গল্পঃপুলিশের মেয়ে।
পর্বঃ০৮
.
-রূপন্তী হাতে ওটা কী?
-তোমার জন্য খাবার নিয়ে এসেছি।
-মানে?
-মানে তোমার মাথা।।
-তুমি রান্না করতে পারো?
-কেন কী মনে হয়?
-পুলিশের মেয়ে করবে রান্না,ভাবতেই পারছি না।।
-এতে ভাবাভাবির কী আছে শুনি।
-কী রান্না করে আনছো?
-খিচুড়ী আর মাংশ।
কথাটা শুনেই কেমন জিহ্বাই পানি চলে আসল।
-সোজা হও তো?
-একা পারব না।।
-হুমম..এবার খাও
রূপন্তী আমাকে খাওয়াই দিচ্ছে,নিজের চোখকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছি না।সবই কেমন স্বপ্ন মনে হচ্ছে।একটা মেয়ে বাইরে যতটা কঠোর ভেতর থেকে ঠিক ততটাই নরম।এসব মেয়েদের বোঝা বড্ড মুশকিল।রূপন্তী আমাকে খাওয়াই দিচ্ছে আর আমি একধারে ওর দিকে তাকিয়ে আছি।আর ও লজ্জায় মাথা নিচু করে রাখছে।লজ্জা পেলে মেয়েদের কত সুন্দরই না লাগে,সেটা রূপন্তী কে না দেখলে হয়তো কখনো বুঝতেই পারতাম না।
-এত সুন্দর রান্না করতে পারো জানতাম নাতো।সেই মজা হইছে।
-তা জানবে কী করে।
-আমি তো জানি শুধু অফিসারের মত মুড নিতে পারো।
-তুমি চুপ করবে।
রূপন্তী আমাকে চুপ বলার সাথে সাথে ওর আঙ্গুলে কাঁমড় বসিয়ে দিলাম।
-উহহহ কী হচ্ছে এসব।পুলিশ ডাকবো নাকি।
-না মানে!!
-কাঁমড় দেয়ার কারনে তোমাকে জেলে যেতে হবে।
-আমি চোখ বড় করে বললাম-কী বলছো এসব?
-ঠিকই বলছি।
-আমি তোমাকে খাওয়াই দিবো?
-জানি না।[মাথা নিচু করে বলল]
-আমি জানি তুমি খেয়ে আসোনি।
-(...)
রূপন্তীর হাত থেকে খাবারের প্লেটটা নিয়ে ওকে খাওয়াই দিতে লাগলাম।রূপন্তী চুপচাপ লক্ষী মেয়ের মত করে খেতে লাগল।এই মেয়েটা কে দেখে কেউ বলবে না এই মেয়েটা এত অশান্ত।এই শান্ত চাহনি দেখেই প্রেমে পড়েছিলাম।মনে মনে বললাম বড্ড ভালবাসি তোমাকে রূপন্তী।
-উহহ.....
-শোধ করে দিলাম।
-তাই বলে এত জোরে কাঁমড়াবে।
-আস্তেই তো দিছি।
-এটা আস্তে,একদম মনে হচ্ছে ইদুঁরের দাঁত সব গুলো বসে গেছে।
-এই এই কী বললে তুমি।
-কই কিছু নাতো।
.
দুজনে মিলে খাওয়া শেষ করলাম।
একটু পরেই আমাদের ছেড়ে দিবে।তাই ডক্টরের সাথে কথা বলে রূপন্তী এখন আমাকে নিয়ে যাচ্ছে।রিসিপশন থেকে সই করছি এখন,রূপন্তী সই করার পর আমি সই করলাম।পাশে দেখি রূপন্তী আমার বউ হিসেবে পরিচয় দিছে ওখানে।আমার বউ হিসেবে সই করেছে।ভাবতেই পারছি না কিছু এই মেয়েটা কী করতে চাই।আমি আর কিছু বললাম না শুধু দেখলাম।
.
-বাসা পর্যন্ত আর যাওয়া লাগবে না।
-কেন গেলে কী কোন সম্যসা?
-নাহহ তেমন না।
-তাহলে যায় সম্যসা তো নেই।
-না আসলে বাসায় কেউ নেই তো তাই।
-কই গেছে।
-একটু বেড়াতে।
-মাহিন ভালবাসার মানুষের কাছে মিথ্যা বলতে নেই।
-মানে?
-মানে আমাকে বিশ্বাস করে সব বলতে পারো,আমি তোমার কোন ক্ষতি হতে দিবো না।আর ঔষধগুলো ঠিকমত খেও।
কথাটা বলেই রূপন্তী চলে গেলো।আমি কিছুই বুৃঝতে পারছি না রূপন্তী কিসের ইঙ্গিত করল।তার মানে কী ও সব জেনে গেছে বলে এমনটা বলল।নাহ মাথাটা খুব ধরেছে,একটু নিজে কষ্ট করেই বাসায় ঢুকে পড়লাম।
.
আজ সকাল থেকে শরীরটা বেশ ভাল্লাগছে।ব্যাথাও অনেকখানি কমে গেছে।কিন্তু রূপন্তী কে কী বলব সেটাই ভেবে পাচ্ছি না।এভাবে আর ভয়ে ভয়ে থাকতে পারছি না।স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে হবে।হোক না সেটা একটু কষ্টের তবুও এই ভয় থেকে তো মুক্তি পাওয়া যাবে।সাত পাঁচ না ভেবে ফোন টা অন করে রূপন্তী কে ফোন করলাম-
-রূপন্তী কিছু কথা আছে?
-কথা পরে আগে বলো ফোন বন্ধ ছিলো কেন?
-চার্জ ছিল না।গতরাতে ফোন অফ হয়ে গেছিলো, ওভাবেই চার্জে দিছিলাম।
-কতবার ফোন করছি ঠিক নাই।ভেবেছিলাম সোজা বাসায় চলে যাবো একটু পর।যদি কোন বিপদ হয়।
-নাহহ্ তেমন কিছু না।
-তুমি বুঝো না কেন,তোমার জন্য আমার চিন্তা হয় অনেক।
-কী বলব ভেবে পাচ্ছি না,আচ্ছা সরি।
-হুমম।শরীর ভাল হইছে।
-হ্যাঁ অনেকখানি।
-সকালে খেয়েছো?
-তুমি যে খাবার কিনে দিয়ে গেছিলে ওগুলো খেয়েছি।
-আর ঔষধ?
-হ্যাঁ খেয়েছি তো।
উহহ এই মেয়ের এত কেয়ার কেন জানি আমার সহ্য হচ্ছে না।
-কি যেন বলবে বলো?
-বিকালে পার্কে এসো সব বলব।
-আচ্ছা।
কথাটা বলেই ফোন কেটে দিলাম।আজ যা হবার হবে।এত প্যারা ভাল্লাগছে না আর।
.
বিকালের দিকে...
.
-রূপন্তী আমার ভুল হয়ে গেছে।
-কিসের ভুল?
-আসলে তোমার সম্পর্কে না জেনেই তোমাকে প্রপোজ করাটা আমার ঠিক হয়নি।
-এত কিছুর পর এটা বলার জন্য ফোন দিছো? [অবাক হয়ে]
-আসলে তোমার সাথে আমার কখনো মিলে না।তুমি কোথায় আর আমি।
-তুমি তো ভালবাসো আমাকে।আর আমিও বাসি।
-বাসি কিন্তু আমি যেন চাঁদ ধরার চেষ্টা করছি।
-চাঁদ তুমি ধরোনি, চাঁদ নিজে এসে তোমার কাছে ধরা দিছে। [কাঁন্না কাঁন্না ভাব]
-রূপন্তী সেটা আমার দ্বারা সম্ভব না।
-কেন? আমি পুলিশের মেয়ে বলে? [কর্কশ কন্ঠে]
-তুমি অনেক বড় ঘরের মেয়ে।তাছাড়া...?
-তাছাড়া আমি পুলিশের মেয়ে তাই তো?
-হ্যাঁ।।
-ঠিকআছে ছেড়ে দিবো।একটা প্রশ্নের ঠিকঠাক উত্তর দাও? [রাগ দেখিয়ে]
-বলো!!
-একটা লকেট দেখিয়ে বলল-এটা চিনতে পারছো?
-তুমি এটা কোথায় পেলে?
-কেন?এটা তোমার বুঝি?
-হ্যাঁ!!আসলে না মানে এটার আমার হবে কেন।
-তাহলে এত চমকিয়ে গেলে কেন!!আর হ্যাঁ না মানে এসব কী?
-(...)
-কী চুপ করে আছো কেন বলো?আর এটা কোথায় পেয়েছি জানো?
-(...)
-সেই খুনের ঐ জায়গায়!!আমার কাকা দিয়েছে আমাকে এটা।
>মনে মনে ভাবছি তারমানে রূপন্তী সব জেনেশুনে আমার পিছু নিয়েছে।এভাবে ফাঁদে ফেলে ধরার জন্য।
-দেখো রূপন্তী এটা আমার না।
-আমি কী বলেছি তোমার।
-না মানে!!
-দেখো মাহিন তোমার কাছ থেকে নোটস নিতে গিয়ে এটা অনেকবারই তোমার গলায় দেখেছি।বাট এখন নেই কেন?
-আসলে ইয়ে মানে...
-আসলে খুনটা আমাদের ক্যাম্পাস থেকে বেশী দূরে হয়নি।তাই কাকা আমাকে দেখিয়ে বলেছিলো তোদের ক্যাম্পাসের কারো নাকি দেখিস তো।তখন দেখেই চিনে গেছি।তারপরই কাকার কাছ থেকে এটা আমার কাছে রেখেছি।তবে এখনো কেউ জানে না যে তুমি আসল অপরাধী।
-(...)
- তবে বার বারই তোমাকে বলেছি আমাকে বিশ্বাস করতে পারো।আমি সত্যি তোমাকে ভালবাসি ।রাগী মেয়েরা কখনো অভিনয় করতে জানে না,তারা মন থেকেই ভালবাসে।
>রূপন্তী কে কী বলবো সেটাই ভেবে পাচ্ছি না।আর কোন কিছু বলে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না মনে হচ্ছে।ধরা তো মনে হচ্ছে পড়েই গেছি।
.
ভাবছি রূপন্তী কে কী বলব।রূপন্তী সব শুনে যদি বিশ্বাস না করে।তখন তো জেলেই যেতে হবে।কিন্তু সারাজীবন মিথ্যা খুনের বোঝা বয়েও বেড়াতে পারব না। রূপন্তীকে যেভাবেই হোক বোঝাতে হবে না হলে আমার কিছু হলে মা-বোনকে কে দেখবে।তারা যে আমাকে ছাড়া বড্ড অসহায়।রূপন্তী কে ভরসা করা ছাড়া আমার আর কোন উপায়ও নেই।
.
চলবে...
.
লেখাঃশাহীন আলম সবুজ (মেঘলা আকাশ)
গল্পঃ পুলিশের মেয়ে।
পর্বঃ০৯
.
আমি একটু চুপ থেকে বললাম--
-রূপন্তী আমাকে একটু সময় দিবে?
-হুমম,দিলাম।
-আমি ভয় পেয়ে বললাম- না না সময় লাগবে না,এখনই বলব...
-আচ্ছা বলো।।
-বলছি যে...
কথা টা শেষ না হতেই ফোনটা বেজে উঠল।তাকিয়ে দেখি মায়ের ফোন।
-রূপন্তী একটু বসো,কথা বলে আসছি।
-দেখো মাহিন সেদিনও এমন করেছো কিছু বলিনি আমি। [রাগ দেখিয়ে]
-একটু জরুরী ফোন।
-তা আমার সাথে কথা বলতে আসলেই কী তোমার সব জরুরী ফোন আসে।
-না আসলে!!
-ঠিক আছে যাও।এখানে কথা বলতে হবে না।যত প্রবলেম তো আমি।
আমি জানি রূপন্তীর রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক।আমি আর কিছু না বলে চুপচাপ দূরে গিয়ে ফোন করলাম মা কে।
.
-হ্যাঁ মা বলো?
-বাবা মাহিন কোথায় তুই?
-মা আছি একটু কাজে।
-হসপিটালে আসবি একটু বাবা।
-কেন মা, কিছু হয়েছে?
-না তেমন না।তিতলির আজ নাকি অপারেশন করবে,তাই তোর সাথে কথা বলবে ডক্টর।
[আমার বোনের নাম তিতলি]
-তা মা এখনই আসতে হবে নাকি?
-হ্যাঁ ডক্টর তো তাই বলল।
-আচ্ছা মা আমি এখনই আসছি।
-ঠিকআছে তাড়াতাড়ি আসিস।
-আচ্ছা।
কথাটা শেষ করেই দেখি রূপন্তী রাগে খিটবিট করছে।এখন যদি বলি একটু তাড়াতাড়ি যেতে হবে কে জানে কী করে বসবে। কিভাবে যে বলি কথাটা,কিছুতেই মাথায় আসছে না।না গেলে আবার হবে না,যেতে আমাকে হবেই।
.
আমি একটু ভীতু ভীতু মুড নিয়ে একটু এগিয়ে রূপন্তীকে যেই কথাটা বলতে যাবো,ঠিক তখনি রূপন্তী বলে উঠল--
-কি কথা শেষ হয়েছে? [রাগ দেখিয়ে]
-হ্যাঁ মানে!! [ভয়ে ভয়ে]
-তা মুখটা এমন প্যাচার মত করে আছো কেন?
-নাহহ্ এমনিতে।
-ব্যাপার তো ভাল লাগছে না,কি হয়েছে বলো?
-কি হবে, কিছু না।
-ঠিক আছে,কিছু যখন হয়নি তাহলে এবার যা বলতে চাইছিলে বলো?
-না মানে!!
-কী মানে মানে করছো আবার।
-আসলে আমার একটা কথা ছিল!
-কী কথা?
-রাগ করবে নাতো?
-না বলো।।
-সত্যি তো?
-বললাম তো করব না। [রাগ দেখিয়ে]
-এই তো কেমন রেগে গেছো।
-রূপন্তী একটু হাফ ছেড়ে বলল-হুমম বলো?
-আসলে আমাকে একটু যেতে হবে।
-যেতে হবে মানে?কোথায় যাবে?
-আসলে হঠাৎ করে একটা কাজ পড়ে গেলো তাই।
-কী কাজ শুনি?
-(...)
-কী বলো?
-তুমি ত্রিশ মিনিট থাকো আমি এসে তোমাকে বলছি সব।
-নাহহ এখনই বলো।
-প্লিজ আর প্রশ্ন করো না।
কথাটা বলেই আমি হাঁটা শুরু করলাম।
ঠিক তখনি রূপন্তী পিছন থেকে বলে উঠল-
-হসপিটালে যাচ্ছো তো?
-আমি অবাক হয়ে বললাম-মানে?
-তোমার বোন হসপিটালে তাকে দেখতে যাচ্ছো তাই তো?
-তুমি কিভাবে জানো সব?
-সেটা তোমার জানতে হবে না।
তাহলে সেদিন আমি রূপন্তীকে দেখেছি হসপিটালে।এটা এবার শিউর।
-তুমি কি কিছুদিন আগে হসপিটালে গেছিলে?
-হ্যাঁ গেছিলাম।আর জানলাম তোমার বোনের ব্রেন টিউমার হয়েছে।
আমি কী বলব বুঝতে পারছি না আর।এই মেয়েটা পুলিশ না হয়েই যেভাবে সব জেনে গেছে পুলিশ হলে কি যে করত।পুলিশের মেয়ে তো তাই হয়তো এতটা জানতে কোন সম্যসা হয়নি।মেয়েটা সত্যি একটা রহস্য,বড়ই অদ্ভুত।
-তার মানে তুমি সবই জানতে?
-হ্যাঁ জানতাম।
-তাহলে এতদিন জেনেশুনে আমার সাথে এমন লুকিয়ে রাখার মানে কী?
-কারন তুমি সব লুকিয়েছো তাই।তুমি কী কখনো সত্যিটা বলেছো আমাকে?
-(...)
-বলবেই বা কি করে আমাকে তো কখনো বিশ্বাসী করতে পারোনি।
-(...)
-এটা সত্যি যে প্রথম প্রথম তোমার সাথে অভিনয় করেছি,কিন্তু যত তোমার সাথে মিশতে লাগলাম তত তোমাকে ভালবেসে ফেললাম।
-(...)
-একটা কথা বলব?
-কী?
-আমিও যাবো তোমার সাথে হসপিটালে।
-আমি ছোট্ট করে জবাব দিলাম -চলো।
.
আমি আর রূপন্তী এখন হসপিটালে ডক্টরের কাছে।
-আরে রূপন্তী মা তুমি?
-হ্যাঁ ডক্টর আঙ্কেল আমি।
-তা তুমি মাহিনের সাথে?
-হ্যাঁ ওর বোন আছে এখানে তাই আসলাম ওর সাথে।
আমি চুপচাপ তাদের কথা বলা দেখছি আর অবাক হচ্ছি।সবই রূপন্তীর চেনাশোনা মানুষ।
-হ্যাঁ মাহিন শুনো বাবা?
-জ্বী ডক্টর সাহেব?
-আজই তোমার বোন কে অপারেশন করব।আশা করি সব ভালভাবেই হবে।
-ঠিকআছে।
-টাকা পয়সা তো সব জমা হয়ে গেছে, তাই তোমার অনুমতি নেয়ার জন্য ডেকেছি।
-ঠিকআছে ডক্টর সাহেব,সম্যসা নেই।
মনের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে অপারেশনটা হয়ে গেলেই বোনটা আমার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবে।আবার আগের মত ছোটাছুটি করবে,পড়াশোনা করবে, এসব ভাবতেই কেমন চোখের কোণে দিয়ে আনন্দ অশ্রু বের হওয়ার অপেক্ষাই।
-এই মাহিন কী ভাবছো এতো?
-নাহ্ কিছু না।
-তাহলে চলো তোমার বোন কে দেখি আসি।
-হ্যাঁ চলো।
.
-কিরে বাবা মাহিন এই তোর আসার সময় হলো?
-নাহ ঐ একটু লেট।।
-এটা কে তোর সাথে বাবা?
-আমার ফ্রেন্ড রূপন্তী।।
-ফ্রেন্ড নাকি আমার ভাবী, সত্যি করে বল কিন্তু।। [তিতলি]
-ঐ তুই থামবি,বড়দের মধ্যে কথা বলিস।
এভাবে কিছুক্ষন আমি রূপন্তী কে মা আর বোনের সাথে পরিচয় করে দেয়ার পর মনে হলো রূপন্তী সবাই কে আপন করে নিয়েছে।ভাবতেই আমার অবাক লাগে পুলিশের মেয়ে হয়েও কেমন জানি অহংকারবোধ নেই।সব পুলিশের মেয়ে তো আবার রূপন্তীর মত না।
-মাহিন ডক্টরের সাথে কথা বলেছিস বাবা?
-হ্যাঁ মা বলেছি।আজ রাতেই অপারেশন করবে।
-সব ভালোই ভাল হলেই হয়।
-হ্যাঁ মা,আচ্ছা তোমরা থাকো আমি সন্ধার পরেই চলে আসবো,রূপন্তী কে একটু এগিয়ে দিয়ে আসি।
-ঠিকআছে বাবা সাবধানে যাস।আর তাড়াতাড়ি আসবি।
-ঠিকআছে।
.
আমি রূপন্তী কে আবার সেই জায়গাতেই আনলাম,কারন সব কথা রূপন্তী কে বলতে হবে।এই মেয়েটা কে আর ভুল বোঝা যাবে না।এই মেয়েটাই পারবে আমার এই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে।রূপন্তীকে এখন আমি সম্পূর্ন বিশ্বাস করতে পারি চোখ বন্ধ করেই।।
-কী ব্যাপার আবার সেই জায়গাতেই আনলে?
-সব বলব তাই।
-ঠিকআছে বলো?
-রূপন্তী ঐ খুনটা আমি করিনি?
-তাহলে কে করেছে?
-সেটা আমি জানি না।তবে সত্যি বলতে আমি খুন করতে গিয়েছিলাম।
-মানে?
-আমার বোনের অপারেশন করার জন্য অনেক টাকা দরকার ছিল,সেই টাকা কোনভাবেই জোগাড় করতে পারছিলাম না,পরে একটা গ্যাং-এর সাথে যোগাযোগ করি,তারা টাকা দিতে রাজি হয় বিনিময়ে আমাকে খুন করতে হবে একজন কে।
-তারপর...
-তারপর তাদের কথা মত খুন করতে চাই,আমি গুলি চালাবার আগেই কারা যেন গুলি করে মেরে ফেলে তাকে।ঠিক তখনি আমি পালিয়ে আসি ওখান থেকে।
-তাহলে খুনটা কে করল তুমি জানো না?
-সত্যি বলছি,বিশ্বাস করো আমি জানি না।
-ঠিকআছে কোন গ্যাং-এর সাথে তোমার যোগাযোগ?
-সালাম গ্যাং।
-এরপর কী তারা আর তোমাকে দিয়ে কোন কাজ করাবে না তুমি ভাবলে কী করে?
-করাতে চাচ্ছে এখনো,তাই তো আরো বেশী বিপদে আছি।
-কী করতে বলেছে?
-সেদিন এক্সিডেন্ট ইচ্ছা করে করেছিলাম আমি।
-মানে......
.
শেষ পর্ব খুব শিঘ্রই দেয়া হবে...
.
লেখাঃশাহীন আলম সবুজ (মেঘলা আকাশ)
গল্পঃপুলিশের মেয়ে।
পর্বঃ১০ (শেষ পর্ব)
.
-ইচ্ছা করে এক্সিডেন্ট না করলে আরেকটা খারাপ কাজ করে ফেলতাম।
-একটু পরিষ্কার করে বলো তো।
-সেদিন আমি একটা পিচ্চি কে কিডন্যাপ করতে গেছিলাম ওখানে।
-কাকে?
-তোমার ভাইয়ের মেয়েকে।
-মানে,কী বলো এসব?
-হ্যাঁ ঠিকই বলি।ওরা আমাকে হুমকি দিয়েছিল,যদি কিডন্যাপ না করি তাহলে আমার মা-বোন কে ক্ষতি করে দিবে।
-তারপর?
-তারপর যখন দেখলাম ঐ পিচ্চিটা তোমার সাথে তখনই মত চেঞ্জ করে ফেললাম।
-হুমম,,তারপর কী করব ভেবে পাচ্ছিলে না ,ঠিক তখনি নিজে গাড়ীতে গিয়ে ধাক্কা মারলে তাই তো?
-হ্যাঁ ঠিকই ধরেছে।কি বুদ্ধি তোমার।
-হ্যাঁ সেই কারনেই তো পুলিশের মেয়ে।
-হ্যাঁ তাই তো।তবে ওরা বলেছে আমি সুস্থ হলে নাকি কিডন্যাপ করিয়েই ছাড়বে আমাকে দিয়ে।
-সেই সুযোগ ওরা পাবে না।
-মানে?
-মানে ওদের গোপন ডেরা টা কোথায় বলো?
-কী করবে তুমি শুনে?
-যা বলছি তার উত্তর দাও।
.
আমি রূপন্তী কে সব বলে দিলাম।এর পরেই রূপন্তী কাকে যেন ফোন করল।সেটা এখনো আমি বুঝে উঠতে পারিনি।এই মেয়েটা ঠিক কী করতে চাচ্ছে এখনো বুঝে উঠতে পারছিনা আমি।
-রূপন্তী কাকে ফোন করলে?
-সেটা তোমার না জানলেও চলবে।
-ঠিকআছে।কিন্তু আমার যে যেতে হবে।
-সন্ধার পর যাবে।
-সন্ধার পর কেন?
-সেটা দেখলেই বুঝতে পারবে।
-আজ আমার বোনের অপারেশন,সেটা তো তুমি জানো?
-হুমম জানি।
-তাহলে এমন করছো কেন?
-তোমাকে মুক্তি দেবার জন্য।
-মানে?
-মানে আজ রাতের পর থেকেই তোমার জীবনের সব কালো ছায়া মুছে যাবে।কাল থেকে তোমার নতুন দিন শুরু হবে,যেটা স্বাভাবিক জীবন।
>রূপন্তী কী সব বলছে আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। কিন্তু আমার প্রচন্ড রকমের রাগ হচ্ছে।বোনের অপারেশন আর আমি থাকবো না।রূপন্তী জেনে বুঝে এমনটা করতে পারে না।
-রূপন্তী আমি চলে যাচ্ছি।
-মানে?
-মানে তোমার কথা রাখতে পারছি না।আমি হসপিটালে যাবো।বোনের ওখানে আমার থাকতেই হবে।
-যদি সত্যি ভালবাসো আমাকে তাহলে যেটা বলছি সেটাই করবে আশা করি।আর এতটুকু বিশ্বাস করতে পারো যা করছি সব তোমার ভালই হবে।
>আমি আর কিছু বললাম না,চুপচাপ বসে রইলাম সন্ধার পর কী হবে তা দেখার জন্য।
.
সন্ধার পর..
.
আমি এখন রূপন্তীদের গাড়ীর মধ্যে বসে আছি।কোথায় যে যাচ্ছি সেটা নিজেও জানি না।রূপন্তীও চুপচাপ পাশে বসে আছে।মুখ দেখে মনে হচ্ছে, কোন কিছু ভাবছে।কী ভাবছে সেটাই বুঝতে পারছি না।এই মেয়েটার মাথায় কখন কী চলে সেটা বুঝতে পারাটাই মুশকিল।আমি একটু বিরক্তিভাব নিয়ে বললাম-
-রূপন্তী কোথায় যাচ্ছি বলবে তো?
-(...)
-এই রূপন্তী শুনছো আমার কথা।
-(...)
-গাড়ী থেকে লাফ দিবো কিন্তু।
-রূপন্তী মুচকি হেসে বলল- দাও সাহশ থাকলে।
আমি একটু ভ্রু কুচকে তাকালাম।দেখি রূপন্তী মিটিমিটি হাসছে।
-অসভ্য একটা মেয়ে..
-কী বললে তুমি? আবার বলো?
-কই কই কিছু নাতো।
-সত্যি তো?
-হ্যাঁ হ্যাঁ সত্যি।
বাব্বাহ এখনই মনে হলো খেয়ে ফেলবে আমাকে।যাক কোন রকমে এড়িয়ে গেলাম।
-তা কোথায় যাচ্ছি।
-চুপ করে বসো, একটু পরেই দেখতে পাবে।
>এর কিছুক্ষন পরেই রূপন্তী ড্রাইভার কে একটা জায়গায় থামতে বলল।গাড়ী থেকে নেমে দেখি একদম শুনশান জায়গা,চারপাশে কেমন ঘন জঙ্গল।দেখলেই কেমন গা ছমছম করে,
ভৌতিক ভৌতিক লাগছে একদম।
.
এর কিছুক্ষন পরে রূপন্তী বলল-
-ডেরা টা কোন দিকে?
-আমি চোখ বড় বড় করে বললাম -মানে?
-এখানকার কোথায় তো তুমি বলেছিলে?
আমি একটু চারপাশে ভালভাবে চোখ বুলিয়ে নিলাম।দেখেই চমকিয়ে উঠলাম,আরে এখানেই তো সেই সালাম গ্যাং এর আস্তানা।
-কী হলো বলো?
-আগে বলো কী করবে।।
কথাটা শেষ করতে না করতেই পিছনে তাকিয়ে দেখি অনেকগুলো পুলিশের গাড়ী।দেখেই তো আমি ভয় পেয়ে গেলাম।এই মেয়েটার মাথায় কী চলছে কে জানে।রূপন্তীর ভাবসাপ একদম সুবিধার মনে হচ্ছে।
-কী হলো বলছো কেন? [রাগ দেখিয়ে ]
আমি রূপন্তীকে জঙ্গলের ভেতরের একটা পথ দেখিয়ে সব কিছু বলে দিলাম।এর পরেই রূপন্তী ওর কাকা কে বলে দেবার সাথে সাথে পুলিশের গাড়ীগুলো ঐ পথ দিয়ে জঙ্গলে ঢুকে গেল।
.
-রূপন্তী কী হচ্ছে বলবে তো?
-চলো?
-কোথায় যাবো?
-তোমাকে হসপিটালে দিয়ে আসতে হবে।
-আর তুমি?
-আমি তোমাকে দিয়ে এসে, আবার এখানে আসব।
-না...
-কী না?
-আমি যাবো না।তোমার সাথে এখানে থাকবো।
-মানে কী।তোমার বোনের অপারেশন তো।আর তখন তো খুব রাগ দেখিয়েছিলে।
-সেটা বুঝিনি আমি।
-তোমার মা চিন্তা করবে।
-আমি ফোন করে দিচ্ছি।
পকেট থেকে ফোন বের করে দেখি মা অনেকবার ফোন করেছে। আমি সাথে মা কে কল দিলাম....
-কিরে বাবা তোকে কতবার ফোন করেছি?
-ফোন সাইলেন্ট ছিল খেয়াল করিনি।
-তা কখন আসবি তিতলি কে তো নিয়ে গেল অপারেশন রুমে।
-মা আমি একটু সম্যসায় আছি হয়তো আসতে পারব না।
-কী সম্যসা?
-এসে বলব।আর মনে মনে দোয়া করব তিতলির জন্য আসতে পারছি না তো কী হয়েছে।
কথাটা শেষ করেই ফোনটা কেটে দিলাম।মনে মনে ভাবছি বোনটার অপারেশন ভালভাবে যেন হয়ে যায়।
.
রাত প্রায় দশটা চাপা উত্তেজনায় একেকটা মিনিট পার হচ্ছে আমার।এদিকে পুলিশ ঢুকেছে জঙ্গলে তাদের আসার কোন নাম গন্ধ নেই।আর তারা বের না হলে রূপন্তীও এখান থেকে যাবে না।আর অন্য দিকে বোনের অপারেশন।সব মিলিয়ে আমার শরীর কেমন ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে এসব ভাবলেই।মা"কে যে একটা ফোন করব সেই সাহশও পাচ্ছি না।হাত পা কেমন কেঁপে কেঁপে উঠছে।এরই মধ্যে রূপন্তী বলে উঠল...
-গাড়ীতে উঠো।।
-কোথায় যাবো?
-কোথাও না।
-তাহলে?
-সারা রাত কী বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবো নাকি।ভেতরে গেলে একটু বিশ্রাম নেয়া যাবে।
.
ভোরের দিকে
.
এরই মধ্যে কখন যে দুজনে ঘুমিয়ে গেছি খেয়ালই করিনি।ভোর হয়ে গেছে প্রায়, হালকা হালকা আলো ফুটেছে।রূপন্তী আমার কাঁধে মাথা দিয়ে পরম আদরে ঘুমোচ্ছে।আমি একটু উঠতে যাবো ঠিক তখনি রূপন্তী আরো শক্ত করে আমার এক হাত জড়িয়ে ধরল।রূপন্তী কে ঘুমের অবস্থায় এত্ত মায়াবী লাগে সেটা আজ না দেখলে হয়তো কখনোই এভাবে দেখতে পেতাম না।চুলগুলো একটা চোখ ঢেকে দিয়েছে,এতে যেন সৌন্দর্যরূপ আরো বেশী বেড়ে গেছে।হুমায়ূন স্যারের একটা কথা পড়ে ছিলাম-"সেই মেয়ে প্রকৃত রূপবতী যাকে ঘুমন্ত অবস্থায় সুন্দর দেখায়"।এখন সেই কথাটা একদম মিলে গেছে।আমি চুলগুলো হালকা সরিয়ে দিতেই রূপন্তী একটু শিহরিত হলো।এর কিছুক্ষন পরেই.....
.
এর কিছুক্ষন পরেই পুলিশের গাড়ী গুলো শোঁ শোঁ করে একেকটা বের হতে লাগল।আমি রূপন্তীকে ডাকতে লাগলাম..
-এই রূপন্তী?
-(...)
-এই রূপন্তী শুনছো?
-(...)
-রূপন্তী? [একটু জোরে চেঁচিয়ে]
-রূপন্তী একটু আরমোড়া ভেঙে বলল-কী হয়েছে?
-পুলিশের গাড়ীগুলো তো সব বেরিয়ে গেল।
-কখন কখন?
-কয়েকমিনিট হবে।
-আরে আগে বলবে না।
রূপন্তী ড্রাইভার কে গাড়ী স্ট্যার্ট করতে বলল।এর কিছুক্ষন পরেই রূপন্তী হসপিটালের সামনে নামিয়ে দিয়ে গেল আমাকে।অবশ্য আমি ওর সাথেই যেতে চেয়েছিলাম,কিন্তু রূপন্তী বলল আগে হসপিটালে যেতে, পরে নাকি ও ফোন দিবে আসার জন্য।
.
হসপিটালে ঢুকেই কেবিনে ভেতরে ঢুকে দেখি বোন অঘোরে ঘুমোচ্ছে।আর মা সবে মাত্র নামাজ শেষ করে উঠল।
-মা তিতলি কেমন আছে?
-আসলি বাবা মাহিন?
-হ্যাঁ মা।
-তিতলি সুস্থ আছে।কিছুদিনের মধ্যেই তিতলি কে ছেড়ে দিবে।
কথাটা শুনেই একটা দ্বীর্ঘশ্বাস ফেললাম।কয়েক ফোটা আনন্দ অশ্রু বের হলো।মা"ও বলতে বলতে কেঁদে দিল।এটা সুখের কান্না।কাউকে ভালভাবে ফিরে পাবার কান্না।
.
আমি একটু ফ্রেশ হয়েই কিছু নাস্তা কিনে আনলাম।মা আর আমি একসাথেই খেলাম।এর একটু পরেই রূপন্তী ফোন দিয়ে বলল,থানার সামনে আসতে।আমি মা কে বলেই বের হয়ে গেলাম।
.
থানার সামনে এসে দেখি কত সাংবাদিক।কত পুলিশ।আমি চুপচাপ রূপন্তীর পিছু গিয়ে ফিসফিস করে বললাম-
-তুমি নাস্তা করেছ?
-হুমম,,তোমার বোন কেমন আছে?
-সুস্থ আছে।কিছুদিনের মধ্যে ছেড়ে দিবে।
-যাক তাহলে আরেকটা খুশীর সংবাদ দিই।
-কী বলো?
-সালাম গ্যাং এর সবাই ধরা পড়েছে।আর সালাম গতরাতেই গোলাগুলি তে মারা গেছে।বলেছিলাম না তোমার জীবনে নতুন দিন শুরু হবে,একদম স্বাভাবিক তুমি যেটা চেয়েছিলে।আর ওদের বিরুদ্ধে অনেক ক্রাইম করার প্রমান মিলেছে।অনেকদিন ধরে ধরার চেষ্টা করেও ধরতে পারেনি এদের।কিন্তু অবশেষে....
.
কথাটা শুনেই আনন্দ যে আমার ধরে না।খুশীতে লাফাতে ইচ্ছা করছে।সাথে সাথে বেঘোরে রূপন্তী কে চুমু দিয়ে বসলাম।আর রূপন্তী কুনুই দিয়ে গুতো দিয়ে বলল..
-এখানে অনেক লোক আছে।চোখের কী মাথায় খাইছো নাকি।সারারাত গাড়ীতে দুজনে একসাথে ছিলাম তখন তো এত সাহশ দেখাওনি?
-সরি, আসলে বেশী আনন্দ করতে গিয়ে?
-হ্যাঁ হ্যাঁ সব ছেলেদের চেনা আছে সুযোগ পেলে কত অজুহাত দিবা।
-এই রূপন্তী দেখো?
-কী...
-ঐ ভুড়িওয়ালা লোকটা কিভাবে তাকাচ্ছে?
-কোন ভুড়িওয়ালা লোকটা?
-ঐ যে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছে আর এদিকে তাকাচ্ছে?
-আরে গাধা ঐটা আমার বাবা।
-কীহহ্...
-হ্যাঁ আমি সব কথা বাবা কে বলেছি।
-কী কথা?
-আমাদের দুজনের কথা।
-কী বলো?
-ঠিকই বলি।
-তোমার বাবা কী বলল?
-বলল তুমি আমার বর।
এর একটু পরেই ঐ ভুড়িওয়ালা লোকটা আমাকে ইশারা করে ডাক দিয়ে বলল-এটা পাব্লিক প্লেস এসব এখানে করতে হয়না।কথাটা বলেই উনি চলে গেল।আমি যে একদম ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।কিছুই বলার নেই।।।
.
আমি আর রূপন্তী হাঁটছি,মেয়েটা বকবক করেই যাচ্ছে আর আমি শুনছি আর ভাবছি এই মেয়েটা জীবনে না আসলে হয়তো মাথা থেকে এত বড় বোঝা নামতো না।চারিদিকে কেমন সব নতুন নতুন লাগছে।নতুন দিন,নতুন করে স্বপ্ন সাজাবো এই পুলিশের মেয়েটা কে নিয়ে।
.
এর পরেই পার্কের মধ্যে কিছু ছেলে একটা মেয়েকে বিরক্ত করছে,আর রূপন্তী একটা ছেলের কলার চেপে ধরে কসে এক থাপ্পর দিল...
-আপা আপা ভুল হয়ে গেছে।
-চিনিস আমাকে?
-হ্যাঁ আপা খুব ভাল করে চিনি।আপনি পুলিশ সুপারের মেয়ে।
-হ্যাঁ,আর কখনো যদি এই পার্কে এমনটা করতে দেখি...
-না না না,,আপা আর কখনো করব না।
রূপন্তী ছেলেটা কে ছেড়ে দিল..
-রূপন্তী এভাবে ছেলেদের মত মারামারি কবে বন্ধ করবে?
-কেন সম্যসা কী?
-আমার অনেক সম্যসা।
কথাটা শেষ করতে না করতেই রূপন্তী আমাকে জড়িয়ে ধরল।
.
আমি এখন ভাবছি রূপন্তী অন্যদের কাছে যতটা শক্ত আর কঠোর,আমার কাছে ঠিক ততটাই নরম,আর দূর্বল।ভালবাসার মানুষের কাছে সবাই ঠিক এভাবেই হার মানে।
-এই এই কী হলো মারছো কেন?
-সারাজীবন এভাবেই মারবো।
-কেন?
-জড়িয়ে ধরছো না কেন?
-ধরব না,
-কীহহ,জানো না আমি পুলিশের মেয়ে।ডাকবো পুলিশ..........
*সমাপ্ত*
.
আর হ্যাঁ সেই খুন যে কারা করেছিল তা এখনো অজানা পুলিশের কাছে।আর আমার আর রূপন্তীর কাছেও।
.
লেখাঃশাহীন আলম সবুজ (মেঘলা আকাশ)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ