#বয়ফ্রেন্ডের_বিয়ে
লেখা :- সুহাসিনী সোনামনি
বিয়ে বাড়িতে এত এত মানুষের ভীড়ে বড্ড আসহ্য লাগছে।এর আগে যতবার বিয়েতে গেছি-আনন্দ, হৈ-হুল্লোড় করেছি।কিন্তু এই প্রথম খুব কষ্ট লাগছে।
লাগবেই বা না কেন.??
আজ অব্দি কোন মেয়ে তার বয়ফ্রেন্ডের বিয়ের দাওয়াত খেতে এসেছে..?
আমিই হয়ত প্রথম কোনো হতভাগী-যে কিনা তার ভালবাসার মানুষকে অন্যের হাত ধরা দেখতে এসেছি।
-তানভি আজ অব্দি আমাদের রিলেশনের কথা ওর হিটলার বাবাকে বলতে পারিনি।শেষমেশ, যা হবার তাই হলো। অন্য মেয়ের সাথে ওর বিয়ে ঠিক করলেন।কিন্তু, তানভি ভয়ে একটা কথাও বলে নি।
এরকম ভীতুরামকে পিছনে হয়ত দু-তিনটা লাত্থি দিয়ে চলে যাওয়া উচিৎ।কিন্তু আমি উলটো তার বিয়ে খেতে এসেছি।
তারও অবশ্য কারণ আছে। ও আমাকে হুমকি দিয়েছে এই মুহুর্তে যেন আমি ওর পাশে থাকি।ওর বরযাত্রীতে যেন আমি আসি।নাহলে ও নাকি আত্নহত্যা করবে।
এতবড় ছেলের মুখে কথাটা হাস্যকর হলেও- আমার কেন জানি ভয়ই করলো।
তাই বাধ্য হয়ে নিজের কপাল পোড়াটা উপভোগ করা। নিজেকে কেমন পাগল পাগলই মনে হচ্ছে।
--বিয়ে বাড়িতে সবাই কি আনন্দ করে ঘুরে বেড়াচ্ছে,খাচ্ছে। তানভীকে আজ রাজপুত্রের মত লাগছে।
একটু পরেই আমি আমার প্রিয়জনকে হারাতে চলেছি। -এটা ভাবতেই খুব কান্না পাচ্ছে।তবুও চোখের জলগুলোকে আটকানোর চেষ্টা করে চলেছি।
ছলছল চোখে তানভীর দিকে তাকালাম। ও আমার দিকে এক মুহুর্ত তাকিয়ে আবার অন্যদের সাথে গল্পে মেতে গেল।
আমার জন্য একটু সমবেদনা ও দেখালো না। উহ, কি নিষ্ঠুর এই পুরুষ জাতি..!!
-কিছুক্ষন পর মেয়ের ঘর থেকে বেশ হট্টগোলের আওয়াজ আসতে লাগলো।
ঘটনাটা কি জানতে গিয়ে শুনতে পেলাম-মেয়েটি বলছে..
-আমি এ ছেলেকে বিয়ে করবো না। ছেলেটির কিছু মেয়েলি স্বভাব আছে।
তানভী' র বাবা তো রেগে আগুন. উনি বললেন-
- কি বলো এসব..? পরিষ্কার করে বলো
মেয়েটি:-- সমস্যা এই যে- সে তার বাবা যা বলে তাই শোনে। এক কথায় বাপ মুখো। এরকম ভীতু, কাপুরুষ ছেলেকে বিয়ে করলে আমি জীবনে কিছুই পাবো না। সারাটা জীবন আমাকে অবহেলা আর শশুরের নাক ছিটকানিই শুনতে হবে। এরকম পরিবারে বিয়ে করা যায়.??
মেয়েটির কথা শুনে ওর বাবাও আর বিয়ে দিতে রাজি নয়।
কিন্তু আমার খুব গায়ে লাগলো। হাজার হোক, আমার ভালবাসার মানুষের পার্সনালিটি নিয়ে কথা বলে.!! সাহস কত..!
আমি উত্তর দিলাম
--দেখুন,আপনি কতটুকু চিনেন আংকেল কে.? উনি সন্তানদেরকে যথেষ্ট আদর্শে বড় করেছেন।তাই ওনার সন্তানেরা গুরুজনকে ভক্তি করতে জানে,মান্য করতে জানে। আপনি না জেনে, না শুনে এভাবে একজনকে এভাবে বলতে পারেন না..
আমার কথাগুলো শুনে তানভী 'র বাবা কেমন অদ্ভুতভাবে আমার দিকে তাকালেন!!
রাত:-১১:৪০
বাসর ঘরে বসে আছি।কিছুক্ষণ পর তানভী রুমে এলো। আমি বেশ রাগ করেই ওর সাথে কথা বললাম।
-না এলেই পারতে.!
-(হেসে) কেন.? এত ঝড় ঝাপ্টা পার করে তোমায় পেলাম- আর তুমি....
-না তো কি.? শুধুমাত্র আমিই তোমাকে ভালবাসি বলে আজ আমরা এক হতে পেরেছি।কষ্ট তো লাগছে তোমার জন্য- মেয়েটাকে তুমি হাত ছাড়া করে ফেললে..
(আসলে বিয়ের আসরে ওর বাবা মেয়েটার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। তার উপর আমি আবার তানভী ও তার বাবার পক্ষ নিয়ে সাফাই গেয়েছি। তাই আংকেল ওই মেয়েটার সাথে তানভীকে আর বিয়ে দেয় নি। উলটো আমাকে অনুরোধ করেন-তানভীকে বিয়ে করার জন্য। এবং মেয়েটির সামনে ওনাদের সম্মান রক্ষা করার জন্য। হি হি হি। আমিও সাত পাচ না ভেবে রাজি হয়ে যায়। তখন থেকে তানভী 'র বাবা যে আমাকে কি ভালবাসা টা বাসছেন- সে বলে বোঝানো যাবে না।হাজার হোক,ওনাদের সম্মান রক্ষা করেছি। হি হি হি)
তানভী বেশ রাগান্নিত ভাবে আমার দিকে তাকালো।
তারপর বলল--
- আমি তোমার জন্য এতকিছু করলাম।আর তুমি এইভাবে আমাকে বললে...??
-মানে.? ঠিক বুঝলাম না।কি করেছ তুমি.??
তানভী তখন ফোন টা বের করে কাকে যেন ফোন দিলো।
>
-হ্যালো নিশি, থেংক্স।
-আরে, না না থেংক্স বলার কি আছে..?
- কি যে বলো.? তুমি যদি ওই নাটকটা না করতে-তবে কি আমি আমার ভালবাসার মানুষটাকে পেতাম.?
-হা হা হা। আরে, এটা কোন ব্যাপার না। তুমি যদি আগে থেকে না জানাতে তবে আমরা দুজনই ফালতু ঝামেলায় ফেসে যেতাম।
-হুম।তা ঠিক।
-আচ্ছা, তোমাদের জন্য শুভ কামনা রইলো। ফুল শয্যার রাতে কেউ অন্য মেয়ের সাথে গল্প করে.??
- ওহ হ্যা, তাইতো। আচ্ছা বাই।
-বাই।>
আমার চোখ তো ছানা বড়া।
তানভী ফোনটা রাখতেই জিজ্ঞেস করলাম-
-এটা তো তোমার সেই হবু বউ নিশি..!!
-হুম।
-তার মানে.? তোমরা প্ল্যানিং করেছিলে.?
-কি আর করবো.? বাবাকে যেমন ভয় পাই,তেমনি প্রিয় মানুষটাকেও অনেক ভালবাসি। তাই একটু তো বুদ্ধি খরচ করতেই হয়।তাইনা.?
--তুমি এসব করেছো..!!
-কেন.? সাহসটা নাহয় নেই,তাই বলে কি বুদ্ধিও নাই নাকি আমার..?
>>আবেগে চোখে পানি চলে এলো। যে মানুষটাকে এত ভালবেসেও এতক্ষন ভুল বুঝে আসছিলাম,সেই মানুষটাই আমার জন্য এত কিছু করেছে।
কেউ সত্যিকার ভাবে ভালবাসলে তার প্রিয়জনের জন্য কত কিছুই না করে..! সেই ভালবাসার মানুষের কাছে নিজের ভালবাসাটাও ফ্যাকাশে মনে হয়। এখন বুঝতে পারছি, পুরুষ মানেই নিষ্টুর নয়-সেও সবটুকু দিয়ে ভালবাসতে জানে।
আমি ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছি। আর তানভী সেই কান্না দেখে মিটিমিটি হাসছে।
হুয়ত,-- আজ এ কান্নাটাও ওর কাছে মধুর মনে হচ্ছে।
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ