*****মিষ্টি বউ এর দুষ্টু ভালোবাসা*****(লেখক রাহিম মিয়া)
'
'
---এই এই উঠো সকাল অনেক আগে হয়ে গেছে, দোকানে যাবে কখন?
---আর একটু ঘুমাতে দেও প্লিজ ইভা। এই শীতের মাঝে উঠতে মন চাচ্ছে না। রোদ উঠুক তারপর যাবো না হয় দোকানে।
---না তা আর হবে না, উঠতে বলছি উঠো না হলে কিন্তু।
---কিন্তু কি?
---সকালের নাস্তা পাবে না আজ হুম।
---আচ্ছা বাবা উঠছি, খালি স্বামিকে না খাওয়ার মারার ধান্দা দেখছি তোমার। তবে আজ উঠবো না এখন যাও, বাহিরে নাস্তা করবো হুম।
---সোনা বাবু আমার এইভাবে বলে না, উঠো। উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে আসো।
---উঠতে পারি এখন এক শর্তে।
---কি বলো?
---কান মুখের কাছে আনো বলছি।
---বলো।
---আমার তাড়াতাড়ি বাবু চাই আর এখন পাপ্পি চাই হুম। না হলে এই শুয়ে রইলাম।
---আবার বিছানাতে শুয়ে পড়লে দেখছি। আচ্ছা রাহিম বাবু আমার উঠে চোখ বন্ধ করো তোমার পাওনা দিচ্ছি।
--এই তো লাইনে এসেছ,চোখ বন্ধ করলাম 1,2,3,4,5,6, 7,8,9,10 আসছে না কেন? এই লেট হচ্ছে কেন? চোখ খুলছি কিন্তু।
---আরেকটু দাঁড়াও, এই নেও।
---ওয়াক থু, তুমি আবার নিমের শরবত দিলে প্রতিদিনে মতো।
---কেন রেগে যাও রাহিম বাবু আমার এটা খেলে তো শরীর ভালো থাকে। আর খালি পেটে খেতে পারলে অনেক ভালো ডাক্তার বলেছে।
---তোমার ঐ নিমের শরবত তুমি খাও। আমাকে মাফ করো প্রতিদিন এই তিতা খেতে ভালো লাগে না খালি পেটে।
---এখন বেশি কথা না বলে উঠো, এমনিতেই অনেক সময় নষ্ট করে ফেললে। আমার কত কাজ আছে তুমি জানো হুম।
----আচ্ছা উঠছি, বলেছি পাপ্পি দিতে আর তিনি কিনা নিমের শরবত দিলো। হায় খোদা এমন বউ তুমি আমার কপালে কেন দিলে।
---কিছু বললে তুমি?
---কিছু না, ফ্রেশ হতে গেলাম। এসে যেন নাস্তা পাই।
বাঁচলাম ফিসফিস করে বলার কথাটা বউ শুনলো না,মনে মনে এই বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। এসে দেখি টেবিলে নাস্তা সাজিয়ে রেখেছে ইভা। টেবিল বসে ডাক দিলাম।
--ইভা কোথায় গেলে তুমি? আমি নাস্তা একা করবো নাকি, তাড়াতাড়ি আসো।
--আসছি দাঁড়াও।
--দাঁড়াতে পারবো নাগো বউ বসে আছি। তুমি বরং তাড়াতাড়ি কিচেন থেকে টেবিলে আসো।
--আরে বাবা আসছি তো, এত তাড়া কিসের?
--তাড়া হবে না, দশটা বেজে গেছে ঘড়ি দেখছো কি তুমি? তাড়াতাড়ি প্লেটে নাস্তা দেও আর একটু তাড়াতাড়ি ডেকে দিতে পারো না হ্যাঁ।
--আমি তো সকালেই ডাকি, তুমিই তো উঠতে লেট করো। এই নেও ডিম দিয়ে রুটি বাজ করে রেখেছি খাও।
--আচ্ছা, তুমি বসো পাশে।
---বসলাম এইবার খাও।
--ওয়াক থু, এত তিতা কেন হ্যাঁ?
--ডিমের ভিতর নিম পাতার পাউডার বানিয়ে মিশিয়ে দিয়েছি তাই।
--তুমি কি আমাকে মেরে ফেলের প্লান করছো নাকি। এইসব কি মানুষ খায়?
--কেন বিয়ে আগে না নিম পাতা খেতে, এখন খেতে পারছো না কেন?
--তুমি এই কথা জানলে কীভাবে?
--তোমার বোন বলেছে পাউডার বানিয়ে শরবত খেতে হুম হি হি হি।
--আরে ওটা শরীরের এলার্জি যাওয়ার জন্য খেয়েছিলাম। এখন কেন খাওয়াচ্ছো এইসব?
--নিম পাতা খেলে শরীর ভালো থাকে তাই।
--খাও তুমি নিম, আমি দোকানে গিয়ে নাস্তা করবো।
--আরে খেয়ে তো যাও।
--নিম পাতা যেদিন ছাড়া খাবার রান্না করবে সেদিন ভালো করে খাবো, যাচ্ছি।
এই বলে বের হয়ে গেলাম। কি বউ পেলাম রে বাবা নিম ছাড়া অন্য কিছু চোখে দেখে না দেখছি।দুপুরে হোটেলে খেয়ে নিলাম এই ভয়ে কি জানে তরকারি আবার নিম পাতা দেয় নাকি। আর এইদিকে কল করে যাচ্ছে বাসাতে যাবার জন্য, বাধ্য হয়ে রিসিভ করলাম।
--এই তোমাকে এতবার কল দিচ্ছি রিসিভ করছো না কেন?
--সরি সোনা কাজে বিজি ছিলাম, খেয়াল করিনি এত কল কখন এসেছে। (বাঁচার জন্য মিথ্যা বললাম আর কি)
--দুপুরে খাবার খাবে কখন?৩টা বেজে গেছে তাড়াতাড়ি বাড়িতে আসো খেতে।
--সরি বউ আমি তো খেয়ে নিয়েছি হোটেলে, তুমিও খেয়ে নেও সোনা।
--কি তুমি খেয়ে নিয়েছ, অথচ আমাকে বলার প্রয়োজন মনে করলে না, আর আমি কিনা তোমার জন্য ক্ষিধা নিয়ে বসে আছি।যাও তোমার সাথে আর কথা নাই।
--লক্ষ্মী সোনা বউ আমার রাগ করে না (টু টু টু)
যা বাবা দিলো কেটে কল। কেন যে হোটেলের কথা বলতে গিয়েছিলাম। এই চেয়ে ভালো কোথাও দাওয়াত ছিল সেখানে খেয়েছি বললে ভালো ছিল। এখন বউ এর রাগ ভাংগাতে আলেদা টাকা খরচ করতে হবে।সরি খরচ কিসের নিজের দোকান থেকে নিবো আর কি। আর একটা কথা আপনাদেরকে বলতে ভুলে গেছি, আমাদের বিয়ের মাত্র ১৫দিন হয়েছে। তার মাঝে ১৪দিনই বউ আমার সাথে অভীমান করছে, শুধু বাসর রাতের সময়টা ছাড়া। এখন যায় হোক বউ এর রাগ ও অভীমান ভাংগাতে হলে তাঁর জন্য এই শীতে আইসক্রিম আর বড় চকলেট নিতে হবে।রাতে বাসাতে ফিরার সময় এইগুলো নিয়ে রওনা দিলাম। যাচ্ছি আর ভাবছি আজ শালার থেকে এইগুলো ইভার পছন্দ যদি না জানতে পারতাম, আল্লাহ্ জানে বউটা আমাকে ধরে কি করতো।এইসব ভাবতে ভাবতে কখন যে বাসাতে এসে গেছি খেয়ালই ছিল না।এসে বেল টিপ দিলাম কয়েকবার কিন্তু খুললো না, তাই ডাকতে শুরু করলাম।
---ইভা ইভা এই ইভা দরজা খুলো, দেখ কি নিয়ে এসেছি। তোমার পছন্দের চকলেট আর আইসক্রিম। বিশ্বাস না হলে ছাদে এসে আমার হাতে দেখ রাস্তাতে দাঁড়ালাম দরজার থেকে সরে।
যা বাবা দরজা খুলে দিলো এইসবের নাম শুনে, কিন্তু সামান্য খুলা কেন? পুরাভাবে খুলছে না কেন? এই বলে দুই কদম হাঁটা দিয়ে দরজা ঠেলা দিলাম আর দেখি দরজা খুলে ইভা নেই। বউটা আমার গেল কই? ভিতরে ঢুকে রুমে গিয়ে দেখি বসে আছে
--কি হল দরজা খুলে রুমে এসে বসে পড়লে কেন?
--এমনি।
--এই নেও তোমার পছন্দের চকলেট আর আইসক্রিম।
--রেখে যাও, একটা দিন ভালো করে অভীমান করে থাকতে দিবে না হু দেখছি।
--আমার বউটা এত অভিমানি কেন হ্যাঁ? চলো সামনে সাপ্তাহ গিয়ে কক্সবাজার ঘুরে আসি।
---সত্যি বলছো?
--হ্যাঁ গো।
--ইয়া হু আমার কতদিনের ইচ্ছে কক্সবাজারে যাওয়ার আজ এটা তুমি পূরণ করে দিলে বাবু। (জড়িয়ে ধরে)
--হুম আমারও যে ইচ্ছে বউ নিয়ে যাওয়ার।
--কি তারমানে তোমার ইচ্ছে পূরণের জন্য যাচ্ছো?
--আরে না না দুইজনের, তুমি শুধু শুধু ভুল বুঝো কেন হ্যাঁ? এইজনই লোকে বলে অল্প বয়সি মেয়ে বিয়ে করতে নেই, তাঁরা বুঝে কম রাগে বেশি।
--কি শয়তান দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা।
--না না ধরতে পারবে না (দৌড়ের উপর আছি)
কক্সবাজার যাওয়ার পর সাগরের পাড়ে দাঁড়িয়ে
---জানো ইভা সাগরের ঢেউ কেন বারবার তাঁর কিনারাতে ফিরে আসে।
--নাতো, কেন শুনি?
--সাগর তাঁর পাড় মানে কিনারাকে ভালোবাসে বলে।
--তাই।
--হুম, এখন বলো তো আমি তোমার কাছে বারবার ফিরে আসি কেন?
--কারণ তুমি আমাকে ভালোবাসো বলে বাবু।
--এই তো বুঝে ফেলেছ দেখছি। এইবার তাহলে এই খুশিতে একটা পাপ্পি চাই।
--আরে থামো তো এইখানে অনেক মানুষ আছে।
--কেন যে মাঝে মাঝে ভুলে যায়। তবে বাহিরে দেশ হলে আর সমস্যা ছিল না। আচ্ছা চলো হোটেল যাই অনেক সাগর দেখা হলো তো।
--আচ্ছা বাবা চলো, তর সইছে না বুঝি।
সমুদ্র সৈকত ঘুরে আসার পর বাড়িতে হঠাৎ একদিন
--ইভা ইভা কোথায় গেলে? এতবার কল দিচ্ছি রিসিভ করছো না কেন? আর দরজা খুলা কেন?
অনেক ডাকার পর যখন পেলাম না, রুমে গিয়ে দেখি সেখানেও নেই। বউটা কই যে গেল? খুঁজতে খুঁজতে কিচেনে ঢুকলাম আর সেখানে দেখি ইভা মাটিতে পড়ে আছে। এইভাবে পড়ে থাকা দেখে তাড়াতাড়ি গ্লাস দিয়ে পানি এনে ইভার মুখে ছিটা দিয়ে জ্ঞানে আনলাম।
---ইভা তোমার কি হয়েছে? এইভাবে পরে ছিলে কেন?
--কি জানি মাথাটা ঘুরছিল খুব, কখন পরে গেছি খেয়াল ছিল না।
--শুধু কি মাথা ঘুরা নাকি বমিও হয়েছিল এর আগে শুনি?
--গতকাল একটু বমি হয়েছিল।
--সত্য বলছো?
--হ্যাঁ, কিন্তু তুমি এতো খুশি হচ্ছো কেন?
--আরে পাগলী তুমি মা হতে যাচ্ছো, চলো আগামীকালই ডাক্তারের কাছে গিয়ে সব কিছু ঠিক করে ফেলবো। কোন হাসপাতালে ডিলিবারি করলে ভালো হবে আর কখন সময় আসবে ডাক্তার পরীক্ষা করে বলে দিবে।
আপনারা সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
(সমাপ্ত)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ