āĻŦুāϧāĻŦাāϰ, ā§¨ā§Ž āĻŽাāϰ্āϚ, ⧍ā§Ļā§§ā§Ž

4821 (1)

গল্পঃকিডন্যাপ।
পর্বঃ০১
.
" আমার মেয়েকে কে বা কারা তুলে নিয়ে
গেল সেটা এখনো বের করতে পারছেন না
কেন?? " পুলিশের উপর বেশ কড়াভাবেই
বলেন মোজাম্মেল সাহেব। তিনি এক
বিরাট ব্যবসায়ী। কোটি কোটি টাকার
মালিক, তার একমাত্র মেয়ে তানিশা
অপহৃত হয়েছে, প্রায় তিনদিন হলো........
- স্যার আমরা সব রকম চেষ্টাই করছি
- এই আপনাদের চেষ্টার নমুনা? তিনদিন হয়ে
গেল....
- স্যার প্রায় পুরো শহর খোঁজা হয়ে গেছে
- তো সে কি উড়ে গেছে??? আমার মেয়েকে
আমার চাই
- দেখছি তো স্যার
- আর কত দেখবেন, আমি আর পারছি না, এখন
যান আপনারা......
সবাই চলে গেলে মোজাম্মেল সাহেব
চুপচাপ সোফায় বসে রইলেন.....
****
****
- আচ্ছা আপনি কে? আমাকে এভাবে এখানে
এনেছেন কেন?
- আপনি অনেক সুন্দরী, রূপবতী একটা মেয়ে,
তবে কথা না বললে ভাল হত
- আমার চোখ বেঁধে রেখেছেন কেন??
- যাতে আপনি দেখতে না পারেন আমি কে,
আর কোথায় আছেন
- আমার চোখ খুলুন, হাত খুলে দিন
- হুম দেব, তবে শর্ত আছে
- কি শর্ত?
- আপনি এখান থেকে বাইরে যেতে পারবেন
না
- আমি তো চিনি না, কি করে যাবো
- চেষ্টা করতে পারেন সেজন্য...
- বিশ্বাস করতে পারেন
- সুন্দরী মেয়ে আর বিষাক্ত সাপ বিশ্বাস
করতে নেই
- আমি তো সুন্দরী না
- আপনি যথেষ্ট সুন্দরি........... যান আপনাকে
মুক্ত করলাম
- আমি কোথায়??
- প্রশ্ন করবেন না, তাহলে আবার বেঁধে
রাখতে বাধ্য হবো.....
............
- আচ্ছা আপনার নাম কি????
- শায়ান, আপনি তানিশা
- আপনি কি করে জানেন?
- যাকে কিডন্যাপ করেছি তার নাম
জানবো না......!!!
- কিডন্যাপ কেন করেছেন??
- আমার টাকার দরকার আর আপনার বাবার
সেটা আছে তাই
- কি এমন দরকার যে কিডন্যাপ করতে হবে??
- আপনি বড্ড বেশি কথা বলেন!!
- আচ্ছা বললাম না... কিন্তু...
- চুপ, একদম চুপ.......
চুপচাপ বসে থাকে তানিশা, শায়ান হাতে
থাকা লাইটারটা জ্বালছে আর
নিভাচ্ছে........
.

.
অনেকক্ষণ চুপচাপ থাকার পর তানিশা
আবার মুখ খোলে
- আমার খুব ক্ষুধা পেয়েছে, খাবার কিছু
হবে?
- (কিছুটা বিরক্তি নিয়ে শায়ান ওর দিকে
তাকায়, কিন্তু ওর চেহারা দেখে কেমন
একটা মায়া কাজ করে) হুম, আচ্ছা বসুন,
দেখি কি করতে পারি.....! তবে হ্যাঁ, বেশি
চালাকি করতে গেলে আপনারই ক্ষতি.....
- কি বুঝাতে চান?
- কিছুই না, আপনি বসুন
....... শায়ান কোথায় যেন বের হয়,
তানিশাকে একা ঘরে রেখে, এটাকে ঘর না
বলে ঝুপড়ি বলা যায়। তানিশা একবার
ভাবে বাইরে যাবে কি না, কোথায় আছে
জানা দরকার ওর, আশেপাশে কাওকে পেলে
যদি পালিয়ে যাওয়া যায় এর থেকে....
আবার কি মনে করে বের হয় না..... কিছু সময়
পর বের হয়। বের হয়ে দেখে, জায়গাটা বেশ
নির্জন, লোকালয় অনেক দূরে, দেখা যাচ্ছে
আবছা। পালানোর জন্য দৌড়ে যেতে হবে,
কিন্তু যদি শায়ানের হাতে ধরা পড়ে,
শেষে যদি হিতে বিপরীত হয়। এরকম অনেক
সাতপাঁচ ভাবার পর তানিশা সত্যিই দৌড়
দিল, অনেকক্ষণ পর সে লোকালয়ে পৌঁছে।
কিন্তু ও যেমন ভেবেছিল তেমন না, লোক
নেই এখানে কেউ, শুধু একটা পোড়া বাড়ি
আছে গাছে ঘেরা, লোকালয় আরো দূরে।
মনে হল পোড়া বাড়িতে কেউ আছে বা
থাকতে পারে। একটু ভিতরের দিক এগুতেই
কে যেন পিছন থেকে টেনে ধরে,
- এই মেয়ে কে তুমি??? (একজন মোটামুটি
বয়সের লোক, একটু গুণ্ডা টাইপ)
- আমি, আ........মি টয়া, পথ ভুলে এসে
পড়েছি (ইচ্ছা করে ভুল নাম বলে)
- পথ ভুলে? কি চাই??
- আমাকে একটু শহরে পৌঁছে দেবেন
- (লোকটা ভাল করে পা থেকে মাথা পর্যন্ত
দেখে ওর)
- কি হলো??
- বড়লোকের বেটি মনে হয়, কোন নাগরের
সাথে লীলা করতে এসেছো এখানে?
- এসব কি বলছেন??
- এই তোরা কে কই, দেখ পাখি নিজে
থেকেই ধরা দিয়ে দিছে.......!
(লোকটার ডাকে অনেকে বেড়িয়ে আসে,
সবাই প্রায় বদ বদ দেখতে)
- আপনারা কারা???
- এই জংগলে নিশ্চয় কোন বড়লোকেরা
থাকে না....
- দেখুন আমি খুব বিপদে পড়েছি, বাড়ি
ফেরা জরুরি
- এত তাড়া কিসের, এসেই যখন গেছো, একটু
আমোদ ফুর্তি করা যাক
*****
****
ওদিকে শায়ান খাবার নিয়ে এসে দেখে
তানিশা নেই, আশেপাশে বের হয়ে দেখে
না পেয়ে বুঝে যায় এ মেয়ে পালানোর
চেষ্টা করেছে, তবে এই জংগলাকীর্ণ
জায়গায় কোথায় যাবে এটাই ভাবনা.........
মেয়ে মানুষ, বিপদে পড়তে সময় লাগবে
না....
অনেক ভেবে নিয়ে শায়ান এদিক ওদিক
দেখতে লাগে, একটু এগোতে পোড়া
বাড়িতে চোখ যায়, ওখানে গেল না তো
তানিশা? এটা ভেবে ও এগিয়ে যায়।
ওদিকে তানিশা নিজেকে বাঁচাতে ব্যস্ত,
ছিল তো ভাল একজনের হাতেই, এ কাদের
হাতে পড়লো, বেরোতে পারবে তো জীবন
আর সম্মান নিয়ে......
অনেকক্ষণ পর শায়ান সেখানে পৌঁছে,
গিয়ে দেখে তানিশা বেশ বিপদেই
পড়েছে। কিন্তু সমস্যা হল, ও একা আর ওরা
অনেকে, আর শায়ান এগিয়ে গেলেও কি
পারবে নিজে বাঁচতে বা তানিশাকে
বাঁচাতে??? তবে ওকে তো কিছু করতে হবে ,
অন্তত মেয়েটাকে বাঁচানোর জন্য হলেও....
আপাতত আড়াল থেকেই নজর রাখছে ওরা
মেয়েটার কোন ক্ষতি করতে এগুচ্ছে কি
না.....
আপাতত কোন ক্ষতি করে নি কোন, শায়ান
বুদ্ধি করে, ওদের সরিয়ে দেবে ওখান থেকে
তারপর তানিশাকে নিয়ে পালাবে। ও
বিপরীত দিকে দূরে গিয়ে পকেটে থাকা
লাইটার দিয়ে কিছু জড়ো করা পাতায় আগুন
ধরিয়ে দেয়। কিছু সময় পর ধোঁয়া দেখে
সবাই সেদিকে দেখতে যায়, তবে তানিশা
যাতে পালাতে না পারে সে ব্যবস্থাও
করে যায়, ওকে বেঁধে রেখে যায় একটা
ভাঙা মত চেয়ারের সাথে, পোড়া বাড়িতে
ভাল চেয়ার আর কই থেকে আসবে। ওরা চলে
যাবার প্রায় সাথে সাথেই শায়ান
তানিশার কাছে পৌঁছে, তবে ভাগ্য
বিপরীত থাকায় ওদের একজন দেখে ফেলে
শায়ানকে............
.
চলবে...

গল্প:কিডন্যাপ ।
পর্বঃ০২
.
শায়ানকে দেখে সে রীতিমত চমকে যায়,
দলের অন্য লোকদের ডাক দেয়, শায়ান
ওদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে তানিশার বাঁধন
খোলায় মন দেয়। বাঁধন পুরো খোলার আগেই
সবাই এসে পড়ে আর শায়ানকে দুজনে মিলে
ধরে সরিয়ে দেয়।
- কে রে তুই? আমাদের শিকারে ভাগ দিতে
আসিস??
- উহু! ভুল বললেন, ও কখনো আপনাদের
শিকার না আর হবেও না...
- চুপ থাক, দুইদিনের ছোকরা, মুখে মুখে কথা
- দেখুন ভদ্রভাবে বললে হবে না জানি, তাও
বলছি মেয়েটাকে ছেড়ে দিন, আমার সাথে
যেতে দিন
- আর যদি না দেই?
- না দিলে কি করার, অন্য উপায় বের করতে
হবে
- চুপ! শালা ছোকরার সাহস কত (শায়ানকে
চড় মেরে বসে)
- গায়ে হাত দেবার মত কিছুই বলি নি, তাও
যখন গায়ে হাত দিলেন তো মেনে নেয়া
গেল না....
- কি করবি কি তুই
(শায়ান কিছু না বলে ওকে ধরে রাখা
দুইজনের পায়ে খুব জোরে পাড়া দেয়, এতে
তারা ব্যাথা পেয়ে ছেড়ে দেয় ওকে।
তারপর শায়ান সামনে থাকা মানুষটাকে
ধাক্কা আর লাথি দিয়ে সরিয়ে কোন দিক
না দেখেই তানিশার হাত ধরেই জংগলের
পথে দৌড় দেয়। ওদের ধরার জন্য পিছনে
অবশ্য তাড়া করা হয়। এমনকি ধারালো
অস্ত্র ছুড়ে মারা হয়, সেটা তানিশাকে
আহতও করে। জংগল ছেড়ে ওরা বড় রাস্তায়
চলে এলেও ওদের পিছন ছাড়ে না গুণ্ডারা,
তাই বড় রাস্তা দিয়ে আরো কিছু সময়
দৌড়াতে থাকে। কিন্তু তানিশা ব্যাথা
নিয়ে দৌড়াতে গিয়ে হাপিয়ে যায়। তবে
এর মধ্যে একটা ট্রাক রাস্তা দিয়ে
যাচ্ছিলো, বেশ ধীর গতিতেই যাচ্ছিল,
শায়ান কোন কিছু না ভেবেই জীবনের ঝুঁকি
নিয়ে সেটায় উঠে পড়ে, প্রথমে
তানিশাকে কোন রকমে উঠিয়ে দেয় উপরে,
পরে নিজে উঠে। গুন্ডারা ওদের পাবার
আশা ছেড়েই দেয়, আর এদিকে সন্ধ্যেও হয়ে
যায়।
- যাহ!
- কি হল?
- আপনার জন্য যে খাবার এনেছিলাম, সেটা
ওখানেই পড়ে আছে
- আর খাবার, জীবন নিয়ে ফিরতে পেরেছি,
তাই অনেক
- আপনার ভুলের জন্যই এমন হলো, কে
বলেছিলো আপনাকে বের হতে, আমার
থেকে বাঁচতে চেয়েছিলেন? কেন? আমি কি
আপনাকে অত্যাচার করেছি? গায়ে হাত
দিয়েছি বা কোন অশালীনতা?
- না তা নয়...
- তবে কেন নিজের জীবন বিপদে ফেলতে
গেলেন.....??
- আসলে আমি ভেবেছিলাম....
- ভাবাভাবি পরে, দেখি হাতটা.......
( শায়ান পকেট থেকে রুমাল বের করে
তানিশার হাতে কাটা যায়গা বেঁধে দেয়।
তানিশা কিছুটা অবাক হয়, যে মানুষটা
তাকে কিডন্যাপ করেছে সেই কিনা তাকে
এভাবে যত্ন করছে, যতটা খারাপ ভেবেছিল
ততটা খারাপ না)
- আচ্ছা আপনি আমাকে কিডন্যাপ করেছেন,
আবার তাইলে গুণ্ডাদের হাত থেকে
বাঁচালেন কেন?
- আমি আপনাকে কিডন্যাপ করেছি, টাকার
জন্য, আপনার কোন ক্ষতি করার ইচ্ছা আমার
নেই...
- আচ্ছা আপনি টাকা দিয়ে কি করবেন, আর
বাবার থেকে কত টাকা মুক্তিপণ চেয়েছেন?
- সুন্দরি মেয়েরা বোকা হয় জানতাম, কিন্তু
এত বোকা হয় জানতাম না, আপনি আজ
যেটা করলেন সেটা অন্যতম বোকামি
ছিল.....
- আপনি আমার কথার উত্তর দিলেন না কেন,
এভয়েড করলেন?
- এত প্রশ্নের উত্তর দিতে ভাল লাগছে না,
কোনভাবে দেখুন কাত হয়ে ঘুমাতে পারেন
কিনা, এই ট্রাকে এত মাল যে শোয়াই যাবে
না
- একটা জিনিস আমি বুঝেছি
- কি?
- আপনি প্রফেশনাল কিডন্যাপার না,
প্রয়োজনের জন্য কিডন্যাপ করেছেন
- (তানিশার কথা শুনে কিছুক্ষণ ওর মুখে
তাকিয়ে থাকে শায়ান, মেয়েটা হয়তো
এবার একটা খাঁটি কথা বলেছে, টাকার যে
খুব দরকার শায়ানের)
- আচ্ছা আপনার ওই ব্যাগে কি আছে??
- গুলি আছে, বোম আছে। এখন চুপ করে ঘুমান,
না হয় আমাকে ঘুমাতে দিন, সকালে গিয়ে
কই নামতে হবে উপরওয়ালা মালিক
জানেন.....
(তানিশা আর কথা না বলে চুপ করে কোনায়
জড়োসড়ো হয়ে থাকে, কখন ঘুমিয়ে যায়
বুঝতে পারে নি, ক্ষুধা পেটে ঘুম আসে
নাকি তা ওর জানা নেই। বড়লোকের
একমাত্র মেয়ে কিনা, তাই..... সকালে
শায়ানের ডাকে ঘুম ভাঙে ওর। হন্তদন্ত হয়ে
উঠে আগে কাপড় ঠিক আছি কিনা দেখে...
নাহ! ঠিকই আছে, ঘুমিয়ে গেছিলো এখন
মনে পড়লো......)
.

.
- উঠে পড়ুন মিস, আলো ফুটেছে
- আমরা ঠিক কোথায়??
- জানতে হলে নামা লাগবে, তাছাড়া
এমনিতেও নামা লাগবে
- কয়টা বাজে??
- সাড়ে ছটা
- এখনো তো ভোর
- চুরি করে ওঠা ট্রাক থেকে নামার জন্য
ভাল সময়, ট্রাকটা এখানে থেমেছে, পরে কই
থামবে কে জানে, তাই চলুন নেমে পড়ি
- আচ্ছা চলুন
- নামতে পারবেন তো, আপনার হাতের
ব্যথা কেমন এখন...??
- হুম কম আছে
- আচ্ছা আসুন.....
(দুজনে চোরের মত নেমে পরে, যেহেতু আলো
পুরোপুরি ফোটে নি, তাই লোক সমাগম কম।
ওরা নেমে হাঁটতে থাকে, একটু দুরেই একটা
ছোট দোকান, কিন্তু বন্ধ, তাই ওরা বাইরে
থাকা বেঞ্চে গিয়ে বসে। বসে একটা
দীর্ঘশ্বাস নেয় শায়ান। ব্যাগ থেকে ছোট
নোটবুক বের করে কলম দিয়ে কি যেন
লিখতে থাকে। তানিশা ব্যাপারটা
খেয়াল করে।
- কি লিখছেন??
- কিছুনা.... কাল তো খাওয়া হল না, দেখি
আজ কি করা যায়
- হুম, যদিও ক্ষুধা লেগেছে কিন্তু ভয়ে তা
খেয়াল নেই
- আশেপাশে কোন খোলা দোকান দেখি
না, আর লোকও তো নেই। একটু যে জিজ্ঞেস
করবো এটা কোথায়
- হুম! সরি... আমি দুঃখিত
- সরি ফর হোয়াট?
- আমার জন্য আপনাকে এত ঝামেলা করতে
হলো
- ব্যাপার না, আগে জানতাম, এখন না হয়
প্রাক্টিকাল ভাবে দেখলাম
- আপনি অনেক গুছিয়ে কথা বলেন তো
- হয়তো!!
****
ওরা কথা বলতে বলতে যে দোকানে
বসেছিল তার মালিক এসে দোকান খুলতে
থাকে... মধ্যবয়সী এক দোকানী...
- মামা, এইটা কোন এলাকা?
- এইডা তো নওয়াবগঞ্জ
- এখান থেকে শহরে যেতে কি করতে হবে
- কোনে যাবা তোমরা??
- সোনারগাঁ
- উলটা চলি আইছো, সে তো উইদিক দিয়া
যাতি হয়, তোমরা কি পথ ভুল করিছো?
- হুম মামা, আপনার এখানে নাস্তা করার
মত কিছু হবে?
- কেবল তো দুকান খুললাম, একটু বসো দেখি
কি করা যায়
- আসলে আমাদের রাতে কিছু খাওয়া হয় নি
- ও তাই নাকি, তো সাথে কে, তুমার বউ
লাগে না কি??
- না, মামা, তেমন কিছু না
- বুজ্জি বুজ্জি, আচ্ছা এক কাজ করো, পাঁচ
মিনিট হাঁটি গেলি আমার বাড়ি,
তোমাগো যদি আপত্তি না থাকে তো চলো
আমার বিবির হাতের লবণ ভাত খাইবা
- না মামা, আপত্তি নাই
(ক্ষুধা পেটে সবই অমৃত সমান, তাই দেরি না
করে শায়ান আর তানিশা উনার সাথে
উনার বাড়িতে যায়। গিয়ে প্রথমে হাত মুখ
ধুয়ে ফ্রেশ হয় তানিশা, এই প্রথম হয়তো
তানিশার দিকে ভাল করে দেখলো
শায়ান। নাহ! মেয়েটা আসলেই সুন্দরী।
ক্লান্তি আর ক্ষিধা ওকে কিছুটা কাবু
করেছে যদিও, তাও বেশ মায়াবী লাগছে
ওকে..... হাত মুখ ধুয়ে ওরা খাবার খেয়ে
নিল। তানিশা এসব খাবারে অভ্যস্ত না
হলেও প্রচণ্ড ক্ষিধা থাকার কারণে খেয়ে
নেয়। লোকটা ওদের বাড়িতে তার বিবির
দায়িত্বে রেখে দোকানে চলে যায়।
কিছুক্ষণ পর খেয়ে দেয়ে ওরাও উঠে পরে,
কিন্তু কোথায় যাবে ভেবে উঠতে পারে
না। শায়ান ভাবে তানিশাকে এখানে
রেখে একটু খোঁজ নিয়ে আসবে, তারপর ওকে
নিয়ে বের হবে।
- শুনুন, আপনি এখানে থাকতে লাগুন, আমি
বরং এদিক অদিক খোঁজ করে আসি
- মানে? (প্রশ্নবাণ ছোড়ে তানিশা)
- ভয় পাবেন না, আপনাকে ফেলে পালিয়ে
যাচ্ছি না, তাহলে আমার যে ক্ষতি
- আপনি যে কি করছেন আমি বুঝে উঠতে
পারি না
- স্বাভাবিক, আপনি থাকুন, আমি আসছি,
আর আমি ব্যাগ রেখে যাচ্ছি। কিন্তু হাত
দিবেন না একদম
(শায়ান বের হয়ে যায়, বাড়ির কত্রী কাছে
আসে তানিশার)
- তোমার সোয়ামী বুঝি, নতুন বিয়া করছো?
- হুম! নাহ....কিছুনা....!!
- রাগারাগি করছো?? না কি....!!
- (তানিশা উত্তর না দিয়ে চুপচাপ গিয়ে
বসে থাকে। সত্যটা কিভাবে বলবে সে, যে
শায়ান তাকে তুলে এনেছে, টাকার জন্য,
কিন্তু এত টাকা দিয়ে ও কি করবে, ভেবেই
পায় না তানিশা। শায়ানের ব্যাগটার
দিকে চোখ পড়ে, হাত দিতে গিয়েও দেয়
না। নিষেধ আছে তাই.......)
.
চলবে...
..
লেখাঃসিরিয়াল কিলার নীল (Mrs. KPC)

গল্প:কিডন্যাপ।
পর্বঃ০৩
.
- এই যে শুনছেন?
- আমাকে বলছেন??
- জি, আমার সাথে চলুন
- কেন? আপনার সাথে কেন যাবো, আমার
বাবার গাড়ি এসে নিয়ে যাবে। আর
তাছাড়া একটা অজানা অচেনা ছেলের
সাথে আমি কেন যাবো
- যেতে বলেছি তাই যাবেন
- দেখুন আমি কিন্তু লোক ডাকবো..........
হেল্প...হে.....
(আর একবার কিছু বলার আগেই ছেলেটা
মেয়েটার নাকে ক্লোরোফম দেয়া রুমাল
চেপে ধরে। ক্লোরোফমের তীব্র ঝাঁঝে
জ্ঞান হারায় মেয়েটা। তারপর নিজের
হেলমেটটা মেয়েটার মাথায় পড়িয়ে
নিজের পিছনের সিটে বসিয়ে নেয়। অনেক
কষ্টে এক হাতে মেয়েটাকে ধরে অন্য হাতে
বাইক ড্রাইভ করে সে। অথচ মেয়েটা এর
কিছুই টের পায় না)
****
*****
- ওই মেয়ে, এহানে ঘুমাও কেন, ঘুম আসলে
ঘরে গিয়া ঘুমাও, তুমার সে আসলে ডাইকা
দিমু নে
(গৃহকর্ত্রীর ডাকে তন্দ্রা ভাঙে
তানিশার। হুম এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিল সে,
কিভাবে শায়ান তাকে কিডন্যাপ করেছে।
টাকার এতটাই দরকার যে সে কিডন্যাপ এর
পথ বেছে নিয়েছে)
- না আসলে চোখ লেগে গিয়েছিল, এই আর
কি
- আরে আপন মানুষ ভাইবে ঘরে গিয়া শুইতে
পারো, হইতে পারে গরিব মানুষ, একটু ময়লা
থাকতে পারে
- নাহ ঠিক আছে......
- হ তুমরা বড়লোক বাড়ির মানুষ......
........ কথা বলতে বলতে শায়ান এসে হাজির
হয়। ওর চোখে মুখে অন্যরকম একটা তৃপ্তি
কাজ করছে, আবার ভয় ও কাজ করছে।
- কোন খোঁজ পেলেন??
- হুম! ঘণ্টা খানেকের মধ্যে বের হব, তৈরি
হোন
- কোথায় যাবো?
- আপনার মুক্তি হবে আজ
- মানে???
- আপনার বাবা মুক্তিপণের টাকা দিতে
রাজি হয়েছেন, তবে আশা করি পুলিশ এনে
আবার ঝামেলা করবেন না
- বাবার সাথে কথা বলেছেন? কখন?
- আপনার এত কিছু জেনে কাজ নাই
- আপনার কাছে তো ফোন নেই
- আসলেই আপনি অনেক সাদাসিধে, এতটা
সাদাসিধে থাকবেন না পরে পস্তাবেন।
- আপনার কথা আমি বুঝি না, আর কথা
বাড়াতে চাই না তাই, বের হবার সময়
বলবেন.... (বলে ঘরে চলে যাত তানিশা)
.....
.....
প্রায় আধাঘণ্টা পর শায়ান তানিশাকে
ডেকে বলে বের হতে হবে। তানিশা ঘর
থেকে উত্তর দিয়ে বলে আসছে। তারপর
আশ্রয়দাতা বাড়ির লোকদের বিদায়
জানিয়ে বেরিয়ে পড়ে ওরা। অনেকক্ষণ
চলে যাবার পরও তানিশা কোন কথা বলে
না, কোথায় যাচ্ছে, কিভাবে যাবে কিছুই
না, চুপচাপ হেঁটেই যাচ্ছে....
- কি হল, কথা বলছেন না যে
- কি বলবো?
- না, অন্য সময় তো প্রশ্নের পর প্রশ্ন করতেই
থাকতেন তাই
- কিছু বলার নেই তাই। আচ্ছা একটা কথা,
আপনি কত টাকা পাচ্ছেন?
- দশ লাখ
- এত টাকা কি করবেন?
- কাজে লাগবে, এটা নিয়ে প্রশ্ন করবেন
না!
- আচ্ছা...!!
****
***
শায়ান আর তানিশা শহর পর্যন্ত হেঁটে
আসে এরপর একটা বাসে উঠে। কোথায় যাবে
তানিশা ঠিক জানেনা। শায়ানকে এখন
বেশ অদ্ভুত লাগছে ওর, এই ছেলেটা আসলে
কেমন? কি তার প্রকৃতি, বড়ই অদ্ভুত। এসব
ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়ে খেয়াল
নেই। শায়ানের ডাকে ঘুম ভাঙে, নামার
সময় হয়েছে। বেশ ফাঁকা একটা যায়গাতে
নামে ওরা। শায়ান কাপড় দিয়ে নিজের মুখ
ভাল করে ঢেকে নেয়। তানিশা একটু ভয়
পায়, তবে কিছুদূর এগিয়ে দেখে ওর বাবা
গাড়ি নিয়ে দাঁড়ানো। তানিশা ছুঁটে
যেতে গেলে শায়ান হাত টেনে ধরে,
তানিশা হয়তো এবার বুঝতে পারে,
ছেলেটার বুকের জোর অনেক বেড়ে গেছে।
তানিশার হাত ধরেই ওকে মোজাম্মেল
সাহেবের কাছে নিয়ে যায়....
- আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দাও
- আমার টাকা আগে দিন, তারপর
- এই নাও, গুণে নিতে পারো। যে টাকা
চেয়েছো এ আমার কাছে কিছুই না, আমার
মেয়েই সব।
- কিছু না হলে এত সময় নিতেন না। হুম!
- হুহ! নাও গুণে নাও
- গুণতে হবে না, দেখেই বুঝে গেছি কম
দেবেন না... অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক বড় উপকার করলেন। এই নিন আপনার
মেয়ে, কোন ক্ষতি হতে দেই নি, যেটুকু
হয়েছে আপনার মেয়ের জন্যই। আসছি আমি।
কথাগুলো বলে চলে যাচ্ছিল শায়ান।
- শুনুন, আপনি একটা মেয়ের জন্য শুধুমাত্র
তার খুশির জন্য অন্য একটা মেয়েকে
কিডন্যাপ করলেন। আমি আপনার ডায়েরি
পড়েছি, শোভার জন্য আপনার টাকাগুলো
দরকার, শুধুমাত্র ওর সুখের জন্য, শান্তির
জন্য??? বাহ! আপনারা ছেলেরা পারেনও!
- হুম! বড়লোকের সুন্দরী মেয়েরা বোকা হয়,
আগেও বলেছি। আপনিও তার ব্যতিক্রম নন।
হুম আমি শোভার জন্য করেছি। আমি ওকে
সুখী রাখতে চাই, আর এটা ভাল যে
ডায়রীতে সব লেখি নি.... ভাল থাকবেন।
আসছি
- শুনুন, আপনার রুমালটা......
......... শায়ান কিছু শুনে না, চলে যায়।
শোভা, শায়ানের ছোটবোন, ওর ব্রেইন
টিউমার হয়েছে। অনেক টাকার দরকার, আর
সেজন্যই শায়ান এই কাজ করে। নিজের জন্য
না, নিজের বোনের সুখের জন্য ও
তানিশাকে কিডন্যাপ করে.... আর
তানিশা সেটাকে অন্যভাবেই নেয়
হয়তো......!
.

.

শায়ানের পরিবারে ওর মা,আর ছোট
বোনটা যাকে ও নিজের জীবনের থেকেও
বেশী ভালবাসে।যার জন্য ও সব কিছু করতে পারে।আর করেছেও তাই,
তানিশাকে কিডন্যাপ করে ওর বাবার কাছ থেকে দশ লক্ষ টাকা নেয়।
.
এতে শায়ানের কিছুই করার ছিল না।শায়ান মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে,টিউশনি করে আর পার্ট টাইম জব করে নিজের পড়াশোনা আর মা,বোন কে নিয়ে কোনরকম জীবন পার করে।শায়ানের ইচ্ছা সে বি.সি.এস ক্যাডার হবে।
.
শায়ান ভাবে মধ্যেবিত্ত হয়ে জন্ম
নেয়াটাই হয়তো ভুল।কারন মধ্যেবিত্তরাই
জীবনের কঠিন বাস্তব রূপ দেখতেই পায়।
তাদের সকাল এবং রাত কিভাবে আসে আর কিভাবে পার হয় এরা এসব ভাল মতনই বোঝে।প্রতিটা পা যেন এদের হিসেব করে ফেলতে হয়।
.
অপর দিকে তানিশার মত বড় ঘরের মেয়েরা এসব বোঝেনা।তারা সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্ম নিয়েছে।তাদের দশ লক্ষ টাকা গেলে এমন কিছু যায় আসবে না।এসব কথা ভাবতে ভাবতে শায়ান রহস্যর হাসি দেয়।
.
এদিকে তানিশা বাড়ী ফেরার পর
থেকেই শুধু শায়ানের রুমাল টা নিয়ে ওর
কথা ভাবছে। শায়ান কে যতটুকু চিনেছে সে তাতে ওর একমূহুর্তের জন্য মনে হচ্ছে না শায়ান প্রফেশনাল কিডন্যাপার।
শায়ানের মুখ দেখেও তা মনে হয়নি।কিন্তু তানিশা এতটুকু জানে শায়ান একটা মেয়ের জন্য এই
কাজ করেছে।আর কিছু সে জানে
না,বাকিগুলো রহস্য।
.
আজ শায়ানের বোনের অপারেশন হবে।
শায়ানের মা ভেবে পায়না তার ছেলে
এত টাকা কোথায় পেলো।তাই শায়ানের
মা শায়ান কে বলে...
-বাবা শায়ান তুই এতো টাকা কোথায়
পেলি।
(শায়ান কোন কথা বলে না।কথা টা এড়িয়ে যেতে চাই...)
-ঐ নিয়ে তোমার ভাবা লাগবে না।শুধু
দোয়া করো যাতে আমার বোনটা
ভালভাবে সুস্থ হয়ে যায়।
-না বাপ সবই তো ঠিক আছে তবুও মায়ের মন বুঝিসই তো,আমরা গরিব মানুষ এতগুলো টাকা তো আর সহজে যোগাড় করা সম্ভব না।
>শায়ান আর কথা বলে না।তার মায়ের
সামনে থেকে উঠে যায়।আর মনে মনে
ভাবে একদিন সব জানতে পারবে।আর মনে মনে তার বোনের জন্য প্রার্থনা করতে থাকে।
.
শায়ানের মা আর কোন কথা বলে না।মনে মনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে তাদের এমন পরিস্থিতির জন্য।শায়ানের বাবাও টাকার অভাবে ভাল চিকিৎসা করতে না পেরে অকালে মারা যায়।শায়ান হয়তো সেই কারনেই তার বোন কে এতো সহজে হারাতে দিবে না বলেই এই কাজটা করছে।
.
-এই তানিশা এত দিন তুই কোথায় ছিলি?
(কথাটা বলল তানিশার ভার্সিটির খুব
কাছের বন্ধু মিথিলা)
-কই আর থাকবো বাসাতেই ছিলাম।
-দেখ তানিশা তুই ভার্সিটি মিস করা
মেয়ে না।সত্যি করে বল কোথায় ছিলি।
-বললাম তো বাসায় ছিলাম।
-মিথ্যা বলছিস কেন?
--মিথ্যা বলব কেন।
--দেখ তানিশা আমার কাছ থেকে তুই
কখনো কিছুই গোপন করিসনি,কিন্তু আজকে কেন?
-কী গোপন করব।
-তোর বাসায় আমি গিয়েছিলাম কিন্তু
আঙ্কেল আমার কথাটা এড়িয়ে গেছে।
>তানিশা আর কোন কথা বলে না।চুপ করে থাকে সে।কী বলবে সে কিডন্যাপ করার কথা।এই কথা ভার্সিটিতে জানাজানি হলে তার সমস্যা হবে।তাই তানিশা মিথিলা কে কোন কিছু না বলেই বাসায় চলে আসে।
.
>তানিশা বাসায় এসে সারাক্ষনই
শায়ানের কথা ভাবে।তার সাথে কাটানো
মূহুর্ত।সে মনের মধ্যে কথা চেপে রাখতে
পারছে না,সে দ্রুত মিথিলা কে ফোন
দিয়ে তার বাসায় আসতে বলে।
-কিরে তানিশা এতো জরুরী তলব।
-বস কথা আছে তোর সাথে।
-আচ্ছা বল কী বলবি।
-তবে কথা দে এই কথাগুলো কাউকে বলবি না।
-আচ্ছা বাবা বলব না।
.
তানিশা তার সাথে ঘটে যাওয়া সব কথা
মিথিলাকে বলে।মিথিলা অবাক হয়ে
তানিশার দিকে তাকিয়ে বলল-
-তোর কোন ক্ষতি করেনি তো ছেলেটা?
-না,,ও তো এমন ছেলেই না।
-ছেলেটার নাম কী?
-ছেলেটার নামও আমি জানিনা।তবে সে শোভা নামে একটা মেয়ের জন্য এই কাজ করেছে।
-শোভা?
-হুম শোভা।।কেন চিনিস নাকি?
-না আসলে আমাদের এলাকায় শোভা
নামের একজন আছে,কিন্তু কিছুদিন যাবত দেখছি না।
>তানিশা মিথিলা কে বলে শোভার
সম্পর্কে খোজ নিতে বলে।মিথিলাও হা
সূচক মাথা নেরে চলে যায়।
.
তানিশা কে ঐ ছেলেটার অদ্ভুত আচরণ
গুলো মাথায় আসছে।শায়ানের কথা মনে পড়লেই তার মনের মধ্যে অজানা অনুভূতিতে শিহরিত হচ্ছে.....
.
চলবে...
.
লেখাঃসিরিয়াল কিলার নীল (Mrs. KPC)
এবং শাহীন আলম সবুজ (মেঘলা আকাশ)

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ