________পরিস্তিতি_______
_____জান্নতুল বাকিয়া তোয়া
_____
এক পর্ব
পরিস্তিতি ভয়ানক আকার ধারন করেছে,এখন সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াটা খুব জরুরি বিষয়| but কি করবো কিছু বুঝতে পারছি না|কালই সিদ্ধান্ত জানাতে হবে| হাতে আছে মাত্র আজকের রাতটাই|
এখন মনে হচ্ছে life একটা love করে রাখাই ভালো ছিলো, অন্তত এই পরিস্তিতিটা সামাল দেওয়া যেতো| মাঝে মাঝে মানুষ পরিস্তিতির কাছে অসহায় হয়ে যায়,
আজ নিজেকে অনেকটা রাজকুমারির মতো লাগছে!👸👸
গল্পের মতো আজ আমাকেও স্বয়ংবর নির্বাচন করতে হচ্ছে, আব্বু দুজন পাত্র ঠিক করেছে,তাদের মধ্যে থেকে পছন্দ করতে হবে|
আবার কখনো মনে হচ্ছে আমি নিজেই দাবার গুটি|
এসব উদ্ভট ভাবনার কথা শুনে অবাক হচ্ছেন আপনারা? love করি নাতো বিয়ে করতে সমস্য কি? গুরুতর সমস্যা আছে, এই উদ্ভট ভাবনারও লম্বা একটা history আছে! wait বলছি, তার আগে আপনাদের আমার পরিচয়টা দিয়ে নিই, নিজের তেমন পরিচয় আলাদা পরিচয় তৈরি হয়নি, আব্বুর পরিচয়েই আমায় লোকে চেনে| আমার পরিচয় বলতে আমার নামটাই আাছে| আমি তোয়া,এবার অনার্স ২য় বর্ষ|
history টা এবার বলি
প্রায় ৮ বছর আগের কথা, সবে মাত্র ক্লাস ফাইভে উঠেছি| নতুন ক্লাস নতুন বই সব মিলিয়ে সেই রকম আনন্দ|পড়াশুনায় মোটামুটি ভালোই ছিলাম তাই রোল তিন হয়েছিলো, হয়তো আর এক রোল কমতো but নতুন ছেলেটার জন্য সেটা আর হলো না| ক্লাস ফোরের final exm দিয়ে ওর রোল দুই হয়েছে,ওর নাম সিয়াম| রোল ১ সাদিয়া ২সিয়াম ৩ আমি ৪ নিলয় ৫ জেরিন ৬আদিবা
ক্লাসে আমরা ৪ জন বন্ধবি ছিলাম অন্যদের থেকে আলাদা অনেকে এটাকে একটা গ্যাং বলতো, এই গ্যং এর প্রধান ছিলো জেরিন, ছেলেরা কেউ কিছু বলার সাহস পতোনা| জেরিন ছিলো স্কুলের মধ্যে টপ সুন্দরি,তাই ছেলেরা একটু আধটু আমাদের আশেপাশে ঘুরতো|
তখন কার সময় love ছিলো কাউকে ক্ষেপানোর অন্যতম মাধ্যম| ব্যাপারটা খুব খারাপ লাগতো|
সিয়াম ছিলো পুরো স্কুলের মেয়েদের ক্রাশ| জেরিন ও সিয়াম কে পছন্দ করতো|
একদিন স্কুলে গিয়ে দেখি সাদিয়া,জেরিন,আদিবা স্কুল মাঠে বসে আছে, আমিও ক্লাসে বই রেখে ওদের কাছে গেলাম|||
>তোয়া,,,,এতো দেরি করে আসলি কেন? [সাদিয়া]
>দেরি কোথাই,,,! এখনোতো এসিমব্লি হয়নি![আমি]
>নাটকতো শেষ হয়ে গেলো| [আদিবা]
>মানে,,,! কিসের নাটক[আমি]
>সিয়াম আর জেরিনের [সাদিয়া]
>উফ,,, আসল ঘটনাটা বল[আমি]
>স্কুলে আসার পর থেকে কতো বার যে সাইকেল নিয়ে আসছে আর যাচ্ছে তার হিসেব নাই হিহিহি [আদিবা]
জেরিন কিছুই বলছেনা শুধু মিট মিট করে হাসছে|
এভাবেই দিন গুলো চলতে থাকলো, দেখতে দেখতে final exm এর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেলো| এখন five এর student দের axta ক্লাস করাচ্ছে স্যাররা| সকাল ৮-১০ টা পর্যন্ত এই ক্লাস হয়| তারপর ৩০ মিনিট বিরতি তারপর আবার ক্লাস পুরো ৪টা পর্যন্ত|
আজ axta ক্লাস শেষে আমরা ৪জন রোদে দাড়িয়ে শিতের মিষ্টি পোহাচ্ছিলাম, এমন সময় সিয়াম সাইকেলে নিয়ে আমাদের কাছে এসে থামলো,
>জেরিন একটু এদিকে আই[সিয়াম]
তারপর জেরিন সিয়ামের সাইকেলের কাছে গেলো| সিয়াম জেরিনের হাতে একটা কাগজ দিয়ে চলে গেলো| জেরিন মুছকি হেসে আমাদের কাছে আসলো|
>কিরে আমাদের সামনে পড়া যাবে তো?!? [আমি]
তারপর জেরিন চিঠিটা পড়লো| জেরিনের পড়া শেষে আমাদের কারো মুখে আর কনো কথা নেই,,,
এমন পরিস্তিতির জন্য আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না|
আমরা তো রাগের চোটে কান্না চলে আসলো.......
>এর মানে এতোদিন সিয়াম আমাদের পেছনে ঘুরতো তোয়ার জন্য....!!! [আদিবা]
ইচ্ছে করছে সিয়ামকে টেনে একটা চড় মারতে but সে সাহস আমরা নেই| তাই মনের বিষ মনে মারতে লাগলাম,,
আমি কিছু বলছি না শুধু চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে, কিছুতেই রাগটা কমাতে পারছি না...😭😭😭
এর মধ্যে ক্লাসের ঘন্টা বেজে উঠলো.......🌑
...চলবে...
_______পরিস্তিতি_______
_____জান্নাতুল বাকিয়া তোয়া_____
দুই পর্ব
ক্লাসে গেলাম,, কিছুই ভালো লাগছেনা| কিছু ক্ষনের মধ্যেই স্যার ক্লাসে আসলো| স্যার নিলয়ের কাছ থেকে ওর বইটা নিয়ে ক্লাস শুরু করলেন| স্যার সবাইকে না দেখে একটা কবিতা লিখতে বললেন...
লেখা প্রায়ই শেষ, এমন সময় হঠাৎ স্যার রাগি কন্ঠে নিলয়কে ডাকলেন||| নিলয় স্যারের কাছে যেতেই স্যার ওর বইটা ওর সামনে দিয়ে বললেন..
>এসব কি হু 😡[স্যার]
নিলয় অপরাধির মতো মাথা নিচু করে চুপ করে রইলো|| আর ক্লাসের সবাই তো অবাক দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে, সবার মনে একই প্রশ্ন উকি দিচ্ছে,, কিছুই বুঝতে পারছি না.,
>এই বয়সেই প্রেমের ভুত মাথায় ঠুকাছোস????😡[স্যার]
>......(চুপ)[নিলয়]
>কিরে কথা বলছিস না কেন,? তোর বাপকে ডেকে আনবো?[স্যার]
বাবার কথা বলায় এবার নিলয় ভয়ে ভয়ে বললো..
>না স্যার, আমি আর এমনটা করবো না [নিলয়]
ক্লাসের সবাই এখনো একটা ঘোরের মধ্যে আছি, কি হচ্ছে বুঝতে পারছিনা, শুধু নিরব দর্শকের মতো দৃর্শ্যটি দেখছি||
তারপর স্যার নিলয়কে হাত পাততে বললো,নিলয় হাত পাতলে ওর হাতে দুইটা বেতের বারি মারলো আর সাবধান করে দিলেন
>এরপর যদি এসব দেখি তাহলে কিন্তু তোর বাপকে ডেকে আানবো,,, কথাটা যেনো মনে থাকে,.... যা নিজের জায়গায় গিয়ে বস|[স্যার]
নিলয় চুপ চাপ নিজের জায়গায় গিয়ে বসলো|| ক্লাস শেষের ঘন্টা বেজে উঠলো...😥
স্যার ক্লাস থেকে বেরুতেই সবাই নিলয়ের বই নিয়ে টানাটানি শুরু করে দিলো||| জেরিন ভিড়ের মধ্যে বই দেখে এসে যা বললো তাতে আমার মেজাজ গেল সেই লেভেলে😡😡
> নিলয়ের বইয়ে কি সব লিখা আর তার সাথে তোয়ার নামও নিখেছে!![জেরিন]
একই দিনে পরপর এমন দুইটা বাজে ঘটনা সত্যি আমার জন্য চরম অপমানের ছিলো,,, সবাই এটা নিয়ে বলাবলি করবে উফফ আমি আর ভাবতে পারছিনা|||
রাগের মাত্রা বেড়েই যাচ্ছে আর সেই সাথে নোনা পানি বেয়ে পরছে😭😭😭
>তোয়া কাদিস না[সাদিয়া]
>😭😭😭
স্কুল ছুটি হলে বাসায় আসি, পরপর তিনদিন আর স্কুলে যায়নি|| পরের দিন স্কুলে গেলাম, আমাকে দেখে সাদিয়া ছুটে আমার কাছে আসলো
>তোয়া... কয়দিন স্কুলে আসিসনি কেনো!?? [সাদিয়া]
>এমনি [আমি]
আর কিছু না বলে ক্লাসে গেলাম| ক্লাসে সবাই আগেয় চলেএসেছে|
ক্লাসে স্যার এসে রোল কল করতে গিয়ে বললো
>তোয়া কয়দিন স্কুলে আসোনি কেনো [স্যার]
> স্যার.. একটু অসুস্থ ছিলাম| [আমি]
>ও আচ্ছা! বসো| [স্যার]
রোল কল শেষ করে স্যার সবাইকে রচনা লিখতে বললেন||
লেখা শেষে সবার খাতা জমা দিয়ে আসলাম|খাতা দেখা শেষ হলে স্যার তন্নিকে ডেকে খাতা গুলো সবাইকে দিয়ে বলে ক্লাস থেকে চলে গেলেন||
এই খাতা নিয়ে বাধলো আর এক ঝমেলা,,, শনি যেনো কিছুতেই আমার পিছু ছাড়ছে না
আমার খাতাটাই একটা ফোন নাম্বার ছিলো তার উপরে সিয়াম নাম লিখা ছিলো| সেটা তন্নি দেখে আর ও ভাবে এটা আমাদের ক্লাসের সিয়ামের নাম্বার|| ঝড়ের বেগে ভাইরাসের মতো কথাটা ক্লাসে ছরিয়ে পরলো|| so কেসটাও জন্ডিস হয়ে পড়লো|| জানি কেউ আমার কথা শুনবে না,, ভাবতেই আমার চোখে নোনার স্রোত শুরু হয়ে গেলো😭
> তোয়া এসব কি শুনছি!! [সাদিয়া]
আমি কেদে দিয়ে ওকে ঘটনাটা বললাম|| ওতো শুনে হা হয়ে গেলো😱
> ওটা সিয়াম.......
....চলবে...
_______পরিস্তিতি_______
_____জান্নাতুল বাকিয়া তোয়া_____
অন্তিম পর্ব
>ওটা সিয়াম আঙ্কেলের নাম্বার, কাল রতে আমার খাতাই নাম্বারটি লিখেছিলো আব্বু| পরে আর লেখাটি কাটা হয়নি| আর ওই নাম্বারটিই সবাই মনে করছে এই সিয়ামের [আমি]
>হুম বুঝলাম,,, সবার কথাই কান দিসনা| [সাদিয়া]
তারপর দেখতে দেখতে final exm চলে আসলো| exm শেষ হলো তার ১ মাস পর রেজাল্ট হলো| এদিকে আব্বুর ট্রন্সফার অর্ডার আসলো,,, আমরাও আব্বুর কাজের জায়গাই সিফ্ট হয়ে যায়,, ওখানকার জিলা স্কুলে ভর্তি হয়,,,, তারপর মাঝে ওনেক গুলো বছর কেটে গেছে,,,
গতকালই আমরা আমাদের গ্রামের বাড়িতে এসেছি,,, এখানে এসেই আমার জন্য আাব্বু পাত্র দেখেছে.. দুজন পাত্র আর এরা দুজনই আমার ৮ বছর আগের সেই অতিত
নিলয় আর সিয়াম| দুজনই study করছে নিলয় সফ্টওয়ার ইন্জিনিয়ারিং, আর সিয়াম মেডিকেলে| এখন এদের মধ্যে থেকে এক জনকে জীবন সঙ্গি করতে হবে,,
আমি কি সিদ্ধন্ত নিবো কিছু বুঝতে পারছি না| কেন আমার সাথেই বার বার এমন হচ্ছে|সেই দিন তো ওরা দুজই একই কাজ করেছিলো| আর তার জন্য তাদের পাপ্য টাও একই হওয়া উচিত| আমি কারোকে খুশি না করতে পারলেও| কষ্ট দেওয়ার অধিকার আমার নেই| এখন যদি পরিবারের উপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িক্তটা দিই, তাহলে তারা সিয়াম ও নিলয়ের মধ্যে একজনকে বেছে নেবে| আর সেটা একজনের জন্য অন্যায় হবে| তাই যা বলার আমাকেই বলতে হবে| এসব ভাবতে ভাবতে সকাল হয়ে গেলো| আব্বু কাছে গেলাম আর বললাম
>আব্বু আমি এই বিয়েটা করতে পারবো না [আমি]
>কেনো? [আব্বু]
>ওরা দুজনই আমার ক্লাস ফেন্ড ছিলো [আমি]
>আচ্ছা ঠিক আছে ওদের আমি না বলে দিচ্ছি [আব্বু]
>আব্বু তুমি রাগ করে বলছো না তো?[আমি]
>আমার মেয়ের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে, সে সব দিক ভেবেই সিদ্ধান্ত নেবে এতে আমার কনো সন্দেহ নেই [আব্বু]
আব্বুর কথা শুনে আমি কেদে ফেললাম😭
> tnxx আব্বু..😭 [আমি]
>এই পাগলি মেয়ে কাদছিস কেনো [আব্বু]
এই বলে আব্বু আমার চোখের পানি মুছে দিলেন| এতক্ষণ আম্মু দাড়িয়ে সবটা দেখ ছিলো|
>কি গো... বাবা মেয়ের কান্না হলো... সবাই তোমাদের জন্য খাবার টেবিলে অপেক্ষা করছে [আম্মু]
>চল মা [আব্বু]
>হুম চলো... [আমি]
আজ নিজেকে অনেকটা হালকা মনে হচ্ছে| যেই গল্পটা ৮ বছর আগে সৃষ্টি হয়েছিল তার পরিসমাপ্তি ঘটলো আজ| আমি ঠিক করলাম কি না জানি না, তবে ওদের দুজনের প্রতি অন্যায় করিনি এটা নিশ্চিত| আমি জানি সিয়াম আর নিলয় দুজনই ভাবতো হয়তো আমিও ওদের দুজনের মধ্যে এক জনকে পছন্দ করি| কিন্তুু আমি তো জানি আমি কখনোই ওদের নিয়ে এসব ভাবিনি| আজ থেকে ওরাও জানতে পারবে সত্যিটা|
সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না|
তারপর আবার যে যার পথে চলে যাবে.....
সময়ের পরিক্রমায় সব কিছু ভুলে যাবে,,,,,
আবার কিছু স্মৃতি রইয়ে যাবে,,,,,,,,
যা হওয়ার তা তো হবেই এটাই বাস্তবের ধর্ম
🌹সমাপ্ত🌹
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ