❤___তোকে অনেক ভালোবাসি___❤
____জান্নাতুল বাকিয়া তোয়া____
চার পর্ব
তোয়া কলেজে আসেনি তাই ফারহান একটা ক্লাস করে বাসায় চলে আসে। পরপর দুদিন তোয়া কলেজে আসে না এদিকে ফারহান তোয়ার সাথে কোনো যোগাযোগ না করতে পেরে অস্থির হয়ে পরে। রাতে খাবার খেয়ে ফারহান রুমে গিয়ে পড়তে বসে। হঠাৎ তখন তোয়ার কথা মনে পড়ে গেলো। সেই প্রথম দিন থেকেই তোয়াকে তার ভালো লাগে। সময়ের পরিক্রমায় সেই ভালো লাগা কখন যেন ভালোবাসাই পরিনত হয়ে গেছে। ভালোবাসার কথা ভাবতেই ফারহান চমকে উঠলো। সে মনে মনে বললো ভালোবাসে হ্যাঁ সত্যি আমি তোয়াকে ভালোবাসি অনেক ভালোবাসি। কিন্তুু তোয়াকে আমার মনের কথাটা কি করে বলবো! আচ্ছা তোয়া তো আমার মনের কথা পড়ে ফেলতে পারে। কত বারই তো এমনটা হয়েছে। আমি যখনই তোয়াকে বোকা বানানোর চেষ্টা করি ও ঠিকই বুঝে যায়। তাহলে আমার ভালোবাসটা বুঝবেনা কেন? অবশ্যই বুঝবে! তারপর ফারহান ঠিক করে সে তার মনের কথা তোয়াকে বলবে। আবার চিন্তা হয় যদি অন্যদের মতো তোয়া তাকেও ফিরিয়ে দেয়। ফারহান মনে মনে ঠিক করলো কাল যদি তোয়া কলেজে না আসে তাহলে সে তোয়ার বাসায় যাবে। এসব এলো পাথারি চিন্তা করতে করতে কখন যেন ঘুমিয়ে যায় ফারহান। পরের দিন ফারহান কলেজে গিয়ে দেখা তোয়া কলেজে এসেছে। ফারহানকে দেখে তোয়া ফারহানের কাছে আসলো। তোয়া মোটে দুদিন কলেজে আসেনি। অথচ ফারহানের কাছে মনে হচ্ছে কত যুগ তোয়াকে দেখিনি। তারপর দুজনে কৃঞ্চচূড়া গাছের নিচে বসলো।
__দুদিন কলেজে আসিসনি কেন?
__একটু অসুস্থ ছিলাম।
__আর ফোন অফ ছিলো কেন?
__আর বলিস না হঠাৎ নষ্ট হয়ে গেছে।
__ও
__হুম
__তোয়া তোকে একটা প্রশ্ন করবো?
__কি প্রশ্ন?
__তুই কাউকে পছন্দ করিস?
ফারহানের কথা শুনে তোয়া কিছুটা অবাক বললো।
__হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন?
__না আসলে তুই কারোর প্রপোজ একসেপ্ট করিস না কেন?
এবার তোয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মুখে কৃত্রিম হাসি এনে বললো।
__ভালোবাসর অধিকার সবার নেই! ভালোবাসার জন্য উপর আলার থেকে অনুমদন আনতে হয়। আর সেটা আমার নেই বা আনতে ভুলে গেছি।
কথা গুলো বলে তোয়া হাসতে লাগলো। আর ফারহান তোয়ার সেই হাসি অপলোকে দেখতে লাগলো।
__কিরে বোবা হয়ে গেলি নাকি?
__না,,, আচ্ছা সেই অনুমদন যদি আমি এনে দেই তাহলে তুই ভালোবাসবি তো?
ফারহান কথাটা অনেক কৌতুহলের সাথে বললো। তোয়া ফারহানের মুখের দিকে কিছুক্ষন চেয়ে রইলো।
__উফফফ! তোর ফাজলামি রাখতো,এখন ক্লাসে চল?
__না আগে বল?
__কি বলবো!
__ওই যে অনুমদন,,,
তোয়া ফারহানকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ওর হাতটা ধরে টেনে ক্লাসে নিয়ে গেলো। তারপর ক্লাসে স্যার আসলো। ক্লাসের মধ্যে হঠাৎ ফারহান তোয়াকে ফিস ফিস করে ডাকলো।
__তোয়া,,,
__কি?
__বললি নাতো?
__কি বলবো?
__অনুমদন
__ওই তুই চুপ করবি, দেখছিস না ক্লাসে স্যার আছে।
__না আগে তুই বল।
তোয়া ফারহানের দিকে রাগি লুক দিলো। ফারহান আর কিছু বললো না। তারপর ক্লাস শেষে তোয়া বেরিয়ে আসছিলো তখন পেছন থেকে ফারহান ডাক দিলো। তোয়া দাড়ালে ফারহান তার হাতটা ধরে কৃঞ্চচূড়া গেছের নিচে নিয়ে গেলো।
__কি রে এখানে আনলি কেন?
__তোকে কিছু কথা বললো তাই!
__কি কথা?
__আচ্ছা তোয়া তুই তো আমার মনের কথা পড়ে ফেলতে পারিস , আজও পড়ে নেনা!
ফারহানের কথা শুনে তোয়া অবাক হয়ে ফারহানের দিকে তাকিয়ে রইলো।
__আমি কি বলতে চাইছি তুই বুঝতে পারিস না?
__কি সব বলছিস! কি বুঝবো?
__আমি তোকে ভালোবাসি
__....(চুপ)
__হ্যাঁ তোয়া আমি তোকে অনেক ভালোবাসি।
এই বলে ফারহান তোয়ার উত্তরের অপেক্ষায় রইলো। ফারহানের কথা শুনে তোয়া কেমন যেন নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। ফারহান লক্ষ করলো তোয়ার চোখের কোনে এক বিন্দু জল চিকচিক করছে। ওরা দুজনেই চুপচাপ দাড়িয়ে আছে। ওদের সাথে প্রকৃতিও যেন নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। তারপর কিছু না বলেই তোয়া চলে গেলো। ফারহান দাড়িয়ে তোয়ার চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইলো। অন্যদিন হলে সে তোয়ার সাথেই যেতো। কিন্তুু আজ তোয়াকে ডাকার কোনো ভাষায় খুজে পাচ্ছে না। তোয়ার নিস্তব্ধতায় আজ ফারহানের সেই ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। তারপর ফারহান বাসায় চলে আসে। ফারহানের আজ কিছুই ভালো লাগছেনা। তোয়া যদি ফারহানকে সরাসরি না বলে দিতো তাহলেও হয়তো এতটা কষ্ট পেতোনা সে যতোটা কষ্ট পাচ্ছে তোয়ার নিস্তব্ধতায়। ফারহান তোয়াকে ফোন দিতে গিয়ে দেখে তোয়ার ফোনটা অফ। তারপর কিছুদিন আর কলেজে যায় না ফারহান। তবে মাঝে মাঝে তোয়ার ফোনে ট্রাই করে কিন্তুু একই ভাবে ফোনটা অফ পাই। এভাই আরও কিছুদিন কেটে গেলো।
...চলবে...
❤___তোকে অনেক ভালোবাসি___❤
____জান্নাতুল বাকিয়া তোয়া____
অন্তিম পর্ব (পাঁচ)
পুরো ১০ দিন পর আজ ফারহান কলেজে আসলো।এসেই মনে মনে সে তোয়াকে খুজতে লাগলো, কিন্তুু কোথাও দেখতে পেলোনা। ফারহানকে দেখে নাফিজ বললো।
__কিরে দোস্ত! তোদের তো কোনো খবরই নেই! এতো দিন কলেজে আসিস না কেন?
__না রে তেমন কিছু না, এমনি আসিনি।
এই বলে ফারহান ক্লাসের দিকে যাচ্ছিলো, হঠাৎ নাফিজের বলা কথা মাথায় আসে, ফারহান নাফিজকে ডাক দেই। নাফিজ চলে যাচ্ছিলো ফারহানের ডাকে আবার ফিরে আসলো।
__কিরে কিছু বলবি?
__হুম
__কি বলবি বল?
__তুই একটু আগে কি বললি? আমরা কলেজে আসিনি মানে! আমি ছাড়া আর কারা কলেজে আসেনি?
__ও,,, তোরা মানে তুই আর তোয়া তো কলেজে আসিস না তাই বললাম আর কি।
নাফিজের কথায় ফারহান জানতে পারে সেই দিনের পর তোয়াও আর কলেজে আসেনি। তারপর ফারহান কি যেন ভেবে তোয়ার বাসায় গেলো। কলিং বেল চাপতেই বিনু খালা দরজা খুললো।
__ফারহান তুমি এখানে?
__জি খালা, তোয়ার সাথে একটু দরকার ছিলো।
__কিন্তুু বাসায় তো কেউ নাই।
__সবাই কোথায় গেছে?
__হাসপাতালে
__কেন! কার কি হয়েছে?
__তোয়া মা অসুস্থ তাই সবাই ওখানেই আছে।
ওখানে আর দেরি না করে ফারহান হাসপাতালে চলে গেলো। অজানা একটা ভয় ফারহানকে ঘিরে আছে।কেবিনের বাইরে তোয়ার আম্মু বসে কান্না কান্না করছে। ফারহানকে দেখে তোয়ার আম্মুর কান্না দ্বিগুন বেড়ে গেলো সাথে ফারহানের অজানা ভয়টাও।
__আন্টি তোয়ার কি হয়েছে?
তারপর উনি যা বললো সেটা শুনে ফারহানের যেন পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো, মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। তোয়ার আগে থেকেই একটা কিডনি ডেম্যজ ছিলো। একটা কিডনিতেও মানুষ ভালো ভাবেই বাঁচতে পারে। কিন্তুু কিছু দিন আগে জানতে পারে অন্যটাও ডেম্যেজ হয়ে গেছে। আমাদের কারো কিডনি ম্যাচ করিনি।তোয়ার বেচে থাকার জন্য এই মুহূর্তে অন্তত একটা ম্যাচিং কিডনি লাগবে। বলেই আবার কান্নায় ভেঙ্গে পরলেন। তোয়ার আম্মুকে সান্তনা দেওয়ার ভাষা ফারহানের নেই। ফারহান নিজেকেই সামলাতে পারছে না। তবুও বললো
__আন্টি আপনি ভেঙ্গে পরবেন না, উপর আলা সব ঠিক করে দেবে।
বলেই ফারহানের চোখটা ঝাপসা হয়ে আসলো। তারপর ফারহান তোয়ার কেবিনের সামনে গিয়ে দাড়ালো। সমনে কাচের দেওয়াল হওয়ায় ভেতরের সবটা অনায়াসে দেখা যাচ্ছে। এই কয়েক দিনে তোয়াকে আর চেনায় যাচ্ছে না। নিশ্চুপ হয়ে ঘুমাচ্ছে। যেন মনে হচ্ছে সেই দিনের নিস্তব্ধতা আজও কাটেনি ওর। সেই দিনের নিস্তব্ধতার মানে আজ ফারহানের কাছে দিনের আলোর মতো জ্বল জ্বল করছে। আর বেশি ক্ষন দাড়িয়ে থাকতে পারলো না ফারহান। এদিকে তোয়ার বাবা ডাক্তারের কাছে নিরাশ হয়ে জানালো তিনি কিডনির ব্যবস্থা করতে পারেনি। ফারহান তোয়ার বাবার কাধে হাত দিয়ে বললো।
__চিন্তা করবেন না আঙ্কেল!তোয়া ঠিক হয়ে যাবে? আমি কিডনি দেবো। আমার কিডনি ম্যাচ করবে সব পরীক্ষা করে নিয়েছি।
তোয়ার বাবা শেষ মুহূর্তে আাশার আলো দেখে ফারহানকে জরিয়ে ধরলো, তারপর কি যেন ভেবে বললো।
__কিন্তুু তোমার গারজেন্টরা?
__আপনি ও সব নিয়ে ভাববেন না। আমি মায়ের সাথে কথা বলে নিয়েছি। আর একটা কিডনি দিলে আমি মরে যাবো না আঙ্কেল। দুটো কিডনি কি করবো তার থেকে একটা কিডনি নিয়ে আমরা দুজনই এই সুন্দর পৃথীবিটা দেখবো।
ফারহানের কথা শুনে তোয়ার বাবা কিছু বলার ভাষা পাচ্ছেনা শুধু অঝরে চোখের পানি বইতে লাগলো।
দুই মাস পর,
পারিবারিক ভাবেই তোয়া আর ফারহানের বিয়ে ঠিক হয়েছে। আজ ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ফারহান তোয়াকে ফোন করে তাদের প্রিয় জায়গাটাই আসতে বললো। ফারহানের কথা মতো তোয়া ঠিক সময় চলে আসলো। ফারহান আগেই এসেছে, তোয়া আজ শাড়ি পরে এসেছে। আজ প্রথম ফারহান তোয়াকে শাড়িতে দেখছে। তোয়াকে আজ অসম্ভব সুন্দর লাগছে। শাড়িতে বুঝি মেয়েদের একটু বেশি সুন্দর লাগে! সেটা তোয়াকে দেখেয় বোঝা যাচ্ছে।
__কতক্ষন এসেছিস?
__হ্যাপি ভেলেন্চটাইন ডে❤
তোয়া একটু হেসে বললো
__সেম,,,, চল হাটি!
__হুম চল!
দুজন দুজনার হাত ধরে পাশাপাশি হাটতে থাকে,,, ফারহান গলা ছেড়ে গান ধরলো
এই পথ যদি না শেষ হয়,,,,
তবে কেমন হতো তুমি বলতো?
🎶🎵🎵🎶
তারপর দুজনে কৃঞ্চচূড়া গাছের নিচে গিয়ে দাড়ালো। তারপর হঠাৎ ফারহান তোয়াকে বললো
__আমি ❤তোকে অনেক ভালোবাসি❤
__আমি তোকে ভালোবাসি না😏
তোয়ার মুখে এমন কথা শুনার জন্য ফারহান মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। কথাটা শুনে ফারহানের মুখে আাধার নেমে আসলো। বুকটা ফেটে যাচ্ছে। তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে বললো।
__কেন ভালোবাসিস না?
__বুদ্ধুরাম তুই কখনো তো আমাই প্রপোজই করিসনি! আর আজকের মতো বিশেষ দিনেও তুই শুধু হাতে এসেছিস! ফুল কই আমরা?😩
অভিমানী শুরে তোয়া কথা গুলো বললো। ফারহান এবার আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার আনান্দে, তোয়ার সামনে হাটু গেড়ে বসে কোটের নিচে বুক পকেটে রাখা একটি সাদা গোলাপ তোয়াকে দিয়ে বললো।
__সাদা গোলাপ সবার জন্য সেই সবার মধ্যে তোমাকে পেতে চাই🍥
হলুদ গোলাপ বন্ধুর জন্য, সারা জীবন বন্ধু হয়ে থাকবে আমার পাশে🌻
লাল গোলাপ প্রেয়শির জন্য, তুমি কি সেই প্রেয়শি হবে🌹
তুমি কি আমার হাসি মুখের আবার কারন হবে! কষ্টের মুহূর্তের জল মোছার একজন সঙ্গি হবে। তুমি কি আমার অপূর্ণ জীবনটা পূর্ণ করে দেবে?
🌹উইল ইউ ম্যারি মি🌹
ফারহানের প্রপোজের ঝুলি শেষ হলে তোয়ার গাল বেয়ে দুই ফোটা আনান্দ অস্রু বেয়ে পরলো ফারহানের হাতের তালুতে।
__আমিও ❤তোকে অনেক ভালোবাসি❤
__হুম সবই ঠিক আছে শুধু একটা ভাষা চেন্জ করতে হবে😏__কোন ভাষাটা?
__এখন থেকে আর তুই বলা যাবে না, তুমি বলতে হবে😉
__হিহিহি ok,,,কিন্তুু তোকেও বলতে হবে😀
__ok তুমি😉
__ok তুমি😂
এভাবেই তোয়া আর ফারহানের রোমান্টিক লাভ স্টোরি চলতে লাগলো।।।।💑👫💑
______❤🌹সমাপ্ত🌹❤______
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ