চ্যাপ্টার ৪: দ্য আনএক্সপেক্টেড ডিসকভারি
মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। নাকে আসছে ভেজা মাটির গন্ধ। অনেক কষ্ট করে মাথা তুলতে গিয়েই বুঝল, ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা। একটু নাড়াতেই ঘাড়টা কট করে উঠল। খুব সাবধানে চোখটা খুলল উইলিয়াম।
একটা অদ্ভুত যায়গা...আকারে বিশাল...ফসফোরেসেন্ট এর আলোয় ক্ষীণভাবে আলোকিত...মাথার অনেক উপরে খোলা আকাশ নেই, তার পরিবর্তে আছে মাটি...যেন ভূমি থেকে অনেক-অনেক গভীরের এক পাতালপুরী। ও পড়ে আছে একটা ছোট-খাট লেকের পাশে। ওর ঠিক পেছনেই সি-গাল দাঁড়িয়ে আছে...অথবা সি-গালের ধ্বংসস্তূপ দাঁড়িয়ে আছে। উইলিয়ামের ঠিক পাশেই জাহাজের সামনের দিকে একটা উঁচু ঢিবি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে।
অনেক কষ্টে টলতে-টলতে উঠে দাঁড়াল উইলিয়াম। ও কোথায় আছে? এটাই কি মৃত্যুর পরের জগত? ওরা সবাই কি মারা গেছে?
‘ক্যাপ্টেন, ক্যাপ্টেন? তুই কোথায়?’ হাঁক ছেড়ে ডাকতে শুরু করে দিল উইলিয়াম।
গোঁ-গোঁ আওয়াজ শুনে এদিক সেদিক তাকাল উইলিয়াম। আওয়াজটা আসছে ঠিক ওর মাথার উপর থেকে।
জাহাজের একটি ভাঙ্গা মাস্তুল ডেকের উপর পড়ে ছিল। মাস্তুলটার অর্ধেক অংশ জাহাজের ডেকের উপর, আর বাকি অর্ধেকটা বাইরে। সেই বাইরের অংশের একদম সামনের দিকে ক্যাপ্টেন অদ্ভুতভাবে উল্টো হয়ে ঝুলছে! কিভাবে এই জিলাপির প্যাঁচ লেগে গেল কে জানে! যাকগে, ওকে এখন ওখান থেকে নিচে নামাতে হবে।
ভাঙ্গা মাস্তুলটা মনে হয় উইলিয়ামের মনের কথা শুনতে পেয়েছে। একদম সাথে-সাথেই ওটার সামনের দিকের অংশটা পুরোপুরি ভেঙে গিয়ে সোজা লেকের পানিতে পড়লো...
‘ক্যাপ্টেন, ক্যাপ্টেন...’ দৌড়ে গেল উইলিয়াম।
ভুশ করে মুখ থেকে একগাদা জল বিসর্জন দিয়ে লেক থেকে মাথা তুলল দুঃসাহসী ক্যাপ্টেন কুপার।
‘কই, হতচ্ছাড়াগুলো কই গেল? বেশ তো হম্বিতম্বি করছিলি এতক্ষণ, এখন কই ভেগে গেলিরে?’ হুঙ্কার দিয়ে উঠল ক্যাপ্টেন।
‘কার সাথে কথা বলছিস তুই?’
‘বুনো মানুষ...আমাকে আক্রমণ করেছিল, ওদেরকে কাঁদিয়ে ছাড়ছিলাম। লড়াই করতে-করতে হঠাত করে নিজের জামার উপর নিজেই পা বাঁধিয়ে দিয়ে পিছলা খেয়ে পাহাড়ের উপর থেকে সোজা পানিতে পড়ে গেলাম...তা আমরা এখানে কি করছি যেন?’ ক্যাপ্টেন নিজের কানে আঙ্গুল দিয়ে লেকের জল বের করতে-করতে বলল।
‘ওরে গাধারে, জাহাজ ডুবি হয়েছিল আমাদের। কিচ্ছু মনে নেই তোর?’ বিরক্তির সাথে বলল উইলিয়াম। ক্যাপ্টেনকে সাথে আনার এই হচ্ছে যন্ত্রণা। গাল-গল্প বলে পরিস্থিতি একদম হাস্যকর করে তোলে।
ক্যাপ্টেন সাঁই করে ঘাড় ঘুরিয়ে এদিক সেদিক দেখলো। এরপর হাউ মাউ করে কাঁদা শুরু করে দিলো। ‘ওরে উইলিয়ামরে...আমর
া তো মরে গেছিরে! আমরা এখন আছি নরকে! আমি আগেই জানতাম...আমার কপালে এইটেই আছে। জীবনে যতগুলো গুল ছেড়েছি...এ হচ্ছে তারই সুফল...’
‘ব্যাপারটা আগে বুঝলেই ভালো করতি,’ আপন মনে বিড়বিড় করতে লাগল উইলিয়াম।
‘তোমরা নরকে নয়, মাটির অনেক নীচে আছো,’ ওদের পেছন থেকে এক বৃদ্ধ লোকের গলা ভেসে এলো। বুড়োটা অদ্ভুতভাবে টলতে-টলতে আসছিল ওদের দিকে।
‘জর্জ? তুমি? তারমানে...তারমানে আমরা এখনো...’ প্রচণ্ড আনন্দে ক্যাপ্টেন রীতিমত লাফ দিয়ে উঠল। বুড়োটা সি-গালেরই এক নাবিক।
‘...মরোনি...বহাল তবিয়তেই বেঁচে আছ,’ বুড়োটা বলল।
ক্যাপ্টেন চোখের পলকে সামনের দিকে দৌড় দিল। এরপর প্রচণ্ড খুশিতে আত্মহারা হয়ে লোকটিকে জড়িয়ে ধরে ওর কপালে দু চারটে চুমু বসিয়ে দিল।
বুড়োটা অদ্ভুতভাবে দাঁড়িয়ে রইল। যেন এসব কিছুই তাকে স্পর্শ করছে না একদম।
‘ক্যাপ্টেন, ক্যাপ্টেন...ছি...বাপের বয়সী লোকের সাথে এসব কি ব্যবহার?’ তাজ্জব হয়ে বলল উইলিয়াম।
উইলিয়ামের বলার প্রয়োজন ছিল না। কারণ তার আগেই ক্যাপ্টেন ওকে ছেড়ে দিয়ে লাফিয়ে খানিকটা দূরে সরে গেল। বেশ ভয় পেয়েছে ও। বিশ্রী একটা গন্ধ আসছে লোকটার শরীর থেকে।
উইলিয়াম বুড়োটাকে দেখতে লাগল। কেমন যেন ফ্যাকাসে রক্ত শূন্য সাদা মুখ। চোখে মুখে এক ভয়ঙ্কর রকমের নির্লিপ্ততা দেখা যাচ্ছে।
‘আপনি...মানে...আপনার কি হয়েছে......আর বাকিরা কোথায়? ওরাও কি এখানে এসেছে, ওদেরকে কি আপনি দেখেছেন?’ বুড়োটাকে জিজ্ঞেস করল উইলিয়াম।
বুড়োটা দুই মিনিট কি যেন ভাবল...যেন ভাবছে কি উত্তর দেবে। এরপর মাথাটা অদ্ভুতভাবে এদিক-ওদিক দুলিয়ে ভাবলেশহীন গলায় বলল, ‘উনি আপনাদের জন্যে অপেক্ষা করে আছেন স্যার...আসুন...
জলদি আসুন...’
‘কে অপেক্ষা করে আছে...আর বাকিরা কোথায়?’ ক্যাপ্টেন কুপার জিজ্ঞেস করল। বুড়োটা কোন জবাব দিল না। শুধু মাথাটা একটু হালকা দোলাল।
‘জবাব দিচ্ছো না কেন? কে পাঠিয়েছে তোমাকে? বল?’ উইলিয়াম জিজ্ঞেস করল। বুড়োটা এবারও চুপ। শুধু মাথাটা একটু হালকা কাত করল।
‘ইথেন? ইথেন পাঠিয়েছে তোমাকে? ও বেঁচে আছে?’ উইলিয়াম ধৈর্যহারা হয়ে বলল। বুড়োটা আবারও কোন উত্তর দিল না। শুধু মাথাটা একবার উপরে নিচে দোলাল।
‘ওর হয়েছেটা কি? ও এমন করছে কেন?’ ফিসফিস করে কথাটা বলল ক্যাপ্টেন।
‘বুঝতে পারছিনা রে....ওকে দেখতেই কেমন যেন লাগছে...তাছাড়া ওর গায়ের গন্ধটা খুবই বিশ্রী, বমি চলে আসছে আমার,’ বলেই নাকটা চেপে ধরল উইলিয়াম।
‘এখন কি করবি? এর পিছে-পিছে যাবি? আমার কিন্তু কিছুই ভালো লাগছে না,’ ক্যাপ্টেন ভীত স্বরে বলল।
‘এছাড়া তো আর কোন উপায়ই নেই, বুড়োটাকে অনুসরণ করলে আমরা হয়তো আমাদের সবগুলো প্রশ্নের উত্তর পাবো। ঘূর্ণি ঝড়ের পর আমরা সমুদ্রের তলদেশে হারিয়ে না গিয়ে এই জায়গাটাতে কিভাবে এলাম সেটাই অনেক বড় একটা রহস্য। এর উত্তর খুঁজে পাওয়াটা খুবই জরুরী। এরপর ইথেন, জ্যাকসনসহ বাকিরা কোথায় আছে সেটার উত্তরও আমরা জানি না। যেভাবেই হোক বাকিদেরকে খুঁজে পেতেই হবে, আর তারপর এখান থেকে বেরোনোর একটা না একটা রাস্তা বের করতেই হবে। আমি এখানে পচে মরতে রাজি না,’ উইলিয়াম বলল।
‘তাহলে তুই বুড়োটার পিছে-পিছে যাবি বলে ঠিক করেছিস?’ ক্যাপ্টেন আতঙ্কিত হয়ে বলল।
‘আমাদের সবগুলোর প্রশ্নের উত্তর এই বুড়োর দেখান পথের শেষ মাথাতেই আছে। সেখানে না গেলে আমরা কখনোই উত্তরগুলো পাবো না, বাকিদেরকেও খুঁজে পাবো না আর এখান থেকে বেরও হতে পারব না কোনদিন। অতএব...আমাদের হাতে আর কোন উপায় নেই কুপার,’ ছোট্ট করে নিঃশ্বাস ফেলে বলল উইলিয়াম।
‘ঠিকই বলেছিস, তবে যাই হোক, আমাদেরকে খুব সাবধানে থাকতে হবে,’ চিন্তিত গলায় বলল ক্যাপ্টেন কুপার।
এরপর ওরা আর কথা না বাড়িয়ে লোকটাকে অনুসরণ করতে লাগল। লোকটা ওদের থেকে বেশ কিছুদূর সামনে হাঁটছিল। ভালোই হয়েছে, ওর গায়ের গন্ধের কারণে ওর আশে-পাশে যাওয়া যাচ্ছে না। ফসফোরেসেন্ট এর আলোয় হাঁটতে-হাঁটতে কিছুদূরে একটা সরু গুহা দেখতে পেল ওরা। গুহাটা ভীষণ অন্ধকার এবং ভূতুড়ে। সেই আদি ভৌতিক গুহার ভেতর হাতড়ে-হাতড়ে ওরা সামনে যেতে লাগল। ওদের যাত্রা পথে পায়ের নিচে চাপা পড়ে কি কতগুলো যেন কড়-কড় শব্দ করছিল। ওগুলো কি কে জানে। ওসব নিয়ে অবশ্য এখন ভাববারও সময় নেই। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ অন্ধকার গুহাটা ধরে এগিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে ওরা আলোর মুখ দেখতে পেল।
সামনে একটা বিশাল ফাঁকা জায়গা। সেটার ডান পাশে একটা বিশ্রী ডোবা। সেটার ভেতরটা থকথকে সবুজ কিছু পদার্থ দ্বারা পূর্ণ। ডোবাটার ভেতর সবুজ জিনিসগুলো অদ্ভুতভাবে কাঁপছে। ভূট-ভাট শব্দও হচ্ছে।
সেই ফাঁকা জায়গাটার চারপাশে অনেকগুলা গুহার মুখ দেখা যাচ্ছে। কোনটা যে কোনদিকে যাচ্ছে বোঝা বেশ মুশকিল। লোকটা ওদেরকে নিয়ে গেল সোজা নাক বরাবর গুহা যেটা দেখা যাচ্ছে সেইটার ভেতর। এই গুহাটাও বেশ অন্ধকার। কিছুই দেখা যাচ্ছে না। বুড়ো লোকটার পায়ের শব্দ সেই অন্ধকার গুহার দেয়ালে বার-বার প্রতিফলিত হচ্ছিল। সেই শব্দ শুনে-শুনেই ওরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকল। এভাবে কিছুদূর হাটার পর আবারও একটা ফাঁকা যায়গার সামনে এলো ওরা। ফসফোরেসেন্ট এর আলোয় সেই ফাঁকা যায়গাটা মৃদুভাবে আলোকিত। সেই আলোয় ওরা যা দেখল তাতে ওদের গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গেল।
গুহাটার এখানে-সেখানে অসংখ্য মানুষের হাড় গোড় এবং মাথার খুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। সেই সাথে অনেকগুলো ছোট-ছোট পশু পাখির হাড়-গোড়ও দেখতে পেল ওরা। পাখিগুলো খুব সম্ভবত বাদুড় হবে।
‘এ কি ভয়ানক জায়গারে বাবা...সাক্ষাৎ মৃত্যুপুরী,’ ক্যাপ্টেন ভয় পাওয়া গলায় বলল।
উইলিয়ামও যে ভয় পাচ্ছে না তা নয়। সেও ভয় পেয়েছে। কিন্তু বেশি ভয় পেলে বুদ্ধি ভ্রংশ হয় যা এই মুহূর্তে কিছুতেই হতে দেয়া যাবে না। অনেক কষ্টে নিজেকে শান্ত রাখল উইলিয়াম।
ফাঁকা জায়গাটার অদূরে একটা পথ সোজা সামনে গিয়ে আবার ডানে বাঁক নিয়েছে। বুড়ো লোকটা সেদিকে না গিয়ে গেল ওদের হাতের বাম দিকে থাকা একটা গভীর গর্তের দিকে।
‘ওকি? গর্তের ভেতর কই যাচ্ছ?’ উইলিয়াম অবাক হয়ে বলল।
‘উনি এই দিকেই থাকেন...’ বলেই এক হাত সামনের দিকে উঠিয়ে অনেক দূরের কোন একটা জায়গা দেখাল বুড়োটা।
ওরা এতক্ষণে বুঝে গেছে যে, বুড়োটাকে বেশি প্রশ্ন করে লাভ নেই। তাই বাধ্য হয়ে ওরাও সেই গর্তের ভেতর দিয়ে সামনে এগোতে লাগল। কিছুদূর হাঁটার পরেই বুঝল যে ওরা এখন ধীরে-ধীরে উপরের দিকে উঠছে। খানিক বাদেই ওরা গর্তটা পেরিয়ে একটা সমতল জায়গায় উঠে এলো। সামনেই মার্বেল পাথরের তৈরি একটা ব্রিজ। অদ্ভুতভাবে মধ্য আকাশে ঝুলছে ওটা।
‘হোয়াট দ্য হেল? এই ব্রিজ কিসের উপর দাঁড়িয়ে আছে? এটা টিকে আছে কিভাবে?’ উইলিয়াম নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছে না।
‘আমার তো মনে হয়, এটা হয়তো নরক, অথবা শয়তানের আড্ডাখানা। অন্তত কয়েক ডজন শয়তান থাকে এখানে...’ ভয়ে হাঁটু কাঁপা-কাপি হচ্ছিল ক্যাপ্টেনের। ইতিমধ্যেই সে আশে-পাশে আরও বেশ কয়েকটি মানুষের কঙ্কাল দেখতে পেয়েছে।
‘তুই শান্ত হবি? তুই না অসীম সাহসী ক্যাপ্টেন কুপার? নিজের নামের প্রতি অন্তত সুবিচার কর,’ উইলিয়াম খানিকটা বিরক্ত হয়ে বলল। দুনিয়াতে এতো মানুষ থাকতে এই চরম বিপদের মাঝে সে কিনা পাশে পেল একমাত্র ক্যাপ্টেনকেই?
ব্রিজটা সোজা চলে গেছে অনেক দূর সামনে...ওরা সেই ব্রিজ ধরে খুব সন্তর্পণে সামনে হাঁটতে লাগল। হাঁটছে তো হাঁটছেই, কিন্তু পথ আর ফুরোচ্ছে না। হাঁটতে-হাঁটতে নিচে তাকাল উইলিয়াম। সাথে-সাথে মাথা ঘুরে গেল ওর। ব্রিজটার
নিচে অনেক-অনেক বিশাল বড় এক খাদ। সেই খাদে আগ্নেয়গিরির লাভা ফুটছে। যেন সাক্ষাৎ নরক। ক্যাপ্টেন ভয়ে চোখ বন্ধ করে বিড়-বিড় করে কি যেন পড়তে লাগল। ওরা সেই ব্রিজ ধরে সামনে হাঁটছে তো হাঁটছেই। ওদের হাঁটা শেষ হচ্ছে না। হাঁটতে হাঁটতে পায়ে ব্যথা ধরে গেল।
‘আর কতদূর? কোথায় ইথেন?’ উইলিয়াম বুড়োটাকে জিজ্ঞেস করল।
আর বেশিদূর নেই...খুব কাছে...সে খুব কাছেই আছে...’ বুড়োটা অদ্ভুতভাবে বলে উঠল।
‘আমার বুড়োটাকে একদমই বিশ্বাস হচ্ছে না। মনে হচ্ছে যেন এ আমাদের অন্য কোথাও নিয়ে যাচ্ছে,’ ক্যাপ্টেন বললো।
‘আমারও সন্দেহ হচ্ছে, কিন্তু দেখ, আপাতত কিছুই করার নেই। আমরা ওর সাথে না গেলে আর কোথায় যাবো বল? এই জায়গাটা অসম্ভব বড়। আমরা জীবনেও রাস্তা খুঁজে পাবো না। পচে গলে মরব ঐ কঙ্কালগুলোর মত। আমার ধারণা ঐ লোকগুলোও ঐভাবেই মরেছে...পথ হারিয়ে...’ চিন্তিত সুরে বলল উইলিয়াম।
‘দেখ...সামনে দেখ...’ হঠাত করে ক্যাপ্টেন চেঁচিয়ে উঠল।
বেশ কিছুদূর সামনে অনেক উঁচু একটা দরজা। ওরা তাড়াতাড়ি হেঁটে দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। দরজাটার গায়ে হায়ারোগ্লিফে কী যেন লেখা ছিল।
‘এখানেও হায়ারোগ্লিফ?’ ক্যাপ্টেন বেশ অবাক হয়ে বলল।
‘এর মানে হচ্ছে, আমরা এমন একটা জায়গায় আছি যার সাথে ঐ মমির যোগসূত্র আছে...’ উইলিয়াম বলল। ক্যাপ্টেন চট করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
বিশাল বড় দরজাটায় ধাক্কা দিয়ে একাই খুলে ফেলল বুড়ো লোকটা।
‘ওর গায়ে এত জোর এলো কোথা থেকে? এ দরজা খুলতে হলে অন্তত তিনজন লোক লাগবে,’ অবাক হয়ে বলল ক্যাপ্টেন।
‘কিছু একটা ঠিক নেই এখানে, কিছু একটা ঠিক নেই...এই পুরো জায়গাটাই অদ্ভুত...খুব ভয়াবহ কিছু হয়েছে এই জায়গাটিতে। এর প্রতিটা ইঞ্চি সেই ভয়াবহতাকে বহন করছে। তাছাড়া, বুড়োটার আচার ব্যবহারও খুবই অদ্ভুত লাগছে আমার কাছে, আমি ভাবছি ওর আসলে কি হয়েছে...,’ ঠোঁট কামড়ে ধরে ভ্রু কুঁচকে বলল উইলিয়াম। ‘তবে আমাদেরকে যেতেই হবে ওর সাথে। কারণ…এটা কোন জায়গা, কিভাবে আমরা এখানে এলাম আর কিভাবে এখান থেকে বেরোনো যাবে...তার উত্তর খুব সম্ভবত দরজার ওপাশেই অপেক্ষা করছে।’
খোলা দরজাটার ওপাশের ল্যান্ডিঙের পেছনেই বেশ মোটা একটা সিঁড়ি সোজা নিচের দিকে নেমে গেছে। ওরা সিঁড়ির ধাপগুলোতে আরও কিছু মানুষের কঙ্কাল দেখতে পেল। দুই পাশের দেয়ালে অসংখ্য ছবি আঁকা। সেই ছবিগুলোর অর্থ যে কি, কে জানে। সিঁড়ির শেষ ধাপে পা রাখার পর ওরা দেখতে পেল যে সামনে একটা মার্বেল পাথরের দেয়াল। সেই দেয়ালেও অসংখ্য ছবি আঁকা। দেয়ালটার দুপাশে দুটি রাস্তা। একটি বাম পাশে আরেকটি ডান পাশে। কিন্তু সিঁড়ির শেষ ধাপের পর থেকে নিচের পুরো জায়গাটা পানিতে তলিয়ে আছে।
‘এখন? কিভাবে যাবো সামনে?’ হতাশ হয়ে ক্যাপ্টেন জিজ্ঞেস করল।
বুড়োটা কোন জবাব না দিয়ে সোজা সেই পানিতে নেমে গেল। পানি বেশি নেই, হাঁটু পর্যন্ত। ওরাও বুড়োটার পিছু-পিছু সেই হাঁটু পানিতে নেমে গেল। ওরা বাম পাশের সেই প্যাসেজে ঢুকল। পানিতে ছপ-ছপ শব্দ করে-করে ওরা সামনে এগিয়ে চলেছে। রাস্তাটা এরপর ডানদিকে ঘুরলো। সেই পানিতে ডুবে থাকা পথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে রাস্তাটার একদম শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেলো ওরা। অপর পাশে একটা রুম। দরজাটা আলতো ধাক্কা দিয়ে খুলে ফেলল বুড়ো লোকটি।
কিন্তু ওখানে ভীষণ অন্ধকার। কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
‘তুমি কোথায় এনেছো আমাদের? কেউই তো নেই এখানে। কোথায় ইথেন? কোথায় বাকিরা?’ বেশ উত্তেজিত হয়ে বুড়োটাকে জিজ্ঞেস করল উইলিয়াম।
‘সে এখানেই আছে...’ বলেই মাথাটা নাড়াল বুড়োটা।
‘কে এখানে আছে?’ উইলিয়াম জিজ্ঞেস করল।
‘আমি আছি এখানে...’ অন্ধকারের ভেতর থেকে একটা ঠাণ্ডা শিরশিরে গলা ভেসে এলো।
ঝট করে ডান পাশে ঘুরে তাকাল উইলিয়াম। ঠিক যেন অন্ধকার ফুঁড়ে একটা মেয়ে বেরিয়ে এলো। ওর শরীর থেকে হালকা নীল আলোর বিচ্ছুরণ হচ্ছে। সেই আলোয় সে স্পষ্ট দেখতে পেল মেয়েটিকে। ধবধবে সাদা একটা পোষাক পড়ে আছে সে। দেখতে অনেক সুন্দরী, কিন্তু এরপরও আকর্ষণীয় নয়! ওর চেহারায় এমন কিছু একটা আছে যা ওর সৌন্দর্যকে ছাপিয়ে সবার আগে চোখে পড়ে। ওর চেহারার নিষ্ঠুরতা।
‘কে তুমি? এখানে কি করছো? আমাদের বন্ধু ইথেন, জ্যাকসন আর বাকি নাবিকরা কোথায়?’ উইলিয়াম জিজ্ঞেস করল।
‘আমিই সেই...যার কারণে তোমাদের এই দুর্দশা...আমিই দ্য সারপেন্ট গডেস অ্যাঙ্গুইসিয়া...’ মেয়েটা নিজের লম্বা কালো রঙের জিভ দিয়ে গাল চাটতে-চাটতে বলল। ওর আইরিশ এবং পিউপিলবিহীন সম্পূর্ণ কালো রঙের চোখ দুটো দিয়ে এক দৃষ্টিতে উইলিয়ামকে দেখছে সে।
ভয়াবহ রকমের অমানুষিক একটা ভয় উইলিয়ামকে ঘিরে ধরল। এই সাথে সে পরিচিত নয়। মেয়েটা ভয়ঙ্কর রকমের ঠাণ্ডা শিরশিরে একটা অট্টহাসি দিল। অন্ধকার রুমটায় সেই হাসির শব্দ বারবার প্রতিফলিত হচ্ছিল।
.
ফ্যান্টাসি গল্প- দ্য সার্পেন্ট গর্ডেস
লেখা- অচেনা গল্পের শেষ লাইন
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ā§Ģ āύāĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3564 (4)
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
⧧⧍:ā§Šā§¨ AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ