āĻļāύিāĻŦাāϰ, ⧍⧭ āĻŽে, ⧍ā§Ļā§§ā§­

566

'' স্বস্তি"
.
লেখা:-- মুমতাহিনা মেহ্জাবিন (ছদ্মবেশী লেখিকা)
.
.
৫মাসের অন্তঃসত্বা রেহানার ফুলে ওঠা পেটে হাত রেখে কবির বলল, "বউ আমার মনে হইতেছে তোর পেটে আমার পরীর লাহান একটা মাইয়া আচে"।
রেহানা লজ্জামাখা কণ্ঠে বলল, "অহনই কেমনে বুজলেন যে পরীর লাহান মাইয়া? পোলাও তো হইতে পারে?"
কবির মাথা দুলিয়ে বলল, "না রে বউ, আমার দিলের খায়েশ পুরা কইরা একটা মাইয়াই আইবো দেহিস।"
রেহানা অবাক হয়ে স্বামীকে দেখে। এতদিন দেখে এসেছে মেয়ে জন্ম দেওয়ার কারনে কত মেয়েকে সতীনের ঘর করতে হয়। আবার কাউকে তো তালাক নিয়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে বাপ, ভাইয়ের সংসারে উঠতে হয়।
রেহানাদের বাড়ির দু'বাড়ি পরেই হানিফ মিস্ত্রির বাড়ি। ও বাড়ির মেঝো বউকে তো উঠতে বসতে খোটা শুনতে হয় মেয়ে জন্ম দেওয়ার কারনে।
রেহানা মনে মনে ভাবে, "মানুষটা রাগি হইলেও, মনডা ভালা।"
রেহানার নীরবতা কবিরকে থামাতে পারে না। সে তার মেয়েকে নিয়ে কি কি করবে সেসবের বয়ান দিতে থাকে ; আর রেহানা ভালবাসার আবেশে একরাশ লজ্জা নিয়ে সেসব শুনে। শুনতে শুনতে রেহানার চোখও ঝলমল করে আগামী সুখের দিনগুলোর কথা ভেবে।
*
দেখতে দেখতে রেহানার গর্ভাবস্থা ৯মাস এ এসে পরল। কবির আর রেহানা তাদের অনাগত সন্তানকে কোলে নেওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছে।
এরপর এলো সেই কাঙ্খিত দিন।
সেই ভোরবেলায় রহিমার প্রসব বেদনা শুরু হয়েছে। কবির গিয়ে তাড়াতাড়ি গ্রামের অভিজ্ঞ দাইকে ডেকে আনলো। এ গ্রামের সব বাচ্চার জন্ম এ দাইয়ের হাতে। এমনকি কবিরের জন্মও হয়েছিল এ দাইয়ের হাতেই।
রেহানার চিৎকারে কবির বাইরে দাড়িয়ে ছটফট করে।
একসময় চিৎকারের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। তারপর কবিরের কানে আসে সেই কাঙ্ক্ষিত বাচ্চার কান্নার আওয়াজ।
কিছুক্ষন পর দাইমা এসে বলে, "তোর ঘরে একটা পরী আইছে রে। কি সোন্দর মুখখান, দেখলেই পরানডা জুড়িয়ে যায়। ওর জন্মের লগে লগে মনে হইল আঁতুর ঘরডা চান্দের লাহান ফকফকা হইয়া গেলো।"
মেয়ে আসার খবরে কবির খুশিমনে বললো, "আলহামদুলিল্লাহ্‌, আমার দিলের খায়েশ পুরা হইল।"
*
অনেক ভেবে কবির তার মেয়ের নাম রাখলো হেনা।
ছোট্ট হেনা এখন সবে ১বছরে পা দিলো। ছোট ছোট দাঁতগুলো বের করে সারাক্ষণ হাসে। এক পা দু'পা করে হাটতে শিখেছে মাত্র। তার এটুকু বিদ্যা নিয়েই সে সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখে।
মাঝে মাঝে দেখা যায় কবির তার দোকান ফেলে ছুটে আসে বাড়িতে। তারপর মেয়েকে কোলে নিয়ে হাটে আর কত কথা যে বলে। ছোট্ট হেনাও তার বাবার কথায় সাড়া দেয় বাচ্চাদের নিজস্ব ভাষাতে।
বাপ মেয়ের এসব কান্ড দেখে রেহানা মনে মনে খুশি হয়। আর মুখে বলে, "মাইয়ার জন্যি যে এমুন করতাচেন, মাইয়ারে কি বিয়া দিবেন না নাকি? বিয়া দেওনের পর মাইয়ারে না দেইক্কা থাকবেন কেমনে?"
কবির কিছুটা থতমত খেয়ে যায়। তারপর বলে, "আমার মা-রে আমি বাড়ির কাছেই বিয়া দিমু, যাতে মন চাইলেই গিয়া দেখতে পারি।"
*
হেনা এখন ৩বছরের।
কবির এখন আর হুটহাট দোকান রেখে বাড়ি চলে আসে না। কারন সে তার মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য টাকা সঞ্চয় করার কাজে হাত দিয়েছে। কবিরের ইচ্ছা তার মেয়েকে অনেক লেখাপড়া করাবে। তারপর তার মেয়েকে কলেজের ম্যাডাম বানাবে। কবির দেখেছে স্যার ম্যাডামদের সবাই সম্মান দিয়ে কথা বলে। তখন আর কবিরকে কেউ মুদি দোকানদার বলবে না। বলবে যে, ওই দেখ ম্যাডামের বাপ যায়।
*
রাতে খেতে বসে কবির তার বউকে বলে, "আমার মাইয়ারে আমি অনেক পড়ালেহা করামু। তারপর কলেজের ম্যাডাম বানামু।"
রেহানা মুচকি হেসে বলে, "অহন তো সবে ৩বছর চলতেছে। আর আফনে এহনই এইসব ভাবতেছেন! আর ওত পড়াইয়া কি হইব? অহন তো এমনেই দিনকাল ভালা না।"
শেষের কথাটা বলতে গিয়ে রেহানার বুকটা কেঁপে উঠে।
কিন্তু কবির সেসব গায়ে মাখে না। বরং শাসানোর ভঙ্গিতে বলে, "তুই কইলাম এসবের মইদ্যে নাক গলাবি না। আমার মাইয়া, আমি বুজমু সব। অনেক বড় হইবো আমার মায়।"
খাওয়া শেষ করে ঘুমন্ত হেনার মুখের দিকে তাকিয়ে কবিরের মনে একটা অদ্ভূত ভালোলাগা কাজ করে। মেয়েটা গায়ের রং পেয়েছে মায়ের, আর চেহারাটা বাপের আদলে। কবির মনে মনে ভাবে, "এমুন সোন্দর মাইয়াটা আমার, ভাবলেই মন ভইরা যায়। দেখলে মনে হয়, আমার ঘরে আমার মাইয়া রূপে আমার মৃত মায় আবার জন্ম নিছে।"
*
আজকে কবির অনেক খুশি। বিক্রিবাট্টা খুব ভালো হয়েছে আজকে। কবির ভেবে রেখেছে আজকে কয়েক প্যাকেট আলতা কিনে নিয়ে যাবে মেয়ের জন্য।
কবিরের চিন্তায় ছেদ ঘটিয়ে তার বন্ধু রমজান দৌড়ে এসে হাপাতে হাপাতে বলে, "অহনই তোর বাড়িত চল শিগগির।"
কি যেন এক আশংকায় কবিরের শরীর শিথিল হয়ে আসতে চায়। তাও সে বাড়ির দিকে দৌড়ে যায়।
বাড়ির উঠোনে পা রাখতেই দেখতে পায় তার ঘরের সামনে অনেক লোকজন। আর কার যেনো বিলাপ করে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে।
কবিরকে দেখে আশেপাশের মহিলারা মুখে আঁচল চেপে ডুকরে কেঁদে ওঠে। আর পুরুষরা থমথমে মুখে তাকায়।
শান্তভঙ্গিতে কবির ঘরের ভিতর পা রাখে। অবাক হয়ে দেখে মায়ের কোলে মাথা দিয়ে ছোট্ট হেনা শুয়ে আছে।
কিন্তু এত রক্ত কেনো! রেহানার শাড়ির আঁচলটা হেনার শরীরে বিছিয়ে রাখা। পাশেই পরে আছে মাটির তৈরি সেই ঘোড়াটা ; যেটা কবির মেলা থেকে কিনে দিয়েছিল তার মেয়েকে গত বৈশাখে।
.
এক পিতা দাড়িয়ে দেখছে তার মেয়েকে নিয়ে দেখা সব স্বপ্নের সমাধি। স্বপ্ন পূরণ করার মানুষটিই যে আর বেঁচে নেই। এ সমাজের মানুষদের লালসার শিকার হয়ে তার ছোট্ট হেনাকে এটুকু বয়সেই ধর্ষিতা হওয়ার অপবাদ নিয়ে দুনিয়া ছাড়তে হয়েছে।
.
রেহানার বিলাপ শুনে পুরো ঘটনা বুঝতে পারে কবির।
ছোট্ট হেনা বাবার কিনে দেওয়া ঘোড়াটা নিয়ে খেলছিলো ঘরের ভিতর। আর রেহানা গিয়েছিল ঘরের পিছনের পুকুর থেকে পানি আনতে। শোয়ার ঘর থেকে একটু দূরে রান্নার জায়গা। সেখানে পানির কলসটা রেখে শোয়ার ঘরে পা দিয়ে দেখে তার মেয়েটার ছোট্ট শরীর নিয়ে নিজেদের লালসা মেটাচ্ছে দুই যুবক। রেহানা চেহারা দেখেই চিনতে পারলো,  এরা গ্রামের মাতবরের খাস লোক। রেহানার চিৎকারে যুবক দুজন পালিয়ে গেলো। কিন্তু ততক্ষণে ছোট্ট হেনা আর বেঁচে নেই।
সব শুনে কবির চুপ করে বসে রইল। তার অতি আদরের মেয়েটিকে হারিয়ে সে যেন পাথর হয়ে গেছে। হয়তো এজন্যই কবিরের চোখে এক ফোঁটাও জল দেখে নি কেউ।
*
গ্রামের মাতবরের কাছে বিচার চাওয়া হলো এ ঘটনার।
তিনি সব শুনে কবিরের হাতে ৪টা ৫০০টাকার নোট ধরিয়ে দিয়ে বললেন, "যা হইছে সব ভুইল্লা যা। বিচার কইরা কি হইব?! তোর মরা মাইয়া তো আর বাঁইচ্চা যাইবো না। এ বয়সে ছেলেরা এমন একটু আধটু করেই। এইসব মাইনা নিলেই তোর জন্য ভালা। বেশি বাড়াবাড়ি করলে কিন্তু.. "
কবির অবাক হয়ে দেখলো তার মেয়ের সম্ভ্রমের মূল্য মাত্র ২০০০টাকা! লজ্জিত পিতা নিজের মেয়ের এ অপমান মেনে নিতে না পেরে টাকাগুলো মাতবরের মুখে ছুড়ে মারলো।
*
বছর দু'য়েক পর কবির আবার ঘরের বাইরে পায়চারি করছে অনাগত সন্তানের আগমন বার্তা শোনার জন্য।
কবিরের কানে ভেসে আসলো সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুর কান্নার আওয়াজ। কি এক আশংকায় কবিরের সারা শরীরে ভয়ের স্রোত খেলে গেলো।
দাইমা যখন বাচ্চাটাকে এনে কবিরের কোলে দিলো, সে তখন বাচ্চাটার শরীর পর্যবেক্ষণ করে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললো, "যাউক, এইডা মাইয়া নাহ্।"
.
উৎসর্গ:-- গল্পটা উৎসর্গ করছি আমার সব ছোট বোনদের।
[বি.দ্র. :-- কয়েকদিন আগেই একটা ৩বছরের মেয়ে শিশু ধর্ষিতা হয়েছে, তাও তার নিজের বাড়িতে। সূত্র-- প্রথম আলো (৭মে, ২০১৭)]

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ