হানিমুন বিষয় টা কি আসলে? ছোটকাল থেকে বাচ্চারা বিয়ে শব্দটা জানার পর পরই হানিমুন শব্দটাও শিখে নেয়। কতো শত ধারনা আটতে থাকে মনের মাঝে এই চার অক্ষরের শব্দ টা নিয়ে। আমিও এর ব্যতিক্রম নই। আবোল তাবোল কত চিন্তাই তো এক সময় করতাম এই বিষয় টা নিয়ে। এখন আমি ঠিক সেই মুহুর্তের মধ্যে দিয়েই যাচ্ছি। বিয়ে টা করে এক সাপ্তাহর মতো দিন শেষ করতেই রিতা বলে উঠলো "এই আমরা হানিমুন কোথায় করবো সেটা নিয়ে একবার কথা হয়েছিলো সারা রাত, মনে আছে তোমার?" আমার সব মনে আছে, সেদিন সারা রাত কথা বলতে বলতে পরদিন ভার্সিটির ক্লাস মিস করেছিলাম তাও মনে আছে। তবুও হেসে উত্তর দিলাম "আচ্ছা, তাই নাকি? কি কথা হয়েছিলো বলো তো?" রিতার হাসি মাখা ঠোট দুটো মুহুর্তেই কাপতে শুরু করেছিলো, রিতা রাগলে দুটো কাজ করে, এক ঠোট কাঁপায়, আর দুই নাক ফুলানো শুরু করে। বুঝতে পারছিলাম রিতা নামক ঝড় প্রবল বেগে আমার দিকে ধেয়ে আসছে, কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে যেকোনো সময় ঝড়টি নিরাপত্তা বাধ ভেঙে দিয়ে সবকিছু তছনছ করে দিবে। সিগন্যাল বুঝতে পেরেই সাথে সাথে রিতা কে ঝড়িয়ে ধরলাম, ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে দুষ্টুমির ভঙ্গী তে বললাম "বাহ! বৈশাখের ঝড় আমার বাড়ি চলে আসছে মনে হচ্ছে! যদিও ঝড়ের নাম টা খুব সুন্দর, নার্গীস,টার্গীসের মতো না, খুব অসাধারণ নাম 'রিতা' ঝড়"।
.
কথাটা বলতেই রাগে ফুস ফুস করতে করতে আমার থেকে ছুটে যেতে তোড়জোড় করছিলো রিতা, ঠিক তখনি বললাম "আরে শুননা, এতো রাগের ই বা কি আছে হু? নেক্সট ফ্রাইডে, ভোড় চার টা, রেডি করে রেখো সব, তখন আবার মেকাপ ফেকাপের জন্য হানিমুন ট্রিপে বেড় হতে লেট করোনা, হা হা"। রিতা হাসি দিয়ে উঠে আমার কাধে আলতো এক কামড় দিয়েই দৌড় দিলো।
।
বাঙলা বর্ষে এখন বৈশাখ মাস সবে শুরু হলো। দশ পনেরো দিন হবে হয়তো। চারিদিকে ক'দিন পর পরই ঝড়, বৃষ্টি হচ্ছে। ঠিক এই মুহুর্তে শহুরে কোলাহল কে ছুটি দিয়ে গ্রামে বেড়ানোর মজাই আলাদা। সাথে যদি থাকে প্রিয়সখী, তাহলে তো কথাই নেই। সেই সূত্রে আমাকে ভাগ্যবান বলা যেতেই পারে। কারন হানিমুনের জন্য আমি আর রিতা সর্বো প্রথম যেই জায়গা টা সিলেক্ট করেছি তা হলো আমাদের দুজনের গ্রামের বাড়ি। যেতে চাইলে কতো জায়গাতেই যাওয়া যায়, এই ট্রিপের পর হয়তো আমরা দুজন আরো অন্য কোথাও যাবো, তবে বিয়ের পর প্রিয় মানুষ টি কে নিয়ে প্রথম ঘুড়ার বিষয় টা যদি এমন কোথাও হতে শুরু হয় যেখান টায় জড়িয়ে আছে আমাদের জীবনচক্রের প্রথম পর্যায়ের পুরোনো কিছু স্মৃতি তবে তো কথাই নেই। রিতা দের গ্রামের বাড়ি ঘুড়ে এসে এখন ঘুড়ছি আমাদের গ্রামে। আমার জন্ম ঢাকায় হলেও ছোট কালে এমন বৈশাখের দিন এই জায়গায় বেড়াতে এসে কতোই না আনন্দ করেছি। রিতা কে নিয়ে সেই সব জায়গা গুলো তে ঘুড়তে ঘুড়তে জায়গা গুলো কে যেনো আবার নতুন করে চিনতে পারছি।
.
কথা গুলো ভাবছিলাম আমাদের টিনের চাল দিয়ে ছাদ দেয়া অপরূপ সুন্দর বাড়ির উঠোন খোলা ব্যালকুনিতে বসে। কখন যে রিতা পাশে এসে বসেছে বুঝতেই পারিনি। রিতার দিকে তাকাতেই দেখি ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে.....
.
-কি হলো? কখন এলে? এসে ডাকোনি যে?
.
=ডাকিনি কারন আমি আমার রাজামশাইর চোখে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে থেকে বুঝতে পারছিলাম যে, সে গভীর কিছু ভাবছে, তো জামাই মশাই আমার কি ভাবছিলে?
.
-তেমন কিছুনা, এইতো, তুমি, আমি, আমি, তুমি এই সব, হা হা.......
.
=বাহ! উত্তম! অতি উত্তম ভাবনা। তবে মহাশয়ের বউর যে এখন মহাশয় কে নিয়ে এই বিকেলে ঘুড়তে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে সেই বিষয় টা নিয়ে জামাই মহাশয় একটু ভাবিবে কি?
.
-অবশ্যই ভাবিবে প্রিয় মহাশয়া, শুধু ভাবনাই নয়, বাস্তবায়ন করিবে, চলুন, শুরু করা যাক তবে আজ বিকেলের পথ চলা...........
।
হা হা, রিতা মিষ্টি হাসি দিয়ে উঠে দাড়ালো, ওর বাম হাতের আঙুল গুলো খুব শক্ত ভাবে পেঁচিয়ে ধড়ে আমিও উঠে হাটতে শুরু করলাম। শান বাধানো আমাদের পুকুর পাড় টায় বসে বর্ষি দিয়ে কিছুক্ষণ মাছ ধরার ব্যার্থ চেষ্টা করলাম। মাছ অবশ্য পাইনি, সে যাই হোক, রিতা বর্ষি দিয়ে টোপ ফেলে মাছ উঠবে ভেবে যেমন উল্লাস করছিলো সেটা দেখা টা মাছ পাওয়ার চেয়েও আনন্দময়। পড়ে না হয় কোনো এক সময় পূর্ণ ধ্যান দিয়ে বর্ষির টোপ দিয়ে বড় মাছ ই তুলে নিবো।
.
পুকুর টা কে পার করে এসে ক্ষেতের মাঝে মাটি কেটে তৈরি করা আঁকাবাঁকা পথের মধ্যে দিয়ে হাটতে লাগলাম। দুজনের পায়েই জুতো নেই, খালি পায়ে মাটি মাড়িয়ে হাটতে বেশ লাগছে। চারিদিকে বাতাস বইছে খুব, বাতাশে রিতার শাড়ীর আচল আর খোলা চুল ঢেউ দিয়ে উড়ছে। ও আমার হাত টা লম্বা করে ধরে চিকন আইল দিয়ে হাটছে আর কি সব যেনো বলছে, রিতা কি বলছে এই মুহুর্তে সে ব্যাপারে আমার বিন্দু মাত্র নজড় নেই, আমার পুরো ধ্যানযোগ করা রিতার হাসতে থাকা মুখের দিকে। কি কি যেনো বলছে আর কিছুক্ষণ পর পর হেসে উঠছে, এতো বেশি অপরূপ লাগছে রিতা কে, সুন্দর পরিবেশ টা যেনো তাই আরো সুন্দর হয়ে উঠছে।
।
হাটতে হাটতে রিতা কে নিয়ে সেই পূরোনো স্মৃতি তে ভরা আম গাছের কাছে চলে এলাম। ছোট ছোট কাচা আম ধড়ে আছে পুরো গাছ জুড়ে। রিতা গাছ টা দেখতেই বলে উঠলো.....
.
=এই শুনো, তুমি ভাল শই করতে পারো? আমায় ক'টা আম এনে দাওনা গাছ থেকে.....
(কথা গুলো রিতা এতো চঞ্চলচিত্তে বলছিলো যে আমি কিছু না বলে অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম ওর দিকে তাকিয়ে)......
.
=কি হলো হ্যা? এই, দাওনা কটা আম এনে.....
.
তাড়াহুড়ো করেই বলে উঠলাম.....
-ও হ্যা, পারি তো......
.
।
আশেপাশ থেকে টুকিয়ে বেশ কিছু শক্ত মাটির টুকরো পেলাম। সেগুলো দিয়ে চেষ্টা করতে করতে বেশ কটা আম ঝড়াতে পারলাম। রিতা একেবারে বাচ্চাদের মতো করা শুরু করলো, ওর শাড়ীর আচল টা কোমড়ে পেঁচিয়ে পাত্রের মতো সাইজ করে সেটা তে আম গুলো টুকিয়ে নিয়ে আনন্দে লাফাতে শুরু করলো। ওর আনন্দে আনন্দিত হয়েই হয়তো বাতাসের বেগ টা আরো বেড়ে গেলো, বৈশাখের দিনে কখন যে ঝড় শুরু হয় তা বোঝা মুশকিল। কিন্তু কেনো যেনো সে দিকে আমার মন নেই। বাতাসের কারনে রিতার মুখের সামনে চলে আসা চুল গুলো কে আঙুল দিয়ে আলতো ছোঁয়াতে সড়িয়ে দিতেই আমি ব্যাস্ত, আমার এমন ভাবলেশহীন আচরন দেখে রিতা কিছুটা হা হয়ে বলে উঠলো.....
.
= এই, হলো কি তোমার? ঝড় হবে তো, বাড়ি চলো, বাড়ি গিয়ে দুজন মিলে আম গুলো দিয়ে ভর্তা করে খাবো। খেয়েছো কখনো আম ভর্তা? চিনি,লবন,মরিচ, আহ, চলো জলদি, কিন্তু জানো, আমার না বৃষ্টিতে ভিজতেও ইচ্ছে হচ্ছে, কি করি বলোতো.........
.
রিতার জলদি যেতে চাওয়া টা কে আরেকটু দীর্ঘায়ীত করে দ্বিতীয় ইচ্ছা টা কে পূরন করতেই হয়তো বাতাসের সাথে ঝুম বৃষ্টি পড়া শুরু করলো। রিতা আম গুলো শাড়ীর আচলে গুজে রেখে দিলো। বৃষ্টি ফোটার পানি গুলো রিতার মুখ এ এসে ভিজিয়ে দিচ্ছিলো ওকে বারবার। রিতা আমার হাত দুটো ধরে আ আ চিৎকার করে আনন্দে লাফ দিচ্ছিলো কিছুক্ষণ পর পর। রিতার পাগলামি গুলো দেখতে দেখতে কেমন এক ঘোড়ে চলে যাচ্ছিলাম আমি। হঠাৎ জোড়ালো দমকা হাওয়ায় রিতা ভয় পেয়ে সজোরে আমার বুকে ঝাপিয়ে পড়ে জড়িয়ে ধরলো। ওর জড়িয়ে ধরায় এই ঠান্ডা তেও মনে হলো যেনো আমার মধ্যে নতুন শক্তিধর প্রান সঞ্চার হলো। চোখ দুটো বন্ধ করে আমিও রিতা কে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। মনের খুব বেশি গভীরে পবিত্র এক আবেশ অনুভূত হলে আমার মাঝে, জানি আমি, এই আবেশ রিতাও অনুভব করতে পারছে। পুরো পরিবেশ টাও যেনো তাই অপরূপ ভালবাসার আবেশে আনন্দিত হয়ে উঠলো, খুব জোড়ালো ভাবে........
।
Written By : Odriisso Ikaras (অদৃশ্য ইকারাস)
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āĻŦৃāĻšāϏ্āĻĒāϤিāĻŦাāϰ, ā§§ā§Ž āĻŽে, ⧍ā§Ļā§§ā§
556
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
ā§Ģ:ā§Ēā§§ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ