স্মৃতি ফিরে দেখা
অচেনা গল্পের শেষ লাইন
😎😎😎😎😎😎😎😎
মূষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। জানালা ধরে দাঁড়িয়ে আছেন দীপ্ত নামের একটা পাগলের মা। তিনি ভাবছেন "এইরকম একটা বৃষ্টির রাতেই তো তার কোল জুড়ে এসেছিলো দিপ্ত। " দীপ্তর মায়ের চোখ জলে ভেসে যাচ্ছে। তার ছেলে আর দীপা নামের মেয়েটির কথা। ও হ্যা দীপা। " দীপাও এখন পরপারের বাসিন্দা।" কি ভাবছেন কেমন করে এসব হচ্ছে? গল্প শুরুর আগে নায়িকাকে মেরে ফেলা যৌক্তিক না। তবুও।আচ্ছা তাহলে মূল গল্পে আসি।
১
দীপ্ত। তাদের তল্লাটের সবচেয়ে ভালো আর ভদ্র বালক। লেখাপড়ায় অর সাথে টেক্কা দিতে পারা ছাত্র পাওয়াই যায় না। যতটা সে পড়ালেখায় ভালো ছিলো। ঠিক ততোটাই খেলাধুলাতেও ভালো ছিল। আস্তে আস্তে বড় হতে লাগলো দীপ্ত। যখন সে ক্লাস ৮ এ।"ওর কিছু বন্ধু বান্ধব হয়। তারা মোটেও ভাল ছিলো না। নেশা করা, মেয়েদের উত্তক্ত করা, ক্লাস ফাকি দেয়া এগুলো ছিল তার নিত্য নৈমিত্তিক কাজ। দীপ্ত ওদের সাথে মিশলেও কেউই দীপ্তকে ওই পথে নিতে পারে নি। বরং দীপ্তর সংস্পর্শে আসার পরে ওই বখাড়েগুলো পরিবর্তন হয়ে যায়। এমন কি সিগারেট পর্যন্ত ছেড়ে দেয় তারা।
কিন্তু বয়ঃসন্ধিকালের প্রভাবে তাদের প্রত্যেকেরই টান জন্মে বিপরীত লিঙ্গের মানুষের উপর। কিন্তু তারা ভদ্র তাই তারা অন্য পন্থা অবলম্বন করে। যাতে তাদের চাহিদাও পূরন হবে। আর কারো চোখে ছোটও হতে হবে না।
কি ভাবছেন। যদি ভাবেন ফেসবুক তাহলে ঠিক ভেবেছেন। হ্যা তারা প্রত্যেকটা বন্ধু ফেসবুক খুলে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে কথা বলে। এতে সমাজে নাম খারাপ হয় না। আর চাহিদাও পূরন হয়।
.
.
আচ্ছা তোমরা কি কাউকে মিস করছো গল্পে? আমার তো মনে হয় মিস করছো। হ্যা এখন দীপাকে পরিচয় করিয়ে দেবার দরকার।
দীপা। বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে।দীপার মা নেই ছোট বেলায় মারা গেছে। দীপার কথা চিন্তা করে তার বাবা আরেকটা বিয়ে করেন। সবাই বলে সৎ মা ভালো হয় না। কিন্তু দীপা অন্যকিছু দেখেছিলো তার সৎ মা এর ভিতরে। অনেক ভালোবাসতো দীপা কে তার নতুন মা। কিছুদিন ভালো যাচ্ছিলো কিন্তু বিধাতা হয়তো নিজের হাতেই লিখেছিলো যে দীপার ভাগ্যে মায়ের আদর স্নেহ ভালোবাসা কিছু নেই। তাই দীপার নতুন মা দীপার মায়ের সাথে বন্ধুত্ত করে চলে যায় পরপারে। একটা বিভৎস গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা যায় দীপার মা। দীপা আবার একা হয়ে যায়। তার বাবা তার একাকীত্ব আরো বাড়িয়ে দেয় দীপাকে লন্ডনে পাঠিয়ে। <br>
লন্ডনে থাকা অবস্থায় দীপা যখন ক্লাস সিক্সে পড়ে তখন ফেসবুক খোলে দীপা।
.
তার ফেসবুক আইডির নাম ছিলো (Mariya Dipa)
আর
এদিকে দিপ্তোর ফেসবুক আইডির নাম ছিলো (cryptic prince cryptic)
😊😊😊
এরপর হয়তো আন্দাজ করতে পেরেছেন কি বলতে যাচ্ছি।
দীপ্ত ফেসবুক খুলেছে চাহিদাগুলো পূরন করতে। তাই সে অনেক মেয়েকেই ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠায় প্রতিদিন। এইভাবেই একদিন দীপার আইডি তে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট আসে দীপ্ত-র আইডি থেকে। দীপা সচরাচর কারো ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট এক্সেপ্ট করে না। কিন্তু হঠাৎ একদিন স্ক্রীনে চাপ পরে দীপ্ত-র রিকুয়েস্ট টা এক্সেপ্ট হয়ে যায়। দীপ্ত-র কাছে নোটিফিকেশন আসে
Mariya dipa accepted your friend request.
দীপ্ত অন্য সবার মতোন দীপার আইডি তে মেসেজ করে।
দীপ্তঃ হাই
দীপাঃ......
দীপ্তঃ কি হলো। কথা বলেন না কেন?
দীপাঃ.......
দীপ্তঃ বোবা নাকি?
দীপাঃ........
দীপ্তঃ ভাব মারেন কেন এত?
দীপাঃ k u?
দীপ্তঃ যাক তাহলে আপনার আঙ্গুল ভালো আছে।
দীপাঃmne?
দীপ্তঃ কিছুনা। কেমন আছেন?
দীপাঃ vlo achi... ( বলেই অফলাইনে চলে গেলো দীপা)
দীপ্তঃ বড্ড অভদ্র তো আপনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন না যে আমি কেমন আছি?
(রিপ্লাই নেই)
দীপ্তঃ আচ্ছা এমন কেন আপনি অফলাইনে চলে গেলেন কেন?
দীপ্তঃ বাই। এত Attitude ভাল লাগে না।
মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো দীপ্ত-র। এই মেয়েটা কি পাইছে।নিজেকে কি মনে করে? চেহারা খারাপের জন্য প্রোফাইল পিকচার দিছে বারবি ডল। একে একটা শিক্ষা দিতে হবে।
দীপ্ত চলে যায় বন্ধুদের কাছে। গিয়ে সব খুলে বলে। সবাই ওকে বলে যে। ব্যাপার না প্রথম প্রথম এমন হবেই ব্যাপার না চালিয়ে যা ধীরে ধীরে। দীপ্ত ওদের কথা মেনে নেয়। বাড়ি এসে পিসি তে বসে দেখে এখনো অনলাইন আসে নাই মেয়েটা। ওর কেমন যেন অন্য কারো সাথে কথা বলতেও ইচ্ছা করছিলো না। তাই ফেসবুক লগ আউট করে ও।
২
রাত ২ টা বাজে। জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাগেজ সহ দাঁড়িয়ে আছে দীপা। এই মাত্র দেশে ফিরেছে সে। বাবাকে কিছু বলে নি সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য।
আরো একটা কাজ আছে তার দেশে দীপ্ত-র সাথে দেখা করতে হবে তার।
কী ভাবছেন? এতো কিছু কেমন করে হলো? তাহলে ফিরে যেতে হয় ৫ বছর আগে। যখন দীপা ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে আর দীপ্ত ৮ম শ্রেণিতে।
(প্রথম চ্যাটিয়ের পর ৫ দিন হয়ে গেছে পড়ালেখার চাপে ফেসবুকে ঢুকতে পারে নি দীপ্ত। আজকে ঢুকেছে ফেসবুকে।)
দীপ্ত অবাক Mariya Dipa আইডি থেকে ৪৭৮ টা মেসেজ এসেছে। মেয়েটা অনলাইনে নাই তাই রিপ্লাই না দিয়ে পড়তে লাগলো সে। দীপার মেসেজগুলো ছিলো কিছুটা এইরকমঃ
দীপাঃ এই যে মিস্টার আমি ভাব দেখাই না।
দীপাঃ কাজ ছিলো তাই গেছিলাম অফলাইন। আপনিও তো এখন অফলাইন তার মানে কি আপনি ভাব দেখাচ্ছেন?
দীপাঃ কি হলো কথা নাই কেন মুখে?
দীপাঃ ফেবুতে আসেন না কেন? আজব তো।
দীপাঃ কালকের ভেতর যাদি না আসেন তাহলে খবর আছে বলে দিলাম।
দীপাঃ আপনার ভাব দেখার টাইম নাই আমার যান ভাগেন।
( দীপ্ত অবাক হয়ে চেয়ে আছে)
কি হচ্ছে এগুলো? মেয়েটাকে তো ভাবওয়ালী ভেবেছিলাম। এখন তো দেখছি খুব সিম্পল একটা মেয়ে। দীপ্ত রিপ্লাই দেয়ঃ
দীপ্তঃ সরি। এক্সাম এর জন্যে আসতে পারি নি ফেবুতে।
(প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই রিপ্লাই এলো দীপার আইডি থেকে। যেন ও দীপ্ত-র মেসেজের অপেক্ষায় ছিলো।)
দীপাঃ হুম, ইটস ওকে। কেমন আছেন?
দীপ্তঃ এইতো ভালো। আপনি?
দীপাঃ হুম ভালো। আপনার নাম কি?
দীপ্তঃ স্বন্দীপ রায়হান দীপ্ত। আপনার?
দীপাঃ মারিয়া দীপা। কিন্তু আপনার নামটা এতো আজব কেন?
দীপ্তঃ আসলে আমার বাবা মুসলিম আর মা হিন্দু। তাই এমন উদ্ভট নাম রেখেছেন।
দীপাঃ ওহ তাই নাকি।
এই ভাবেই দিনের পির দিন কথা চলতে থাকে দীপ্ত আর দীপার মাঝে। একে অপরের মেরুদন্ড হয়ে ওঠে আস্তে আস্তে। কিন্তু অন্যান্য দের মতোই ভালোবাসলেও কেউ কাউকে বলে না তাদের মনের কথাটা। যদি ভুল বুঝে চলে যায়। তাই কারোই কাউকে বলা হয়ে ওঠে নি। কিন্তু একটা ব্যাপার তারা খুব ভালো বন্ধু হলেও তারা তুমি পর্যন্তই ঠেকে আছে তুই তে নামে নি। কেন জানিনা তাদের মন সায় দেয় নি তুই তে নামার জন্য।
২ বছর কেটে গেছে। রাগ, অভিমান, দুষ্টু-মিষ্টি ঝগড়া এগুলোতেই মেতে ছিলো দুইজন। এদিকে দীপ্ত-র এস.এস.সি এক্সাম সামনে। তাই ঠিকমতো ফেসবুকে আসে না। দীপাও জোড় করে না। দীপাও মন দিয়ে লেখাপড়া করছে।
প্রায় ৫ মাস এমন ভাবে থাকার পরে দিপ্ত-র পরীক্ষা শেষ হলো। এখন তাদের মধ্যে আবার আগের মতোন যোগাযোগ শুরু হয়। এতোদিনের বিরতির পরেও কোন পরিবর্তন লক্ষ্য না করে দীপা সাহস পায় মনে। আর সিদ্ধান্ত নেয় দীপ্ত-কে তার মনের সুপ্ত বাসনা জানাবে।
দীপাঃ ওই।
দীপ্তঃ হুম, বলো।
দীপাঃ ওই।
দীপ্তঃ জী বলো।
দীপাঃ আচ্ছা আমি যদি তোমাকে একটা কথা বলি তুমি কি রাগ করবা?
দীপ্তঃ না করবো না। বলো।
দীপাঃ আমি এই জীবন থেকে মুক্তি চাই। আর তোমার বন্ধুত্ব ভালো লাগছে না আমার।
দীপ্তঃ মানে কি বলতে চাচ্ছো তুমি?
দীপাঃ তুমি যা দেখেছো তাই। প্লীজ আমাকে মুক্তি দাও তোমার এই বন্ধুত্তের মায়াজাল থেকে। প্লীজ।
দীপ্তঃ আচ্ছা দিলাম। আর হ্যা সাথে এটাও বলে রাখছি এইবার আমি অফলাইন যাওয়ার পরে আর কোনদিন অনলাইন আসবো না। মরে যাবো আমি। পারবোনা তুমিহীন পৃথিবীতে বাচতে।
দীপাঃ আবোল তাবোল কি বলো? আমিহীন পৃথিবী মানে?
দীপ্তঃ তুমি চলে গেলে তুমিহীন হয়ে যাবো আমি সেইটা বলেছিলাম।
দীপাঃ কিন্তু আমি তো অন্য কিছু mean করেছিলাম আমার কথায়?
দীপ্তঃ কি মিন করেছিলা?
দীপাঃ আমাকে সারাজীবনের জন্য তোমার করে নিবা? আমি জানি না কখোন তোমায় ভালোবেসে ফেলেছি। শুধু জানি তোমার বন্ধুত্বের মায়াজাল থেকে বের হয়ে তোমার রানী হতে চাই। প্লীজ দীপ্ত না করো না তুমি।
দীপ্তঃ তুমি এগুলো কি বলছো? স্বান্তনা দিচ্ছো?
দীপাঃ সত্যি বলছি। আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি দীপ্ত।
দীপ্তঃ কিন্তু তোমরা বড়লোক তোমাদের সাথে আমার যায় না। আর তাছাড়াও আমাদের ধর্ম আলাদা।
দীপাঃ বাবাকে ম্যানেজ করার দায়িত্ব আমার। আর ধর্ম কোন ব্যাপার না। তুমি শুধু বলো আমাকে ভালোবাসো কি না?
দীপ্তঃ হ্যা, কিন্তু....
দীপাঃ কোন কিন্তু না। এখন ভদ্রলোকের মতোন প্রপোজ করো।
দীপ্তঃ তুমি কি আমার প্রত্যেকটা পদক্ষেপের সাথী হবে,তুমি কি আমার আধার ঘরের বাতি হবে? তুমি আমার ভালোবাসা তুমি অপরুপা, আমি তোমায় ভালোবাসি, I love you Dipa. Will you marry me?
দীপাঃ ওয়াও। হুম বাবু আই উইল ম্যারি ইউ। 😍😍😍
অতঃপর তাদের জীবন নামের রেলগাড়িটা চলতে লাগলো ধীরে ধীরে। কোন সমস্যা নেই তাদের লাইফে। খুব সুন্দর দিন কাটতে লাগলো।
দুইজনেরই ইচ্ছা হয়ে গেলো তারা একে অপরের সাথে দেখা করবে। দীপ্ত-র পরিবার মধ্যবিত্ত। লন্ডন যাওয়ার টাকা নেই তার। তাই দীপা নিজেই চলে এলো।বিমান বন্দর থেকে একটা ট্যাক্সিতে উঠলো দীপা উদ্যেশ্য যাত্রাবাড়ি।
দীপ্ত অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে রাত ১০ টা থেকে। " এখন ভোর হতে চললো। " ওইতো দীপা আসছে। দীপ্ত দেখতে পেল।একটা ট্যাক্সি থেকে নামছে দীপা। এগিয়ে যাচ্ছে দীপ্ত। সে আরো দেখতে পেল কয়েকটা নেশাখোর বখাটে এগিয়ে যাচ্ছে দীপার দিকে। দীপ্ত চিৎকার দিলো দৌড়ে প্রায় কাছাকাছি এসে পড়েছে দীপ্ত। বখাটেগুলো দীপাকে নিয়ে টানাটানি করছে। দীপ্ত বলছে ছেড়ে দে ওকে ছেড়ে দে। কাছাকাছি আসতেই দেখলো বখাটেগুলোর ভেতর একজন ওর ক্লাসমেট। ঠিক তখনই জোরে একটা বাড়ি লাগলো দীপ্ত-র মাথায়। জ্ঞান হারালো দীপ্ত। জ্ঞান হারনোর আগে ওর শেষ কথা ছিলো
দীপ্তঃ রাফি ওকে ছেড়ে দে। আমার জান ও ছেড়ে দে না... প্লী........
দীপ্ত অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। দীপা চিৎকার করছে ( দীপ্ত, দীপ্ত বাচাও)আর কিছুই মনে নেই দীপ্ত-র।
যখন জ্ঞান ফিরলো তখন দীপ্ত শুয়ে আছে হাসপাতালের বেডে। ওর হাতে হ্যান্ডকাফ। দীপ্ত অবাক হয়ে যেতে লাগলো। সবকিছু মনে পড়তে লাগলো ওর আস্তে আস্তে। দীপ্ত চিৎকার করতে লাগলো দীপা দীপা কোথায়। একটা পুলিশ দৌড়ে এসে চড় দিলো। আর বললো কালকে রাতে মদ্যপ অবস্থায় রেপ করে খুন করেছিস আবার এখন চিৎকার করছিস। নির্বাক হয়ে গেলো দীপ্ত।
৩
দীপা চেয়েছিলো তার বাবাকে সারপ্রাইজ দিবে। হ্যা দীপার বাবা সারপ্রাইজ পেয়েছে। দীপার ডেড বডি। এর চেয়ে বড় সারপ্রাইজ আর কি হতে পারে। সমানে পাভলের মতোন কান্না করে চলেছে দীপার বাবা। অন্যদিকে হাসপাতালের বেডে অসার হয়ে পড়ে রয়েছে দীপ্ত। শুধু তার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পরছে।
.
।
।
.
(আদালতে নেয়া হয়েছে দীপ্তকে। আজকেই রায় হবে। আর হ্যা দীপার মারা যাওয়া ২ বছর হতে চললো। দীপ্ত পাগল হয়ে গেছে। কোন সেন্স নেই তার ভেতর।)
দীপ্তর বিরুদ্ধে রায় গেলো। ১৪ বছরের জেল হলো দীপ্তর। আজ তাকে সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সবার অলক্ষ্যে মুখের ভেতর ব্লেড তুলে নিয়েছিল দীপ্ত।
গাড়িতে তোলা হলো দীপ্তকে। গাড়ি চলতে শুরু করেছে। এখন মোটামুটি একটা ফাকা জায়গা দিয়ে যাচ্ছে গাড়ি। দীপ্ত আন্দাজ করে মুখের ব্লেড দিয়ে তার নিজের জিহ্বা কিছুটা কেটে ফেলে। রক্ত পড়ছে প্রচুর। এবার খুব নিখুতভাবে কেশে ওঠে দীপ্ত। মুখ দিয়ে হড়কে রক্ত পরছে। পুলিশ কর্মীরা তারাতারি করে গাড়ি ঠেকিয়ে হাতের বাধন খুলে দেয় দীপ্ত-র। দীপ্ত এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটা অফিসারকে তার হাতে লাগানো অবশিষ্ট দড়ি দিয়ে গলা পেচিয়ে ধরে। আর সবাইকে বলে অস্ত্র ফেলে দিতে। পুলিশ কর্মীরা অস্ত্র ফেলে দেওয়ার সাথে সাথে অফিসারের রিভলভারটা হাতে নিয়ে দেরি না করে সব পুলিশকে গুলি করে মেরে ফেলে আর তারপর অফিসারের হাতে রিভলভার দিয়ে জোড় করে অফিসারের কপালে গুলি করায়। যার ফলে রিভলভারে দীপ্ত-র হাতের ছাপ মুছে যায়।
দীপা মারা যাওয়ার পরে থেকে দীপ্ত আর কোনদিন কথা বলে নি। এমনকি দীপা কে শেষবারের মতোন দেখতেও যায় নি। তার মনে শুধু জ্বলছে প্রতিশোধের আগুন। এ আগুন নেভার নয়।
দীপ্ত এখন প্রতিদিন নতুন নতুন ছদ্মবেশ ধরে। শুধু খোজে দিপার খুনীদের। আর পরিকল্পনা করে কিভাবে মারবে। কতটা যন্ত্রনা দিয়ে মারবে। ভাবতে ভাবতেই হেসে ওঠে দীপ্ত।
আগের দীপ্ত আর এখনকার দীপ্ত-র মধ্যে কোনরকম মিল নেই শুধু একটা মিল ছাড়া। আগের দীপ্ত.... দীপাকে ভালোবাসতো আর এখনকার দীপ্ত দীপাকে ভালোবাসে।
ঘুরতে ঘুরতে রাফির দেখা পেয়ে যায় দীপ্ত। ফলো করা শুরু করে। তার বুকের ভেতর উথাল পাথাল চলছে। রাফি সবাইকে বিদায় জানিয়ে মাতাল অবস্থাতে বাড়ির দিকে যাচ্ছে। দীপ্ত রাফির পিছু নেয়। কন্সট্রাকশন এলাকা দিয়ে একা একা হেটে যাচ্ছে রাফি। দীপ্ত ওর ক্লোরোফরম লাগানো রুমালটা চেপে ধরলো রাফির নাকে। যখন রাফির জ্ঞান ফিরলো তখন সে দেখলো সে চেয়ারের সাথে বাধা রয়েছে। একটা বন্ধ ঘর। কেউ একজন আসছে। কে আসছে কে?
(দীপ্ত ঘরে ঢুকলো। হাতে একটা First aid box)
রাফিঃ দী...দীপ্ত তু...তু....তুই।
দীপ্তঃ হ্যা। আমি আমি আমি( চিৎকার করে)
রাফিঃ মাফ করে দে আমাকে মাফ করে দে। আমি কিছু কর.....
দীপ্তঃ মাফ!! হাহাহাহহা। মাফ করা অনেক আগেই ভুলে গেছি রে দোস্ত।( First aid box থেকে তার কাটার প্লাস, এসিডের বোতল, ফানেল, ব্লেড, চাকু, ইলেকট্রিক তার, পারফিউম,হ্যান্ডগ্লোভস,টেপ আর একটা মদের বোতল বের করলো দীপ্ত)
রাফিঃ এ..এগুলো দিয়ে কি করবি তুই? ( চোখে স্পস্ট ভয়ের ছাপ)
দীপ্তঃ তোকে মারবো। হাহাহাহাহা।(হাতে হ্যান্ডগ্লোভস পরতে পরতে বললো দীপ্ত)
রাফিঃ না.......(রাফির থুতনির সাথে টেপ লাগিয়ে মুখ হা করিয়ে রাখলো দীপ্ত)
হাতে মদের বোতল নিয়ে বললো।
দীপ্তঃ মদ খাবি না? খা নে খা।(রাফির মুখে ফানেল ঢুকালা দীপ্ত।গলগল করে কিছুটা মদ ঢেলে দিলো ফানেলের মুখে।)
এবার রাফির শার্ট টেনে ছিড়ে ফেললো দীপ্ত। বুকের পশম প্লাস দিয়ে টেনে টেনে তুলতে লাগলো। রাফি চিৎকার করছে। এবার ইলেকট্রিক তার সকেটের ভিতরে ঢুকালো দীপ্ত। রাফি গোঙাচ্ছে আ...আ..
দীপ্ত ভ্রুক্ষেপ না করে একটা তার ফানেলের ভেতর দিয়ে ঢুকিয়ে দিলো রাফির মুখের ভেতর আরেকটা তার হাতে নিয়ে বসে আছে সে।
দীপ্তঃ দোস্ত সেদিন কাজটা কেন করলি দোস্ত। (তার ছোয়ালো রাফির শরীরে... রাফি কারেন্টের তীব্র ঝটকা খেলো। এবার এসিডের বোতলটা হাতে নিলে খোলা বুকের উপর অর্ধেক এসিড ঢেলে দিলো। রাফির চিৎকারে সারা ঘর গুমগুম করে উঠলো। বাকী অর্ধেক ফানেলের ভেতর ঢেলে দিলো। রাফি গগনবিদারী চিৎকার দিয়ে উঠলো। এবার বোতলের অর্ধেক মদটুকু রাফির এসিডে পুড়ে যাওয়া বুকের উপর ঢেলে দিলো। হাতে ব্লেড নিলো দীপ্ত। রাফি ওদিকে চিৎকার করে চলেছে। রাফি ব্লেড দিয়ে রাফির পোড়া চামড়াগুলো ছিলতে লাগলো।
হঠাৎ করে চাকু হাতে নিলো। এবার রাফির একটা চোখ উপরে ফেলে দিলো সে। রাফি আর চিৎকার করতে পারছে না। হাপিয়ে উঠেছে সে।(শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলো রাফি)। দীপ্ত এবার চাকু দিয়ে পারফিউমের বোতলটা কেটে ফেললো। আর পারফীউম ঢেলে দিলো ফানেলের ভেতর। তার সাথে তার পকেটে থাকা গ্যাস লাইট দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিল ফানেলে।আর ইলেকট্রিকের তারটা রাফির শরীরের উপরে ফেলে দিলো। রাফি অনেক আগেই মারা গেছে। তবুও যেন দীপ্ত-র সাধ মিটছিলো না। তাই ব্লেড দিয়ে হাত পায়ের রগ আর গলার রগগুলো কেটে দিলো। তারপরে ঘর থেকে বের হয়ে গেলো সে। মুখে পরিতৃপ্তির হাসি। এখনো বাকী চারজন। ওদেরকেও মরতে হবে। মরতে হবেই।
।
৪
।
রাফি জেল থেকে পালিয়েছে ১৭ দিন হয়ে গেলো। আর এর ভেতরে রাফির এলাকার ৫ জন খুন! ব্যাপারটা ভালো ঠেকছে না এস.পি অলীদ হাসানের।ব্যাপারটা শুধুই ভাবিয়ে তুলছে তাকে।
৫টা মৃত্যু সবি প্রায় একইরকমের বুকপোড়া। মুখের ভেতর ইলেকট্রিকাল তার। হাত পা গলার সমস্ত রগ কাটা। আর একটা বিশ্রী পারফিউমের গন্ধ।এগুলো ভাবতে ভাবতে তার মনে হলো তার কেবিনের দরজায় কেউ এসে দাড়িয়েছে। সে পুলিশকর্মী ভেবে ডাক দিলো ভেতরে।
একটা বুড়োমতোন লোক এলো তার রুমে। তার অনুমতি ছাড়াই বসে পড়লো চেয়ারে। হাতে First aid box.... বুঝতেই পারছেন কে এসেছে।
এস.পি অলীদ হাসান জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে
তাকিয়ে রইলো তার দিকে। লোকটা পকেট থেকে কয়েকটা সিডি ডিক্স রাখলো টেবিলের উপর। বললো আমিই দীপ্ত "সাইকো দীপ্ত"
।
।
।
আর কিছু ভাবতে পারছেন না সানজিদা পারভীন। চোখ জলে ভেসে যাচ্ছে তার। সকাল হয়ে এলো। আজ তাকে দেখা করতে যেতে হবে দীপ্ত-র সাথে। দীপ্ত এখন পাগল বদ্ধ পাগল। সারাদিন শুধু দীপা দীপা বলে চিৎকার করে। আর সব ডাক্তারের কাছে বলে আমাকে একটা ফোন দিন না। দীপাকে ফেসবুকে মেসেজ দিবো। দিন না একটা ফোন। দীপা আমার জন্য অনলাইনে অপেক্ষা করছে। দিন না। দিন না।
;
;
;
এভাবেই দীপ্ত বেচে থাকবে। দীপার স্মৃতি মাথায় নিয়েই তার বেচে থাকা এখন। অন্যদিকে দীপাও অপেক্ষা করছে দীপ্ত-র না পাওয়া ভালোবাসা পূরন করার আশায়। বেচে থাকুক এমন ভালোবাসা অন্তরে অন্তরে।
[ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন]
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ