#ভিন্ন_স্বাদের_বিয়ে
লেখিকা:-- সুহাসিনী (গেয়োভুত)
আর মাত্র তিন ঘন্টা পর আমার বিয়ে।
আর আমি ""এই যে বিয়েন সাব"" গানে সেই ডিজে ডান্স করছি। তাও আবার বাসার সব আত্নীয়দের সামনে।
ওরা বেশ অবাক হয়ে গেছে আমার এইভাবে নাচানাচি দেখে।
নিজের বিয়েতে কোন মেয়ে বাস্তবে এর আগে এরকম নেচেছে বলে হয় না।
তাই হয়ত প্রথম দেখার ধাক্কাটা সামলে উঠতে পারছে না। সবার চোখগুলো তিন গুন বড় বড় হয়ে আমার দিকে আটকে আছে..।
যেন "মহাবিশ্বের বিস্ফোরণ" দেখছে।
আমার বিয়ে বলে কথা-আর আমি নাচবো না.?? তাই কি হয়.? অনেক সাধের-অনেক স্বপ্নের বিয়ে আমার। কত স্বপ্ন দেখতাম আমার বিয়ে নিয়ে। আজ সেটা সত্যি হচ্ছে।
আমারই তো নাচার কথা।
স্বপ্ন দেখতাম,এক রাজপুত্র এসে আমাকে বিয়ে করে পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চড়িয়ে নিয়ে যাবে। হ্যা, আজ রাজপুত্রও আসবে। কিন্তু, অন্য রাজ্যের অন্য কোন এক রাজপুত্র..
কিন্তু, একে তো আমি চাইনি কখনো.!!
মা'কে চেয়ে চেয়ে দেখলাম,আজ খুব খুশি দেখাচ্ছে আমার মা'কে...
মায়ের চোখে চোখ পড়তেই একটা মৃদু হাসি দিলাম।তারপর রুমে এসে দরজাটা লাগিয়ে দিলাম।
জীবনের শেষ নাচ নেচে নিলাম। খুব কষ্ট লাগছে,ভীষণ কান্না পাচ্ছে। সাথে নিজের কাছে বেশ হালকাও লাগছে।
টেবিলে যত্ন করে রাখা শিশিটার দিকে চোখ পড়তেই বুকের ভিতরে একটা বড় ধাক্কা লাগলো। এই শিশিটাতে যে কতবার মৃত্যু আকতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি-তার হিসেব আমার মস্তিষ্কে নেই।
শিশিটা হাতে তুলে নিয়ে বেশ কয়েকবার হাত বুলালাম।
--""মা, আজ তোমরা খুব খুশি।কারণ, তোমার একমাত্র মেয়ের বিয়ে। আমারো খুব ইচ্ছে করে তোমাদের এই হাসিমুখটা ধরে রাখি আজীবন।
কিন্তু আমি নিরুপায়...
ভালবাসি আমি তানিমকে। অনেক খানি ভালবাসি। অন্ধ হয়েছিলাম ওর মিথ্যে আবেগের কাছে।
কিন্তু, তানিম আমাকে ভালবাসতে পারেনি। ভালবেসেছে আমার শরীরকে।
নিজের শরীর দিয়ে ওর ভালবাসার প্রমাণ দিয়েছি।
নিজের পশুত্বের চাহিদা মিটিয়ে ও পালিয়ে বেড়িয়েছে আমার থেকে। একবারের জন্যেও বুঝতে চায় নি--"আমার ভেতরে তারই ফলস্বরুপ নতুন কারো আগমন ঘটতে চলেছে।""
আমার মাঝে বড় হয়ে আজ সেই অতিথি প্রায় দেড় মাসে পৌছেছে। এখন ওর শ্বাস চলা শুরু হয়েছে হয়ত।কিন্তু, ওর তো পিতৃপরিচয় থেকেও নেই। কি হবে, আমাদের বেচে থেকে..!! মরে যাওয়ায় ভালো।!!
বিষের শিশিটা খুলে মুখে দিতে যাবো- সেই সময় জারিফ-(হবু বর) এর ফোন।
অনিচ্ছাসত্ত্বেও ফোনটা কেন জানি রিসিভ করলাম...
-নীলা, মধুটা খেয়ে জানিয়ো- সুন্দরবনের খাটি মধুর মত কিনা..
-মানে.??
-ন্যাকা..!! তুমি যেই মধুর বোতলটা যত্ন করে রেখেছো, খাবে বলে। ওইটাই তো মনে হয় এখন খাবে বলে প্ল্যানিং করছিলে...
-কিন্তু এটা তো...
-জানি, দরজাটা খোলো...
আমি পুরো হতভম্ব হয়ে গেলাম।এ ছেলে বলে কি..!!
ভয়ে ভয়ে দরজাটা খুলতেই জারিফ রুমে ঢুকে দরজার ছিটকিনি দিয়ে দিলো।
-কি হল.?? দরজা দিলেন কেন.??
- ভয় পাচ্ছো নীলা.?? তানিম হলে বুঝি ভয় পেতে না..?
-জারিফ..!!
-আমি জানি। সবটুকুই জানি। এটাই জানি, তুমি আমাকে সম্মান করো বলেই আমাকে ঠকাতে চাও নি,মিথ্যে বলে তোমার অতীতকে ঢাকতে যাওনি।
নীলা, তুমি যেটা ভেবেছো, সেটাও সঠিক। এসব ভুল তখনই মানুষ করে-যখন তারা নীতি শিক্ষা,ধর্মীয় অনুশাসন ভুলে মিথ্যে আবগের বশবর্তী হয়ে যায়।তখন,তারা নিজেরাও জানে না,কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল.!!
দেরীতে হলেও তুমি যে তোমার ভুলটা বুঝতে পেরেছো।এটাই তো তোমার শক্তি।তাকি তুমি জানো.??
তবে, একটা কথা মনে রাখবে,-মানুষের শরীরই সব নয়। শরীর দিয়ে কয়েক মুহুর্ত ভাল থাকা যায়। কিন্তু, একটা ভালবাসার মত মন থাকলে সেটা দিয়ে সারাজীবন সুখ পাওয়া যায়।
আর, সেই ভালবাসার মনটা যে,তোমার আছে... আমার কাছে সেই মনটাই মুখ্য..
--করুনা করতে এসেছেন.?? আমি যে পৃথিবীর কাছে পাপী.. আপনার অযোগ্য..
প্লিজ চলে যান....
-- আর বাচ্চাটা কি দোষ করল.?? তোমাদের পাপের সাজা সে কেন পাবে.?? তুমি মরে গেলে,তানিমের কিছুই আসে-যাবে না।কিন্তু, এই বাচ্চাটার কাছে তুমি পরকালে দোষী হবে,তোমার মা-বাবা তোমাকে ছাড়া একা হয়ে যাবে..
-আমি সব বুঝি, সব.. আমি এটাও জানি,- আমার স্থান জাহান্নামে...
- নাহ, তুমি কিচ্ছুই জানো না...এটা তোমার মনগড়া চিন্তাভাবনা।আল্লাহ চাইলে,সব ক্ষমা করে দিবেন। শুধু নতুন করে আবার সব শুরু করো। নীলা,
তোমার সন্তানের পিতৃপরিচয় দেবার একটা সুযোগ দাও। এটুকু প্রমাণ করার সুযোগ দাও..
"" পুরুষ মানেই ভক্ষক নয়। সেও নারীকে সম্মান করতে জানে। কাপুরুষের সাথে পুরুষের কখনো তুলনা হয় না,। তুমি শুধু কাপুরুষ দেখেছ-পুরুষ দেখনি।
নীলা...নারীর শরীর নিয়ে মত্ত হলেই পুরুষত্ব আসে না।
পৌরষত্বটা দ্বায়িত্বের- দ্বায়িত্ব নেবার,-- সুশীলতাকে আগলে রাখার...
কথা গুলো বলে জারিফ একবার আমার পেটের দিকে তাকালো,তারপর বলল-
" ঘৃণা পাপীকে করো,পুরুষ জাতিকে নয়''
অত:পর সে চলে গেল..।
চোখের আড়াল হতেই মনের ভেতর কেন জানি দাগ কেটে গেল.!!
তবুও ভয় হয়। ভীষণ ভয়।
কারন,
"বিশ্বাসের চেয়ে অভিজ্ঞতাটাই সবচেয়ে বড় বাস্তবতা.."
শিশিটার দিকে তাকালাম। জোর করেও সেটা আর মুখে তুলতে পারছি না। অবশ্য,জারিফ সেটা পালটে দিয়েছে..
পার্লারের মেয়েদের হাসির শব্দ ভেসে আসছে...
টান পোড়েনের মাঝেই কিভাবে যেন বিয়েটা হয়ে গেল...
তবে, নতুন করে স্বপ্ন দেখতে নয়, স্বপ্ন গুলোকে সাজাতে......
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ