*****টাকার খেলা*****(লেখক রাহিম মিয়া)
'
'
শিক্ষামূলক গল্প
'
'
'
১
রফিক মিয়া এলাকার নামীদামী মানুষ। টাকা, সম্পদ এর অভাব নেই, বলতে গেলে অনেক ধনী তিনি। দুইটা ছেলে তার বিদেশে থাকে আর ব্যাংকে অনেক টাকা আছে রফিক মিয়ার। এইবার কুরবানী ঈদে তিনি ১লক্ষ ৫০হাজার দিয়ে গরু কিনলো কুরবানী দেওয়ার জন্য তাও ঈদের চারদিন আগে ।
২
শফিক মিয়া এলাকার বিরাট ধনী মানুষ, বলতে গেলে তার কাজের লোকরাও সাহেবের মত চলাফেরা করে আর তিনি অনেক কম্পানির মালিকও বটে । শফিক মিয়ার কত টাকা, সম্পদ আছে তা তিনি নিজেও জানে না। একটা মেয়ে আর দুইটা ছেলে আছে কিন্তু ৩জনই বিদেশে পড়ালেখা করে আর তিনি এইবার কুরবানী ঈদে কুরবানী দেওয়ার জন্য ৪লক্ষ দিয়ে একটা গরু কিনলো তাও ঈদের ৩দিন আগে ।
৩
রাহিম মিয়া এলাকার সাধারন মানুষ, বলতে গেলে ছোট্টখাটু একটা চাকরি করে। সংসার তার ৫জন নিয়ে দুইটা মেয়ে আর একটা ছেলে আর তিনি ও তার স্ত্রী। রাহিম মিয়া সব সময় আল্লাহ রাসূলের দেখা পথে চলেন, বলতে গেলে ধার্মিক তিনি। নিজের কষ্টের টাকা প্রতিদিন ১০০ কিংবা ২০০ টাকা করে জমিয়ে এইবার কুরবানী ঈদে গরু কিনলো ৩০হাজার দিয়ে আর মুখে যেন তার জয়ের হাসি।
৪
রফিক মিয়া, শফিক মিয়া, রাহিম মিয়া একেই এলাকার বাসিন্দা। তো শফিক মিয়া ৪লক্ষ টাকা দিয়ে গরু কিনেছে তা রফিক মিয়ার কানে যায় আর তিনি তাই ব্যাংকে যায় টাকা আনার জন্য, যাতে শফিক মিয়া থেকে দামি গরু কিনতে পারে। কিন্তু যাবার সময় তার মনে পড়লো রাস্তাতে যে টাকা তো তিনি সব মেয়াদ দিয়ে রেখেছেন ব্যাংকে, কিন্তু আবার মনে পড়লো টাকার লাভ তো জমা আছে অনেক সেটা না হয় এনে ৬লক্ষ দিয়ে একটা গরু কিনে ফেলি, তবুও শফিক মিয়াকে দেখিয়ে দিতে হবে আমিও কম না। তাই তিনি লাভের টাকা এনে আর আগে গরুটা চুপিচুপি বিক্রি করে দিলেন ১০হাজার কম টাকা দিয়ে আর ৬লক্ষ দিয়ে বড় ধরনের গরু কিনলেন। গরু নিয়ে শফিক মিয়ার বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিল আর তিনি ছাদের থেকে খেয়াল করলেন রফিক মিয়া গরু নিয়ে যাচ্ছে তাই তিনি লোকজন দিয়ে খবর নিলেন । শুনে তো তার শরীর জ্বলতে শুরু করলো যে রফিক মিয়া ৬লক্ষ দিয়ে গরু কিনেছে । কারণ তিনি এলাকার ধনী মানুষ তার থেকে দামে গরু নিয়ে কেউ এই এলাকাতে কুরবানী দিবে প্রশ্ন ই উঠে না। তাই তিনি তার আগে গরুটা বিক্রি করে দেয় আর সবাইকে বলে দেয় এটা তার স্ত্রীর পছন্দ হয়নি গরুটা তাই বিক্রি করে দিয়েছে। শফিক মিয়া গরু বিক্রি করে নতুন গরু কিনলেন ১০লক্ষ টাকা দিয়ে মুখে যেন তার বিজয়ের হাসি ।
৫
ঈদুল আযাহ নামাজ শেষে একে অপরে সাথে কোলাকোলি করা শুরু করে দিলো। তো রফিক মিয়া আর শফিক মিয়া দুইবার করে গরু কিনার ব্যাপারটা রাহিম মিয়ার নিজের চোখে দেখে আর মনের মাঝে বিষন্নতা কাজ করছিল, তাই নামাজ শেষে তিনি রফিক মিয়ার সাথে কোলাকোলি করে কথা বলতে লাগলেন ।
>>আচ্ছা রফিক ভাই এইবার গরু কত দিয়ে কিনেছেন?
>>এই তো রাহিম ভাই বেশি না মাত্র ৬লক্ষ দিয়ে, ইসস যদি ব্যাংকে টাকার লাভ আরো থাকতো ১২লক্ষ দিয়ে গরু কিনতাম।কেন যে মেয়াদ দিয়ে রাখতে গিয়েছিলাম।
>>তার মানে আপনে ভাই লাভের টাকা দিয়ে গরু কিনেছেন?
>>আরে না ভাই সব লাভের টাকা না ১লক্ষ ৫০হাজার ছেলেরা পাঠিয়েছিল সেখান থেকে ১লক্ষ ৪০হাজার দিয়ে আর বাকি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে গরু কিনেছি।
>>সেটাই তো ভাই এখানে তো লাভের টাকা দিয়ে গরু কিনা হয়েছে আর ব্যাংকের থেকে লাভ পাওয়া মানে সুদ খাওয়া আর সুদের টাকা দিয়ে তো আপনার কুরবানী হবে না। কারণ কুরবানী দিতে গেলে হালাল টাকা লাগে। যদিও আপনার কাছে কেউ টাকা পাওনা থাকে তারপরও কুরবানী হবে না, সেটা আল্লাহ কখনো কবুল করবে না ভাই। আমি তো দেখেছি প্রথমে গরু ১লক্ষ ৫০হাজার দিয়ে কিনেছেন সেটা বিক্রি করে দিলেন কেন?
>>ভাই কী বলছ এইসব আমার কুরবানী কবুল হবে না আল্লাহ কাছে কিন্তু কেন?
>>কারণ আপনে ভাই সুদের টাকা দিয়ে গরু কিনেছেন আর কুরবানী কবুল হতে আল্লাহ কাছে হালাল টাকা লাগে। এখন বলেন প্রথম গরু বিক্রি করে দিয়েছেন কেন?
>>বলতে পারি যদি কাউকে না বলেন রাহিম ভাই।
>>আচ্ছা বলবো না বলেন কেন?
>>শফিক ভাইকে তো আপনে চিনেন ই, আসলে শফিক ভাই ৪লক্ষ দিয়ে গরু কিনেছিল তাই তার থেকে দামে গরু কিনে এলাকাতে দেখিয়ে দিবো বলে প্রথম গরুটা বিক্রি করে দিয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি তিনি ১০লক্ষ দিয়ে গরু কিনে এলাকাবাসীকে দেখিয়ে দিয়েছে আর সাথে আমাকেও।
>>আপনাদের দুইজনের ই কুরবানী কবুল হবে না রফিক ভাই। প্রথমে আপনে সুদের টাকা দিয়ে আর এলাকাবাসীকে দেখিয়ে দিবার জন্য দামে গরু কিনেছেন তাই। ২য় শফিক ভাই আপনার সাথে জেদ ধরে আর এলাকার মানুষকে দেখানোর জন্য যে তিনি অনেক টাকার মালিক আর কেউ তার থেকে দামে গরু কিনে কুরবানী দিতে পারবে না তাই তার কুরবানীও আল্লাহ কাছে কবুল হবে না।
>>এখন আমি কী করবো ভাই? এত টাকা দিয়ে কুরবানী দিচ্ছি যদি কবুল না হয় আল্লাহ কাছে।
>>রফিক ভাই কিছু করার নাই আর বেশি টাকা দিয়ে কুরবানী দিলে আল্লাহ কাছে কবুল হবে এমন কোনো নয় বরং অল্প হালাল টাকা দিয়ে ছাগল কুরবানী দিলেও সেটা আল্লাহ কাছে কবুল হয়ে যায়। আপনে যখন ভুল বুঝতে পেরেছেন তওবা করুন আর আগামী বছরে সামান্য টাকা হলেও হালাল টাকা দিয়ে কুরবানী দিবেন নিয়ত করুন।
>>আচ্ছা ভাই তাই করবো আমার চোখ খুলে দিলে আজ।
>>এইবার চলেন রফিক ভাই গরু জবাই করতে হবে।
(সমাপ্ত)
পরিশেষে কেউ যদি আপনার কাছে ১টাকা পাওনা থাকে কুরবানী কবুল হবে না আর কুরবানী হালাল টাকা ছাড়া কখনো আল্লাহ কাছে কবুল হয় না আর লোক দেখানোর কুরবানী দিলে সেটাও কবুল হবে না, তাই হালাল টাকা দিয়ে কুরবানী দিন তার বিনিময়ে পুশুর প্রতিটা পশমের সমান সওয়াব কামিয়ে নিন।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ