*****আত্মার সাথে ভালোবাসা*****
(লেখক রাহিম মিয়া)
'
'
শিক্ষামূলক গল্প
'
'
'
আজও রাতে ঘুমটা ভেঙে গেল সেই স্বপ্ন দেখে,লাফ দিয়ে উঠে বিছানাতে বসে কপালে হাত দিয়ে দেখি ঘামে প্রায় ছুঁই ছুঁই করছে সেই সাথে শরীরেও। প্রায় একাই ভয়াবহ স্বপ্ন কেন দেখি আমি কিছু বুঝি না। কেন বারবার এইস্বপ্নটা দেখি? মেয়েটা আসলে কী বুঝাতে চাচ্ছে? না গলাটা শুকিয়ে গেল পানি খেয়ে নেয় আর সকালে কলেজে যেতে হবে চিন্তা না করে ঘুমালে ভালো হবে হয় তো।
আমি এইভেবে পাশে রাখা গ্লাস থেকে পানি খেয়ে শুয়ে পড়লাম।
অ আপনাদেরকে পরিচয়টা দিয়ে দেয়, আমি রাহিম, এইবার অর্নাসে প্রথম বর্ষে পড়ছি, ছাত্র হিসাবে অনেক ভালো, আর যে স্বপ্নের কথা বলছিলাম সেটা প্রায় ই দেখি। মেয়েটা আসলে আত্মা নাকি মানুষ আমি আজ পর্যন্ত বুঝতে পারিনি কারণ পুরাভাবে মেয়েটাকে দেখতে পাইনি তো তাই। প্রায় ই একটা মেয়ে আমার স্বপ্নের মাঝে এসে বলে বাবু তোমাকে ছাড়া আমি একা একা থাকতে পারি না প্লিজ আমার কাছে চলে আস।
আর কত অপেক্ষা করবো তোমার জন্য বলো? আমি যে তোমাকে অনেক ভালোবাসি আর ঘুমহীনা আমি আর তুমি কিনা ঘুমাচ্ছ আমাকে একা একা রেখে। ধোঁয়ার মাঝে মেয়েটা বলতে লাগলো কিন্তু যখনি মেয়েটাকে ছুঁতে যাবো স্বপ্নটা ভেঙে যাবে। কিন্তু আমার নাম তো বাবু না, তাহলে কেন মেয়েটা বাবু বলছে? আর মেয়েটা সুর ভয়ানক কেন? হুম অতীত তো অনেক শুনলেন এইবার বাস্তবে আসি।
সকালে উঠে দেখি কলেজের ক্লাস শুরু হতে মাত্র ২০মিনিট বাকি আছে তাই তাড়াহুড়া করে প্রস্তুত হয়ে নিলাম যাবার জন্য। কলেজে গিয়ে দেখি আমার বন্ধু হৃদয়, আকাশ, মাসুদ এসে গেছে, আমাকে দেখা মাত্র ই হৃদয় বলতে শুরু করলো
>>কিরে শালা রাতে কী হাডুডু খেলিস নাকি? কলেজে আসতে এত দেরি হয় কেন?
>>আর বলিস না দোস্ত ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে আর শালা আমার বউ আছে নাকি যে হাডুডু খেলবো, তুই না হৃদয় কথা না বুঝে বলিস বেশি।
>>কেন হারামী বিয়ে আগে কী হাডুডু খেলা যায় না নাকি?
>>হ্যাঁ যায় তবে সেইসব পাপ রে আর তুই কী মনে করিস তোর বন্ধু রাহিম সেইসব করবে?
>>না একদম না তুই এইসব করতে পারিস না তোকে ভালো করে ই চিনি, ভালো করে মেয়েদের সাথে কথাই বলতে পারিস না ভয়ে। আচ্ছা সেইসব বাদ দে বল এত ঘুম কিসের?
>>দোস্ত আর বলিস না একটা স্বপ্ন আমি প্রায় ই দেখি যার কারণে অনেক সময় রাতে ঘুম ভেঙে যায় তাই ঘুমের চাপ পড়ে।
>>কিসের স্বপ্ন রে?
>>একটা মেয়েকে নিয়ে দোস্ত।
>>মেয়েকে নিয়ে কী স্বপ্ন দেখিস? (সবাই একসাথে বলে উঠল)
>>বাদ দে এইসব আরেকদিন বলবো তোদের, চল ক্লাসে যায় সবাই আর মাত্র ২মিনিট আছে শুরু হয়ে যাবে ক্লাস কিছুক্ষণের মাঝে।
>>আচ্ছা চল হারামী কিন্তু আরেকদিন না বললে তোর খবর আছে বলে দিলাম।
হৃদয় এই বলে আমাকে আর আকাশ ও মাসুদকে নিয়ে ক্লাসে চলে গেল মানে আমরা ক্লাসে চলে গেলাম। তারপর ক্লাস করে বারবার সবাই জানতে চাচ্ছে মেয়েকে নিয়ে কিসের স্বপ্ন। আমি ই তো পুরা মতে জানি না স্বপ্নের মানে তাদেরকে কী বলবো তাই বলে দেয় আরেকদিন বলবো, এই বলে বাসাতে চলে গেলাম।
বাড়িত এসে রাতে খেয়ে ভাবতে লাগলাম স্বপ্নের মেয়েটা আসলে কে? আর প্রতিবার এক ই স্বপ্ন আসার মানে কী?
ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল চোখ মেলে দেখি ঘরের সব জিনিস কাঁপছে। আমি তো দেখে প্রায় ভয়ে শরীর কাঁপতে লাগলো,ভূমিকম্প হলে তো মাটি সহকারে কাঁপে কিন্তু ঘরের জিনিসপত্র শুধু কাঁপছে কেন? শিখা যত সূরা আছে সব পড়তে শুরু করলাম হঠাৎ কেউ আমার সামনে এসে উপস্থিত দেখে তো শরীরে লোম দাঁড়িয়ে গেল আমি যেন অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছি এটা কী করে সম্ভব, তখনি মেয়েটা বলে উঠলো
>>কেমন আছে বাবু আর আমাকে দেখে এত ভয় পাচ্ছে কেন?
>>ক ক কে আপনে (ভয়ে তোতলা হয়ে প্রায় শেষ)
>>আমি তোমার ভালোবাসা মানুষ জান্নাত চিনতে পারছো না? প্রায় দেড়শত বছর ধরে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি বাবু আর কত করবো বলো?এইবার আমার সাথে তোমাকে যেতে হবে।
>>কিন্তু আমি তো আপনাকে চিনি না, আপনার পরিচয় দেন? আর দেড়শত বছর মানে? আর আমার নাম তো রাহিম বাবু বলছেন কেন?
>>আরেকবার জন্ম নেওয়ার কারণের সব ভুলে গেছ কিন্তু আমি তোমাকে সব বলছি। প্রায় ১৭০বছর আগে তোমার জন্ম হয়, তখন তোমার নাম ছিল বাবু আর আমি ছিলাম তোমার খেলার সাথি জান্নাত। তখন বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমরা একে অপরকে ভালোবাসতে শুরু করলাম, কিন্তু আমাদের ভালোবাসা উপর কারো নজর পরে গেল। আমার ফুফাতো ভাই আমাকে বিয়ে করার জন্য পিছু পড়ে গেল, তখনি আমরা দুইজন হাত ধরে পালিয়ে যায় কিন্তু তারা আমাদের পিছু ছাড়েনি তাই একহতে পারবো না বলে আমার দুইজন পাহাড় থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলাম, তখন তোমার বয়স ছিল ২০আর আমার ১৮বছর।আর আমি আল্লাহ কাছে মৃত্যুর আগে বলেছিলাম আমাদের যাতে আরেকবার জন্ম হয় কিন্তু শুধু তুমি জন্ম গ্রহণ করলে তাও অনেক দেরিতে। তোমাকে কত খুঁজেছি পাইনি, পরে জানতে পারি তুমি দুনিয়াতে আসবে আবার তাই রুহু বন্দি করে দেখেছে কোন এক জায়গাতে। তখন খুব কষ্ট হয়েছিল যানো বাবু তুমি দুনিয়াতে আসবে কিন্তু আমি আসবো না বলে। আল্লাহ ফেরেস্তার কাছে জানতে চাইছিলাম কেন আমাকে দুনিয়াতে পাঠাবে না?তখন তারা বলে তোমরা আত্মহত্যা করে মহাপাপ করেছ তাই তোমাদের মিল কখনো হবে না আল্লাহ বলেছে। তখন ভেবে ফেলেছি তুমি যখন বড় হবে তোমাকে আমার সাথে নিয়ে যাবো, আমি যে তোমাকে অনেক ভালোবাসি বাবু।
>>তার মানে তুমি আত্মা আর আমার সাথে তোমার সম্পর্ক ছিল?
>>হ্যাঁ বাবু আর এতদিন স্বপ্নের মাঝে এসে তোমাকে বুঝাতে চাচ্ছিলাম আমার সাথে যেতে, কিন্তু তুমি বুঝ না তাই দুনিয়াতে ঘুরবো বলে ৩দিনে সময় নিয়ে এসেছি উপর থেকে শুধু তোমাকে আমার সাথে নেওয়ার জন্য।
>>আচ্ছা এখন যাও তুমি আমি আগামীকাল ভেবে বলবো তোমার সাথে যাওয়ার কথা।
>>আচ্ছা বাবু তবে আমি কিন্তু তোমার আশেপাশে ই থাকবো।
>>ঠিক আছে যাও এখন।
এই বলার সাথে সাথে জান্নাত চলে গেল আর আমি ভাবতে লাগলাম কেউ কাউকে এত ভালোবাসতে পারে কীভাবে? কিন্তু সে তো আত্মা আর আমি দেহ গড়া মানুষ কীভাবে জান্নাতের সাথে যাবো আগামীকাল জানতে হবে। এইভেবে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে কারো ডাকে ঘুমটা ভেঙে গেল চোখ মিলে দেখি আমার পাশে নাস্তা রাখা আর জান্নাত বসে আছে। আমি নাস্তার দিকে চেয়ে অবাক হয়ে গেলাম।
>>এই নাস্তা কে বানিয়েছে জান্নাত?
>>আমি বানিয়েছি তোমার সব পছন্দের খাবার।
>>কিন্তু তুমি এইসব যান কীভাবে যে আমি এইগুলো খেতে ভালোবাসি?
>>উপর থেকে দেখেছি তুমি প্রায় এইসব খাবার খেতে বেশি তাই মনে হলো হয় তো পছন্দের খাবার আর এখন উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে আস।
>>আচ্ছা যাচ্ছি বাবা।
তারপর ফ্রেশ হয়ে এসে নাস্তা খেতে খেতে বলতে লাগলাম
>>অনেক ভালো বানাও দেখছি তবে জান্নাত একটা কথা বলি তুমি কী কারো দেহে একবারের জন্য প্রবেশ করতে পারবেনি মৃত কিংবা জীবিত দেহের মাঝে।
>>না বাবু একবার দেহ থেকে রুহু বের হলে প্রবেশ করা যায় না নিজে নিজে।
>>তাহলে আমার সাথে থাকবে কীভাবে?
>>কেন তুমি আমার সাথে যাবে।
>>কিন্তু কীভাবে যাবো?
>>তুমি এই দেহ ত্যাগ করবে।
>>মানে?
>>মানে তোমাকে মারা যেতে হবে তারপর আমার সাথে যাবে।
>>কী বলছ এইসব?
>>হুম যা বলেছি তাই করতে হবে তোমাকে।
>>আচ্ছা আগামীকাল ভেবে বলি।
>>ঠিক আছে আর আগামীকাল তোমাকে মৃত্যুবরণ করে আমার সাথে যেতে ই হবে।
>>আচ্ছা আমি এখন কলেজে যায় সময় হয়ে গেছে কলেজের।
আমি এই বলে ব্যাগ নিয়ে কলেজের উদ্দেশে চলতে লাগলাম আর ভাবতে লাগলাম দেহ ত্যাগ করা কী ঠিক হবে? কলেজে এসে তিন বন্ধুকে সব খুলে বললাম, তারা আমার কথা শুনে প্রথমে অবাক হয়ে গেল। সবাই একমত হয়ে বললো তোদের যদি মিল হতো তাহলে ঐ মেয়েটা আবার জন্ম হতো যেখানে আল্লাহ থেকে বলা হয়েছে মিল হবে না, সেখানে মিল হওয়ার অসম্ভব আর জীবন খুব মূল্যবান তা ত্যাগ করতে নেই।বন্ধুদের কথা শুনে বাড়িতে চলে আসলাম কলেজের ক্লাস করে । বাড়িত এসোও ভাবনায় পড়ে রইলাম তখন আম্মু বলে উঠলো
>>কী ভাবছিস বাবা এত মন দিয়ে?
>>আম্মু তোমাকে কিছু কথা বলার ছিল। (আমি সব বলে)
>>বলিস কী রাহিম তুই আমাকে আগে বলিস নি কেন বাবা?
>>বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমি কী জানতাম জান্নাত আমাকে মরে যাওয়ার জন্য বলবে তাই এইবার তোমাকে বলেই ফেললাম। এইবার বলো কী করবো আম্মু?
>>বাবা শুন সে যদি তোকে সত্যই ভালোবাসতো তাহলে মরার যাওয়ার জন্য বলতো না বরং তোর অপেক্ষা করতো আর বাবা জীবনে দাম অনেক তোকে আর কী বুঝাবো অর্নাসে পড়িস যখন হয় তো সব বুঝিস।
>>আচ্ছা আম্মু বুঝলাম।
>>আর হ্যাঁ মেয়েটাকে বুঝিয়ে বলিস দেখিস সব ঠিক হয়ে যাবে, সে হয় তো অপেক্ষা করতে পারে সেটা তাকে বুঝাবি বুঝেছিস।
>>ঠিক আছে আম্মু এই বার টেবিলে খাবার দেও ক্ষিধা লেগেছে, আমি টেবিল গিয়ে বসছি।
>>আচ্ছা হাত মুখ ধুয়ে আয় আমি টেবিলে খাবার আনছি।
তারপর খাওয়া দাওয়া করে বিছানাতে বসে বসে বই পড়ছিলাম তখনি জান্নাতে আগমন।
>>আমার বাবুটা কী করছে?
>>এই তো বই পড়ছিলাম কখন আসলে?
>>এইমাত্র এসেছি আর তুমি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত আছো তো মানে আমার সাথে যেতে?
>>তার আগে তোমাকে কয়েকটা প্রশ্ন করি উওর দিবে জান্নাত?
>>বলো কী জানতে চাও।
>>তুমি আমাকে কতটা ভালোবাস?
>>অনেক ভালোবাসি কল্পনার বাইরে।
>>আমার সুখ দেখলে কিংবা আমি সুখি থাকলে কী তুমি কষ্ট পাবে?
>>না বাবু তোমার সুখ ই তো আমার সুখ বরং তুমি সুখি থাকলে আমি খুশি হবো।
>>তাহলে একটা কথা বলি তুমি যদি আমাকে সত্যিই ভালোবেসে থাকো আর আমার সুখ ই যদি তোমার সুখ হয় তাহলে তোমাকে অপেক্ষা করতে হবে আমার স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুর জন্য। আর জান্নাত মিলন লেখা থাকলে অবশ্যই হবে আমাদের। আমি আমার পরিবারকে ছেড়ে এখন যেতে পারবো না তাদেরকে ছেড়ে যেতে কষ্ট হবে।পারবে না আরো অনেকটি বছর অপেক্ষা করতে স্বাভাবিক মৃত্যু যতদিন না হয়?
>>হ্যাঁ খুব পারবো আর বাবু তোমার সুখ ই তো আমার সুখ তবে মাঝে মাঝে দুনিয়াতে এসে দেখা করবো আর তুমি বিয়ে করতে পারবে না বলে দিলাম।
>>আচ্ছা করবো না বিয়ে আর তোমাকে খুব মিস করবো।
>>হুম বাবু আমিও মিস করবো এখন বাবু আমি যায় তুমি ঘুমাও আরেকদিন দেখা হবে।
>>আচ্ছা যাও আমিও মিস করবো আর আমার আত্মার সাথে ভালোবাসা নিয়ে বই লিখবো একটা ভাবছি তোমাকে সাজিয়ে।
>>আচ্ছা লিখো আল্লাহ হাফেজ।
>>খোদা হাফেজ জান্নাত।
(সমাপ্ত)
পরিশেষে সত্যিকারে ভালোবাসা মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকে ।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ