*****নারীর ছোঁয়াতে*****(লেখক রাহিম মিয়া)
'
'
শিক্ষামূলক গল্প
'
'
'
>>কেন নিজের সুন্দর সাজানো জীবনটা এইভাবে নষ্ট করছিস রাহিম?
>>যার জন্য এই সুন্দর সাজানো জীবনটা ছিল সে তো আর আমার পাশে নেই পরী, তো রেখে কী লাভ হবে বল পরী?
>>তাই বলে সিগারেট আর মদ খেয়ে জীবন শেষ করে দিবিই সেটা তো বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। যে তোকে রাহিম কষ্ট দিয়ে জীবন নিয়ে উল্লাস করছে, তার জন্য কেন শুধু শুধু জীবনটাকে নষ্ট করছিস?
>>এই সিগারেট যে আমাকে সব কষ্ট ভুলতে সাহায্য করে রে পরী আর মদ তো মাঝে মাঝে একটু খাই যখন ভিতরে কষ্টের আগুন জ্বলে তা নিভিনোর জন্য শুধু। আর জীবন রেখেই বা কী লাভ হবে?
>>কী লাভ হবে মানে আমি তোর বন্ধু আছি কিসের জন্য, আমার জন্য না হয় রাখবি।
>>তোর জন্য রাখবো মানে?
>>কিছু না আর আমি এখন যাই বিকালে একটু পার্কে আসিস পারলে আর কত রুমে অন্ধকারে থাকবিই, পার্কে আসলে তোকে নিয়ে একটু ঘুরাঘুরি করবো। কতদিন ধরে তোর সাথে ঘুরাঘুরি হয় না।
>>আচ্ছা আসবো নে তবে কিছু খেয়ে যা।
>>না কিছু খাব না আর শুন আগামীকাল থেকে তোকে কলেজে যেতে হবে আমার সাথে। তবে সিগারেট, মদ একদম আর খাবি না বলে দিলাম, খেলে তোর খবর আছে।
>>কলেজে যেতে রাজি আছি কিন্তু সিগারেট না খাওয়ার জন্য বলবিই নারে। এটা না খেলে যে আমার ভিতরে শান্তি আসে না।
>>শয়তান, কুত্তা, বিলাই তোর শান্তির ঘুষ্টি কিলাই।
বুকে কিল ঘুসি দিতে দিতে
>>আরে মারছিস কেন?
>>তো কী করবো?তুই সিগারেট খেয়ে শেষ হবেই আর আমি তা চেয়ে চেয়ে দেখবো, তা কখনো হয় না। তোকে এইসব ছাড়তেই হবে।
>>আচ্ছা এখন বাড়িত যা, কিল ঘুসি দিয়ে হাতটা শুধু শুধু ময়লা করলি কয়দিন ধরে গোসল দেয় না তা নিজেও জানি না।
>>কি তুই গোসল দেস না, এখনই চল আমার সাথে বাথরুমে।
>>আরে আরে টানছিস কেন? কী করছিস তুই পরী?
>>চুপ থাক কোনো কথা বলবিই না।
তারপর বাথরুমে টেনে নিয়ে গোসল করিয়ে দিলো পরী আমাকে, গোসল করিয়ে যাওয়ার সময় বলে গেল সিগারেট যাতে ভুলেও না ছুঁতে। আর আমি সৃষ্টিকর্তার লীলাখেলা ভাবছি, একজন যে আমার gf জান্নাত আমার সাথে প্রেমের অভিনয় করে ধোঁকা দিয়ে চলে গেল, আজ পর্যন্ত খবর নেয়নি আর সে আমার বন্ধু হয়ে পরী আমার জন্য কত কি করে। আচ্ছা পরী কী আমাকে বন্ধু ভাবে নাকি অন্যকিছুও? না বন্ধুই ভাবতে পারে কি সব আবোল তাবোল ভাবছি আমি। পরী আমাকে ভালোবাসতে যাবে কেন? ওর সাথে চলে তো কখনো মনে হয়নি এইসব তবে আজ কেন হচ্ছে আমার এইসব চিন্তাভাবনা। একটু ঘুমিয়ে নেয় ঘুম পাচ্ছে বিকালে আবার পার্কে যেতে হবে। আমি এইভেবে ঘড়িতে এর্লাম দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
ঘুম থেকে উঠে বিকালে পার্কে এসে দেখি পরী বসে আছে, আমিও পাশে বসে বলতে লাগলাম ।
>>আচ্ছা পরী মানুষ কেন ভালোবাসা নিয়ে অভিনয় করে বলতে পারিস?
>>কারণ সে ভালোবাসার মার্যাদা বুঝে না তাই আর তোকে এইখানে ডেকেছি আমার সাথে একটু ঘুরাঘুরি করার জন্য দেবদাশ বানানোর জন্য নয়। আচ্ছা রাহিম জান্নাতের মাঝে কী আছে যে তাকে ভুলতে পারিস না?
>>জানি নারে তবে প্রথম ভালোবাসা তো তাই ভুলা যায় না।
>>তোর দেবদাশের মতো লেকচার দেওয়া বন্ধ কর, চল উঠে ঐ দিকে গিয়ে হেটে আসি দুইজন।
>>আচ্ছা চল তাহলে।
তারপর পরীর সাথে অনেক ঘুরাঘুরি করে বাড়িতে ফিরে আসলাম। রাতে সিগারেট খেতে খেতে ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছি, হায় রে ভালোবাসা যাকে এত ভালোবাসলাম সে আমাকে একটুও ভালোবাসলো না সবটা ছিল অভিনয়। জান্নাত ছিল কলেজের সবচেয়ে সুন্দরি মেয়ে, যাকে দেখে সবাই ক্রাশ খাই। তার মাঝে আমিও ক্রাশ খেলাম জান্নাতকে দেখে, তাই প্রেম করার জন্য পিছু পরে গেলাম। যেই করে হোক ওকে সারাজীবন চাই আমার ভেবে ফেললাম। তবে প্রেম করা আগে পরী আমাকে অনেক বুঝিয়েছিল ঐ মেয়ে ভালো
না, আমি পরীর কথা কানে দেয়নি, অনেক কষ্ট করে জান্নাতকে প্রপোজ করে তার সাথে প্রেম করতে লাগলাম। তারপর ঘুরাঘুরি, খাওয়া দাওয়া, কিনাকাটা জান্নাতকে নিয়ে প্রতিদিন করতে হতো।তো একদিন বলার কারণে যে আমার কাছে তেমন টাকা নেই প্লিজ আজ কিনাকাটা না করলে চলে না, ঠিক তখনি জান্নাত ব্রেকআপ বলে ফোন কেটে দেয়, পরে আবার কল দিয়ে বুঝতে পারলাম সিম খুলে ফেলা হয়েছে মানে বারবার সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলছে। ভিতরে তখন খুব যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেল, সকালে কলেজে গিয়ে দেখি জান্নাতে সাথে অন্য ছেলে, মাথা গরম হয়ে গেল আর জান্নাতে মুখে যখন শুনলাম ঐটা ওর bf তখন গালে একটা ঠাস করে থাপ্পড় দিয়ে চলে আসলাম। পরে অনেক খবর নিয়ে জানতে পারি যে জান্নাত আরো ছেলের সাথে এইরকম করেছে যাকে প্লেগার্ল বলে।
ভাবনায় ছেদ পড়লো ফোনের রিংটনের শব্দ শুনে, ফোনে চেয়ে দেখি পরী কল দিয়েছে তাই রিসিভ করে বলতে লাগলাম
>>কিরে এত রাতে কল দিলি যে পরী?
>>ঘুম আসছে না তাই ভাবলাম তোর সাথে কথা বলি, তা কী করিস শুনি তো?
>>এই তো ছাদে দাঁড়িয়ে আছি আর ঘুম না আসলে তোর bf থাকলে তার সাথে কথা বল, আমাকে এত রাতে জ্বালাস কেন বল তো?
>>কি আমি তোকে জ্বালায় একশবার জ্বালাবো হাজারবার জ্বালাবো আর আমার কোনো bf নেই তুই জানিস না তাই তো তোকে একটু জ্বালায় ঠিক আছে আর জ্বালাবো না কথাও বলবো না।
>>আরে আরে রাগ করিস কেন,আমি তো শুধু মজা করছিলাম।
>>সত্যি তো।
>>কী মনে হয় তোর?
>>আমি কীভাবে বলবো তা ছাদে কি করস সিগারেট খাচ্ছিস না তো।
>>আরে না সিগারেট ফেলে দিয়েছি।
>>তারমানে তুই এতক্ষণ সিগারেট খেয়েছিস, তোর সাথে আমার কথা নাই।
>>আরে রাগি করিস কেন? টু টু।
এই যা বাবা কলটা কেটে দিলো। মেয়েটা আসলে একটা পাগলী, আবার কিছুক্ষণ পর কল দিয়ে বলবে সিগারেট আর খেও না প্লিজ। আমি বুঝি না আমি সিগারেট খেলে ওর সমস্যা কী? বলতে না বলতে কল এসে গেল
>>কিরে কথা বলবিই না বললি আবার কল দিলি যে।
>>নিশ্চুপ সাথে কান্না ।
>>আরে তুই কান্না করছিস কেন পরী?
>>এমনি।
>>প্লিজ কান্না বন্ধ কর আমার কষ্ট হয়।
>>তোর কষ্ট হয় কেন?
>>আমার কান্না শুনলে এমনিতেই কষ্ট হয় তাই।
>>আচ্ছা একটা কথা রাখবি?
>>কী কথা?
>>তুই আর সিগারেট খাবি না।
>>কেন?
>>কারণ আমি তোকে।
>>কী আমাকে?
>>জানি না আর তুই বুঝবিও না কখনো।
>>আরে বুঝিয়ে বল।
>>পারবো না আমি ফোন রাখি বাই গিয়ে ঘুমা সকালে কলেজে যেতে হবে।
>>আচ্ছা।
এই বলার সাথে সাথে টু টু করে কলটা কেটে গেল আর আমি পরী কথাটা ভাবতে লাগলাম, আমি তোকে কী হতে পারে। অনেক ভেবেও যখন উওর পেলাম না, তখন ফেসবুকে পোষ্ট করে দিলাম দেখি উওর পাই কিনা কিন্তু কমেন্ট যা পেলাম আমি যেন অবাক হয়ে গেলাম। প্রায় ৫০টার মতো কমেন্ট এসেছে যেখানে লেখা আমি তোকে ভালোবাসি।পরীর ফোনে কল দিয়ে দেখি নাম্বার বন্ধ তাই মন খারাপ করে বিছানাতে শুয়ে ভাবতে লাগলাম,যে মেয়েটা আমাকে এত ভালোবাসা কিন্তু আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না, যে করে হোক আগামীকাল পরীকে বলে দিবো আমিও ওকে ভালোবাসি কারণ ওর ভালোবাসার মাঝে যে কোনো স্বার্থপরতা নেই, এইসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে প্রস্তুত হয়ে নিলাম পরী সাথে কলেজে যাবো বলে, কিন্তু আসছে না বলে কল দিয়ে শুনি সে কলেজে চলে গিয়েছে আর আমাকে নিতে বলে ভুলে গিয়েছে তাই নিজেই চলে গেলাম।কলেজে গিয়ে সব ক্লাস করে পরীকে বললাম বিকালে দেখা করতে শাড়ি পড়ে আসতে গতকাল যেখানে দেখা করেছিলাম। পরীও ঘাড় নাড়িয়ে হ্যাঁ জানালো, কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না মেয়েটা আমার সাথে কথা বলছে না কেন? নাকি রেগে আছে আমার উপর।
বিকালে ফুলের দোকান থেকে ফুল কিনে অনেকটা দেরি করে গেলাম নিজে ইচ্ছে করে, গিয়ে দেখি পরী বসে আছে, আমিও পাশে বসে বলতে লাগলাম
>>আচ্ছা আজ এত চুপচাপ কেন জানতে পারি?
>>এমনি।
>>পরী উঠে দাঁড়া তো আমার কাজ আছে একটু।
>>আরে আমি দাঁড়ালে তোর কিসের কাজ কিছুই তো বুঝতাছিনা।
>>আরে আগে দাঁড়া তারপর বলছি।
>>আচ্ছা বাবা দাঁড়াচ্ছি।
>>আই লাভ ইউ পরী, Do you love me?
>>বলতে পারি তবে একটা শর্ত আছে।
>>কী শর্ত শুনি?
>>সিগারেট, মদ ছেড়ে দিতে হবে আর কোনোদিন
স্পর্শ করতে পারবে না ঐসব তাহলে।
>>আচ্ছা করবো না স্পর্শ কোনোদিন এখন বলো Do you love me?
>>বুদ্ধুরাম সেটা বলতে হবে নাকি অনেক আগে থেকেই আমি তোকে ভালোবাসি আই লাভ ইউ, এইবার ফুল আমার হাতে দে।
>>কখন থেকে আমাকে তো আগে বললে না আর এখন থেকে তুমি করে বলবে হবু স্বামি, স্ত্রীর তুই করে একে অপরকে মানায় না বুঝলে।
>>অনেক আগে থেকেই আমি তোমাকে ভালোবাসতাম রাহিম কিন্তু ভয় ছিল যদি বলার পর তুমি হারিয়ে যাও তাই বলার সাহস হয়ে উঠেনি। কিন্তু একবার বলতে চেয়েছিলাম তখনি তোমার মুখে জান্নাতে নাম শুনে আর বলা হয়ে উঠেনি, তারপর তোমরা প্রেম করা শুরু করলে আর আমি চোখের পানি দিয়ে বালিশ ভিজাতে শুরু করলাম কিন্তু তোমাকে তা বুঝতে দেয়নি।
>>আরে বাবা এত বড় ঘটনা ঘটলো কিন্তু আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না।তবে বলতে হয় নারীর ছোঁয়াতে একজন পুরুষকে ভালো থেকে খারাপ আবার খারাপ থেকে ভালো বানিয়ে দিতে পারে, যেমন তুমি আমার জীবনটা সুন্দর বানিয়ে দিলে।
>>বুঝবে কীভাবে তুমি যে হাদারাম, গাধা আর বুদ্ধুরাম।তবে তা অবশ্যই ঠিক বলেছ।
>>কি আমি হাদারাম,গাধা।
>>তা নয়তো কী?
>>দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা।
>>এই এই ছাড়ো বলছি পার্কে মানুষ আছে, এখানে জড়িয়ে ধরা ঠিক নয় সবাই দেখছে।
>>দেখুক আমি আমার হবু স্ত্রীকে ধরেছি অন্য কোনো মেয়েকে তো ধরিনি।
>>যা দুষ্টু, ফাজিল ছাড়ো বলছি (এই বলে ঠেলা দিয়ে দৌড়)
>>এই এই পরী দাঁড়াও বলছি (আমিও পিছুনে দৌড়)
(সমাপ্ত)
পরিশেষে একজন নারীই পারে পুরুষকে তার ছোঁয়াতে ভালো থেকে খারাপ আবার খারাপ থেকে ভালো বানাতে? শিক্ষামূলক কী আছে তা আপনাদেরকে খুঁজে বের করে নিতে হবে। আর মেয়েদেরকে বলছি কারো উপকার না করতে পারলে কখনো কারো অপকার করবেন না কারণ আপনার একটু আঘাতে করিম চাচার সিগারেটের কাস্টমার বের যেতে পারে।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ