4874

ভাষা
লেখা:-মামুন রেজওয়ান
ভাষা আমাদের জীবনের অনেক বড় একটা অংশ। মানুষের ভাষা তার দেশ,বিভাগ,জেলা অত:পর এলাকার পরিচায়ক।বিদেশের মাটিতে বাঙালীদের ইংরেজি বলার ধরন আর এমেরিকানদের ইংরেজি বলার ধরন এক হবে না।একইভাবে কুদ্দুসের বরিশাইল্যা ভাষার সাথে আব্বাসের পুরান ঢাকার ভাষা কখনও মিলবে না।
অনেককে নিজের এলাকার ভাষা নিয়ে লজ্জিত হতে দেখেছি।অনেকে আড্ডার আসরের মাঝে থেকেও আড্ডায় অংশগ্রহন করে না শুধুমাত্র নিজের আঞ্চলিক ভাষা প্রকাশ পেয়ে গেলে,হাসির পাত্র হওয়ার ভয়ে।যেমন কুদ্দুস ঝাড়ুকে পিছা বলে ফেলবে এই ভয়ে ম্যাসে ঝাড়ু সম্পর্কিত কোন কথা উঠলে চুপ হয়ে যায়।
আসলে দোষ আমাদেরই,আমরাই কাউকে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করতে দেখলে তার নামের সাথে "ক্ষ্যাত" একটা উপাধি যোগ করে দেই।শুধুমাত্র নিজ এলাকার ভাষা ব্যবহারের জন্য তাকে পিছনের সারিতে রেখে দেই।তার জন্য অনেকগুলো সেক্টর নিষিদ্ধ করে দেই।যেমন সে কোথাও বক্তৃতা দিতে পারবে না,সে তার মতামত দশজনের সামনে প্রকাশ করতে পারবে না। আড্ডার মাঝে তাকে শুধু শ্রোতার ভূমিকা পালন করতে হবে।
আরে ভাই থামেন আড্ডার আসরেও যদি কেউ তার মায়ের মুখে শিখা ভাষা ব্যবহার করতে না পারল তবে কিসের এই বাক স্বাধীনতা।আর ভাই আপনারাও লজ্জা পাওয়ার ভয়ে যদি নিজ এলাকার ভাষা ছেড়ে Dude,Baby,Yapp,yo.. বলা শুরু করে দেন তবে যে,আমাদের শরীর থেকে বাঙলা মাটির ঘ্রান মুছে যাবে। লজ্জিত হওয়া উচিৎ তাদের যারা নিজের মায়ের কাছ থেকে একটা ভাষা পর্যন্ত শিখতে পারল না।বা শিখেও ক্ষ্যাত শুনার ভয়ে ব্যবহার করল না।
কারও মুখে নিজের এলাকার ভাষা শুনলে যে,কি অনুভুতি হয় সেটা যারা নিজ এলাকার বাইরে থাকেন তারাই বুঝতে পারবেন।
আর আফসোস তাদের জন্য যারা নিজ আঞ্চলিক ভাষা শিখার সুযোগ পেলেন না।অর্থাৎ যারা ছোট থেকেই নিজ এলাকা ছেড়ে শহরে বড় হয়েছেন।
হুমায়ন আহম্মদ এর একটা কথা খুব মনে পড়ছে "পৃথিবীর সব মানুষই এক, পার্থক্য শুধু তাদের ভাষা আর গায়ের রং এ"।