*****মৃত্যু *****(লেখক রাহিম মিয়া)
(বাস্তব ঘটনা)
'
'
মসজিদের মাইক দিয়ে বলছে, একটি শোক সংবাদ পূর্ব পাড়ার নিবাসী মোহাম্মদ খুরশিদ মিয়া আজ দুপুরে ইন্তিকাল করিছে। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন) উনার জানাজার নামাজ পরে জানানো হবে। শুনে অবাক হয়ে গেলাম ১০০বছর উপর হবে লোকটার বয়স কিন্তু জানাজার খবর পরে জানানো হবে এটা আবার কেমন কথা। দুপুরে যেহেতু মারা গিয়েছে আছরের কিংবা এশারে নামাজের পরও তো জানাজা পড়িয়ে মাটি দিতে পারে। বড় লোকদের কি ভাব আসলে বুঝা মুশকিল। মৃত্যুর খবর শুনে এইগুলো ভাবছিলাম। লোকটা সম্পর্কে আমার দাদা হয় তাই জানাজার নামাজ অবশ্যই পড়তে হবে। দুপুর থেকে শুনার আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছি জানাজার সময় জানার জন্য। বিকাল দিকে হঠাৎ শুনতে পেলাম অটোরিক্সা মাঝে মাইক দিয়ে বলছে, একটি শোক সংবাদ সাবেক চেয়ারম্যান আর বিশিষ্ট বিচারক মোহাম্মদ খুরশিদ মিয়া আজ দুপুরে ঢাকা একটি হাসপাতাতে ইন্তিকাল করেছে, (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন)। উনার জানাজার নামাজ আগামীকাল দুপুরে জুম্মার নামাজের পর শেরপুর ঈদগাহ মাঠে পড়ানো হবে। সকল মুসলিম ভাইদেরকে জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করার জন্য উনার পরিবারে পক্ষ থেকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে। শুনে ২য় বারের মতো আবার অবাক হলাম। লোকটা মারা গেল বৃহস্পতিবার দুপুরে ১২টার পর আর জানাজার হবে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর হায় রে মানুষ। ভাবনার ভিতর হঠাৎ মাথাতে আসলো,আরে শুক্রবার তো মানুষ বেশি হয় মসজিদে, তাই হয়তো জানাজার মানুষ যাতে বেশি হয় তাই শুক্রবারের কথা বলেছে। কিন্তু লাশ রাখবে কীভাবে? আর বেশি মানুষের আশায় লাশ দেরিতে কবর দেওয়া কি ঠিক হবে?শুধু এইসব কথা ভেবে যাচ্ছিলাম। রাতে ১১টার দিকে দেখতে পেলাম একটা গাড়ি করে লাশ এনেছে, যেটার পিছুনে শুধু লাশ রাখা হয়। খবর নিয়ে জানতে পারলাম এটা আইস শীতলযুক্ত গাড়ি যেখানে পিছুনে ঠান্ডার মাঝে লাশ রাখা হয় আর ১০০বছরও সেখানে লাশ রাখলে নষ্ট হবে না। গাড়িটার মাঝে লাশ রাখা দেখে ভাবতে লাগলাম, হায় রে মানুষ দুনিয়াতে কত কি করে গেল, ৩টা বিয়ে করেছে, ছেলেমেয়ে ২০টার উপরে আর যুদ্ধের সময় হিন্দুদের জায়গা অল্প টাকা দিয়ে কিনে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে আর তাঁর লাশ কিনা আজ ঠান্ডাযুক্ত গাড়ির ভিতর। এটাই হয়তো নিয়তি, টাকা সম্পদ বানিয়ে গেলে কি হবে? দুনিয়ার মাঝে কবর দেরিতে দেওয়ার জন্য তাঁর রুহু হয়তো আজ কষ্ট পাচ্ছে। এইসব ভাবতে ভাবতে বাসার দিকে রওনা হলাম। সকালে আবার তাড়াতাড়ি উঠতে হবে নামাজের জন্য। সকালে ঘুম থেকে উঠতে উঠতে দেরি করে ফেললাম, তাড়াতাড়ি গোসল দিয়ে ঘড়ি দিকে তাকিয়ে দেখি কয়েকমিনিট বাকি আছে নামাজের। তাই বাড়ির পাশে মসজিদের চলে গেলাম, সেখান থেকে না হয় শেরপুর যাওয়া হবে জানাজা পড়ার জন্য। নামাজ পড়ে সোজা হাঁটতে লাগলাম শেরপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে। গিয়ে দেখি প্রায় অনেক মানুষ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে, আমিও মাঝ লাইনে গিয়ে ঢুকে পরলাম। পিছুন থেকে এক লোক থেকে শুনতে পেলাম মানুষ মরার আগে সোজা হবে না। ঘটনা শুনার জন্য কানটা খাড়া করলাম আর বুঝতে পারলাম লোকটা একটা গাড়ির রাখার জন্য সেই গাড়ির মালিকের উদ্দেশ্যে বলছে এই কথা। গাড়িটা খুরশিদ মিয়া মেয়ের জামাই এর যেটা নামাজের জায়গাতে রাখা হয়েছে। হায় রে মানুষ তাঁর শ্বশুড় মারা গেছে আর তিনি কিনা মানুষের জানাজার পড়ার জন্য দাঁড়ানো জায়গাতে গাড়ি রেখেছে আজব বড় মানুষ। ভাবনায় বিচ্ছেদ ঘটলো মাইকে দুইটা লাশ এই কথাটা শুনে। ভালো করে শুনে বুঝতে পারলাম পুরুষ বাদে আরেকটা মহিলার লাশও আছে আর তাই জানাজার নামাজ দুইবার পড়ানো হবে দুইজনের। মনটা খারাপ হয়ে গেল শুনে, আসলে মৃত্যু এমন এক জিনিস যা মানুষকে বলে আসে না। জানাজার নামাজ পড়ে চলে গেলাম দাদার কবর জিয়ারত করার জন্য। আমার আপন দাদা আবার গত কয়েকবছর আগে মারা গিয়েছে। যদিও আমার চাচাতো দাদা মোহাম্মদ খুরশিদ মিয়ার বয়সে ছোট ছিল।নিজের কর্ম স্থলে এসে আব্বুর থেকে কবর কুড়ার সম্পর্কে জানতে চাইলাম। আব্বু আবার শেরপুর নামাজ পড়ে আর সেখানে তাড়াতাড়ি চলে গিয়েছিল তাই জানতে অসুবিধা হয় নি, কিন্তু শুনে অবাক হয়ে গেলাম। শেরপুর কবরস্থানে বলে অনেকটি কবর কুড়ার পর দুইটা কবর পেয়েছে আর যেগুলো কবর করতে গিয়ে পারেনি ,সেখানে আস্তা মানুষের হাড়ও পেয়েছে। আর এক লাশ থেকে বলে তেল বের হয়েছে। হায় রে মানুষ মরে গেলে সব শেষ শরীরের সব কিছু মাটির সাথে মিশে যাবে।কিসের এত অহংকার? কিসের এত রাগ? কিসের এত হিংসা? তাই আসেন আমরা এইগুলো পরিহার করি আর ইসলামিকভাবে জীবন গড়ি।
(সমাপ্ত)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ