ফ্যান্টাসি গল্প-
দ্য সার্পেন্ট গর্ডেস
লেখা- অচেনা গল্পের শেষ লাইন
চ্যাপ্টার ৭:ফাইন্ডিং দ্য ডেমি গডেস
জ্যাকসন এখন দাঁড়িয়ে আছে একটা বন্ধ দরজার সামনে। পাথরের দরজাটা খুলে ফেলার আগে বড় করে একটা শ্বাস নিলো সে। না, কোন ভুল করা যাবে না। ওদের যাতে কিছুতেই সন্দেহ না হয়। আর পুরো ব্যাপারটাই করতে হবে অ্যাঙ্গুইসিয়ার আড়ালে। সে টের পেলেই সব ভেস্তে যাবে।
পাথরের দরজার পাশে থাকা দেয়ালের একটা বিশেষ ইট এ চাপ দিল জ্যাকসন। সাথে-সাথে ঘড়-ঘড় শব্দ করে দরজাটা খুলে গেল। দরজার ওপাশে বাকি দানবগুলো বসে ছিল। ওরা অবাক হয়ে জ্যাকসনকে দেখছে।
একটা বড়-সড় দানব জ্যাকসনের দিকে এগিয়ে এলো। উচ্চতায় সে জ্যাকসনের চেয়েও বড়। দেখে মনে হচ্ছে যেন সেই এই দলের সর্দার। গর-গর শব্দ করে কি যেন বলল সে। জ্যাকসনও একই রকম গর-গর শব্দ করে উত্তরটা ফিরিয়ে দিল।
জ্যাকসনের উত্তরের সাথে-সাথে দানবরা চেঁচামেচি শুরু করে দিল। এরপর সবাই জ্যাকসনকে ধাক্কা দিয়ে এক পাশে সরিয়ে দিয়ে খুনে মেজাজে দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেল। সবাই এক সাথে কোথায় যেন যাচ্ছে। জ্যাকসন সবার পেছনে হাঁটছে। ওর হাঁটা চলার মাঝে দলছাড়া একাট ভাব। দানবদের সর্দার এক ধাক্কায় বড় দরজাটা খুলে ফেলল। এরপর সেই ব্রিজের উপর দিয়ে সবাই এক যোগে চলল সামনের দিকে।
এদিকে উইলিয়াম আর ইথেন খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছে। প্রায় এক ঘণ্টা হয়ে গেছে জ্যাকসনের এখনও কোন খবর নেই। ওর কোন বিপদ হয়নি তো? দানবগুলো ওকে মেরে ফেলেনি তো?
জ্যাকসনের কাহিনী পড়ার পর পরেই ওরা একটা মাস্টার প্ল্যান করেছিল। সেটা হচ্ছে যে, এই ৬ দানব যতক্ষণ পর্যন্ত অ্যাঙ্গুইসিয়াকে গার্ড দেবে ততক্ষণ পর্যন্ত ওদের বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা বলে কোন কিছুই থাকছে না। অতএব, এই দানবগুলোকে নিউট্রাল করে দিতে হবে। ভালো হতো যদি এই ৬ দানবও জ্যাকসনের মত সেই সবুজ প্রাণীগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো। কিন্তু ওদের মানসিক ক্ষমতা জ্যাকসনের চেয়েও অনেক-অনেক নিচে, এই কারণেই ওরা ঐ প্রাণীটাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। উল্টো ওর দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। ওরা এই দুর্বল মানসিক ক্ষমতা নিয়ে কখনোই সেই প্রাণীগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। সেটা চেষ্টা করলে উল্টো ভয়াবহ ফল হতে পারে। হয়তো দেখা গেল, এখন ওরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে, কিন্তু যেই মাত্র অ্যাঙ্গুইসিয়ার সামনে গেল, সাথে-সাথেই ওরা নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে গেল...অতএব, একমাত্র উপায় হচ্ছে, এই দানবগুলোকে নিউট্রালাইজ করে দেয়া। ওদেরকে ওদের আগের রুপে ফিরিয়ে আনা।
সেই জন্যেই জ্যাকসনকে পাঠানো হয়েছে, দানবগুলোকে যেকোন উপায়ে এই জাহাজের কাছে নিয়ে আসার জন্যে। কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টা হতে চলল। এখনো জ্যাকসনের কোন পাত্তা নেই। ব্যাপারটা আসলেই খুব চিন্তার।
‘আওয়াজটা শুনতে পাচ্ছিস?’ হঠাত করে ইথেন বলে উঠল। একটা ধুপ-ধুপ আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। ওরা এখন লুকিয়ে আছে জাহাজের ঠিক সামনেই থাকা বেশ বড়-সড় একটা ঢিবির ওপাশে। সেখানে লুকিয়ে থেকেই অপেক্ষা করছে জ্যাকসনের জন্যে।
ধুপ ধাপ আওয়াজটা ক্রমেই বাড়ছে। এগিয়ে আসছে ওটা। ওদের দিকেই। এরপর সাথে সাথেই একটা বিশাল গর্জন এর আওয়াজ পেল ওরা। অনেক দূরে থাকা গুহাটার মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসছে ওরা। উইলিয়াম হাত দিয়ে গুনলো। সাত জনই আছে। যাক বাঁচা গেল। সবচেয়ে সামনে থাকা দানবটা আরেকটা চিৎকার দিল। ওর চিৎকার পাতালপুরীর আশেপাশের মাটির দেয়ালে বার-বার প্রতিধ্বনি হচ্ছিল ভয়ঙ্করভাবে।
‘ওরেব্বাবা, পুরো যেন ডায়ানোসরের গর্জন,’ ক্যাপ্টেন ভয়ে কাঁপতে-কাঁপতে বলল।
সাতটা সবুজ দানব ঢিবিটার ঠিক সামনেই এসে দাঁড়াল। এরপর এদিক-সেদিক তাকিয়ে কি যেন খুঁজতে লাগল। সেই সাথে ভয়ঙ্করভাবে তর্জন-গর্জন করছিল।
‘ওরা কি খুঁজছে?’ কুপার বলল।
‘কি নয়, বল কাদেরকে খুঁজছে। আমার তো মনে হয় আমাদেরকেই খুঁজছে। জ্যাকসন নিশ্চয়ই ওদেরকে বলেছে যে আমরা ভেগে গিয়েছি এবং আমরা এখানেই আছি, এছাড়া আর কিভাবেই বা ওদেরকে সে এখানে ডেকে আনবে,’ উইলিয়াম বলল।
হঠাত বালুর উপর ঝুঁকে গেল জ্যাকসন। একটা ব্যাগ তুলে নিলো বালু থেকে। এরপর সেই ব্যাগ থেকে ৬টা অ্যালবাম বের করল। এরপর একে-একে সবগুলো দানবের হাতে তুলে দিল অ্যালবামগুলো। দানবগুলো হতচকিয়ে গেছে। মন দিয়ে দেখছে ছবিগুলোকে, যেন অনেকদিন দেখেনি। এরপর এক অদ্ভুত দৃশ্যের অবতারণা হলো। দানবগুলোর চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল।
‘যাক, আমাদের প্ল্যান কাজে আসছে, ভাগ্যিস ক্যাপ্টেনের মাথায় এই আইডিয়াটা এসেছিলো,’ হাসিমুখে বলল উইলিয়াম।
ওদের শরীর থেকে ঐ সবুজ প্রানীগুলোকে বের করার একমাত্র উপায় হচ্ছে ওদের বেঁচে থাকার ইচ্ছাশক্তিকে জাগ্রত করা। জ্যাকসনের ক্ষেত্রে যেমনটা হয়েছিলো। ইচ্ছাশক্তির জোয়ার চলে আসার সাথে-সাথেই ঐ প্রাণীটা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললো। শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলো। ওদের ভেতরেও সেই ভাব আবেগ, এবং ইচ্ছাশক্তির জোয়ার আনতে হবে। আর সেই জন্যেই কুপারের আইডিয়াটা ছিলো এপিক। সব শুনে-টুনে গম্ভীর মুখে, ‘আমি একটু আসছি’ বলে জাহাজের ডেকের নিচে চলে গেল। ফিরে এলো তার চেয়েও গম্ভীর মুখে। এরপর ওদের হাতে ধরিয়ে দিল ৬টা অ্যালবাম। এই অ্যালবামগুলোর প্রত্যেকটা ঐ ৬ হতভাগা নাবিকের যারা আনুবিসের দ্বারা অভিশপ্ত হয়েছে। এগুলোতে ওদের কাছের মানুষগুলোর ছবি আছে। নিজের সবচেয়ে কাছের মানুষগুলোর ছবি দেখার পরও যদি কারও মন ভাবাবেগে পূর্ণ না হয়, বেঁচে থাকার ইচ্ছা জাগ্রত নাহয়, তাহলে সেটা দুনিয়ার আর কোন কিছুতেই হবে না।
দানবগুলো হাতে থাকা আপন জনের ছবি দেখে কাঁদছিল। হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখ মুচছিল ওরা। উইলিয়াম বুঝল, সময় হয়েছে কাজে লেগে পড়ার। এক লাফে বেরিয়ে এলো ঢিবিটার অপর পাশ থেকে।
‘হেই, হেই...নাবিকরা, তোমাদেরকেই বলছি। আমার দিকে তাকাও,’ উইলিয়াম দু হাত উপরে তুলে চেঁচিয়ে উঠল।
৬টা দানবই মুখ তুলে ওর দিকে চাইল। ওকে দেখে ভীষণ দোটানায় পড়ে গেছে। কি করবে বুঝতে পারছে না।
‘দেখো, এতক্ষণ তোমরা তোমাদের আপন জনের ছবি দেখছিলে। ওদের কথা ভাবতে না ভাবতেই চোখে পানি চলে এলো তোমাদের। তোমরা একটাবার ভেবে দেখ, তোমাদের কি ওদের কাছে ফিরে যেতে ইচ্ছে হয় না? এই মানুষগুলো নিশ্চয়ই তোমাদের আশায় আশায় পথ চেয়ে বসে আছে, তাই না? তোমরা যদি ফিরে না যাও, তাহলে তাদের অবস্থা কি হবে একটাবার কি ভেবে দেখেছ তোমরা? ফিরে চল, এখনো সময় আছে। আমি উইলিয়াম, তোমাদেরকে এখান থেকে বের হওয়ার রাস্তা দেখিয়ে দেব। আমি চিনি রাস্তাটা। শুধু একবার ঐ প্রাণীগুলোকে নিজেদের শরীর থেকে বের করে দাও। ওরা যতক্ষণ থাকবে তোমাদের ভেতরে, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদেরকে বাসায় ফিরে যেতে দেবে না। ওদেরকে পিষে ফেল, বের করে দাও ওদেরকে তোমাদের শরীর থেকে, এক্ষুনি...’
উইলিয়ামের শেষ কথার সাথে-সাথেই প্রত্যেকটা দানব চিৎকার করে উঠল। কেউ মাটিতে জোরে-জোরে বারি দিচ্ছে, কেউ বা নিজের মাথাটা শক্ত করে দুই হাত দিয়ে চিপে ধরেছে, কেউ হয়তো হাঁটু ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে গেছে।
‘তোমরা পারবে, আমি জানি তোমরা পারবে, বের করে দাও...ওদেরকে আর সুযোগ দিও না। বের করে দাও তোমাদের শরীর থেকে ঐ আবর্জনাগুলোকে যারা তোমাদেরকে পুতুল বানিয়ে রেখেছে, যারা তোমাদেরকে তোমাদের বাবা, মা, ভাই, বোন, স্ত্রী, পুত্র থেকে আলাদা করে ফেলতে চায়। তাদেরকে আর সুযোগ দিও না, বের করে দাও, বের করে দাও...’ দানবগুলোর উদ্দেশ্যে চেঁচিয়ে উঠলো ইথেন। উইলিয়ামকে সাহায্য করার জন্যে আড়াল থেকে বেরিয়ে এসেছে ও।
দানবগুলো দু হাতে মাথাটা শক্ত করে চিপে ধরে পশুর মত চিৎকার করছে। জোরে-জোরে নিজের বুকে ঘুষি মারছে। এসে গেছে, সেই সময়টা খুব নিকটে এসে গেছে...
‘হোস পাইপগুলো রেডি কর...’ চেঁচিয়ে উঠল উইলিয়াম। সাথে-সাথে ইথেন, কুপার আর বাকি দুই জন নাবিক একসাথে দৌড় দিল একই দিকে। বালুর উপর পড়ে থাকা একটা বড়-সড় কাপড় টান দিয়ে সরিয়ে ফেলল। সেখানে তিনটা মাঝারি আকৃতির নলওয়ালা পিপে। প্রত্যেকটা পিপের নলের সাথে একটা করে পাইপ লাগানো। পিপেগুলো অ্যালকোহলে ভর্তি। জাহাজে যত অ্যালকোহল এর বোতল আছে, সবগুলো দিয়েই পিপেগুলো ভরানো হয়েছে। ইথেন, কুপার আর উইলিয়াম প্রত্যেকে একটা করে হোস পাইপ ধরল। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ওরা কিছু একটার জন্যে।
দানবগুলোর চিৎকারকে ভেদ করে নতুন এক ধরনের তীক্ষ্ণ চিৎকার শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। খুব চিকণ গলায় কারা যেন আর্তনাদ করছে। দানবগুলো পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ছোট হয়ে আসছে ওদের শরীর। চামড়ার সবুজ রঙ দূর হয়ে আগের রঙ ফিরে আসছে। বড়-বড় দাঁতগুলো স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। শুধু একজন ছাড়া। সেই বিশাল আকৃতির দানবটা এখনো নিজের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে।
পরমুহুর্তেই বাকি ৫ জন নাবিকদের মুখের ভেতর থেকে সবুজ রঙের ৫টি কিলবিলে প্রাণী বেরিয়ে এলো। বেরোনো মাত্রই ওগুলো সোজা লাফ দিল বালুতে। এরপর নিজেদের অক্টোপাসের মত ট্যান্টাকলগুলোর উপর ভর করে কিলবিলিয়ে আসতে লাগল সোজা উইলিয়ামদের দিকে।
‘মার...’ চিৎকার করে উঠল উইলিয়াম। ওর চিৎকারের সাথে-সাথে হোস পাইপ ৩টা থেকে অ্যালকোহলের ফোয়ারা বেরিয়ে এলো। প্রাণীগুলো তীক্ষ্ণ সুরে আর্তনাদ করে উঠল সাথে-সাথে। ধোঁয়া উঠছে ওগুলোর শরীর থেকে। চিকণ সুরে বিলাপ করতে-করতে ধীরে-ধীরে অ্যালকোহলের ভেতর হারিয়ে যাচ্ছে ওগুলো। মাটিতে পড়ে থাকা অ্যালকোহলগুলো এখন ফুটছে। সবুজ প্রাণীগুলো এখন নেই। সব আবার আগের মত হয়ে গেছে। শান্ত এবং নিস্তব্ধ...শুধু একটা অদ্ভুত গার্গল জাতীয় শব্দ ছাড়া। আকারে সবচেয়ে বড় যে দানবটি ছিলো, সে এখনো এক হাতে গলা চিপে ধরে আছে। কিন্তু সবুজ জিনিসটা ওর ভেতর থেকে বেরোচ্ছে না। ওর দৃষ্টি অ্যালবামের একটা নির্দিষ্ট ছবির উপর। সবাই পাইপ হাতে অপেক্ষা করে আছে কবে ঐ জিনিসটা দানবটার মুখ থেকে বের হবে। এরই মাঝে অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়া ৫ নাবিক উইলিয়ামের দিকে ছুটে এলো। এক বুড়ো নাবিক ওর হাত ধরে বলল, ‘অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার এ ঋণ আমরা কখনই শোধ করতে পারবো না। কিন্তু, ব্যাপারটা কিভাবে হলো বুঝলাম না। একটু বুঝিয়ে বলবেন আমাদেরকে?’
‘দেখুন, এরা আসলে আনুবিসের রক্তের ফোঁটা। কিভাবে সে ওর নিজের রক্তের ফোঁটাতে প্রাণের সঞ্চার করেছে আমি বলতে পারবো না, তবে এটুকু বলতে পারি যে এদের মধ্যে সে নিজস্ব কিছু অসাধারণ ক্ষমতা দিয়ে দিয়েছিল। তাই ওরা প্রাণীর মত আচরণ করেছে। কিন্তু প্রাণের সঞ্চার হলেও, ওগুলোর রাসায়নিক গঠন এর কোন পরিবর্তন হয়নি। ফলে ওর রক্ত যে পদার্থগুলো দ্বারা তৈরি তাদের রাসায়নিক ধর্মও আগের মতই আছে।’
‘মানুষের রক্ত তৈরি হয় জলীয়, জৈব আর অজৈব পদার্থ দিয়ে। সাধারণ মানুষের রক্ত পানিতে দ্রবীভূত হয়। কিন্তু আমার ধারণা আনুবিসের রক্ত পুরোটাই অরগানিক পদার্থ দিয়ে তৈরি। এখানে কোন জলীয় অংশই নেই, আছে অরগানিক লিকুইড, যেটা পানিতে দ্রবীভূত হয় না। যদি হতো তাহলে ঐদিন প্রচণ্ড ঝড়ের ভেতরে সবুজ প্রাণীগুলো টিকে থাকতে পারতো না। অতএব, আমি বুঝলাম যে ওর রক্ত পানিতে অদ্রবণীয় অরগানিক পদার্থ দিয়ে তৈরি। আর অরগানিক পদার্থের জন্যে খুব ভালো একটা দ্রাবক হচ্ছে ইথানল বা অ্যালকোহল। যেহেতু প্রাণের সঞ্চার হওয়ার পরেও ওগুলোর কেমিক্যাল নেচার আগের মতই রয়ে গেছে, এবং ওর রক্তও যেহেতু অরগানিক পদার্থ দিয়ে তৈরি, তাই ওর রক্ত অ্যালকোহলে দ্রবীভূত হবে। আর তাই ঐ সবুজ প্রাণীগুলোও অ্যালকোহলে দ্রবীভূত হয়ে গেছে। আর দ্রবীভূত হওয়ার ফলে প্রচণ্ড তাপ উৎপন্ন হয়েছে, যার কারণে অ্যালকোহল এখন ফুটছে,’ উইলিয়াম বলল।
অ্যালকোহলের উপরের সার্ফেস থেকে এখনো বুদ-বুদ উঠছে। এখনো ফুটছে অ্যালকোহল। আবারও একটা ঘর-ঘর শব্দ হলো আর সবাই মুখ তুলে শব্দটার উৎসের দিকে চাইল। বড় দানবটার দৃষ্টি অ্যালবামের একটা বিশেষ ছবির দিকে। এখন আর সে কাঁদছে না, বরং ওর চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। তীব্র ঘৃণায় ওর মুখ বিকৃত হয়ে যাচ্ছে। রাগে ওর হাত পা কাঁপছে।
‘ওহ নো!’ কুপার মুখে হাত দিয়ে বলল।
‘কি হয়েছে, ও এমন করছে কেন?’ ইথেন জিজ্ঞেস করল। জ্যাকসন তার শরীরটা টান-টান করে অপেক্ষা করে আছে। যেন সে বুঝতে পারছে এখন কি হবে।
‘ম্যাক্স নিশ্চয়ই ওর বউ এর ছবি দেখতে পেয়েছে। মেয়েটাকে ভালবেসে বিয়ে করেছিল ও। ২টা ফুটফুটে শিশুও আছে ওদের। সব ঠিক-ঠাকই চলছিল। কিন্তু হঠাত ওর বউ আরেকজনের প্রতি আশক্ত হয়ে গেল। ম্যাক্স অনেক বোঝানোর চেষ্টা করল, কিন্তু ঐ ডাইনীটা বুঝল না। ঠিকই একদিন রাতের আঁধারে ঐ ফুলের মত নিস্পাপ শিশুদেরকে ছেড়ে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে গেল। এরপর থেকে ম্যাক্স ওর বউকে প্রচণ্ড ঘৃণা করে। পারিবারিক অ্যালবামে নিশ্চয়ই ওর ছেলে মেয়ের সাথে বউয়ের একটা দুইটা ছবি এখনো রয়ে গেছে, সেটাই সে দেখতে পেয়েছে এখন, তাই এমন করছে,’ ক্যাপ্টেন কুপার হতাশার সাথে বলল। ‘আগে জানলে আমি ছবিটা বের করে নিতাম...এখন শিউর থাকো যে আমাদের কপালে দুর্ভোগ আছে, ম্যাক্স ওর স্ত্রীকে অসম্ভব ঘৃণা করে...’
ম্যাক্স এর হাতের মাসলগুলো অদ্ভুতভাবে কিলবিল করছে। বুকটা খুব দ্রুত উঠা নামা করছে। পরমুহুর্তেই পুরো অ্যালবামটা একটানে ছিঁড়ে কুচি-কুচি করে ফেললো সে। উঠে দাঁড়িয়েছে ম্যাক্স। এরপর সোজা তাকাল কুপারের দিকে।
‘হায় খোদা, সে বেশ বুঝতে পারছে যে কাজটা আমারই, এখন সে আমাকে ছাড়বে না...পিঁপড়ের মত পিষে ফেলবে! আমাকে বাঁচা তোরা...প্লিজ...’ ভয়ে এক পা এক পা করে পেছাতে লাগল কুপার। ম্যাক্স ওর দিকেই আসছে ধীরে-ধীরে। এরপর কোন ওয়ার্নিং দেয়া ছাড়াই হুট করে লাফ দিল কুপারের গায়ের উপর...
ধুপ করে একটা শব্দ হলো। কুপারের ডান পাশ থেকে জ্যাকসন লাফ দিয়েছে ম্যাক্স এর গায়ের উপরে। ওকে ফেলে দিয়েছে বালির উপরে। দুই হাত দিয়ে বালির উপর চিপে ধরলো ম্যাক্স এর দুই হাত। ম্যাক্স পশুর মত চিৎকার করছে। জ্যাকসনের মত বিশাল দেহী দানবও ওকে ধরে রাখতে পারছে না। জ্যাকসনের দিকে তাকিয়ে একটা গর্জন করে উঠল ম্যাক্স। এরপর মাথা দিয়ে ধড়াম করে মারল জ্যাকসনের কপালে। চোখে তারা দেখছে জ্যাকসন। মাথাটা ঘুরছে ওর। যেন কেউ হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়েছে ওকে। এরপর ম্যাক্স জ্যাকসনকে ঘুষি মারতে লাগলো পাগলের মত। একটাও আটকাতে পারছে না জ্যাকসন। কপাল ফেটে সবুজ রঙের রক্ত পড়ছে ওর। এরপর জ্যাকসনের গলাটা চিপে ধরলো ম্যাক্স। ধরে মাটি থেকে জ্যাকসনকে ধরে উঠে গেল। এরপর গলাটা চিপে ধরেই জ্যাকসনকে তুলে নিলো এক হাতে। এরপর খুব জোরে ছুঁড়ে ফেলে দিল জাহাজের গায়ে।
ধড়াম...
জাহাজের ডেকের নিচের দিকের একটা অংশ ফুটো হয়ে তার ভেতরে ঢুকে গেছে জ্যাকসন। উঠে দাঁড়াতে পারছে না আর।
ধুম, ধুম, ধুম......
পরপর ৩টা শটগানের শব্দ হলো। উইলিয়াম এটা আগেই নিয়ে এসেছিল, ইন কেইস অফ ইমারজেন্সি হিসেবে। ম্যাক্স চিৎকার করে উঠল। টপটপ করে রক্ত পড়ছে ওর বিশাল শরীর থেকে। বালু ভিজিয়ে দিচ্ছে। আরেকটা গুলি করল উইলিয়াম। এবারের গুলিটা ম্যাক্স এর কাঁধে গিয়ে বিঁধল। অমানুষিক একটা আর্তনাদ করে সোজা দুরের গুহাটার দিকে ছুটল ম্যাক্স। এরপর হারিয়ে গেল অন্ধকারের ভেতরে।
***
জ্যাকসনের ক্ষতগুলো পরিষ্কার করছে কুপার। মাথায় আর পিঠে কয়েক জায়গায় চোট পেয়েছে সে। তবে খুব বেশি ব্যথা পায়নি বলে জানিয়েছে। দানবীয় শরীর। খুব বেশি ব্যথা পাওয়ার কথাও না।
‘এখন কি করবি? ঐ দানবতো সরাসরি অ্যাঙ্গুইসিয়ার কাছেই যাবে। সে টের পেয়ে যাবে যে আমরা এখানে আছি। আমরা তো শেষ...’ একরাশ হতাশা নিয়ে বলল ইথেন।
চিন্তিত হয়ে ভাবছিল সবাই। ধীরে-ধীরে সময় বয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে বাড়ছে ঠাণ্ডা। কিন্তু সেইদিকে কারই এখন নজর নেই। ক্ষুধার জ্বালায় সবাই কাতর। নিচের ডেকে এসে কিচেনে যা যা অক্ষত পেয়েছে, বন্যার্ত মানুষের মত খেয়ে ফেলেছে। এখন সবাই নিচের ডেকেরই একটা রুমে বসে আছে।
‘ব্যাপারটা খুব হতাশাজনক। সবার ক্ষেত্রে প্ল্যানটা কাজ করল, খালি ম্যাক্স এর ক্ষেত্রেই করল না,’ এক নাবিক বলল। বাকিরাও মাথা নেড়ে ওর কথায় সায় দিল। ওদের পাশেই ওরা অস্ত্র আর তলোয়ার রেখেছে। যদিও অ্যাঙ্গুইসিয়া এলে ওগুলা ওদেরকে কতটা রক্ষা করতে পারবে সেটা নিয়ে ওদের যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
সময় গড়িয়ে চলল, সেই সাথে ঠাণ্ডাও হু হু করে বেড়ে গেল। এখনও অ্যাঙ্গুইসিয়ার কোন খবর নেই। যেন সে ওদের কথা ভুলেই গেছে।
‘ব্যাপারটা সন্দেহজনক। প্রায় তিন ঘণ্টা হয়ে গেল। এখনো অ্যাঙ্গুইসিয়ার কোন পাত্তা নেই। নিশ্চয়ই এখানে কোন একটা ব্যাপার আছে...নিশ্চয়ই...নাহলে সে এত নিশ্চিন্তে কিভাবে আছে...যদি না...ওহ...’ হঠাত উইলিয়ামের চোখগুলো বড়-বড় হয়ে গেল। কিছু একটা ধরতে পেরেছে ও।
‘কি হলো? চোখগুলো হাতির চোখের মত করে ফেললি কেন? কি হয়েছে বল?’ ইথেন আর কুপার একসাথে জিজ্ঞেস করল।
‘অ্যাঙ্গুইসিয়া কেন এত নিশ্চিন্তে বসে আছে জানিস?’ উত্তর না দিয়ে উইলিয়াম ওদেরকে পাল্টা প্রশ্ন করল।
‘না কেন?’
‘কারণ...ও জানে আমরা এখান থেকে সারা জীবনেও বেরোতে পারবো না। ও জানে বেরোনোর রাস্তাটা নিরাপদেই আছে, আমাদের হাতের নাগালের বাইরেই আছে। সে সম্পুর্ণ নিশ্চিত যে আমরা ঐ পথে যাইনি, আমরা এখনও এখানেই আছি।’
‘কিন্তু কিভাবে? ওর কী সব জায়গায় চোখ আছে নাকি? ও কী তাহলে দেখতে পাচ্ছে এখন আমাদেরকে? আমার তো মনে হচ্ছে এই জায়গাটার কোনায়-কোনায় ওর শয়তানি চোখ ফিট করা আছে...’ বলেই কুপার ভয়ে-ভয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে এদিক সেদিক দেখল।
‘চোখ নেই, সে আমাদেরকে দেখতেও পাচ্ছে না...কিন্তু এরপরও সে নিশ্চিন্তে বসে আছে, সেইখানে, যেখানে সে সব সময় বসে থাকে...’
‘তার মানে...তুই বলতে চাচ্ছিস...সে এত নিশ্চিন্তে বসে আছে কারণ...’ কপাল চাপড়ে উইলিয়ামকে বলল ইথেন। সেও ব্যাপারটা ধরতে পেরেছে।
‘কারণ সে ঠিক বের হওয়ার রাস্তার মুখেই বসে আছে...’ ইথেনের বাক্যটা কমপ্লিট করল উইলিয়াম। সবাই উত্তেজিত হয়ে উঠল। এতক্ষণ তাহলে ওরা সময় নষ্ট করেছে।
‘তা বের হওয়ার রাস্তাটা তাহলে কোথায় হবে? এখানে কয়েকশ ছোট-বড় টানেল আছে। কোথায় খুঁজবো ওকে?’ এক অল্প বয়সী নাবিক বলে উঠল।
‘আচ্ছা, একটা কথা...বলবো?’ কুপার জিজ্ঞেস করল।
‘হুম, বল?’
‘সবুজ দানবটা নিশ্চয়ই অ্যাঙ্গুইসিয়ার কাছেই গেছে। আমরা ঐ দানবের ট্রেইল ফলো করতে পারি। ওর শরীর থেকে তো রক্ত ঝরছিল অনেক। নিশ্চয়ই ঐ রক্তগুলোই আমাদেরকে ঠিক পথের সন্ধান দেবে,’ কুপার বলল।
‘তুই...তুই কি জানিস যে তুই জীবনে এই একটা কথাই সঠিক বলেছিস? তুই আসলেই একটা জিনিয়াস,’ বলেই খুশিতে কুপারকে জড়িয়ে ধরল উইলিয়াম।
‘ছাড়...ছাড় তুই আমাকে...আসলে আমার কথার খুব একটা মুল্য তোরা দিস না, তাই এখান থেকে এখনও বেরোতে পারিসনি, নাহলে কত আগেই বেরিয়ে যেতে পারতি...’ হাহ করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কুপার বলল।
বুড়ো এক নাবিক আপন মনে বিড়-বিড় করে, ‘আবার শুরু করে দিয়েছে...’ জাতীয় কি যেন বলা শুরু করেছিল সবে, কিন্তু কুপার সাথে-সাথে কটমট করে সেদিকে তাকাতেই বুড়ো চুপ হয়ে গেল।
***
‘সবুজ রঙের রক্তের ফোঁটাগুলো সোজা খাদের দিকে গিয়েছে, দেখ। তারমানে হচ্ছে সে ঐ ব্রিজ দিয়ে সেই বিশাল দরজাটা পেরিয়ে সামনে গিয়েছে,’ সবুজ দাগটা পর্যবেক্ষণ করতে-করতে বলল উইলিয়াম। ফসফোরেসেন্ট এর আলোয় এই সবুজ দাগগুলোকে খুঁজে পাওয়া এত সোজা নয়। তাই ওরা হাতে মশালও নিয়ে এসেছে। সেই সাথে প্রয়োজনীয় অস্ত্রও আছে।
সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছে ওরা। অন্ধকার দেয়ালে ১১ জন মানুষের পায়ের শব্দ বার-বার প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। সিঁড়ির একদম শেষ ধাপে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেল সবাই।
‘এবার? ডানে, না বামে?’ জিজ্ঞেস করল এক নাবিক।
‘বামে আমরা আগেও গিয়েছি। ওখানেই অ্যাঙ্গুইসিয়ার সাথে দেখা হয়েছিল আমাদের। কিন্তু অ্যাঙ্গুইসিয়া ওখানে নেই। থাকলে জ্যাকসন যখন দানবগুলোকে ডাকার জন্যে ওখানে আবার গিয়েছিল, তখন ওর সাথে তার দেখা হয়ে যেত। অতএব আমাদের লক্ষ হচ্ছে ডানের রাস্তাটা,’ রায় দিল উইলিয়াম। এরপর সবাই ওকে অনুসরণ করতে লাগল।
কিছুদূর হাঁটার পর ওরা সেই ছোট্ট রুমে পৌঁছে গেল, যার ডান পাশের অন্ধকার সেলের ভিতর বন্দি ছিল উইলিয়ামরা। এখন ওদের লক্ষ্য হচ্ছে সোজা সামনের টানেলটা। ধীর পায়ে একজন-একজন করে সেই টানেলে ঢুকল। টানেলটা বেশি মোটা নয়। মোটামুটি একজন মানুষ দাঁড়াতে পারে মত জায়গা আছে। তাই ওরা একজন আরেকজনের পেছনে হাঁটতে লাগল। কিছুদূর যাওয়ার পরেই একটা দরজা দেখতে পেল। সেই দরজা পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই একটা গোলাকার রুম চোখে পড়ল। রুমটা গাঢ় অন্ধকারে নিমজ্জিত। মশালের আলোয় ওরা দেখল, রুমের মাঝখানে একটা ছাউনি দেয়া উঁচু জায়গা। সেই উঁচু জায়গাটার উপর এক পাশে একটা বেদি, তার পাশেই একটা পাথরের মুর্তি। ওর মুখটা শৃগালের মত। হাতের মাসলগুলো বেশ বড়-বড়। হা করা মুখের ভেতর থেকে ওর ভয়ঙ্কর তীক্ষ্ণ দাঁত বেরিয়ে এসেছে।
‘আনুবিস?’ বেশ অবাক হয়ে বলল কুপার। ‘তার মানে এটা...’
‘ঠিকই ধরেছিস কুপার, এটা আনুবিসেরই মন্দির। অ্যাঙ্গুইসিয়া কি বলেছিল মনে আছে? আনুবিসকে না ডাকলে সে কখনোই আসে না। আর ওকে ডাকতে হয় ওর মন্দিরে এসেই। না হলে কারো ডাকই ওর কানে যায় না। সম্ভবত এই মন্দিরে বসেই অ্যাঙ্গুইসিয়া আনুবিসকে ডেকেছিল...আমাদেরকে এখানে ধরে নিয়ে আসার জন্যে,’ মূর্তিটাকে পর্যবেক্ষণ করতে-করতে বলল উইলিয়াম। ‘অ্যাঙ্গুইসিয়া যাতে কোন মতেই এখানে আসতে না পারে, না হলে সে আনুবিসকে ডেকে নিয়ে আসবে। আর একবার আনুবিস এসে গেলে...আমাদের আর কেউ বাঁচাতে পারবে না।’
‘অ্যাঙ্গুইসিয়ার নিজের উপর যা কনফিডেন্স, মনে হয় না যে সে আনুবিসের কাছে দৌড়ে আসবে সাহায্যের জন্য। তারপরেও...সাবধান থাকা ভালো, কি বলিস?’ ইথেন বলল। এরপর ওরা আবার এগিয়ে চলল।
মন্দিরটাকে পেরিয়ে ওরা আবার একটা সরু টানেলে প্রবেশ করলো। পুরো প্যাসেজটা মাটির তৈরি। ওখানকার মাটি ভিজে পিচ্ছিল হয়ে আছে। হাঁটতে কষ্ট হচ্ছিল ওদের। কিছুদুর হাঁটার পর ওরা দেখতে পেল যে টানেলটা দুইভাগে ভাগ হয়ে গেছে। এক ভাগ গেছে ডানে, আর আরেক ভাগ গেছে সোজা বামে।
‘এখন কি হবে? কোনদিকে যাবো? ভাগ-ভাগ হয়ে দুইদল দুই দিকে যাবো?’ ইথেন জিজ্ঞেস করল।
‘তার প্রয়োজন নেই। এই দেখ বাম পাশের টানেলের মাটিতে দানবটার পায়ের ছাপ আছে,’ বলেই মাটিতে একটা বিশাল পায়ের ছাপ দেখাল উইলিয়াম।
সবাই বাম পাশের টানেল ধরে খুব সন্তর্পনে হাঁটতে লাগল। সামনেই একটা দরজা। কিন্তু ওটা খোলা। কেউ একজন ওটা খুলে রেখেছে। সম্ভবত ওদের জন্যেই। ওখানে আসার পর ওদের হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল। দরজার ওপাশেই আছে ওদের শত্রু। কিংবা কে জানে, হয়তো ওপাশে ওদের মৃত্যুও অপেক্ষা করছে।
খোলা দরজা দিয়ে খুব শীতল একটা কন্ঠস্বর শুনতে পেল ওরা।
‘চিন্তা করো না ম্যাক্স, ওরা আসবেই, ওদেরকে আসতেই হবে আমার কাছে...’ গায়ে হিম ধরিয়ে দেয়া কণ্ঠস্বরটা বলল। জবাবে ম্যাক্স শুধু নাক দিয়ে ঘোঁত করে একটা শব্দ করল।
‘রেডি?’ উইলিয়াম পেছনের দিকে তাকিয়ে সবাইকে বলল। সবার হাতেই যার যার অস্ত্র আর মশাল।
‘ওকে,’ ইথেন জবাব দিল। জ্যাকসনও বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বুঝিয়ে দিল যে সে প্রস্তুত।
খুব বড় একটা শ্বাস নিয়ে দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকল ওরা। দরজাটার এপাশেই নির্ধারিত হবে ওদের ভাগ্য। ওদের জীবন।
To be Continued.........
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ā§Ģ āύāĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3564 (7)
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
⧧⧍:ā§Šā§Š AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ