"ক্রাশ হতে বাঁশ, অতঃপর পলায়ন"
------- পাগলা কাঠুরিয়া
আব্বুকে নিয়ে দেশের নামকরা এক চক্ষু হাসপাতালে বসে আছি। আব্বুর ডান চোখটা অপারেশন করতে হবে। এর আগে বামেরটা করা হয়েছিলো এই হাসপাতালেই।
হাসপাতালের টিকেট কাউন্টার রুমটায় বসে আছি। আব্বু ডাক্তারের রুমে। কাউন্টার রুমটায় অনেক রুগীর আনাগোনা। আমি বসে বসে সবার উপর নজর বোলাচ্ছি। রুমে টিভি চলছে। তাও চ্যানেল হলো স্টার জলসা। অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখি সব রোগী বসে বসে টিভি দেখছে। চোখে সবার কালো চশমা। এই দেখে আমার "কালা চশমা" গানটা মনে পড়ে গেলো। মনের ভিতর থেকে কে যেন বলে উঠলো -- এই দেশ তোর জন্য না। এই দেশ ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য না। এই দেশের রোগীরা রোগকে রোগ মনে করে না।
কিছুক্ষণ পর আব্বু বের হলো। আব্বুকে নিয়ে দোতলায় অপারেশন থিয়েটারের দিকে রওনা দিলাম। সিঁড়ি বেয়ে উঠার সময় হঠাৎ নিজের হাতে জোরে একটা টান অনূভব করলাম। তাকিয়ে দেখি রিমু। রিমু হচ্ছে আশফাক চৌধুরীর মেয়ে। আশফাক চৌধুরী এই হাসপাতালের একজন নামকরা ডাক্তার। বাবাকে প্রচন্ড ভালোবাসে বলে মাঝে মাঝে বাবার কাছে এসে সময় কাটায় মেয়েটা। বয়সে আমার থেকে প্রায় ২ বছরের বড়। আমি আবার আগে থেকেই সিনিয়রদের উপর ক্রাশিত। গতবার আব্বুর সাথে আসার পর তার উপর ক্রাশ খেয়েছিলাম। আব্বুকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর থেকে তার সাথে আর দেখা হয় নাই আমার। তার চোখের কোণে পানি টলমল করতে দেখলাম। আব্বুর এদিকে কোনো খেয়াল নেই। উনি সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে যাচ্ছেন। রিমুকে আমার পিছন পিছন আসতে বললাম।
আব্বুকে অপারেশন থিয়েটারে পাঠিয়ে দিয়ে আমি আর রিমু হাসপাতালের বারান্দায় মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। দুইজনেই নীরবতা পালন করছি। নীরবতা ভেঙে --
রিমু -- এতোদিন কই ছিলে ?
আমি -- কেনো ! কিছু হইছে নাকি আপু ?
রিমু -- থাপরামু কিন্তু এখন। আপনি বলতেছো কেন ? ( আসলে গতবারে ওকে পটাতে গিয়ে এতো বেশি রোমান্স দেখিয়েছি যে , মেয়ে সব সত্যি ধরে রেখেছে )
আমি -- আপনিতো আমার থেকে বয়সে অনেক বড়। তাই আর কি।
রিমু -- ফাজলামি রাখো। সত্যি করে বল এতোদিন যোগাযোগ করো নি কেনো ?
আমি -- আসলে তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি।
রিমু -- মিথ্যে কথা। তুমি আমাকে অনেক কষ্ট দিছো।
আমি -- কিভাবে !!
রিমু -- তুমি বলছো তুমি আমারে ভালোবাসো। কিন্তু তুমি সেদিন আমাকে বন্ধ থাকা একটা নাম্বার দিয়ে গেছো। আমি অনেকবার ওই নাম্বারে কল দিছি। কিন্তু প্রত্যেক সময় নাম্বারটা বন্ধ ছিলো। প্রতিদিন না হলেও শতবার কল দিছি। আমাকে বন্ধ নাম্বার দিছো কেন ? ( একটানা )
আমি -- তোমাকে কোন নাম্বারটা জানি দিয়েছিলাম ?
রিমু -- কেন ? মনে নাই !!
আমি -- ( লাজুক হাঁসি দিয়ে ) আসলে প্রচন্ড ভূলোমন আমার।
রিমু -- বিয়ের পর ভূলোমন হওয়া চলবে না আমার।
আমি -- মানে !! ( বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠলো )
রিমু -- আসলে আমিও তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।
আমি -- ..........( ভাবতেছি এই মেয়ে এতো বেশরম কেন ? ছোটবেলায় কি খাইছিলো ? নিজের বিয়ের কথা নিজেই বলা শুরু করছে )
রিমু -- কি হলো ? হারাইছো কই ?
আমি -- ইয়ে মানে, দেখো তুমি আমার বয়সে বড়। তার উপর তোমার বাবা ডাক্তার। আমি গরীব মানুষ। সমাজ এই ব্যাপারগুলো মেনে নিবে না। তুমি এসব ভূলে যাও। আমি আবেগের বশে ভালোবাসার কথা বলছিলাম তখন। ভূল করেছি। আমায় ক্ষমা করে দাও।
রিমু -- প্রেম মানে না বাঁধা। ( বাংলা সিনেমার ডায়লগ মাইরা দিছে )
আমি -- আমি পারবো না।
রিমু -- কেন !!!
আমি -- তোমার মত বুড়িকে বিয়ে করে কি কপাল নষ্ট করবো নাকি ?
রিমু -- কি বললা তুমি !! ( গেঞ্জির কলার ধরে )
আমি -- ( অবস্থা বেগতিক দেখে ) আমিতো তোমাকেই বিয়ে করবো। যে যাই বলুক না কেন।
রিমু -- হুম। আমাকে ছাড়া আর অন্য কোন মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে না। ( কলার ছেড়ে দিছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক )
খুব চিন্তার বিষয়। আমি তো লাইফে বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি অনেক আগেই। চিরকুমার ভাবতেই নিজের ভিতর একধরণের প্রশান্তি পাই। কিন্তু এখন এই মেয়েরে কিভাবে বুঝাই। হঠাৎ বুদ্ধিটা পেয়ে গেলাম। মুচকি হেঁসে রিমুকে বললাম -- ওই দেখো, তোমার বাবা এইদিকে আসতেছে। জলদি লুকাও।
আমার দিকে পিছন ফিরে রিমু বলে -- কই না তো। তুমি নিশ্চিত ভূল দেখছো।
এইদিকে আমি একদৌড়ে হাসপাতাল থেকে বাহিরে এসে সোজা একটা সিএনজি নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। ছোট ভাইটাকে বাবার কাছে পাঠিয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলাম। মনে মনে শপথ গ্রহণ করলাম, জীবনে কোনোদিন আর ওই হাসপাতালের সামনেও যাবো না।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ