3574

লাল গোলাপ দেখলেই এখন কিরকম জানি লাগে অভির, আগে নিজের গাছের গোলাপ গুলো নিয়ে প্রতিদিনই দেয়া হতো কাউকে, দু বছর হয়ে গেছে অভি এখনও নিজেকে ঠিক মত গুছিয়ে নিতে পারেনি, প্রতিটা কথায় আজও রিয়াকে মনে পরে তার, অবশ্য মনে পরাটা নিজের মধ্যেই, দুবছর আগে রিয়া তাকে ছেড়ে চলে গেছে, হয়তো এমন কোথাও যেখানে অভির চেয়েও ভালো কেউ ছিল, যে অভির চেয়েও তাকে বেশি ভালোবাসতে পারবে, আমাদের আশেপাশের মানুষগুলো এতটাই বদলে যেতে পারে তা আমাদের ভাবনার বাইরে, আমাদের দোষ হচ্ছে, শুধু মানুষের বদলে যাওয়াটাই দেখি, পিছনের কারগুলো দেখিনা, অভি আর রিয়া একে অপরকে অনেক ভালোবাসত, কিন্তু কথায় আছে, আপনার আর আমার মাঝে অন্য কেউ আসবেই, তাছাড়া জিবন নাকি চলে না, অভি আর রিয়ার ভালোবাসায় ঠিক এমনটাই হয়েছিল, রিয়ার কাছের একটা বন্ধু ছিল তামিম, অভি তাদের মেলামেশাতে অতটা বেশি কিছু মনে করত না, আর তাছাড়া অভি রিয়াকে যাই বলে দিত, রিয়া ঠিক তাই করত___
অভি প্রতিদিন একটা করে লাল গোলাপ নিয়ে আসত রিয়ার জন্য, রিয়া হাসিমুখ দেখলেই অভির দিনটা অনেক ভালো যেত,
কিন্তু তামিমের সাথে একটু বেশিই মেশা শুরু করল রিয়া,
অভি রিয়াকে শুধু একটা কথা বলে দিল যাতে তারা ওর চোখের সামনে না পরে,
কথাটা রিয়া অন্যভাবে নিয়ে ঝগড়া শুরু করল,
কিন্তু অভি এটা কিছুতেই বুঝতে পারল না, কেন তার কথার চেয়ে ওর সাথে মেশাটা এতটা বেশি প্রয়োজন তার?
সবকিছুর একটা সহ্য সীমা বলতে কিছু থাকে, কিন্তু রিয়া এতটাই সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছিল,
অভি বাধ্য হয়ে রিয়াকে দুজনের একজনকে তার জিবনে রাখতে বলল অভি অথবা তামিম,
রিয়া অভি বলে দিল, কিন্তু সে তারপরেও তামিমের সাথে সবকিছু কয়েকদিন কমিয়ে দিলেও, পরে সবই আগের মত শুরু করে দিল,
অভি তখন আর কিছু বলেনি, শুধু তার আর রিয়ার ব্যাপার ছাড়া কোনো কিছুতেই সে কথা বলেনি আর,
রিয়ার সাথে আগের মত তেমন দেখা করেনা অভি, সে ভাবে  হয়তো তামিমের সাথে দেখা করার সময়টা সে নিয়ে নিচ্ছে,
আগের মত কল দিয়ে কথাও বলেনা,
কল ওয়েটিং পেলেই অভির মাথা ঠিক থাকেনা, তাই রিয়া কল না দিলে অভি আর কল দেয় না, রিয়ার মুখ দিয়ে কোনো মিথ্যা শোনার ইচ্ছেটা অভির নেই,
একদিন রিয়ার সাথে কথা হচ্ছিল
-- আচ্ছা অভি তুমি এতটা বদলে গিয়েছো কেন?
-- কিরকম?
-- এই যে, আগের মত লাল গোলাপ নিয়ে আসোনা, কল দেওনা, কথা বলোনা, কেমন এড়িয়ে চলো,
-- তামিম তো আছেই তোমার
-- আমার তামিম মানে?
-- তামিমের সাথে কথা না বলার কথা দিয়েছিলে তুমি
-- আমি তো কোনো চাপ নিয়ে তোমার সাথে রিলেশন রাখতে পারব না
-- আমি চাপ দেয়নি, দুটো দিক দিয়েছিলাম তোমাকে, আমি না হয় তামিম
-- তুমি কি আমাকে সন্দেহ করতেছো অভি?
-- না, করতেছিনা
-- তোমারও তো অন্য কেউ আছে মনে হয় এখন, তাই এখন আমার সাথে এমন করো,
-- তোমার তামিমের মত আর অন্য কেউ নেই, চিন্তাও করিনি এমন কিছু
-- এখন করতেছো?
-- না
-- তাহলে?
-- তুমি কথাটা উঠিয়েছ, আমি না,
-- হ্যা এখন তো দোষ আমার
-- আমি কোনো দোষ দেইনি,
-- তাহলে?
-- আমার পক্ষে তোমার সাথে কোনো প্রকার রিলেশন রাখা সম্ভব না___ এতটা ডিপ্রেশন নিয়ে থাকা সম্ভব না
-- আমি তোমাকে কি এমন করলাম যে তোমার ডিপ্রেশন হচ্ছে অভি?
-- জানিনা, আজকের পর থেকে আর যোগাযোগ করব না,
-- তুমি তো আমাকে ভালোইবাসো না
-- হ্যা, ভালোবাসা বলেই এতদিন কিছু বলিনি, বলিনি অন্য ছেলে নিয়ে কিছু, চাপ মনে হয়েছে বলে নিজেই সব ঠিক করে দয়েছি তোমার, আমি সত্যি তোমাকে ভালোবাসিনা
.
এই কথাটা বলে একবারের জন্যও অভি আর রিয়ার সাথে যোগাযোগ করেনি, অভি রিয়াকে ছেড়ে দিয়েছে? না, অভি শুধু অভিমান করেছিল, রিয়া সেই অভিমান না ভাঙিয়ে উল্টো রাগ দেখিয়েছে,,,, তাই আর অভিকে বোঝাতে আসেনি____
.
.
যাই করবেন, কোনোদিন আপনার ভালোবাসার মানুষটাকে নিচু করবেন না অন্য কারো থাকে যোগাযোগ রাখার জন্য, এটা অনেক কষ্ট দেয় :-)
.
লেখক: অভিক রাজ