āĻļāύিāĻŦাāϰ, ⧍⧭ āĻŽে, ⧍ā§Ļā§§ā§­

583

প্রায় পনের বছর পর শুভ্রর সাথে দেখা। মায়া ঠিক বিশ্বাস করতে পারছে না তার পাশের সিটে শুভ্র বসে আছে। বাসে উঠেই শুভ্র সেই আগের মত হাসি দিয়ে বলল, কি রে, কি অবস্থা। ওর সাথে দেখা হলেই শুভ্র একটা হাসি দিয়ে ভ্রুটা খানিকটা উচু করে বলত, কি রে। (একটু টেনে)

মায়ার পাশের সিট ফাকা দেখে শুভ্র এসে বসল। বসতে বসতে  বলল, একটু চেপে বোস তো। মায়া এত অবাক হল যে তার গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। বুকের ভেতরটা কাঁপছে। শুভ্র কি একটুও অবাক হয়নি? মায়া ভাল মত শুভ্রর দিকে তাকাতে পারছে না। কেমন যেন অদৃশ্য কোন কিছু তাকে তাকাতে বাধা দিচ্ছে। মায়ার আগের সব কিছু মনে ভীড় করছে। মায়া কিছু ভাল করে মনে করার আগেই শুভ্র জিজ্ঞাসা করল, কোথায় নামবি? মায়া অস্পষ্ট স্বরে বলল, কলাবাগান। নিজের অজান্তেই প্রশ্ন করল, তুমি কোথায় নামবে? শুভ্র বলল, বিজয় সরণি।

মায়া শুভ্রকে দেখছে। শুভ্র ঠিক মত পা রাখতে পারছে না। হাটু সামনের সিটে আটকে যাচ্ছে। শুভ্র মায়ার দিকে তাকাতেই হেসে বলল, সীট খুব ছোট রে, পা রাখা যায় না। শুভ্রর এই হাসিটা মায়ার খুব পরিচিত। অনেক দিন পর হাসিটা দেখল সে। শুভ্র আগের মতই আছে। একটু মোটা মোটা হয়ছে। অনেক গুলি প্রশ্ন মায়ার মনে আসছে। প্রশ্ন গুলি করা ঠিক হবে কিনা সে বুঝতে পারছে না। কিভাবে কথা শুরু করা যায় সে ভাবছে। আচ্ছা শুভ্র যতই এমন ভাব করুক না কেন সেও নিশ্চয় অবাক হয়েছে, কিন্তু এমন ভাব করছে যেন কিছুই হয়নি। ওর এই আচরনটাও মায়ার পরিচিত। হাজার ঝগড়া ঝাটি যায় হোক সে এমন একটা ভাব করত যেন কিছুই হয়নি। গা জ্বালা করত মায়ার। হঠাৎ করে রাগ হচ্ছে মায়ার।

মহাখালী ফ্লাইওভারের আগে বাসটি জ্যামে আটকে আছে। শুভ্র মায়ার দিকে তাকিয়ে বলল, এই মুটু আমড়া খাবি। ভিটামিন সি।

এমন ভাবে ভিটামিন সি বলল যেন মায়া কোন দিন ভিটামিন সি খায়নি আর এটা কোন মহামূল্যবান কিছু। মায়ার রাগ হচ্ছে সে কিছুই বলছে না। সে হঠাৎ লক্ষ করল শুভ্রর কপালে একটা কাটা দাগ। বেশ বড় দাগ। মায়া ব্যস্ত হয়ে জানতে চাইল, কাটল কি ভাবে? শুভ্র তাকিয়ে হাসছে যেন কিছু ধরা খেয়ে গেছে যা ও লুকাতে চাচ্ছিল। মায়া রাগি চোখে তাকিয়ে আছে। শুভ্রর হাসি আরো বাড়ছে। মায়া বেশ কড়া গলায় জানতে চাইল, কাটল কিরে বল? শুভ্র হাসিয়ে থামিয়ে আস্তে আস্তে বলল, সাইকেল থেকে পড়ে গেছিলাম। মায়ার রাগ কমেনি। এই ছেলেটা (এখন লোকটা) এমন কেন? কারো কিছু হয় না তার ঠিকই কিছু না কিছু হবে। হাত কাটা, পা কাটা, পড়ে যাওয়া। এ কি কোন দিন সতর্ক হয়ে চলা শিখবে না। ইস!! মানুষটা কত কস্ট পেয়েছে। মায়ার ইচ্ছা করছিল কপালটা ছুঁয়ে দেখতে। সে স্পর্শ করল না। শুভ্র সান্তনা দেওয়ার সুরে বলল, আরে কিছুই হয়নি। তিনটে সেলাই লেগেছে, একটুও ব্যথা পায়নি। মায়ার মুখটা কাদো কাদো। শুভ্র হাসছে। পনের বছর আগে হলে শুভ্র মায়ার দুই গালে বাচ্ছাদের মত হাত দিয়ে আদর করে দিত।

মায়া জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। শুভ্রর দুই হাতে দুটি আমড়া। কাঠি ঢুকিয়ে ফুলের মত করা। সে একটা খাচ্ছে। অন্যটা মায়ার জন্য হাতে নিয়ে অপেক্ষা করছে। মায়া শুভ্রর দিকে ঘুরছে না। সে আমড়া খাবে না। থাকুক শুভ্র হাতে নিয়ে। শুভ্র আমড়া খেতে খেতে বলল, লবন বেশি দিয়ে ফেলছে।

খেতে খেতে কথা বলার অভ্যাসটা খুবই বাজে। লবন বেশি হলে খাবে না। তাও সে খাচ্ছে। কেমন যেন কচ কচ শব্দ হচ্ছে। মায়া ওর দিকে তাকাচ্ছেই না। বাস চলছে মায়া বাইরে ছুটে চলা গাড়িগুলো দেখছে। মায়া বেশ ভালভাবেই বুঝতেছে শুভ্র ওর ওড়নায় হাত মুছছে। সেই আগের গা জ্বালা করা অভ্যাস। ওর চাপা হাসির শব্দও শুনছে। পনের বছর আগে হলে মায়া ঘুরে ওর মুখে চড় বসিয়ে দিত। শুভ্র হাসতো, বলত, দুই গালে দে। তা না হলে বিয়ে হবে না।

বিজয় সরণিতে বাস থামল। শুভ্র নামবে। শুভ্র বলল, যাই রে। (একটু থেমে) থাক।

শুভ্র নেমে গেছে। মায়া ওর দিকে তাকায়নি। কেন তাকাবে সে।

মায়া জানালা দিয়ে দেখছে শুভ্র রাস্তা পার হচ্ছে। মায়া তাকিয়ে আছে। গাড়িগুলো শো শো করে যাচ্ছে। শুভ্র ঠিক সাহস করে পার হতে পারছে না। বার বার পিছিয়ে আসছে। এগোতে পারছে না। বাস ছেড়ে দিয়েছে। মায়া তাকিয়ে আছে। শুভ্র দাঁড়িয়েই আছে। শুভ্র রাস্তা পার হতে ভয় পাচ্ছে। এবার শুভ্র এগোচ্ছে। মায়া জানালা দিয়ে হাত নাড়ছে। শুভ্র দেখছে না। মায়া ডাকছে। আওয়াজ বের হচ্ছে না। গলাটা যেন কেউ চেপে ধরেছে। মায়া অস্থির হয়ে পড়েছে। ও তাকিয়েই আছে। শুভ্রর থেকে ও দূরে সরে যাচ্ছে। মায়া উঠে দাড়ালো। ও শুভ্রকে অনেক ভালবাসে। অনেক অনেক অনেক। ও চিৎকার করছে, বাস থামাও। বাস থামাও। বাস সংসদ ভবনের মোড়ে থামতেই মায়া নেমে দৌড়াতে শুরু করল। ও শুভ্রকে দেখতে পাচ্ছেনা। ও দৌড়াচ্ছে। হাপাচ্ছে। ওর বয়স ৩৪ বছর। আগের মত দৌড়াতে পারে না। তারপরও নিজের সব টুকু শক্তি দিয়ে ছুটছে। ওর বুক কাপছে শুভ্রর যদি কিছু হয়ে যায়। শুভ্র কি বিয়ে করেছে? ওর কি কোন বাচ্ছাকাচ্ছা আছে? ও কি কোন চাকুরী পেয়েছে? কিছুই শোনা হয়নি। ওর কিছু হয়ে গেলে কি হবে ওর পরিবারের। মায়া ছুটছে। হাপাচ্ছে। ও শুভ্রকে অনেক ভালবাসে।
মায়া শুভ্রকে খুজছে। পাচ্ছে না। ও হাপাচ্ছে। আর দৌড়াতে পারছে না। দ্রুত হাটছে। সামনে একটা জটলা। বেশ কয়েক জন কিছু একটা ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। শুভ্রর কিছু হয়নিতো। মায়ার বুক হাপরের মত কাপছে। ও এগোতে ভয় পাচ্ছে। ওর পা ভারি হয়ে আসছে। মনে হচ্ছে ওর সব টুকু শক্তি হারিয়ে ফেলবে। কে যেন ওকে ফোন করছে। রিং বেজেই যাচ্ছে। মায়া শুধু সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। শুভ্রর যেন কিছু না হয়। মায়ার চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ মায়া পড়ে গেল।

মায়ার যখন জ্ঞান ফিরল তখন সে নিজেকে নিজের বিছানায় আবিস্কার করল। ওর ছোট মেয়েটা ঝুকে ওকে দেখছে। ওর স্বামী বেশ রাগী গলায় বলল, বিজয় সরণিতে নেমেছিলে কেন? হাতের ঘড়ির দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে বলল, থাক পরে শুনব। কপালে হাত রেখে শান্ত গলায় বলল, বিশ্রাম নাও। আমি বের হচ্ছি। মায়ার চোখ ভিজে যাচ্ছে। ও আর শুভ্রকে খুজছে না। সে জানে শুভ্রর কি হয়েছে। শুভ্র একটা গাড়ির ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেছে, অন্য একটা গাড়ি তার উপর দিয়ে গেছে। তবে এটা আজকে ঘটেনি। পনের বছর আগে ঘটেছে।

মায়া কল্পনায় ওকে জিবন্ত ভাবতে চেস্টা করে, প্রতিরাতেই করে। আজ সে জিবন্ত হয়ে মায়ার সাথে দেখা করেছে। মায়া শুভ্রকে দেখে সব ভুলেই গিয়েছিল।

মায়া দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে শুভ্র দাঁড়িয়ে আছে। সে স্যান্ডেল পড়ে ঘরে ঢুকে পড়েছে। হাতে সেই আমড়া। এক গাল হেসে বলল, কি রে মুটু দৌড়াতে পারিস না। শুভ্র বাচ্ছাদের মত হাসছে। শুভ্র যখন হাসে মনে হয় ওর চোখটাও হাসছে।

লিখা- হাবিব ওবায়েদ

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ