর্নিং টি খাইতে ইচ্ছা করে, শীতের দিনে
কম্বলের নীচে ...
: এই চুপ, চুপ, চুপ কর, অসভ্য বান্দর কোথাকার
: তুই এই কনজারভেটিভ কেন?
: কারণ তুই এক্সট্রা অর্ডিনারি অসভ্য, সেইটা ব্যালেন্স করি
: আমি না, আমার আঙ্গুল একটু অসভ্য, এমনিতে আমি অনেক
লাজুক লক্ষ্ণী বাবু
: আহা রে, আমার আর জানতে বাকি নাই
: তুই দেশে আসবি কবে?
: জীবনেও না, আমাকে হাতের কাছে পেলেই তুই তোর অসভ্য
আঙ্গুল দিয়ে ছবি আঁকতে চাইবি, বজ্জাত কোথাকার ...
: চাইতেই পারি, তুই বইলা কথা
: তোর প্রতিটা আঙ্গুলের জন্য আমি আঙ্গুল কড়া বানায় আনবো
: হা হা হা হা হা হা হা
: তোর আঙ্গুলে আঙ্গুল কড়া লাগিয়ে আমি তোর বুকের মধ্যে চুপ
করে শুয়ে থাকবো
: তখন আমার তোর চুলের ঘ্রাণ খাব
: তোর মাথায় হেলমেট পড়ায় সামনের কাঁচটা নামায় দিব, কোন
প্রকার অসভ্যতা করতে পারবিনা
: আচ্ছা, আমি শুধু তোকে দেখবো - নিস্পলক
: দেখিস, আমি অনেক কিউট না রে?
: হু ... ময়ূরীর মত কিউট
: ময়ূরী কে?
: বাংলা ছবির নায়িকা
: ওই ভুটকী? আমি ময়ূরীর মত দেখতে? তোর সাথে কোন কথা নাই
আমার, এই আমি লগ অফ করলাম, গুড বাই
: আরে ... রাগ করিস কেন?
: ... ... ...
: পরী, পরী, পরী ... ওই, কথা বল, লগ অফ তো করিস নাই
: কথা বলবো না তোর সাথে, তুই শয়তান, বান্দর, উল্লুক
: ভালবাসি, ভালবাসি, ভালোওওওওওওওবাসি
: কচু বাসিস
: কচু বাসা যায়?
: যায়, তোর পক্ষে সবই সম্ভব
: নাহ ... সব সম্ভব না, সম্ভব হলে আমি বিনা টিকেটে প্লেনের
ছাদে চড়ে তোর দেশে গিয়ে হাজির হইতাম
: ... ... অনেক ভালবাসিস আমাকে?
: হু ... অনেক
: কেন ভালবাসিস?
: কারণ তুই একটা ছোট্ট পুতুল, রঙ্গিন প্রজাপতি, আকাশ জোড়া
রংধনু, রাত জাগা নীল পাখী, সাগর পাড়ের মেয়ে, আমার অনন্ত
নীল আকাশে এক টুকরো সাদা মেঘ ...
: আমি একাই এত সব?
: হু... তুই আমার সব কিছু
: ... ... ...
: কি হলো?
: ভালবাসি রে, অনেক ভালবাসি তোকে ..

4960

বন্ধুত্ত
.
PM Abdullah Mahir ( নিরুময়)
...
..
.
>> দে দাম টা দে? ( নিরু)
>> কেনো ?  আমি কেনো দেব,  তুই দে?  ( মাহির) 
>> তুই তো অডার করছিলি,  সো তুই তো দিবি
>> ঠিক আছে অডার না হয় আমি দিয়েছিলাম কিন্তু আমি তো খাই নি,,  সব তো তুই একাই খাইছোস..
>> শুধু শুধু বাহানা করিস না তো দে বিলটা দে আর চল তাড়াতাড়ি,, বাসায় ফিরতে হবে
>> আচ্ছা,,  মামা শুনেন,  আপনি ফুসকা দিলেন,,  তখনই আমার একটা ফোন আসলো,,  ফোসটা রিসিভ করে কথা বলে এসে দেখি সব ফুসকা শেষ,,  এখন তুমিই বলো,,  বিল টা কি আমার দেয়া উচিত.?
>> আমি অতো কিছু কইতে পারুম না,,  আমারে একজন বিল দিলেই হইবো। (মামা)
>> নাও,  মামা তুমিও আমায় বুজলে না,,  নাও তোমার বিল।
.
.
>>সামান্য একটা ফুসকার বিল নিয়ে তুই যে কেন এমন করিস,
>> সামান্য ফুসকা খাওয়ার জন্য তুই কেন আমার সাথে এমন করিস
>> আমি তো জগড়া করার জন্য এমন করি
>> আমিও মারামারি করার জন্য এমন করি
>> মানে কি
>> মানে তেমন কিছু না,  চল একদিন আমরা জগড়া বাদ দিয়ে মারামারি করি
>> তোর কি মাথা ঠিক আছে
>> কেন,  খুব ফালতু কিছু কি বলে ফেললাম।
>> তা নয়তো কি?
>> তোর ইচ্ছা না থাকলে করবো না যা।
>> হুমম,, চল বাসায় যায়।
.
কথা হচ্ছিল মাহির আর নিরু।  বন্ধুত্তের সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে গেছে তারা।  প্রেম ভালবাসার থেকেও গভীর এই বন্দুত্ত।
.
কলেজে প্রথম দিন থেকেই তাদের বন্ধুত্ত। আজ তিন বছর পরও একদিন ও পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের।  সময়ের ব্যবধান টা যেমন বেরেছে, বেরেছে তেমন তাদের বন্ধুত্তের গভীরতা।
.
প্রতিদিন কিছু না কিছু নিয়ে জগড়া তাদের থাকবে।  আজ যেমন ফুসকা,  কাল হয়তো অন্য কিছু।
সব কিছু ভাগাভাগি করে নিলেও কখনো রিক্সা ভাড়া টা ভাগাভাগি হয়নি।  সব সময় মাহিমের দিতে হয়েছে রিক্সা ভাড়া।
.
ব্যতিক্রম এখন ও নয়, ভাড়া দিয়ে রিক্সা থেকে নেমে পড়লো মাহির ,  নিরু যাবে আরো মাইল খানিক। 

রাতে মাহির অনলাইনে কাজ করতে ছিলো তখনই নিরুর মেসেজ,
>> কি করিস
>> কাজ করি
>> কিসের
>> অনলাইনে
>> খুব বেশি বিজি
>> ১৫ মিনিট লাগবে
.........
>> হয়নি এখনো
>> না আর ৫ মিনিট
....
>> আর কতক্ষন
>> শেষ ৫ মিনিট
.....
>> এখন..
>> শেষ,  ওও সরি একটা কাজ তো ভুলেই গেছি,  ৫ মিনিট পর কথা বলছি।
>> তুই থাক তোর কাজ নিয়ে আমি গেলাম আমায় আর তিন দিন কোনো ম্যাসেজ দিবি না,  তিন দিনে যতো কাজ আছে সব করবি।
>> হুমম..

>> ওকে বাই
বাই লেখে চলে যায় অনলাইন থেকে,

মাহির ম্যাসেজ দেয় কোনো লাভ হয় না,  sms দেই কোনো রিপলে নাই,  কাজ টা তো অনেক আগেয় শেষ,  রাগানোর জন্য নেয়া ডিসিশন টা এখন হিতে  বিপরীতে গেল।

.
মাহিম সকালে কলেজে গিয়ে দেখে নিরু পুকুর পারের কাছে নিচে বসে আছে,  খুব চিন্হত।
>> কি হয়ছে
>>
>>কি হয়েছে  বলবি তো
>>
>> ঠিক আছে থাক আমি যাই
>> দ্বারা,  কই যাস,  বস এখানে
মাহির বসলো,
>> ভাবসিলাম তোর সাথে তিন দিন কোনো কথা বলবো না
>> বলিস না
>> বলতে হবেই
>> তাহলে বল
>> তুই আসার কিছুক্ষন আগেই কলেজের এক বড় ভাই আমাকে প্রপোজ করেছে
>> তুই কি বলছিস
>> বলছি আমি অলরেডি ইন এ রিলেসনশিপ।
>> কি বলোস তুই কবে রিলেসশনশীপে গেলি বললি না তো। 
>> আরে গাধা এমনি বলছি, যেনো আর প্রব্লেম না করে।
>> ওও,  তোর তো ভালোই বুদ্ধি। চল  এখন ক্লাসে যাই।
>> হুম চল।
.
বন্ধুত্তের টানে এগিয়ে চলা তাদের পৃথিবী অনেকেই আটকানোর চেষ্টা করছে,  কিন্তু পারে নি।
নিরুকে প্রপোজ করেছে প্রায় ৭-৮ জন।  কিন্তু সবাইকে নিরু না বলে দিয়েছে। 
মাহিরের ক্ষেত্রে ভিন্ন নয়,  রুপা নামের একটা মেয়ে তাকে প্রপোজ করে ছিলো,  নিরু তাকে কি কি বলে যেনো তাড়িয়ে দিছে।  মাহিরের আজো বিষয় টা অজানা।  তার পর থেকে কখনো কোনো মেয়ের দিকে ইন্টারেস্ট দেখায় নি মাহির। 
.
দেখতে দেখতে তাদের পড়াশোনা প্রায় শেষের দিকে। 
.
নিরু কিছুদিন কি নিয়ে যেনো গভীর চিন্তায় থাকে।   চিন্তিত অবস্থায় নিরুকে দেখতে মাহিরের ভাল লাগে না। 
>> কিরে কি হয়ছে
>> তেমন কিছু না
>> তোকে এমন চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?
>> চিন্তা করছি,  পড়াশোনা তো প্রায় শেষের দিকে,  কিছুদিন পরে তো তুই এক দিকে আমি অন্য দিকে,  কি হবে তখন আমার আর তোর বন্ধুত্ত।
>> বন্ধুতের  আবার কি হবে,  বন্ধুত্ত সারা জিবন থাকবে। 
>> বন্ধুত্ত নাম টা সারাজিবন থাকবে কিন্তু তোর আর মাঝের বন্ধুত্তে ভাটা পড়বে।
>> তা হয়তো কিছুটা  কমবে।
>> চল এক কাজ করি
<< কি
>> আমরা বিয়ে করে ফেলি
>> বিয়ে,  মানে কি
>> হুম,  তাহলে আমরা আবার একসাথে থাকতে পারবো, কেউ আমাদের বন্ধুত্তের  মাঝে বাধা হয়ে আসতে পারবে না। 
>> তোর আইডিয়া টা খারাপ না তবে পরিবার কি মেনে নেবে।
>> মেনে না নিলে পালিয়ে বিয়ে করবে।
>> পালিয়ে বিয়ে কেমন দেখা যায় না। বাবা মাকে কষ্ট দিতে পারবো না আমি।
>> কষ্ট দিতে হবে না যা।
>> আচ্ছা আমি ভেবে দেখি।
>> দেখ।

নিরুর মা বাবা কেউ নেই।  থাকে মামার কাছে। তাই তার বিয়েতে তেমন কারোর মত দেওয়ার না থাকলেও মাহিরের বিয়েতে অনেকের মত দেওয়ার আছে। 

মাহির জানে তার পছন্দের কোনো গুরুত্ব তার বাবা মার কাছে নেই।  কোনো দিন মেনে নেবে না যদি সে নিরু কে বিয়ে করে। 

কিন্তু বন্ধুত্বের টানেই হোক আর মায়া  নামক জড়তায হোক  নিরুকে কে সে হারাতে চাই না।  নিরু ছাড়া তার সুন্দর লাইফ টা প্রায় অসম্ভব।

তিন দিন পর মাহির ভার্সিটিতে যায় মাহির, নিরুর মনে দুক্ষের ছাপ
>> কি রে কি হয়েছে
>> কিছু না
>> চল বিযে করে ফেলি
>> সত্যি
>> হুম
নিরুর মুখের কাঠিন্য ভাব টা চোখের পলকে দুর হয়ে গেলে। নিরুর মুখের হাসি টাব টা যেনো দেখার মতো। 

>> মাহির জানিস আমার না এখন আনন্দে নাচতে মন চাচ্ছে।
>> নাচতে হবে না,  চল ক্লাসে যায়। 
>> সত্যিই নাচবো না
>> হুম
নিরু আজ নিজের জিবনে সফল।  তার ধারনা ছিল ভালবাসা না বন্ধুত্ত দিয়েও কাউকে সারাজিবন কাছাকাছি রাখা যায়।  স্বপ্ন পুরনের দারপান্তে সে। 
.
ফাইনাল পরিক্ষা শেষ,  রেজাল্টের দেরী আছে। 

মাহির আউটসোর্সিং করে ভালোই কিছু কিছু টাকা জমা করে ছিলো।  সেই টাকা দিযে একটা দুই রুমের  বাসা ভাড়া করলো।  কিছু আসবারপত্র  কিনলো। 

তারপর তারা বিয়ে করে ফেললো কাজি অফিসে। 

বাসর রাতে,

মাহির রাতের খাবার বাইরে থেকে কিনো আনলো,  রাত্রে খাবার খেয়ে নিরু রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো, মাহির বুজতে পারলো না নিরু কেনো দরজা লাগিয়ে দিল।
মাহির খাবার খেয়ে রুমের দড়জায় আস্তে করে টোকা দিল কিন্তু নিরুর কোনো সারা শব্দ নেই।  মাহির আবার টোকা দিল কিন্তু ভিতর থেকে কোনো আওয়াজ  পাওয়া গেলো না।

আর কিছুক্ষন ডাকাডাকি করে মাহির বুজতে পারলো নিরু হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে। তাই তাকে আর ডিস্টাব না দিয়ে মাহির অন্য রুমে চলে গেলো,  অন্য রুমে গিয়ে তো মাহির অবাক,  বিছানা পারা, বালিস ও আছে,  কাথা ও আছে।
মাহিরের আর বুজতে বাকি রইলো না যে নিরু ইচ্ছা করে এই কাজ টা করেছে। 

মাহির ভাবতে লাগলো,  আসলে তার কপালের দোষ তা না হলে আজকের মতো একটা দিনে তাকে বউ রেখে অন্য রুমে ঘুমাতে হচ্ছে।  অনেক চিন্তা ভাবনার মাঝে কখন ঘুমিয়ে গেলো মাহির নিজেই জানে না।
.
সকালে অনেক ভোরে ঘুম থেকে উঠলো মাহির। তার এখন চা খেতে মন চাচ্ছে।  কিন্তু উপায় না, কেউ তাকে চা বানিযে দেবে না, তার নিজের বউ ও না কারন সে ঘুমেচ্চে।  নিজের ও বানিয়ে খেতে মন চাচ্ছে না।  আলসামিতে হাত পা জড়ো হয়ে আসছে।  শুয়ে আছে মাহির,  হঠাৎ নিরু চাযের কাপ নিয়ে ঘড়ে প্রবেশ করলো
>> গুড মর্নিং
>> গুড মনিং
>> নি চা খা
>> তুই মানে কি।
>> তোকে কি এখন আপনি করে বলতে হবে।
>> তুমি বললেই চলবে
>> শোন তোকে বিয়ে করেছি যাতে  তোর আমার মাঝে যেনো  বন্ধুত্তের কোনো দুরুত্ব না বাড়ে।
>> মানে কি
>> মানে খুব সহজ।  তুই তোর মতো চলবি, আর আমি আমার মতো। 
>> বিয়ে টা করার ই কি দরকার ছিলো।
>> বিয়ে করেছি যেনো  তোর আর আমার মাঝের দুরুত্ব না বাড়ে,  একই জায়গায় থাকতে পারি,  সব কিছু যেনো আগের মতে থাকে

>> নতুন একটা কিছু কি লাইফে এড করা যায় না
>> কি
>> যার জন্য তুই রাতে রুমে দরজা দিয়েছিলি
>> নো চান্স
.
পরবর্তি পর্ব আসছে

বন্ধুত্ত  ( পার্ট  2)
.
PM Abdullah Mahir ( নিরুময়)
...
..
.
মাহির আর কথা বাড়ালো না,  সে জানে নিরু যা না চাই তা করা অসম্ভব।
.
হাতে চায়ের মগটা থাকলেও  তার দিকে কোনো খেয়াল নেই মাহিরের, গভীর চিন্তায় মগ্ন সে, ----

বিয়ে তো করলাম এখন কি ভাবে কি সামলাবো, চাকরিও তো এখন সম্ভব না। আউটসোর্সিং এর টাকাই কি হবে, সেখানে তো দেই মাত্র ১০০০০ টাকা। তা দিয়ে কি আর সংসার চলে। কিছু একটা করতে হবে খুব তাড়াতাড়ি। চায়ের  সাদা ধোয়া মাহিরের চোখ পড়তেই চিন্তার অবসান হলো তার। 
.
চায়ের মগে চুমুক দিয়ে মগ টা টেবিলে রেখে আয়নার সামনে  গিয়ে দাড়ালো মাহির।  নিজেকে কেমন যেনো অপরাধী লাগছে তার। 
কি বলবে তার বাবা মাকে, যখন তারা বলবে তুই আমাদের না বলে কি ভাবে বিয়ে করলি।
নির্জিব নিরু মাহিরকে চিন্তিত দেখে,
>> কি হয়ছে রে
>> কিছু না
>> কিছু তো একটা হয়ছে তা না হলে তো এতো গভীর চিন্তা করতিস না
>> তেমন কিছু না ভাবছি সংসার টা কেমনে চালাবো
>> কেন সংসার চালাতে কিসের প্রব্লেম
>> চাকরি তো নেই, আউটসোর্সিং করে টাকায় পাই ১০০০০,  রুম ভাড়া, খাওয়া দাওয়া, কতো খরচ, এগুলা কি এই অল্প টাকায় কভার দেওয়া সম্ভব হবে
>> আমি আছি না
>> তুই কি করবি রে
>> আমি কি করবো মানে, আমার খরচ আমি নিজেই চালাতে পারবো, আমাকে নিয়ে তোর চিন্তা করতে হবে না।
>> নিজে নিজে কি করে চলবি
>> টিউশনি করে আর আমার ব্যাংকে কিছু টাকা আছে সেটা দিয়ে
>> তো আমায় কেন বিয়ে করছোস,  তোর যা ইচ্চা তাই করবি,আবার  চলবিও নিজের ইচ্ছায়,  স্বামী হিসেবে আমার তো কোনো দরকার দেখছি না তোর লাইফে
>> আরে বাবা রাগ করোস কেন, তোর চাকরি টা হয়ে যাক তখন না হয় টিউশনি বাদ দিয়ে দেবো 
.
নিরু কথা শেষ করতেই মাহিরের  ফোনে ফোন আসে।  মাহির কথা উত্তর দিতে গিয়ে থেমে গেলো ।  কাপা হাতে ফোনটা রিসিভ করলো
>> আস্সালামুআলাইকুম
>> ওলাইকুম আসসালাম
>> কেমন আছেন
>> ভালো, তুই
>> জ্বি ভালো
>> তোর পরিক্ষা তো শেষ তাই না
>> জ্বি
>> বাড়ি আসবি কবে
>> বাড়ি
>> আমতা আমতা করোস কেন
>> না কিছু না,  আসবো কিছু দিনের মধ্যে
>> ঠিক আছে, ধর তোর মায়ের সাথে কথা বল
>>কেমন আছিস
>> ভালো তুমি
>> ভালো না, গত রাতে খারাপ একটা স্বপ্ন দেখছি বাবা তুই একটু সাবধানে থাকিস
>> আচ্ছা
>> আর  খাওয়া দাওয়া করিস ঠিকমতো
>> আচ্ছা,   রাখি এখন
>> হুম
.
ফোনটা টা রেখে চিন্তায় মসগুল হয়ে গেলো মাহির।
>> কিরে কি হয়ছে
চিন্তা ভেঙ্গে,
>> বাবা, বাড়ি যেতে বলছে
>> তো যা, আমায় সাথে নিয়ে যাস
>> তোকে নিয়ে যাবো, তোর কি মাথা খারাপ, তোকে যদি সাথে নিয়ে যায় আমার সাথে তোকেও বাড়ি থেকে ঘাড় ধরে বের করে দেবে
>> তুই শুধু শুধু চিন্তা করছিস, এমন কিছু তো নাও হতে পারে
>> এমনটাই হবে।
>> হবে না দেখিস
>> তুই যা তো আমায় আর প্যারা দিস না।
.
নিরু চুপচাপ রুম থেকে চলে গেলো।
.
মাহির ফ্রেস হয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।
বাসায় ফিরলো ঘন্টা খানেক পর।
নিরু,
>> কই গিয়েছিলি
>> বাইরে
>> কেন
>> এমনি
>> চলনা বিকালে ঘুড়তে যাই
>> ঘুড়তে যাবি,ওকে  কই যাবি বল
>> দিয়া বাড়ি যাই
>> ওকে
বিকালে দিকে পৌছে গেলো মাহির আর নিরু দিয়া বাড়ি।
কিছুক্ষন ঘুড়ে নিরু আবদার করলো সে ফুসকা খাবে। মাহির মানা করলো না, ফুসকার দোকানে গিয়ে বসলো
>> মামা ফুসকা দিয়েন তো দুই প্লেট
>> আরে না আমি খাবো না
>> তুই খাবি না কেন
>> আমি কি কোনো সময় খেতে পারছি সবসময় তো আমার টা তুই খেয়েছিস
>> ঠিক আছে মামা এক প্লেট দেন
.
এই নেন আপা ফুসকা
নিরু ফুসকা টা হাতে নিলো
>> নে হা কর
>> মানে
>> মানে মানে করোস কেন, হা করতে বলছি হা কর
নিরু কথা শুনে এমনি তেই হা হয়ে গেলো মাহিরের মুখ, কিছুক্ষনের জন্য যেনো তার মনে হলো হয়তো ভুল শুনছে সে। কিন্তু না ভুল কি করে হয় নিরু তো ঠিকই চামচ টা এগিয়ে দিয়েছে।
মাহির ফুসকাটা খেয়ে নিরুকে বললো
>> কিরে তোর কি হয়েছে
>> কি আবার হবে
>> না এতোদিন দেখতাম আমার ফুসকা তুই চুরি করে খেয়ে নিতিস, আর এখন সেই তুই নাকি আমায় তোর নিজের ভাগের  ফুসকা খাইয়ে দিচ্ছিস।
>> এখন তুই আমার হাসবেন্ড, সো আমার সব কিছুতেই অর্ধেক তুই থাকবি
>> কথা মনে রাখিস ভুলে যেনো যাস না
>> ভুলে যাবো কেন, তুই এখন আমার অর্ধেক ই তো।
ফুসকা খেয়ে বিল দিলো মাহির।
খাওয়া শেষে আবারও হাটা দিলো তারা।
নির্জন একটা প্লেসে গিয়ে বসলো দুজন।
.
মাহিরের কাধে মাথা টা রেখে চুপচাপ বসে রইলো নিরু চোখের পাতা দুটোকে ফিযিক্সিের সুত্র খাটিয়ে স্থির করে দিলে মুর্তি বৈকি অন্য কিছু বোঝাবে না দুজন কে,
নিরবতা ভেঙ্গে নিরু বললো
>> কিরে কথা বলিস না কেন
>> কথা বলছি তো
>> কই
>> বলছি চুপে চুপে
>> চুপে চুপে বললে বুঝবো কি ভাবে
>> চোখ বন্ধ করে মন দিয়ে শোনার চেষ্টা কর দেখ শুনতে পাবি
>> দুর তাই কি সম্ভব নাকি
>> চেষ্টা করেই দেখ না
নিরু চোখ টা বন্ধ করলো, কল্পনায় নিরু দেখলো
>> মাহির যেনো কি বলছে বিরবির করে
নিরু মাউথ রিডিং জানে না জানলে বুঝতে পারতো কি বলছে মাহির, তবুও বোঝার চেষ্টা করছে নিরু
>> চল বাসায় যাই
নিরু চোখ টা খুললো, তোর কথা গুলো বুজতে পারলাম না
>> পারতি যদি
>> যদি কি?
>> কিছুনা
>> কিছুনা মানে, বল কি
>> বলসি যদি সময় করে শেখোস তবে বুজতে পারবি
>>কত দিন লাগবে শিখতে
>> অল্প কিছুদিনেই শেখা যায়  আবার অনেক সময়  সারাজিবন চেষ্টা করেও শেখা যায় না
>> ওকে দেখি কত দিন লাগে
>> চল বাসায় যায়
.
নিরু আর মাহির বাসায় চলে আসলো,
রাতে মাহিরের মা মাহিরকে ফোন দিলো, হালকা কান্না জড়িত কন্ঠে মাহিরের মা বললো, 
>> তুই এটা কি করলি
>> কি করেছি আমি
>> তুই আমাদের না জানিয়ে বিয়ে করে ফেললি
মাহির মুখের বুলি হারিয়ে গেলো, একি মা জানলো কিভাবে। কে বললো
>> তোর বাবা তো বলেছে ও যেনো কোনো দিন আর আমার সামনে না আসে
মাহির নিশ্চুপ
>> বিয়েই যদি করবি আমাদের জানাবি না, আমরা বিয়ে করাতাম
>> সরি মা ভুল হয়ে গেছে, মাফ করে দাও প্লিজ
>> আমি তো মাফ করে দিয়েছি কখন কিন্তু তোর বাবা, সে তো মানবে না
>> দেখি বাবার কাছে দাও একটু
>> কথা বলবে না
>> কোনো দিন না
>> হয়তো
.
মাহিরের কথা টা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেলো।  ফোনটা কেটে দিলো। আসলেই তো একবার বলেও তো দেখা যেতো, কিন্তু হুটহাট চিন্তা করে সব তার জলে গেছে

নিরু : কিরে কি হয়েছে, তোর মুখটা এমন শুকিয়ে গেছে কেন
>> মা বাবা জেনে গেছে যে আমি বিয়ে করেছি
>> কিভাবে
>> আমি কি জানি, কেউ হয়তো বলে দিয়েছে
>> এখন কি হবে
>> কি আবার হবে সারাজিবন ঢাকাই থাকতে হবে,  বাড়ি আর যেতে পারবো না
>> তাহলে তো প্রব্লেম
মাহির কথার উত্তর না দিয়ে চুপ চাপ বসে রইলো নিরু ও তাই কইলো
.
দুদিন পর, 
.
>> মাহির আমার একটু মামার বাড়ি যেতে হবে
>> কেন
>> মামির নাকি অসুখ
>> আসবি কখন
>> বিকালে
>> ঠিক আছে
.
নিরু চলে গেলো, বিকালে নিরু বাসায় না আসলে চিন্তায় পরে গেলো মাহির।
ফোন দিলো নিরুর ফোনে কিন্তু ফোন ধরলো অন্যকেউ
>> কে
>> আমি তোর মা
>> মা তুমি, তোমার কাছে নিরুর ফোন আসলো কি করে
>> নিরু আমার কাছে তাই
>> কি বলো,
>> হুম, মেয়েটার তো আর  কোনো দোষ নাই, তাই ওকে আমি ফোন দিয়ে আসতে বললাম তাছাড়া তোর বাবাও পছন্দ হয়েছে নিরু মাকে, যখন শুনলো যে  ও এতিম, তখন তোর জাগয়াটা ওর নামে বরাদ্দ করে দিলো।
>> বুজলাম না কি বলো
>> বুজতে হবে না, তুই এক কাজ কর, আমার মেয়ের জিনিস পত্র গুলা আমার বাড়িতে দিয়ে যা।
>> বুজতে পারছি, এতো তাড়াতাড়ি তোমার মেয়ে হয়ে গেছে না,
>> ওকে আমি সব জিনিস নিয়ে আসতাছি
>> তোর আসতে হবে না
>> আমি আসবো না মানে,
>> তোর আসা নিষেধ,
>> আমি না আসলে জিনিস পত্র অানবো কিভাবে
>> গেইট পর্যন্ত এনে দিলেই  হবে
>> এ দেখি খালখাল কেটে কুমির আনার জো...
>> কালকের মধ্যে সব জিনিস পত্র দিয়ে যাস
.
মাহির রাগে ফোন টা কেটে দিলো,  তার মানে,  বাবা মাকে বিয়ের কথাটা ওই বলেছে, পাই সামনে, কিন্তু এক দিক দিয়ে  ভালোই হয়ছে, তার নিজের তো বলার সাহস ছিলো না কাজ টা নিরুই করে দিয়েছে।
কিন্তু নিরু তার সাথে এতো বড়ো একটা ধাপ্পাবাজি করলো এটা বিশ্বাস করতে পারছে না।
পরের দিন জিনিস পত্র নিয়ে বাসার গিয়ে ফোন দিলো নিরুকে।  ফোনটা আবার ধরলো মাহিরের মা
>> জিনিস পত্র এনেসিস
>> হ্যা,  নিয়ে যাও
>> তুই রিক্সা টাকে ভিতরে পাঠিয়ে দে,
মাহির অবোধের মত রিক্সা টাকে ভিতরে পাঠিয়ে দিলো।
নিজেও বাসার সামনে থেকে চলে আসলো, কি হচ্ছে তার সাথে কিছুই বুজতে পারছে না মাহির।
.
বন্ধুর  বাড়ি তে চলে গেলো মাহির,  রাতে নিরুকে ফোন দিলো,
>> কি হচ্ছে কি
>> কি আবার হবে,  তুই আউট হচ্ছিস  আর আমি ইন হচ্ছি
>> নিরু মজা বাদ দে , এমনিতেও দুদিন হলো তোকে দেখি না, তার উপর ফ্যামিলি ড্রামা।
>> বাহ  বাহ আমার জামাই এর দেখি আমায় নিয়ে অনেক টেনশন
>> টেনশন হবে না,  আর তাড়াতাড়ি আমায় বাড়িতে ঢোকানোর ব্যবস্থা কর
>> করছি তো তবে ৩-৪ দিন সময় লাগবে
>> ওকে, লাগুক,  এখন শোন,  চল কাল কোথাও ঘুড়তে যাই
>> কাল, ওকে

পরের দিন বিকালে, নিজের বাড়ির সামনে অচেনা মানুষের মতো ঘুড়তে লাগলো মাহির,  নিরুর বের হতে লেইট হচ্ছে বলে ফোন দিলো নিরুকে, কিন্তু নিরু ফোনটা রিসিভ করলো না।  মিনিট ছয়- সাত পর শাড়ি পরে বের হচ্ছে নিরু। হঠাৎ ই দড়জায় দাড়ানো মাহিরের বাবা বললো,
>> কোথাই যাচ্ছো মা
>> এই তো বাবা একটু ঘুড়তে বের হচ্ছি
>> না না তোমার ঘুড়তে যেতে হবে না
স্তব্ধ মাহির ভয় ভঙ্গে বললো,
>> কেনো যেতে হবে না
মাহিরের বাবা ছেলের সাহসিকতায় অবাক হয়ে বললো,  আমার মেয়েকে আমি যেতে দেবো না
>> আপনার মেয়ে হওয়ার আগে ও আমার স্ত্রী। ও যাবে আমার সাথে
>> না যাবে না
>> কেনো আমার সাথে এমন করছেন
>> কি করছি
>> মিস বিভেব করছেন কেন আমার সাথে
>> তোমার সাথে কই মিস বিহেব করলাম
>> এই যে আমার  বউ কে আমার থেকে আলাদা করে রেখেছেন, আবার আমায় বাড়িতে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।
>> তুমি কি মাফ চেয়েছো
>> কিসের জন্য
>> কিসের জন্য মানে,  ভুল করে আবার বলছে কিসের জন্য মাফ
মাহিরের আর বুঝতে বাকি রইলো না কি বলছে তার বাবা।
দৌড়ে চলে গেলো তার বাবার কাছে।  বাবার পা ছুতে যাবে তখনই মাহিরের বাবা মাহিরকে টেনে বুকে নিয়ে নিলো,
>> আরে পা ধরতে হবে না , তুই আমার সাত রাজার ধন, তোর একটা দোষ কেন হাজারটা দোষ মাফ করে দিতে পারি
মাহিরের চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরতে লাগলো
কিছু বলার ভাষা তার নেই,
>> আরে কাদছিস কেন
>> ঠুকরে কাদছে মাহির
>> মাহিরের মা দেখো তোমার ছেলে কাদছে কেমন করে।
.
মাহির এবার হাসি কান্নার মিশ্রিত বললো, বাবা ইউ আর গ্রেট।
.

বন্ধুত্ত ((( শেষ পর্ব,,, তুই থেকে তুমি তে)))
.
PM Abdullah Mahir ( নিরুময়)
...
..
নিরুর আসার পর থেকে ফ্যামিলি টা কেমন যেনো পরিপুর্ন হয়ে গেলো । মেয়েটাও কেমন জানি সবাইকে আপন করে নিয়েছে।
মাহিরের  বাবা মাকে,,, মা আর বাবা বলে ডাকে নিরু যেখানে মা বাবা কে  আব্বু আর আম্মু বলে ডাকতো মাহির।  নিরু আসার পর সেটা চেন্জ করতে হয়েছে মাহির কে।

নিজের জিবনের সুন্দর এই মুহুর্ত গুলোকে মনে করতেই আনন্দ হয় মাহিরের।

বারান্দায় বসে বসে চিন্তা করছিল মাহির। কোথা থেকে যেনো নিরু আসলো।
- কিরে কি করস
- কিছু না,,  আই বস
- ভাবতাছি তোকে তুই বলা বাদ দেব কিন্তু পারি না অনেক দিনের অভ্যাস তো
- হুম আমিও তো।
- মাঝে মাঝে তো বাবা মার সামনে লজ্জা জনক মুহুর্ত হয়ে যায় যখন তোকে আমি তুই বলি বা তুই আমাকে বলোস।
- হুম।
- এখন থেকে সব কথা তুমি করে বলতে হবে কেমন
- ওকে
নিরু চলে গেল মাহির বারান্দায় দাড়িয়ে রইলো

সকালে খেতে বসেছে মাহির নিরু তার বাবা মা।
মাহিরের বাবা - মা রান্না টা অনেক সুন্দর হয়েছে
নিরু - ধন্যবাদ মা
মাহিরের মা - বৌমা তুমি আসার পর তো একদিন ও আমায় রান্না ঘরে ঢুকতে দিলে না, আমার ও তো মাঝে মাঝে মন চাই   রান্না করি।
নিরু : না মা আমি আছি না আপনাকে রান্না ঘরে যেতে হবে না আপনি শুধু রুমে বসে বসে আদেশ দিবেন কেমন।
মাহিরের মা - কিন্তু একা একা তো সময় পার হয় না,  আমার জন্য তাহলে একটা নাতি নাতনির ব্যবস্থা করে দাও
কথা টা শুনে নিরুর মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেল।
নিরু - মা আপনিও যে কি না, সেটা পরে দেখা যাবে
- পরে আর কবে বয়স তো অনেক হলো
- হয়েছে মা আর বলতে হবে না,  তাছাড়া এই সব কথা কেন যে বলেন। আপনাকে আমাদের সাথে সারাজিবন থাকতে হবে।
- তাই কি সম্ভব
- যত টুকু সম্ভব ততটুকু তো থাকবেন
এর মাঝে হঠাৎ মাহির বেশম খেলো।  একসাথে তিনজন মানুষ মাহিরের জন্য পানির গ্লাস এগিয়ে দিলো। মাহির কার গ্লাস নিবে। দ্বিধা বাদ দিয়ে তিনটা গ্লাস একসাথে নিলো হাতে মাহির। তার পর সব গুলা থেকে এক চুমুক করে খেলো, কাহিনি টা দেখে সবাই হেসে উঠলো ।

খাওয়া দাওয়া শেষে আবার বারান্দায় গিয়ে বসলো মাহির।
কিছুক্ষন পর নিরু আসলো
- কি করস
- কিছু না রেস্ট এ আছি
- আর কত রেস্টে থাকবি তুই
- কি করবো কাজ পাবো কই
- বাবা কে বল একটা ব্যবসা খুলে দিতে
- না ভাবতাছি ব্যবসা না চাকরি করবো
- চাকরি করতে হলে তো ঢাকা যেতে হবে
- হুমম তা তো যেতে হবে
- ঢাকা আমি যেতে দিবো না
হটাৎ মাহিরের বাবা বারান্দায় আসলো সাথে মাহিরের মা
- বাবা মা বসো তোমরা
নিরু উঠে গিয়ে চেয়ার আনলো দুটো।
- মাহির তোরা নিজেদের মাঝে তুই মুই করে কথা কেন বলিস এটা আমার তোর মার কারোর ই ভাল লাগে না।
- আসলে বাবা অনেক দিনের অভ্যাস তো তাই যাচ্ছে না।
- তাছাড়া আমরা চেষ্টা করছি তুমি আমি বলার। ( নিরু)
- হুমম,,,ভালো
- দেখুন না বাবা আপনার ছেলে নাকি ঢাকা যাবে চাকরি করতে
- কেন ঢাকা যেতে হবে কেন আমার যা আছে তাতেই চলবে তুমি বাড়ি বসে আমার ব্যবসা সামলাও
- না বাবা আমি চাকরি করবো
- চাকরি করার দরকার নেই তো
- আমার অনেক ইচ্ছা পড়াশোনা শেষে বড় একটা চাকরি করবো,  পুরো ফ্যামিলিকে চালাবো
- আমার যা ব্যবসা আছে তাতে হয়ে যাবে তো
- প্লিজ বাবা
- যেতে দাও তো,,,  ওর আর দরকার নেই নিরু থাকলেই চলবে। (  মাহিরের মা)
- ঠিক বলেছো নিরু মাকে নিয়েই থাকবো আমরা
- বাহ এখন দেখি আমার আদর সব টান্সফার হয়ে যাচ্ছে।
- ঢাকা গেলে আরো যাবে

নিরু মিট মিট করে হাসছে, আর মাহিরের কিন্ঝিত রাগ হচ্ছে।

মন যেতে চাইছে না মাহিরের তবুও কিসের যেনো একটা জিদ তৈরী হলো যাওয়ার।
কয়েক দিন পর, 
- বাবা মা ভালো থাকবেন
- তুই ও ভালো থাকিস, আর ভালো মতো যাস
নিরুর দিকে তাকিয়ে দেখি মেয়েটার চোখে পানি,
নিরুকে কাছে ডাক দিলাম,
- কাদছিস  কেন
- তুই যাচ্ছিস কেন
-কাদার দরকার নেই আমি কিছুদিন পর ফেরত আসছি তো
- হুমম....
- ভালো থাকিস  গেলাম
- মাহির শোন একটা কথা বলি
- কি
- তোর জন্য একটা অফার আছে
-কি বল না
- তুই যদি ঢাকা না যাস তাহলে এতো দিন তুই যা চেয়েছিস তা দেব।
- সত্যি
- হুমম
- না থাক আমাকে ঢাকা যেতে হবেই
- ওকে যা
বাসা থেকে বের হয়ে স্টেশন পর্যন্ত গেলো মাহির ।  কিন্তু বাসে আর ওটা হলো না তার,,,,
বাসায় চলে আসলো
- কি বাবা যাও নি তুমি
- না ভাবলাম তোমাদের সাথেই থাকি
- ভালো করেছ
- নিরু কই
- রুমে হয়তো
- আচ্ছা
রুমে গিয়ে দেখি নিরু শুয়ে আছে
- কিরে কি হয়েছে
- নিরু লাফ দিয়ে উঠলো ,  তুই যাস নি
- না এতো বড় একটা অফার কি ফেরত দেওয়া যায়
- তাই না ( লজ্জায় নিরুর মুখ টা লাল হয়ে গেল)

সত্যি সত্যি নিরু তার কথা টা রাখলো।
এর পর থেকে মাহির  বাসায় স্থায়ি হয়ে গেলো । বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করে আর বাড়ি ঘর।
সেদিনের পর থেকে নিজের মাঝে কেমন যেনো একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করলো মাহির আর নিরু , কেমনে জানি তাদের কথা বলার ধরন চেন্জ হয়ে গেল।  এখন চাইলেও তারা  তুই মুই বলতে পারে না।
এভাবেই চলতেই থাকলো,
বছর খানেক পর,
নিরুর আর মাহিরের কোল জুড়ে এলো ফুটফুটে একটা ছেলে,
মাহিরের বাবা পিচ্চি কে কোলে নিয়ে বললো, দেখছো নিরু তোমার ছেলেটা পুরো আমার মতো হয়েছে।
মাহিরের মা পিচ্চি কে কোলে নিলে বললো, কই তোমার মত শুধু নাক টা হয়েছে তোমার মতো কিন্তু আর সব আমার মত।মাহির তার  মায়ের কোল থেকে নিয়ে,,, না তোমাদের কারোর মত হয় নি,, ও হয়েছে আমার মত।
নিরু এবার বললো,  তোমাদের কারোর  মতোই না,,, ও হয়েছে আমার মত।

হুম ঠিক নিরুর মতই হয়েছে.....

ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন......