***অমর ভালোবাসা ***(লেখক রাহিম মিয়া)
'
'
'
'
'
বিকালে ছাদে বসে মনোমুগ্ধকর প্রকৃতির দৃশ্য দেখছিলাম আর তার কথা ভাবছিলাম কত না ভালোবাসত আমাকে, এমন কি মরণকেও হার মানাল আমাকে ভালোবেসে।
(ভাবনায় ছেদ পড়ল কারো ডাকে)
-----ওই বড় আম্মু কি ভাবছ? আব্বু থেকে শুনেছি তোমার বংশধর নাকি জমিদারি বংশ ছিল আর তোমার আব্বু নাকি জমিদার ছিল, কিন্তু আমাদের বড় আব্বু বলে সাধারণ মানুষ ছিল, তার জন্য বলে তাকে অনেক পরীক্ষা নেয় তোমার আব্বু, যে তোমাকে সত্য ভালোবাসে কিনা গল্পটা আমাদেরকে প্লিজ বল (ইমন মানে আমার নাতিন এর ছেলে রাসেল আর মেয়ে সুমা আমার কাছে থেকে জানতে চাচ্ছে আমাদের ভালোবাসার কাহিনী)
----তাহলে শুনতে চাস শুন তাহলে আমাদের ভালোবাসার কাহিনি (এর বলে আমি চোখ দুইটি বন্ধ করে অতীতে চলে গেলাম)
আমি ছিলাম জমিদার খন্দকারের একমাত্র মেয়ে খাতুমা খন্দকার। আমার আব্বু আমাকে অনেক ভালোবাসতেন যেহেতু আমি তার একমাত্র মেয়ে।আমি ছিলাম অনেক দুষ্টু আর রাগী তাই আমি যা চাই তাই দিতে হবে।
আমাদের জমিদার বাড়ি বাহিরে একটা ছেলে কাজ করতো মানে বাগানের দেখাশুনা করতো ছেলেটি ছিল জমিদার বাড়ির কাজের বুয়ার ছেলে ইউসুফ মানে তোমাদের বড় আব্বু।
আমি প্রতিদিন সকালে উঠে বাগানের দিকে চেয়ে দেখি ইউসুফ বাগানে ফুল গাছে পানি দিচ্ছে। ওকে আমার অনেক ভাল লাগত। তো একদিন
----এই ইউসুফ এইদিকে আসো তো তোমার সাথে কিছু কথা ছিল? (আমি জোরে ডাক দিলাম)
-----জ্বী বলেন মহারাণী কি করতে পারি।
----তোমাকে না কতবার বলেছি আমাকে মহারাণী বলবে না। আমার তো একটা নাম আছে খাতুমা বলবে ঠিক আছে, এখন একটা কাজ কর তো ওইখান থেকে একটা গোলাপ ফুল এনে দেও তো (আমি নরম সুরে)
----জ্বী ভুলে গিয়েছিলাম আর হবে না আচ্ছা ফুল এনে দিচ্ছি। (এই বলে ফুল আনতে যায় ইউসুফ)
---আচ্ছা তাড়াতাড়ি এসো কিন্তু। (আমি হাসি দিয়ে)
---এই নেও খাতুমা তোমার ফুল (ইউসুফ এগিয়ে দিয়ে ফুল)
----না না নিতে পারব না তুমি মাথায় চুলের খোঁপাতে পরিয়ে দেও?(আমি দুষ্টামি করে)
---না খাতুমা তা হয় না তুমি নিজে পরে নেও। (ইউসুফ নিচে তাকিয়ে)
---কেন হবে না মনে কর এটা আমার আদেশ। (আমি রেগে গিয়ে)
---আচ্ছা দিচ্ছি খোঁপাতে ফুল লাগিয়ে ।
এই ভাবে প্রতিদিন আমি ইউসুফকে দিয়ে মাথায় খোঁপাতে ফুল পড়াতাম, আস্তে আস্তে আমি ওকে খুব ভালোবেসে ফেলি কিন্তু বলতে পারি না। মাঝে মাঝে ওকে রাজপ্রাসাদের খাবার খাওয়া দিতাম ইউসুফ বলত এই সব আমার খেতে নেই আমি বলতাম এটা আমার আদেশ, এইভাবে ওকে নিজের ভালোবাসা বুঝাতাম ইউসুফ হয় তো বুঝত যে আমি ওকে ভালোবাসি। তো একদিন আব্বু দেখে ফেলে যে ইউসুফ আমার খোঁপাতে ফুল পড়াচ্ছে। আব্বু তো রেগে আগুন হয়ে বলল।
----বেয়াদব তোর এত বড় সাহস আমার মেয়েকে স্পর্শ করেছিস, কে কোথায় আছিস বন্দি কর এই ছেলেকে । (আমার আব্বু রেগে উপদেশ দিল সেনাপতিকে)
----না আব্বু ইউসুফ কিছু করেনি, আমি ওকে বলেছি ফুল পরিয়ে দিতে। (আমি কান্নায় ভেঙে পরে)
-----কিন্তু কেন মা বলেছিস?
-----কারণ আব্বু আমি ওকে ভালোবাসি আর ইউসুফকে জীবন সাথী করব (আমি লাজ্জা শরম বাদ দিয়ে সাহস জুগিয়ে কান্নাই)
----আলবাদ তা কখনো হয় না, তুই জমিদারের মেয়ে আর তোর বিয়ে হবে জমিদারের ছেলের সাথে। এই ছেলে ইউসুফ আমার রাজত্ব পাবার লোভে তোকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছে সেনাপতি বন্দি কর এই ছেলেকে (আমার আব্বু অনেক রেগে)
---মহারাজ আমার আপনার রাজত্ব আর রাজসিংহাসন কিছু চাই না, আমি শুধু খাতুমাকে চাই। (ইউসুফ নিচু সুরে)
---তোর এত বড় মজলিজ আমার মুখের উপর কথা সেনাপতি বন্দি কর এই ছেলেকে (এই বলে হাতে দঁড়ি বেঁধে ফেলে সেনাপতি)
----আব্বু তাহলে আমার কথা শুনেন ইউসুফকে যদি বন্দি করা হয় আমিও আত্মহত্যা করব। (আমি কান্নায় ভেঙে)
----না মা তা করিস না তোর বাবার কি হবে তুই চলে গেলে, তবে ইউসুফকে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে যে তোকে ভালোবাসে কিনা। (আব্বু একটু নরম সুরে কঠিন উপদেশ)
--- জ্বী মহারাজ আমি খাতুমার জন্য সব করতে পারি বলেন কি পরীক্ষা নিবেন?
----প্রথমে পরীক্ষা তোমাকে ভেঙে ফেলা কাঁচের উপর দিয়ে হেটে যেতে হবে, ২য় পরীক্ষা তোমাকে আগুনের উপর দিয়ে হেটে যেতে হবে (আমার আব্বু কঠিন ভাষায়)
---জ্বী মহারাজ আমি সব করতে প্রস্তুত (ইউসুফ বীর পুরুষের ভাষায়)
---না ইউসুফ তুমি এইসব করতে যাবে না তোমার কিছু হলে আমি কি নিয়ে বাঁচব (আমি কান্নাই ভেঙে পরে)
----আমার কিছু হবে না তুমি বিশ্বাস রাখ আমাদের ভালোবাসা জয় হবে।
তারপর ইউসুফ যখন কাঁচের ভাংগার উপর দিয়ে হেটে যাচ্ছিল মনে হচ্ছিল কেউ আমার বুকে চাকু দিয়ে আঘাত করছিল। ইউসুফ যখন পুরা কাঁচের ভেঙে ফেলা পথটা পার হয়ে গেল, তার পা দুইটা থেকে রক্ত ঝরছিল আমি দৌড়ে গিয়ে ওড়না
ছিঁড়ে বেঁধে দিলাম। তারপর ইউসুফকে ২য় পরীক্ষা জন্য নেওয়া হল আগুনের সামনে, আমি আব্বুকে বারবার বলছি দয়া করে আব্বু এই পরীক্ষা নিবেন না, অ তো প্রথম পরীক্ষাতে বিজয়ী হয়েছে এটা নেওয়া কি দরকার।,কিন্তু তিনি আমার কথা শুনেন নি। কিন্তু আমি চমকে গিয়েছিলাম শেষে যখন ইউসুফ আগুনে পা রাখতে যাবে, তখনি আব্বু বলে উঠল থাম ইউসুফ তুমি তোমার ভালোবাসার পরীক্ষাতে বিজয়ী হয়েছ প্রথমে ই, তোমাকে আর আগুনের উপর চলতে হবে না। আজ থেকে আমি জমিদার খন্দকার ঘোষণা করছি ইউসুফ আমার জামাই আর আমার মেয়ে খাতুমার সাথে আগামিকাল ইউসুফের বিবাহ।
পরে অনেক ধুমধামে আমাদের বিয়ে হয়।
---কি ব্যাপার দাদী আমার বাচ্চা দুইটা কাঁদছে কেন? (ইমন হঠাৎ ছাদে প্রবেশ করে দেখে তার বাচ্চা কাঁদছে)
----আরে দাদুভাই যে, রাসেল আর সাথীকে তোমার দাদা আর আমার গল্পটা বলেছিলাম খেয়াল করিনি যে তারা কান্না করছে, খেয়াল করলে গল্পটা আর শুনাতাম না। (আমি চোখ দুইটি খুলে বাস্তবে ফিরলাম দেখি ইমন আমার সামনে আর তার ছেলে আর মেয়ে কান্না করছে হয় তো বা সুখের কান্না হবে)
-----কি যে বল দাদী তোমার আর দাদা গল্প শুনে আমিও তো কান্না করেছিলাম এরা করবে না কেন? (ইমন)
(সমাপ্ত)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ