4871

# না_বলা_কারন__
লেখাঃ Akram Hussain Tahosin(কল্পবিলাসী বালক)
.
.
সেই ক্লাস ৮থেকেই আমাদের প্রেমের শুরু। সুন্দর, সুশীল, বিনম্র সেই মেয়েটি ছিলো 'সিমা'।
আবেগের প্রেমে আসক্ত হয়ে, দুজনই ডুবেছিলাম ভালবাসার অথই জলে।
আমি(সোহান) ছিলাম খুবই মেধাবী, আর সিমা ছিলো খুবই মায়াবী।
মায়াবী ওই দুটি চোখে আমি আমার পৃথিবী দেখতাম।
জীবনের সর্বসুখ, সুন্দর স্বপ্নগুলো ছিলো একমাত্র তাকেই ঘীরে।
খুব বেশী ভালবেসেছিলাম সিমাকে!!!
এভাবেই চলতে থাকলো আমাদের দিনকাল...
আবেগের অবুঝ প্রেমে কেটে গেল দুটি বছর।
.
৩মাস পর Ssc পরীক্ষা।
সিমা অবহেলা করা শুরু করলো আমাকে।
আগের মত রাতজাগা পাখি হয়ে আমার সাথে গল্প করেনা।
আগের মতো মিষ্টি সুরে কথা বলেনা। বুঝতে পারলাম পরীক্ষার জন্য এমন করছে....
.
যাইহোক, পরীক্ষা শেষ হলো।
দুজনের ফলাফলও ভালো হলো!
তারপর, ইন্জ্ঞিনিয়ারস ভর্তি পরীক্ষায় আমি ময়মনসিংহ সরকারি এবং ও 'সিলেট সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো।
ততদিনে আমাদের প্রেম ভালোই গড়িয়েছে....
১দিন ফোনালাপ না হলে দেহে আর প্রান থাকেনা।
ভালবাসায় মাতামাতি দুটি মনের আশা আকাঙ্ক্ষা বিক্রিয়া করে একটি দেহে পরিনত হয়েছে।
..
..
কিছুদিন পর.....
আকস্মিকভাবে,
আজ সারাদিন সিমার ফোন বন্ধ।
আমি পাগল হয়েগেছি প্রায়।
সমস্ত রিলেটিভদের সাথে কথা বলেও তাকে পাওয়া গেল না!!!
.
হঠাৎ ২দিন পর সিমার ফোন...!!!
.
>> দেখ সোহান, তোমার সাথে আর সম্পর্ক রাখা সম্ভব নাহ্!!!
আমি ভালো থাকবো, তুমিও ভালো থেকো.... বাই
.
>> কোনোকিছু বলার ভাষা খুজে পাচ্ছিলাম না।
মনেহচ্ছে পৃথিবীর সাথে সমস্ত গ্রহের ধ্বংসলীলা শুরু হয়েগেছে!!!
ঘূর্নিঝড়ের ঘুর্ণিপাক আমাকে ঘিরে ফেলেছে!!
দুনিয়া এই মুহূর্তেই কিয়ামত হতে চলেছে....
নিজের মষ্তিষ্ককে আর স্থির রাখতে পারলাম নাহ্!
অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পরে গেলাম!!!
.
পরেরদিন নিজেকে আবিস্কার করলাম হাসপাতালের বেডে!!!
প্রথমবারের মত, হাসপাতাল থেকে সরাসরি সিলেট রওনা দিলাম।
ওইখানে গিয়ে দেখলাম সিমা নেই!!!
জানতে পারলাম বাড়িতে চলে গেছে।
সিমার বান্ধবীদের সাথে কথা বলেও তেমন কোনো, কারন জানতে পারলাম নাহ্।
এককথায়, মেয়েটা আমার সাথে সম্পর্ক রাখতে চাচ্ছে না।
এদিকে সিমটাও বন্ধ করে দিয়েছে সে।
পাগলের মত ছুটে গেলাম ওর বাড়িতে, কিন্তু নাহ্ এখানেও পেলাম না আমি আসার আগেই চলে গেছে সে নিজ গন্তব্যে।
.
নিরাশ হয়ে, জীবনের মোড় ঘুরিয়ে নিলাম!!!
জীবনটাকে সিগারেটের ধোঁয়া আর রুমের অন্ধকারে আবদ্ধ করে ফেললাম।
অতীতের স্মৃতিগুলোর আঘাতে ভিতরটা পুড়ে ছারখার
হয়ে যাচ্ছে....
মানুষিক যন্ত্রণায় সাস্থ্যের অবনতি ও মষ্তিষ্কের বিকৃতি ঘটতে লাগলো।
কিছুদিন পর দৈহিকভাবে দূর্বল হয়ে জটিলতর মানুষিক রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলাম।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, আমার স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়েগেছে!!!
.
তখন আমার প্রিয় মানুষগুলোর আর্তনাদ বলে বুঝানো সম্ভব নাহ্।
মাবাবার একটিমাত্র আদরের ছেলে ছিলাম আমি, বড় আশা ছিলো আমাকে নিয়ে...
একদিন খুব বড় ইন্জিনিয়ার হবো।
মাবাবার স্বপ্ন পূরন করবো!
.
কিন্তু নাহ্, হলোনা!!!
একটি মেয়ের জন্য, সকল স্বপ্নের সংসার ভেঙে আমি হয়েগেলাম পাগল।
একদম শিশুর মতো, কাউকে চিনিনা, কিছ্ছুই জানিনা, শুধুমাত্র একটি শব্দই বারবার মুখের মাঝে কম্পিত হয়, আর তা হলো "সিমা"।
এভাবে কেটে গেল ছয়টি মাস, আমি এখোনো মানসিক রোগী।
.
সুস্থ হয়ে জানতে পারলাম,
আমি অসুস্থ থাকাবস্থায়, 'সিমা' এসেছিলো এক রাতে আমাকে দেখতে,
খুব কেদেছিলো সে, ওই মায়াবী দুটি চোখ দিয়ে অঝোরে অশ্রু ঝড়েছিল তার। নিরবে কেদে চলে গিয়েছিল নিজ গন্তব্যে(সিলেট)।
.
অতঃপর....
মাবাবার অক্লান্ত পরিশ্রমে,
পুরো ১বছরের মেহনতে আমি সুস্থ অবস্থায় ফিরে আসলাম,
খাটি সোনা হয়ে....
.
.
.
.
বহুদিন পর মেয়েটির ফোন...
> ভালো আছো সোহান?
> হুম ভালো!! আপনিও ভালো থাকবেন।
> আপনি করে বলছো কেন?
> কারন আপনি, আমার বড়!
> প্লিজ একটিবার 'তুমি' করে বলো,
একটিবার....
> অসম্ভব!!!! আপনার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই এবং কোনদিন ছিলোওনা। সুতরাং আপনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছি নাহ্।
> দুঃখিত বন্ধু ভেবে ফোন দিয়েছিলাম। আর কোনোদিন দিবোনা। ভালো থেকো পারলে মাফ করে দিয়ো.....
.
.
.
শুনে খারাপ লাগলো,
কিছুদিন আগে 'ও' একটা সম্পর্ক করেছিলো। ছেলেটা তারসাথে প্রতারণা করে, জীবনের সমস্ত কিছু কেড়ে নিয়ে চলে গেল। তারপর সে হয়েগেল নিঃস্ব একা।।।
অতঃপর খুবই অনুতপ্ত।
..
..
কিন্তু,
আজো সেই কারনটা অজানাই রয়েগেলো!!!
যে কারনে সে আমার জীবন থেকে চলে গিয়েছিল।
যে কারনে আমার জীবনে সে ঝড় তুলেছিলো।
.
হয়তো জীবন থেকে দুটি বছর হারিয়েছিলাম, কিন্তু পিছিয়ে যায়নি।
এখন আমি খুবই ভালো অবস্থানে আছি।
.
তবে কষ্ট আমার একটাই,
যখন শুনি ও সুখে নাই।
.
কিন্তু আমি,
আমি বড় সুখে আছি।
তাই মনখুলে গাইতে ইচ্ছেকরে...
...
...
'''সত্যি বলছি তোমাকে আর ভালবাসিনা। তোমার জন্য মিছে মিছে স্বপ্ন দেখিনা। এখন আমার তোমার জন্যে কোনো সময় নেই। এখন আমি ভালবাসি শুধু আমাকেই.......'''
.
.
.
বিঃদ্রঃ সত্য ঘটনা অবলম্বনে।
.
.
'''
লেখাঃ Akram Hussain Tahosin(কল্পবিলাসী বালক)