"অভিশপ্ত জীবন"
ইবনাত জান্নাত তোহা
আজ পরীর বিয়ে,সাধারণত এই দিনটিই মেয়েদের জন্য বিশেষ একটা দিন বিশেষ করে বাঙালি মেয়েদের ক্ষেত্রে!!!
হুম!পরীর বেলায়ও এমনটাই,,, কারন বিয়ের আগ পর্যন্ত "প্রেম"নামের কোন সম্পর্কে সে জড়াইনি কখনওই,কারন তার পরিবার ছিল অন্য ১০ পরিবারের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা,,যার কারনে প্রেমতো দূর কারও সাথে চোখে চোখ রেখে কথা বলার সাহসও করেনি সে কখনো! এমনকি স্কুল ড্রেসের সাথেও বোরকা, নেকাব ইউজ করতে হয়েছিল!
ওর পরিবারে আব্বু, আম্মু,ভাইয়া,আপু আর ছোট ভাই,পরী ওর আব্বু আর ভাইয়াকে ভীষণ ভয় পেত,কোনদিন চোখ তুলে কথা বলেনি তাদের সাথে, তবে ওর সব ছিল ওর আম্মু,,,,ওর ও ইচ্ছে করতো অন্য সব মেয়েদের মত স্বাধীন ভাবে চলতে কিন্তু,যখন থেকে সব বুঝতে শিখলো সে,তখন থেকেই বুঝে নিয়েছে তার স্বাধীনতা বলতে কিছুই নাই,সেই সুবাদে ও তেমন কারও সাথে মিশত না, খুব কম কথা বলতো!!আর যখন দিন শেষে মায়ের পাশে ঘুমাতে যেত সব দুঃখ যেন নিমিষেই দূর হয়ে যেত ওর মাকে জড়িয়ে গল্প শুনতে শুনতে ঘুমাই যেত.........এই পরী নামটা ওর আম্মুই রেখেছিল,....কারন ছোটকাল থেকেই পরী ওর আম্মুকে সবসময় বলতো
"""আচ্ছা আম্মু তুমি এত সুন্দর কেন?
আর আমরা কেন তোমার মত হলাম না?
ওর আম্মু তখন মুচকি হেসে বলতো পাগলী তুই তো আমার চোখে দেখা সব থেকে সুন্দর,এক্কেবারে একটা পরীর মতো """""
এই একটা সুখও হয়ত আল্লাহ সহ্য করতে পারলো না,,,,,
সব অগোছালো করে দিয়েই পরীর আম্মুকেও নিয়ে গেল তার কাছে,,,,,সেই থেকে পরী খুব একা হয়ে গেলো!
একেবারেই ভেঙে পড়েছিল!মানতেই পারছিল না যে তার মা আর নেই!
অনেক ইচ্ছা ছিল ওর
লেখা পড়া করবে!
অনেক লেখাপড়া!
তারপর ওর আম্মুর সব কষ্ট দূর করে দিবে কিন্তু সব স্বপ্ন ভেসে গেল!
ওর মা মারা যাওয়ার পর ওদের আর্থিক অবস্থারও এতটাই অবনতি হয়ে পড়েছিল যে তার আব্বুর পক্ষে তার লেখাপড়ার খরচ চালানো একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছিল,,,,
এমন অবস্থায় ওর আব্বু ওকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়!
পরী এসব জানার পর খুব কাঁদত!
কিন্তু তারও যে কিছুই করার ছিল না!
এরই মধ্যে বিয়ে ঠিক হয়ে গেল
কিভাবে, কোথায়,কার সাথে,আর ছেলেটা কেমন তার কিছুই জানা হলোনা, জানার ইচ্ছাও ছিল না!
ইয়া লম্বা ঘুমটা দিয়ে বসে আছে,খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে ঘরটা
একটু আগেই কয়েকজন এসে ওকে সাজিয়ে দিয়ে গেছে,কান্নায় সব নষ্ট হয়ে গিয়েছিল!
অনেক্ষন হয়ে গেল বসে আছে
ওর চোখ বুজে আসছিল,আর তখনই দরজার আওয়াজ শুনা গেলো.........
(ভাবীরা শিখিয়ে দিয়েছিল তাকে)বিয়ের রাতে নাকি স্বামীর পায়ে ধরে সালাম করতে হয় তাই পরীও তাই করলো কিন্তু
তার স্বামীর আচরনে অনেকটা অবাক হলো সালাম পেয়েও কোন রেসপন্স করলোনা!!!!
আরও অবাক করে দিয়ে সে বলে উঠলো ------
দেখ,আমাদের সম্পর্ক শুধু বিছানায় সীমাবদ্ধ থাকবে, এর থেকে বেশি আশা করলে ভালো হবেনা!!!আর আমি তুর আঁচলে নামাজ পড়তে পারব না, কারন আমি নামাজ পড়তে জানিনা,
আজ থেকে আমার ইবাদত গুলাও তুই করবি!
তার নিজের কানকে সে বিশ্বাস করতে পারছিল না,,,
এমন আচরণ!!! সোজা তুইতোকারি!! যা সে এই বয়স পর্যন্ত দেখেই নি!!!!😭😭😭
পরীর তখন ইচ্ছে করছিল -----------------
চিৎকার করে বলতে---
"হে আল্লাহ কি অপরাধের শাস্তি দিচ্ছ আমায়"?
ইচ্ছে করছিল গলা ফাটিয়ে কান্না করে সব কষ্টককে ভাসিয়ে দিতে😭
কিন্তু কিন্তু পারলো না!!!
নীরবে কাঁদতে কাঁদতে কিভাবে যে ঘুমাই গেল সে নিজেও ঠের পেল না!
হঠাৎ মুখে উপর পানি ছোঁয়ায়য় বসে পড়ে সে! ঘুমটা যেন নিমিষেই উবে গেল!ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে ওর স্বামীর দিকে!
"কি মহারানী এতক্ষণ পর্যন্ত কিসের ঘুম ঘুমাও তুমি?
ফয়সালের কটু কথায় সম্বিৎ ফিরে পেল পরী (ওহ বলতেই ভুলে গেছি পরীর স্বামীর নাম ফয়সাল)
তড়িঘড়ি করে উঠে পড়লো!! কিন্তু বাথ্রুমে গিয়ে ওর চক্কু চড়ক গাছ!!!!!😱
এত কাপড়!
কি কি দেখছেন এভাবে...?তাড়াতাড়ি এইগুলো সব ধুয়ে নেন!
নাস্তা করার সময় হয়ে এসছে, এতদিন যাবত আম্মা করছে এখন থেকে আপনি করবেন!
পরীর চোখে পানি এসে গেল!!
ওর সাথে এসব কি হচ্ছে???কত কল্পনার জালই না ভুনেছিল মনে মনে!!!হু হু করে কেঁদে উঠলো সে! এই মুহুর্তে
সব যেন অন্ধকার দেখছে পরী !!!
ধপাস!করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল!যখন চোখ খুলে দেখলো সবাই ওকে ঘিরে বসে আছে!ওর শাশুড়ি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে কেউ কেউ মাথার কাছে হাত পাখা দিয়ে বাতাস করছে!
ও সবার ভীড়ে কাউকে খুজছিল!
কিন্তু না!তার কাংখিত মানুষ টাকে দেখতে পেল না!!
এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেল!
পরী একে একে তার স্বামীর পরিবারের সবার মন জয় করে নিলো! সবাই ওকে এতটাই ভালবাসতো
ও ভুলেই যেত যে "যার জন্য সব ছেড়ে এখানে আসা সেই ই তাকে এতটুকু কেয়ার করেনা!
ফয়সালের বন্ধুদের কাছ থেকে শুনেছিল ওর স্বামীরা কারও সাথে এফ্যায়ার ছিল আর এখনো আছে!!!
তাতে কি!!!একজনের বিপরীতে পরিবারে ২০সদস্য সবাই ওকে ভীষণ ভালবাসে,,,,,পরী এতেই খুশি
শুধু প্রতিদিন নিয়ম করে সবার অগোচরে গিয়ে মায়ের ছবি বুকে নিয়ে ইচ্ছে মত কেঁদে নেয়"কেউ ঠের পায় না!এত টুকুও না!!!
এখন শুধু পরীর একটাই চাওয়া!!!!
মৃত্যুর শেষ মুহুর্ত!!!!
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ