āĻŽāĻ™্āĻ—āϞāĻŦাāϰ, ā§§ā§­ āĻāĻĒ্āϰিāϞ, ⧍ā§Ļā§§ā§Ž

4860

ভাস্কর দা নিতান্ত ছোট ঘরের ছেলে। দাদার বন্ধু হিসেবে আমাদের বাড়িতে তার প্রথম পদার্পণ হয়েছিল। আমি এখন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। অংকে ভীষণ কাঁচা ছিলাম বিধায় দাদা ভাস্কর দা'কে আমার অংকের মাস্টার হিসেবে নিযুক্ত করেছে। অমায়িক হাসি দিয়ে বাড়ির অন্যান্যদের সাথে কথা বললেও উনি আমার সাথে কথা বলতেন খিটখিটে মেজাজে। আমি তাতে অবশ্য মজা পাই। উনার রাগের ভেতর কি জানি এক যাদু আছে যা আমাকে সর্বদা মোহিত করত। ইদানীং ইচ্ছে করেই খাতায় ভুলভাল অংক কষছি। খাতা ভর্তি বড়সড় সাইজের রসগোল্লা দিচ্ছেন ভাস্কর দা। আমার এবারের উদ্দেশ্য তাকে রাগানো ছিল না। বরং তার সাথে আরও খানিক সময় কাটানোর ইচ্ছে হত বিধায় আমার অংকের খাতায় রসগোল্লা নিতাম। কিন্তু অতি চালাক ছিলেন তিনি। একদিন ঠিকই টের পেয়ে গিয়েছিলেন। তাই পরদিন থেকে আমাকে আর অংক পড়াতে আসেননি তিনি। দাদাকে বলেছিলাম জোর করে একবার নিয়ে আসতে। উপপাদ্যগুলো বুঝতে সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া মাস খানেক সময় রয়েছে ফাইনার পরীক্ষার। দাদা আমার কথা শুনে ভাস্কর দা'কে বলেছিল ঠিকই কিন্তু উনি তবুও আসেননি। মাঝখান থেকে আমার পড়াশোনার বারোটা বেজে গেল। ভাস্কর দা'কে ছাড়া যেন একটা দিনও কাটছে না। আমার স্কুলের বান্ধবীরা পরামর্শ দিলো লুকিয়ে লুকিয়ে তার বাড়ি গিয়ে দেখা করে আসি। কিন্তু এমন দুঃসাহসিক কর্মের কথা দাদা জানতে পারলে আস্ত রাখবে না। নীলু অবশ্য বলেছিল দাদার হাতে আমার অংকের বইযোগে একটা চিঠি লিখে দেই। কিন্তু এই কাজটাও যে সমীচীন হবে তা আমার মনে হলো না। অবশেষে রেখার কথাকে মেনে নিলাম। দাদার অবর্তমানে ওর ফোন থেকে ভাস্কর দা'র নাম্বার জোগাড় করলাম। বড্ড বেগ পেতে হয়েছিল বৈকি। ঠাকুরের নাম যপেই যাচ্ছিলাম। অবশেষে নাম্বারখানি নিয়ে মোড়ের নিমাই কাকার দোকান হতে ভাস্কর দা'কে ফোন করলাম। অথচ ঠাকুর আমার মনের অবস্থা বুঝলেন না। ভাস্কর দা ফোন তুললেনই না। বার পাঁচেক ফোন দিলাম। ফলাফল একই। এরপর মন খারাপ করে সেখান থেকে প্রস্থান নিলাম। দুইদিন পর ভাস্কর দা'র চিন্তায় গায়ে জ্বর চলে এলো। বান্ধবীরা তখন মুখ টিপে বলছিল আমি নাকি ভাস্করদা'র প্রেমে পড়েছি। অথচ তখনও সে শব্দকে আমি প্রশ্রয় দেইনি মনে। কিন্তু ওদের কথাও ফেলে দেবার মতো না। নইলে সেই ভাস্করদা'র জন্য মন আমার এত উতলা হবে কেন! হয়ত সত্যিই ভাস্কর'দা আমার মনে একটু একটু করে জায়গা নিয়ে ফেলেছে! হতে পারে!
গায়ে ধুম জ্বর নিয়ে পড়তে পারছিলাম না। বিকেল ক্ষণে দাদা জোড়ে জোড়ে হেঁকে বলল, ভাস্কর'দা নাকি এসেছে। কথাটি শোনা মুহূর্ত আমার গা থেকে জ্বর বাবাজি নিমিষেই পালিয়ে গেল। ভাস্কর'দা দরজা খুলে আমার ঘরে আসলেন। পাশে দাদা ছিল। মা আর বৌদি চেয়ার এগিয়ে দিলো তাকে। আমি ভাস্কর'দার দিকে চেয়ে রয়েছি। আমার চাহনিতে হয়ত উনি লজ্জাও পেয়েছেন। রোগী দেখতে এসে লজ্জায় পড়াটা ডাক্তারদের কাজ নয়। হাতে দেখছি মাঝারি সাইজের একটা বাক্স এনেছে ভাস্কর'দা। মা বৌদিকে তার জন্য জল খাবারের ব্যবস্থা করতে রান্নাঘরে চলে গেল। দাদার এক জরুরী ফোন আসাতে সেও বাইরে চলে গেল। ঘরে শুধু আমি আর ভাস্কর'দা। ইচ্ছে করছিল মনের কথাগুলো তাকে বলেই ফেলি যা থাক কপালে। কিন্তু ভাস্কর'দার হাতে বড় ইনজেকশন দেখে আমি চেঁচিয়েই উঠলাম। যেখানে জ্বরের ওষুধ সামনে বসে রয়েছে তা না পেলে ঐ ইনজেকশন কীভাবে আমার জ্বর সাড়াবে!
ভাস্কর'দা তবুও ডাক্তার হিসেবে ইনজেকশন ফুটিয়ে দিলেন। হয়ত ভাস্কর'দার ইনজেকশন বলে তার ব্যথা অন্যান্য ডাক্তারদের থেকে কমই মনে হয়েছে। আমি কিছু বলতে গেলে ভাস্কর'দা পরীক্ষার জন্য শুভ কামনা জানিয়ে চলে গেলেন।
এ দেখাই শেষ দেখা। পরীক্ষার আগে ভাস্কর'দার সাথে আর দেখা হয়নি।
.
আমি ভাস্কর'দাকে ছাড়াই পরীক্ষা দিলাম। দাদার মুখে শুনেছিলাম ভাস্কর'দা নাকি আমার কুশলাদি জিজ্ঞেস করেছিলেন। তা শুনেই পুলকিত হলাম। নীলু, রেখা পরীক্ষার মধ্যেও ভাস্কর'দাকে নিয়ে আমাকে ক্ষেপাত। আমার অবশ্য তাতে ভালোই লাগত কিন্তু উপরে উপরে ওদের উপর রাগ করতাম। এভাবেই একটা একটা করে আমার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলো।
শুনেছি ভাস্কর'দা নাকি শহরে চলে গেছেন। কবে ফিরবে তা দাদাকে বলে যায়নি। আমার এখন দীর্ঘকালীন ছুটি। অপেক্ষা শুধু রেজাল্টের। তাই দাদার কাছে আবদার করলাম, এই সময়টুকুতে শহর থেকে ঘুরে আসলে মন্দ হয় না। দাদা রাজিও হয়েছে কিন্তু এই মুহূর্তে যাবে না বলে দিয়েছে। আমি তখন মন খারাপ করে ঘরে বসে রইলাম। বৌদি এসে আমার মান ভাঙানোর চেষ্টা করলেন। বললেন, ননদিনী আমরা বরং বৈশাখ মাসে শহরে বেড়াতে যাই। বৌদি নাকি শুনেছে শহরে পহেলা বৈশাখ পালন করা হয় অনেক বড় করে। জায়গায় জায়গায় মেলা বসে। এমন লোভাতুর কথা শুনে আমি ভাবলাম তাহলে পহেলা বৈশাখের আগের দিনই শহরে যাব। বৌদিকে দেখেও মনে হচ্ছে শহরে যাবার জন্য তার মনও উত্তেজিত।
কিন্তু ভাস্কর'দাকে ছাড়া মফস্বলে আমার দিনগুলো বহুত কষ্টেই যাচ্ছে। সেই যে কবে তার মুখখানি দেখেছিলাম। কণ্ঠও শোনা হয়নি। কি জানি কেমন আছে সে!
.
বৈশাখ পড়ার চারদিন আগে আমি, দাদা আর বৌদি শহরে যাবার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। শহরে আমাদের পরিচিত কেউ ছিল না। কেবলমাত্র দাদার বন্ধু ভাস্কর'দা ছাড়া। আমি বুঝতেই পেরেছিলাম ভাস্কর'দার বাসাতেই আমাদের ঠাঁই হবে। শুনেছি তিনি নাকি একা বাসায় থাকেন। তাহলে আমাদের তিনজনের থাকার কোনো সমস্যা হবে না। যদিও বা দাদা শহরে অনেক কয়েকবার এসেছিল কিন্তু আমি আর বৌদি শহরে পা রাখছি প্রথমবার। বৌদি বেশ ফুরফুরে মেজাজে শহরে যাচ্ছে। তবে আমার শহর দেখার চেয়ে মন আনচান করছিল আমার কৃষ্ণঠাকুর মানে ভাস্কর'দাকে দেখতে। কি জানি আমাকে দেখার পর কী করবেন তিনি!
পাক্কা সাত ঘন্টা পর ভাস্কর'দার বাসায় উপস্থিত হলাম আমরা। দরজায় লাগানো সুইচে দাদা টিপ দিল। খানিকবাদে ভেতর থেকে দরজা খুলে দেওয়া হলো। দরজা খুলতেই দেখি ভাস্কর'দার মুখ। আমাদের দেখে হাসি দিলেন তিনি। এরপর বৌদির কুশলাদি জিজ্ঞেস করলেন। আমাদের আসতে কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা বলে দাদাকে প্রশ্ন করলেন। অথচ আমাকে একটা কথাও বললেন না। ভারী অন্যায়!
আমিও গাল ফুলিয়ে রইলাম। ইচ্ছে করেই একটা কথাও বললাম না। বৌদি আমার এমন আচরণ দেখে একবার চোখ ঘুরিয়েছে কিন্তু তাতে পাত্তা দিলাম না।
টানা দুইদিন এই অভিমানেই ভাস্কর'দার সাথে কথা বললাম না।
আমি তখন ঘরে জানালার গ্রীল ধরে শহরের চারপাশ দেখছিলাম। বৌদি টিভি দেখায় ব্যস্ত। দাদা আর ভাস্কর'দা একটু বেড়িয়েছে।
এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠল। বৌদি দরজা খুলে দিলেন। আমিও ততক্ষণে উঠে এসেছি। দেখলাম ভাস্কর'দার দুই হাত ভর্তি ব্যাগ। দাদা বলল, সবার জন্য আজ বাজার করেছি। অমনি বৌদি দাদার কথা শুনে রেগে গেল। কেন সে তাকে নিয়ে বাজারে গেল না!
আমার অবশ্য এতে সমস্যা নেই। অন্যের পছন্দকে মানিয়ে নিতে পারি।
দাদা একটা শাড়ি আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল, এই শাড়িটা বৈশাখের প্রথমদিন পড়বি। আমি আচ্ছা বলে রেখে দিলাম শাড়িটা। দাদা বলল, রাখছিস কেন শাড়ি? ভাস্কর নিজে পছন্দ করেছে তোর জন্য। একটু দেখ, পছন্দ হয় কিনা!
আমি যেন কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। শাড়ি ব্যাগ থেকে বের করে দেখলাম ভালোই পছন্দ আছে উনার। ধীরে ধীরে তার কাছে গিয়ে বললাম, ভীষণ সুন্দর। উনি আমার কথাতে একটুখানি হাসলেন। আমি উনার হাসিকে পরম ধন হিসেবে লুফে নিলাম।
.
আজ বৈশাখের প্রথম দিন। বৌদি সকাল থেকে সাজতে বসেছে। তা দেখে দাদা অনবরত বকেই যাচ্ছে বৌদিকে। অন্যদিকে আমি সাজতে পারি না বলে চুপচাপ ঘরে বসে রয়েছি। ভাবছি, বৌদির সাজা হয়ে গেলে একটু সেজে আসবো বৌদির থেকে। তাছাড়া ভাস্কর'দার শাড়ির রঙ নাকি আমার গায়ে দারুণ মানাবে বৌদি বলেছিল। ভালো কথা মনে পড়ল হুট করে, সকাল থেকে সেই পুরুষকে দেখতে পাচ্ছি না। তাই দাদাকে গিয়ে লাজ লজ্জা ভুলে জিজ্ঞেস করলাম ভাস্কর'দা কোথায় গিয়েছে। দাদার মেজাজ তখন বৌদির জন্য খারাপ ছিল বিধায় আমাকে একটা বড়সড় ধমক দিয়ে বলল সেজে নিতে জলদি। এক্ষুণি নাকি উনি বাইরে থেকে চলে আসবেন। তারপর আমাদের নিয়ে বের হবেন পান্তা, ইলিশ খেতে। দাদার অমন মেজাজ দেখে আমি বৌদির ঘরে চলে গেলাম। বৌদিকে অনেকটা রুক্ষ মেজাজেই বললাম আমাকে সেজে দিতে। ততক্ষণে অবশ্য বৌদির সাজা হয়ে গেছে। সাদা শাড়ি, লাল প্যারে বৌদিকে ভীষণ সুন্দর দেখাচ্ছে। মনে মনে ভাবলাম এই রূপ দেখলে নিশ্চয় দাদার মেজাজ কিছুটা হলেও কমবে। বৌদির সাথে একটু মশকরায় করতে লজ্জায় লাল হয়ে গেল বৌদি। আমি বললাম, এবার আমাকে সাজিয়ে দাও। যেন আজই একটা কাউকে ধরে এনে দাদাকে বলি তোমার বোনের হবু স্বামী।
আমার মশকরা সায় দিয়ে বৌদি বলল, কি ব্যাপার ননদিনী কাউকে মনে ধরেছে নাকি?
আমি অমায়িক হাসি দিয়ে বললাম, ঠাকুর যা করেন!
এরপর বৌদি ভাস্কর'দার পছন্দ করা ম্যাটমেটে বাসন্তী রঙের শাড়ি আমার গায়ে জড়িয়ে দিল। হাত ভর্তি চুড়ি, কপালে বড় করে টিপ, গলায় ঝুলিয়ে দিল একটা মালা। শাড়ির রঙের সাথে মিল রেখে ঠোঁটে লাগিয়ে দিলো লিপস্টিক। বৌদি বলল, আমাকে নাকি খুব সুন্দর লাগছে। মনে মনে ভাবলাম এই সুন্দর লাগা যদি ভাস্কর'দার চোখে পড়ত!
চুলগুলো খোঁপা করে নিলাম। এরপর দাদার ডাক আসলো ভাস্কর'দা নাকি চলে এসেছেন আমাদের নিতে। আমি ঘর থেকে বের হতেই ভাস্কর'দার মুখোমুখি হলাম। এইপ্রথম ভাস্কর'দার চোখ আমাকে অন্যকিছু জানান দিচ্ছে। এই অকৃত্রিম চোখের ভাষা পড়তে হয়ত আমার ভুল হচ্ছে ভেবে ভাস্কর'দাকে পিছনে ফেলে বাইরে এলাম। দাদা গাড়ির সামনে অপেক্ষা করছে। ভাস্কর'দা বাসায় তালা দিয়ে বৌদিকে নিয়ে আসলেন। আমি ততক্ষণে গাড়িতে বসে গিয়েছি।
এরপর রাস্তার ভীড় ঠেলিয়ে গাড়িটি আমাদের নিয়ে পৌঁছাল এক বিশাল ময়দানে। চারিদিকে হৈচৈ আর ইলিশ মাছের গন্ধ। দোকানে দোকানে প্রচুর ভীড়। ভাস্কর'দা বললেন প্রথমে ইলিশ পান্তা খাওয়া হবে এরপর ঘুরে ঘুরে চারপাশ দেখব আমরা। দাদা, বৌদিও আপত্তি করল না। আমিও তেমন কিছু বললাম না। ভাস্কর'দা এক বড় দোকানে গিয়ে পান্তা ভাত আর ইলিশ ভাজা দিতে বললেন চার থালা। থালাগুলো অবশ্য মাটির। কিন্তু আমি জানতাম শহুরে মানুষজন দামি থালা ছাড়া খাবার খায় না। অথচ আজ উৎসব বলে বাঙালি আজকের দিনের জন্য মাটির থালায় খেয়ে বাঙাল হতে চাচ্ছে। তবে আশপাশটা দেখতে দারুণ লাগছে। কত রকম ভাবে সাজিয়েছে পহেলা বৈশাখ বলে। সত্যিই বাঙালি আজকের দিনকে মনে করতে কতভাবে নিজেকে রাঙায়। আমাদের মফস্বলে অবশ্য এতকিছুর আয়োজন হয় না। এসব ভাবতে গিয়ে দেখি আমাদের সামনে চার থালা পান্তা চলে এসেছে। খেয়াল করে দেখছি দুইটা কাঁচা মরিচ আর পিঁয়াজও আছে। এসব খাবার দেখে আমার মনে হলো তবে শহুরে মানুষ এসবই দামী খাবার মনে করে আজকের দিনে! হতে পারে। নইলে দুইটা পিঁয়াজ আর কাঁচা মরিচের দাম এত চড়াও হত না। অথচ আমাদের দিকে কত শত মানুষ এসব খাবার খেয়ে দিন গুজরান করে। শুধু তফাত থাকে তাদের থালায় ইলিশ মাছ যোগ হয় না। এই এক ইলিশেই বড়লোকদের পহেলা বৈশাখ।
আমি দু'তিনবার মুখে পান্তা তুলেছি দেখছি ছোট্ট একটা মেয়ে আমার দিকে চেয়ে রয়েছে। আমি ঈশারায় তাকে বললাম সে কিছু বলতে চায় কিনা। কোনো উত্তর না দিয়ে মেয়েটি আমার ইলিশের দিকে তাকিয়ে রইল। দোকানী তা খেয়াল করা মুহূর্ত সেখান থেকে মেয়েটাকে তাড়িয়ে দিলো। আমি বিষয়টা পরে বুঝতে পেরে দাদাকে বললে দাদা এক থালা পান্তা আর ইলিশ মেয়েটিকে গিয়ে দিয়ে আসলো। না জানি কতশত মানুষ এভাবে এইদিনে ভালোমন্দ খাবে বলে বসে থাকে! আর আমরা শুধু নিজেদের কথা ভেবে পহেলা বৈশাখ উৎযাপন করি। দিন শেষে আমরা আবার ঘরে ফিরলাম। ভাস্কর'দা আজ প্রথম আমার সাথে ভালো করে কথা বলেছে। কাঁচা মরিচে ঝাল লেগেছিল বলে পানিও এগিয়ে দিয়েছিল আমাকে। কেমন জানি লোকটা ধীরে ধীরে বদলাতে লেগেছে। আমি এসব ভাবতে গিয়েই ঘুমিয়ে গেলাম। শরীরটাও ভীষণ ক্লান্ত ছিল।
.
পরদিন সকালে দাদা বাড়ি ফেরার আলোচনা করছিল ভাস্কর'দার সাথে। কথাটা কানে আসতেই মন খারাপ হয়ে গেল আমার। কেবল তো ভাস্কর'দাকে আপন করতে লেগেছি এর মধ্যেই বাড়ি চলে গেলে ভাস্কর'দার সাথে আর দেখা হবে না। তাহলে আমার মনে তাকে নিয়ে যে প্রেম জন্মেছে তা বলতেও পারব না। তাই দাদাকে বললাম আর কয়েকটা দিন থাকতে কিন্তু কিছুতেই সে রাজি হলো না। আমি মন খারাপ করে ছাদে চলে গেলাম। আকাশটা আজ ভারী হয়ে আছে। চারদিক কালো ছায়ায় ঢাকা পড়েছে। মনে হচ্ছে কালবৈশাখী ঝড় আসতে পারে। কিন্তু আমার মনে অনেক আগেই কালবৈশাখী ঝড় ওঠে গেছে। আচমকায় শুরু হলো ঝড়। সবাই ছুটোছুটি করছে। আমি ছাদ থেকে তখন সে ঝড় উপভোগ করছি। ঝড় বইছে বয়ে যাক। এভাবেই তো বৈশাখ মাস তার আগমনী বার্তা জানিয়ে থাকে।
পেছনে কারও একজনের উপস্থিতি টের পেলাম আমি। পিছু ঘুরতেই দেখি ভাস্কর'দা। আমি উনাকে এক পলক দেখেই আবার সামনে ঘুরলাম। ভাস্কর'দা পিছন থেকে আমাকে জিজ্ঞেস করল আমি মন খারাপ করেছি কিনা।
মনে মনে ভাবলাম যেন উনি কিছুই বুঝেন না। আমার মনে যা চলছে তা বুঝেও না বুঝার ভান ধরে থাকাটাও তো অন্যায়।
আমি কথা বললাম না তার সাথে। কিন্তু যখন পুনরায় বললেন আমাকে গতদিন খুব সুন্দর লাগছিল তার কাছে আমি অমনি মুখ ঘুরিয়ে বললাম তবে বিয়ে করে নিন!
আমার কথায় অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন তিনি। কথাটি মুখ ফসকে বের করে আমিও যেন লজ্জায় মরে যাই। উনি আমার সামনে আসলেন। নোটিশভূক্ত ঝুপঝাপপ বৃষ্টি নামলো। আমি বৃষ্টি হতে বাঁচতে দৌড়ে ছাদ থেকে পালিয়ে যেতে লাগলাম। অথচ ভাস্কর'দা আমার হাত টেনে ধরলেন। আমি অবাক হয়ে চেয়ে রইলাম তার দিকে। উনি বললেন, এই বৈশাখই না হয় আমাদের মনকে কাছে টেনে নিক। যেখানে প্রেম নামক ঝড়কে বাধা দিতে পারবে না কেউ।
আমি চোখ দু'টো বড় বড় করে চেয়ে রয়েছি তার দিকে। এসব কি বলছেন উনি ভেবে কূল পেলাম না। তাই সত্যিই কি ভাস্কর'দা সজ্ঞানে এসব বলছেন কিনা জিজ্ঞেস করতেই সম্মতি দিলেন হ্যাঁ সূচক। তবে কি সত্যিই তিনি মনে মনে আমাকে চেয়েছেন! হয়ত বা!
আমি বললাম, এই বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর চলে আসবে। ভাস্কর'দা আমাকে কাছে টেনে নিয়ে বললেন এই প্রেমিক ডাক্তার আছে কি করতে!
আমি অবশ্য ইনজেকশন দেখে আর ভয় পাই না। যেদিন ভাস্কর'দা আমাকে প্রথম ইনজেকশন ফুটিয়েছিলেন। কিন্তু ইনজেকশনের থেকে এই মানুষটিকেই আমার বড্ড বেশি প্রয়োজন। এই বৈশাখ আমার প্রেমের সাক্ষী, আজকের এই প্রথম বৈশাখ বৃষ্টি আমাদের স্মরণীয় মুহূর্ত। তবে অংকের এই মাস্টারমশায় অংককে ভয় না পেলেও আমার দাদাকে ভয় পাচ্ছে ভীষণ। আমি অবশ্য উনার ভয় পাওয়া দেখে মজা নিচ্ছি। ডাক্তার বলি আর মাস্টার বলি ভাস্কর'দার ভয়ও উপভোগ্য। তবে আমি কেন ভয় পাচ্ছি না তা অবশ্য দাদা খুব ভালো করেই জানবে। কিন্তু ভাস্কর'দা তা জানে না। হয়ত জানলে ভয়ও পেত না। কারণ আমার দাদা যে আমার মনের কথা পরীক্ষার মধ্যেই জানতে পেরে গিয়েছিল সে কথা ভাস্কর'দা আগে থেকে জানলে এমন ভয়ানক অস্বস্তি দেখার সৌভাগ্য হত না। আমিও তাকে কিচ্ছু বলব না। আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য কিছু শাস্তিও তো তাকে পেতে হবে!
তবে চারিদিকে বৈশাখী গন্ধে আর ঝুম বৃষ্টির ফোঁটা গায়ে মেখে প্রেম করার মজাই আলাদা। সেক্ষেত্রে সঙ্গীও আবার আমার সেই ভাস্কর'দা।
#বৈশাখী_প্রেম
জান্নাতুল মমি

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ