গল্পের নাম :- নাম তার প্রজাপতি।
লেখক :- Ximanto Biswas (পিয়াল)
মিরপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ যাওয়ার জন্য হিমাচল নামক বাসটাতে উঠে পরলাম। কলেজ বেশকিছু দিন বন্ধ থাকবে, ভাবলাম সেই সুবাদে এক চাচার বাসা থেকে কয়েকদিনের জন্য ঘুরে আসি। যেই ভাবা সেই কাজ, কলেজ ছুটি দেয়ার পরের দিনই উঠে পরলাম বাসে নারায়গঞ্জের উদ্দেশ্যে। প্রায় কয়েকটা ঘন্টার যাত্রা। জ্যাম, কোলাহল সব মিলিয়ে জগাখিচুড়ি। যাই হোক জানালার কাছের একটা সিট দখল করে বসে পরলাম। বলতে গেলে বাসটা প্রায় যাত্রী শুন্যই ছিলো। একটু পরপরেই বাস চালক তার বাস থামিয়ে যাত্রী তুলে নিচ্ছেন। প্রায় একঘন্টা ধরে চালকের এই নির্মম অত্যাচার সহ্য করা লাগলো। কিছুক্ষনের মধ্যেই বাসটা যাত্রীতে পরিপূর্ণ হলো। আজব ব্যপার সব সিটগুলোতে যাত্রীরা বসে পরলেও, আমার পাশে কেউই বসে নি। নিজের কাছেই ব্যাপারটা একটু অন্যরকমই লাগলো। নিজেকেই প্রশ্ন করলাম - আমাকে কি দেখতে এতোটাই খারাপ লাগছে? যাই হোক! কানে হেডফোন লাগিয়ে চোখ বন্ধ করে মাথাটা সিটের উপর এলিয়ে দিলাম।
ঘুমিয়েই পরেছিলাম। হঠাৎ এক মিষ্টি ঘ্রানে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আমার পাশের খালি সিটটাতে জীবন্ত জীবের নড়াচড়ার অনুভূতি পেলাম। ঘুম চোখে বামে মাথাটা ঘুরালাম। এমা! এ যে নারী। সাদা ড্রেসে আমার পাসে বসা একটা মেয়ে! বয়সের দোষে মুখটা একটু দেখার চেষ্টা করলাম। মেয়েটা মাথা নিচু করে মোবাইল টিপছে। কিন্তু চুলগুলো এমন ভাবে ছড়ানো মুখটা ভালো করে দেখা যাচ্ছিলো না। তারপরেও কয়েকবার বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। মেয়েটা একটা মেয়েলী সুগন্ধি মেখেছে। যদিও ভালই লাগছিলো!
কিছুদূরে গিয়েই বাসটা জ্যামে আটকালো। নানান ধরনের মানুষ বাসে উঠছে। একটা ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে এক বৃদ্ধর আগমন। কোলের বাচ্চাটার ব্লাড-ক্যান্সার নামক কিছু একটা হয়েছে। আমি পকেট থেকে পাঁচ টাকার নোটটা বের করার জন্য হাত বাড়ালাম। টাকাটা বের করতে করতে পাশের সিটে বসা মেয়েটার দিকে তাকালাম। তার শারীরিক কোনো পরিবর্তনই নেই। মোবাইল চাপছে, তো চেপেই চলছে! আমি টাকাটা পকেট থেকে হাতে নিলাম।টাকাটা মুঠো করে হাতের মুঠোতেই রাখলাম। সেই বৃদ্ধ লোকটা যখন আমাদের কাছে এসে সাহায্য চাইলো ঠিক তখনই মেয়েটা মাথা তুললো! আমার সব কিছুই যেনো এক মূহুর্তের জন্য থমকে যায়। তাকিয়ে থাকি মেয়েটার মায়াবী মুখের দিকে। মানুষ এতো সুন্দর হয় কিভাবে? কে এ? নিজেকেই প্রশ্ন করতে থাকি! মেয়েটা তার ব্যাগ থেকে একশ টাকার একটা নোট বের করে সেই বৃদ্ধার হাতে দিলো। আমার পাঁচ টাকা দেয়ার সাহস হলো না। আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়েই থাকি! হয়তো মেয়েটা বুজতে পেরেছিলো! আর এর জন্যই সেই প্রথম মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি একটি হাসি দেয়। সাদা ড্রেসে আরো অপূর্ব লাগছিলো তাকে। কিছুক্ষনের মধ্যেই বুকের মধ্যে কাঁপুনি শুরু হলো। মনে হচ্ছিলো, মেয়েটি আমার মনকে আঘাত করে সেই হাসিটা দিলো। অন্যরকম একটা ঘোরে পরে গেলাম। মেয়েটার হ্যালো শব্দে নিজেকে বাসের মধ্যে আবিষ্কার করি।
মেয়েটি - হ্যালো!
আমি - হ্যা...! জ্বি বলুন!
- এভাবে কি দেখছেন?
- কিছু না তো! (লজ্জা)
- আচ্ছা!
- হুম! আপনি নারায়ণগঞ্জ নামবেন?
- হ্যা! আপনি?
- আমিও!
- আচ্ছা!
- আপনার নাম?
- প্রজাপতি!
- বাহ খুব সুন্দর নাম তো!
- হা হা! আপনার নাম?
- আমি পিয়াল!
এভাবেই বাসে বসেই চলতে থাকলো আমাদের কথোপকথন। এক সময় বাসটা নারায়নগঞ্জে ঢুকে পরলো।
মেয়েটি - আমি তো সামনেই নামবো! আপনি কোথায় নামবেন?
আমি - আমি একটু ভিতরেই নামবো!
- ও আচ্ছা! আপনার সাথে কথা বলে অনেক ভালো লাগলো। এই নিন এটা। (হাত দিয়ে একটা কাগজ এগিয়ে দেয় আমার দিকে)
- এটা কি? (কাগজটা আমি হাত বাড়িয়ে নেই)
- আমার বাড়ির ঠিকানা, আজকে তো ছয় তারিখ! আপনি আট তারিখ আমাদের বাসায় আসবেন। আপনার জন্য সারপ্রাইজ আছে!
মেয়েটা এটা বলে একটা চোখ মারলো এবং বাস থেকে নেমে গেলো! আমি বালিকার যান(বাস) ত্যাগ একনজরে দেখতে থাকলাম।
আমার চাচার বাসা থেকে মেয়েটির বাসার দূরত্বতা ছিলো পঁয়তাল্লিশ মিনিটের রাস্তা মাত্র। মেয়েটিকে দেখার পর থেকেই মনের মধ্যে ডুগডুগি বাজতেছিলো।আর তার ভিতরে মেয়েটি সোজা তার বাসার ঠিকানা দিয়েছে। আমার মন বার বারই নেচে-নেচে উঠছিলো! আট তারিখ যেনো আর আসেই না। কখন যে মেয়েটির প্রেমে পরে গেলাম তা বুঝে ওঠাটাই দায় হলো। মেয়েটির হয়তো আমাকেও ভালো লেগেছে! তাই হয়তো তার পরিবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চায়। আট তারিখ আসার আগেই কি ঘটবে না ঘটবে তা নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করে দিয়েছি ইতিমধ্যে। স্বপ্নের ভিতরেই বিয়ে, বাচ্চা-কাচ্চার জন্ম দিয়ে ফেলেছিলাম। একটা দিন খুব কষ্টে পার করলাম। সাত তারিখ, এই দিনটা যেনো কাটেই না। নতুন জামা-কাপুড়, জুতা কিনলাম। যেহেতু মেয়েটির বাসায় যাবো। নতুন একটা বডি স্প্রেও কিনে ফেললাম। খাওয়াদাওয়া কি করবো! প্রথম দেখাতেই কারো প্রেমে এতো গভীরে হারিয়ে যাবো বুঝতে পারি নি কখনো।
অবশেষে আসলো সেই দিন, আট তারিখ। আমি নতুন জামাকাপড় পরে বের হয়ে পরলাম মেয়েটির বাসার উদ্দেশ্যে।মেয়েটির দেয়া ঠিকানায় এসে বোকাচন্দ্র হয়ে গেলাম। এটা তো একটা বিয়ে বাড়ি! তাহলে কি ভূল ঠিকানায় আসলাম? ভালো করে মিলিয়ে দেখলাম। নাহ! ঠিক জায়গায়ই এসেছি। ভাবলাম হয়তো ওর বোন বা ভাইয়ের বিয়ে। যাই হোক! আমি সেই বাড়িতে ঢুকে পরলাম। ভিতরে অনেক মানুষজন। সবাই বউ- জামাইকে দেখে একটা রুম থেকে বের হচ্ছিলো। কিন্তু আমি সেই মেয়েটিকে কোত্থাও পেলাম না। অবশেষে ভাবলাম হয়তো বর-কনের রুমেই আছে। ভিড় ঠেলে বর-কনের রুমে ঢুকলাম। ঢুকেই থমকে গেলাম। কি দেখতে এলাম আর কি দেখলাম! কি ভাবছিলাম আর কি হয়ে গেলো! চারদিকের ক্যামেরার ফ্লাশে চোখে শর্ষেফুল দেখা শুরু করলাম। বর-কনের জায়গায় বর-কনে ঠিকই আছে কিন্তু যা আশা করেছিলাম তারা নেই সেখানে। কিন্তু যা আশা করি নি ঠিক তারাই আছে সেখানে। আমাকে কি তাহলে প্রজাপতি ধোকা দিলো? মাতালের মতো অবস্থায় রুম থেকে বের হলাম। চোখের সামনে শুধু ভেসে উঠছে কনের জায়গায় বসে থাকা প্রজাপতিকে আর ঠিক তার পাশের কালো চিকনা ছেলেটার ছবি। হাপাতে হাপাতে মাঝখানের একটা রুমের মধ্যে ঢুকলাম। হঠাৎ করেই সাউন্ডবক্সে বেজে উঠলো "Channa Mereya" নামের একটা হিন্দি গান। এইসময়ই এই গানটাকেই বাজাতে হলো? এবার সত্যিই নিজেকে নিজের কাছে দেবদাস মনে হচ্ছে। উহু! খুব কান্না পাচ্ছে! বাসার একটা খালি রুমের ভিতর ঢুকলাম। দরজা-জানলা আটকিয়ে রুমের আলো বন্ধ করে দিয়ে, মুখ নাড়িয়ে গানটার সাথে তাল মিলিয়ে গাওয়া শুরু করলাম। চেঁচিয়ে গানটা গাওয়ার বৃথা চেষ্টা চালালাম। বাহ! দেখলাম ভালই গলার স্বর গায়ক অরিজিৎ সিং এর সাথে মিলে যাচ্ছে। এবার নিজের প্রতি গর্ববোধ হওয়া শুরু হলো। ইস! যদি গানের প্রতিযোগীতায় নাম দিতাম তাহলে হয়তো প্রথম পুরুষ্কারটাই আমার জন্য থাকতো।কিন্তু এখন তা শুধুই আপসোস!
(সমাপ্ত)
লেখক :- Ximanto Biswas (পিয়াল)।
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŽāĻ্āĻāϞāĻŦাāϰ, ā§Šā§Ļ āĻŽে, ⧍ā§Ļā§§ā§
609
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ž:⧍ā§Ŧ PM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ