563

গল্প- বখাটে
সুন্দরপুর নামে একটা গ্রাম ছিল।সে গ্রামে বাস করত নানা প্রকৃতির মানুষ। তাদের দিন যেত কাজ কাম করে। তাদের মধ্যেও আনন্দ ছিল। সে আনন্দ টা একজন লাখপতি যেভাবে আনন্দ উপভোগ করে সে ভাবে তারা করতে পারত না।একজন লাখপতি পাটি করে মাস্তি করে আনন্দ উপভোগ করতে পারে।
কিন্তু একজন দিনমজুর পাটি করে মাস্তি করে সেভাবে আনন্দ উপভোগ করতে পারে না।
তবুও তাদের মধ্যে থাকে আনন্দ। তারা সবাই এক জায়গায় বসে একটা আকিজ সিগারেট ভাগ করেও আনন্দ উপভোগ করে।তারা তাদের একে অন্যর প্রতি ভালোবাসা উপভোগ করে।
[]
[]
সেই সুন্দরপুর গ্রামে ছিল একটা ছেলে বখাটে।
সে সবার সাথে কথা বলত তুই করে। বড়দের কে সম্মান করত না। তাদের নিয়ে মজা করত।নানা অপমানজনক কথা বলত। আর গ্রামের মানুষ তাকে কিছুটা ভয় পেত।।
আর ছোট ছেলেদের তার অসৎ কাজে জড়িত করত।
ছোট ছেলেরা যদি তার কাজ না করত তাইলে তাদের কে ধরে মারধর করত। তাই তারা ভয় পেয়ে এই বখাটে ছেলের কাজ কাম করত।কিন্তু তারা দিন শেষে রাত হলে তাদের মা বাবার কাছে বসে কান্না করত।কারন এই ছোট ছেলেদের এখন এসব কাজ করার বয়স হয় নি। এই বয়সে তারা এখন স্কুলে যাবার কথা কিন্তু তারা কাজ করছে এই বখাটে ছেলের সব সমাজ বিরোধী কাজ।
[]
[]
এই বখাটে ছেলের বাবা একজন স্কুল মাস্টার। কিন্তু ছেলেকে তিনি লালিতপালিত করেন নি।এই বখাটে ছেলে বাবার ভালোবাসা পায় নি। পায় নি বাবার খুলে মাথা রাখার। পায় নি বাবার খুলে বসে গল্প শুনার।
কারণ বখাটে ছেলের মা তাকে নিয়ে তার বাবার কাছ থেকে চলে যায় বহুদূরে। কারণ এই ছেলের বাবা একজন স্কুল মাস্টার ছিলেন। আর এই ছেলের মা'র চাহিদা ছিল বিশাল।
তো একদিন ফাহিমের মা মারা যান আর তার বাবার ঠিকানা দিয়ে যান।
তারপর ফাহিম গ্রামে আসে কিন্তু তার বাবার কাছে থাকে না অন্য এক বাড়িতে থাকে। বাবার কাছে আসলে ফাহিম বুঝতে পারে তার বাবার কাছে থাকলে সে এসব কাজ করতে পারবে না।তাই সে তার বাবার কাছে থাকে না।
[]
[]
গ্রামের সব মানুষ ফাহিমের বাবাকে ফাহিমের বিরুদ্ধে নালিশ করে।
সবাই ফাহিম কাছ থেকে মুক্তি চায়।তারা গ্রামে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করতে যায়। গ্রামে একটা ঐক্যতা সৃষ্টি করতে চায়।কিন্তু ফাহিমের জন্য তা সম্ভব হচ্ছে না।
কারণ ফাহিম তা সৃষ্টি করতে দিচ্ছে না।
এ পথে সে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তাই তারা এসেছে ফাহিমের বাবার কাছে।
ফাহিম বাবা খুব নিচু কন্ঠে বললেন যান আমি দেখছি।
কিছু একটা করতে পারি কিনা।
[]
[]
>>ফাহিম তোর বাব এসেছেন।
>>বাবা এসেছেন।
কোথায়?
>>বাহিরে দাঁড়িয়ে আছেন।
.
তারপর ফাহিম তার বাবাকে গিয়ে সালাম করল।
ফাহিম এসব কাজ করলেও তার বাবাকে সে খুব ভালোবাসে।
ফাহিম তোমাকে আজ আমি কিছু কাজ দিব তুমি তা করতে হবে।
যদি তুমি এসব কাজে সফল হতে পার তাইলে আমি চলে যাব।তুমি তোমার কাজ করতে থাকবে।
>>আচ্ছা বাবা কি কাজ?
>>দিচ্ছি তোমাকে।
তুমি প্রথমে ২০ টা লোহা আনো।
এই ২০ টা লোহা ২০ দিনে তুমি এই কাঠের মধ্যে ঠুকাইবে।
তারপর ফাহিম প্রথম দিন একটা লোহা ঠুকাইল।
২য়,৩য় দিন করে ২০দিনে ২০ টা লোহা সে শেষ করল।
এরপর তার বাবা কে সে গিয়ে বলল বাবা লোহা আমি সব ঠুকাইয়া শেষ করছি।
তারপর তার বাবা তাকে লোহা তুলে আনতে বললেন।
তারপর সে একটা একটা করে সব লোহা তুলে আনল।
আবার তার বাবার কাছে গিয়ে বলল বাবা আমি সব লোহা তুলে ফেলেছি।
তার বাবা অনেক খুশি হলেন যে তার সন্তান তার কথা মতো কাজ করেছে।
তিনি তাকে ধন্যবাদ দিলেন।
আর বললেন আমি কাল তোমার বাসায় যাব আর কাঠ টা রেখো।
[]
[]
তার পরেরদিন তিনি তার সন্তানের বাসায় গেলেন।
কাঠ টা দেখলেন।
কাঠের মধ্যে অনেক ফাঁকা আছে।
কাঠটি ফাঁকা হয়েছে লোহা ঠুকানোর জন্য।
>> ফাহিম তুমি এই ফাঁকাগুলা ভরাট কর।
>>বাবা আমি কিভাবে ফাঁকা গুলা ভরাট করব।
>>তুমি কি পারবে না একেবারে আগের মতো করে ভরাট করতে?
>>না বাবা আমি পারব না।
আচ্ছা বাবা তুমি কি পারবে?
>>না আমি পারব না।
এমন কি কেউ ওই পারবে না।
ফাহিম ফাঁকা টা যেমন তুমি মিটাইতে পারবে না।
তেমনি তুমি মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করছ ঠিক তেমনি এভাবে মানুষের সাথে তোমার সম্পর্ক টা ফাঁকা।
>>বাবা কি বল?
>>হে রে বাবা।
মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করলে মানুষ মানুষ কে ভালোবাসে।
আর না করলে ঘৃণা করে।
>>বাবা আমি পাপ করছি।
আর আমি এ জীবনে থাকতে চাই না। আমি এ জীবন থেকে মুক্তি চাই।
>>ঠিক আছে।
তুমি মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করবে।
সবাই কে সম্মান করবে।
বড়দের কে সালাম করবে।
ছোটদের কে স্নেহ করবে।
আর তুমি যদি এসব করতে পার তাইলে তুমি একজন ভালো মানুষ হতে পারবে।
[]
[]
তারপর থেকে ফাহিম সবার সাথে ভালো ব্যবহার করে। সবাই কে সম্মান করে।
আর গ্রামের মানুষও ভালোবাসে।
আজ থেকে ফাহিম গ্রামের চোখে একজন ভালো মানুষ।
কারণ সে তার বাবার আদেশমতো কাজ করছে।
/
আমরা সবাই আদর্শ মা বাবার কথা মতো চলব।
চলুন শপথ করি।
/
লেখক ও আইডি - হিমু জুনিয়র