ফ্যান্টাসি গল্প- দ্য সার্পেন্ট গর্ডেস
লেখা- অচেনা গল্পের শেষ লাইন
চ্যাপ্টার ৬: জ্যাকসন’স সিক্রেট
দানবগুলো এক পা এক পা করে এগিয়ে আসছে। উইলিয়াম আর কুপার ধীরে-ধীরে পেছাচ্ছে। বুঝতে পারছে না যে খালি হাতে সাতটা দানবের সাথে ওরা কিভাবে পেরে উঠবে। দানবগুলো ওদেরকে গোল করে ঘিরে ফেলল। কুপার মাথা থেকে পা পর্যন্ত কাঁপছে। উইলিয়ামও স্থির থাকতে পারছে না। নিজেকে অনেক অসহায় বলে মনে হচ্ছে। হঠাত ওরা টের পেল যে ওরা শুন্যে উঠে গেছে। পর মুহুর্তেই প্রচণ্ড জোরে দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেলো ওরা দুইজনেই। দুটো সবুজ দানব ওদের ঘাড় ধরে উঠিয়ে দেয়ালের সাথে ধাক্কা দিয়ে চিপকে ধরে রেখেছে। ওদের পা এখনো মাটি থেকে কয়েক ফুট উপরে।
উইলিয়ামকে যে দানবটা ধরে রেখেছিল, সে উইলিয়ামের মুখের একদম কাছে মুখ আনলো। এরপর নাক দিয়ে উইলিয়ামের গায়ের গন্ধ টানতে লাগল। তারপর খুব জোরে একটা চিৎকার দিল। এরপর একটা বিশাল হাত উইলিয়ামের বুক বরাবর তুলল। উইলিয়াম সাথে-সাথে চোখ বন্ধ করে ফেলল। এই শেষ, এবার আর রক্ষে নেই, এখন নিজের বন্ধুদের হাতেই প্রাণ হারাতে হবে।
‘থামো!’ অ্যাঙ্গুইসিয়া হঠাত চিৎকার করে উঠল। ও যা চেয়েছিল তা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ওদের ভেতর আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়া গেছে। যুদ্ধ যেতার প্রথম টেকনিক হলো শুরুতেই শত্রুকে মানসিকভাবে দুর্বল করে দেয়া, যেটা এই মুহুর্তে সে খুব ভালোভাবেই করেছে। উইলিয়ামকে সে মানসিকভাবে পুরোপুরি ভেঙ্গে ফেলতে চাইছে। ওকে মানসিকভাবে এতটাই বিপর্যস্ত করবে যে শেষমেশ উইলিয়ামই বাধ্য হয়ে অ্যাঙ্গুইসিয়ার কাছে হাত জোড় করে ওকে এই দুঃসহ জীবন থেকে মুক্তি দিতে বলবে। একটা মানুষকে চোখের নিমিশেই মেরে ফেলা অনেক সহজ। তাতে মানুষটাও কষ্ট পায় কম। তবে তাকে তিল-তিল করে মারা আরও অনেক বেশি কষ্টের ব্যাপার, ভয়ঙ্কর ব্যাপার। উইলিয়ামের জন্যে সে এই ভয়ঙ্করটুকু বরাদ্দ রেখেছে ।
‘আমি না আসা পর্যন্ত ওদেরকে এভাবেই ধরে রেখো। খবরদার, এর অন্যথা করবে না,’ অ্যাঙ্গুইসিয়া দানবগুলোকে উদ্দেশ্য করে বলল। দানবগুলো মাথা নিচু করে সায় দিল। মনে হচ্ছে ওরা অ্যাঙ্গুইসিয়াকে ভীষণ ভয় পায়। অ্যাঙ্গুইসিয়া সাথে-সাথে অদৃশ্য হয়ে গেল।
উইলিয়াম ভাবতে লাগল। এই দানবগুলোর মাঝে জ্যাকসনও রয়েছে। ও কি তাকে চিনতে পারবে না? অনেক কষ্টে মাথাটা একটু বাম দিকে কাত করে দেখল, জ্যাকসন কুপারের পাশেই অন্য দানবদের সাথে দাঁড়িয়ে আছে।
‘জ্যাকসন! জ্যাকসন! দেখ, আমি...উইলিয়াম, আমাকে চিনতে পারছিস না তুই? আমাকে হেল্প কর প্লিজ জ্যাকসন...’ উইলিয়াম কাকুতি জানাল জ্যাকসনের কাছে। জ্যাকসন ওর দিকে তাকিয়ে চোখ পিট-পিট করল। এরপর বড়-বড় দাতগুলো বের করে উইলিয়ামকে ভ্রুকুটি করতে লাগল।
সাথে-সাথে অ্যাঙ্গুইসিয়া ফিরে এলো। ওর হাতে দুটো তলোয়ার। ওগুলোতে রক্ত লেগে আছে।
‘যে নাবিকগুলোকে আমি হত্যা করেছি, তাদের কারো-কারো সাথে তলোয়ার ছিল। সেখান থেকে এই দুইটা নিয়ে এলাম। আমি ফেয়ার ফাইটে বিশ্বাস করি। তাই তোমাদেরকেও আমি সম পরিমাণ সুযোগ সুবিধা দেব। সাতটা শক্তিশালী দানবের সাথে নিশ্চয় তোমরা দুইজন খালি হাতে লড়তে পারবে না। এই ওদের ছেড়ে দে...’ হিসহিসিয়ে উঠল অ্যাঙ্গুইসিয়া। সাথে-সাথে যে দুটো দানব ওদেরকে ধরে রেখেছিল ওরা ওদেরকে ছেড়ে দিল।
‘এই তলোয়ারগুলো নাও,’ বলেই ওদের দুইজনের দিকে তলোয়ার দুটি ছুড়ে দিল অ্যাঙ্গুইসিয়া।
ওদের হাতে এখন ধারালো অস্ত্র। এখন কি করবে ওরা? দানবগুলোকে মারার চেষ্টা করবে? কিন্তু এতে তো নিজের বন্ধুদেরকেই হত্যা করা হবে। নাকি অ্যাঙ্গুইসিয়াকে আক্রমণ করবে? উইলিয়ামের ভাবনায় ছেদ পড়ল ক্যাপ্টেনের চিৎকারে। কুপার ওর হাতের তলোয়ারটা ক্ষিপ্রগতিতে ছুঁড়ে দিয়েছে অ্যাঙ্গুইসিয়ার দিকে। সাথে-সাথেই অদ্ভুত উপায়ে অ্যাঙ্গুইসিয়ার শরীরটা ট্রান্সপারেন্ট হয়ে গেল আর তলোয়ারটা সোজা ওর ভেতর দিয়ে গিয়ে ওপাশের দেয়ালে আঘাত করল। হা-হা করে হেসে উঠল অ্যাঙ্গুইসিয়া।
‘তোমাদেরকে আমি কি বলছিলাম এতক্ষণ, এরই মাঝে ভুলে গেল? আমি এখন আর শুধুই মানুষ নই, আবার শুধুই সাপ নই, আমি এখন দুটোই। আমার অস্তিত্ব দুটি মিলিত হয়েছে। আমার এখন অনেক ক্ষমতা। আমি এখন যখন খুশি মানুষের রুপ ধরতে পারি, আবার যখন খুশি সাপের রুপ ধরতে পারি। তবে সাপের রূপটা আমি শুধু মাত্র কাউকে এবসর্ব করার সময় ব্যবহার করি। এছাড়া বাকিটা সময় আমি এই মানুষের রুপেই থাকি। কারণ...আমি এই রুপে...বলতে পারো প্রায় ইনভিন্সিবল...’ বলেই আবার শীতল স্বরে হাসতে লাগল অ্যাঙ্গুইসিয়া। অদ্ভুত একটা হিসহিস ধ্বনি বের হচ্ছে ওর হাসির সাথে।
এরপর সে একটা হাত কুপারের দিকে দিয়ে সেটাকে অলসভাবে শুন্যে দোলালো। কুপার সাথে-সাথে গলায় হাত দিয়ে শুন্যে উঠে গেল। ওর নিঃশ্বাস আটকে আসছে, যেন কেউ ওর গলা চেপে ধরেছে। এরপর প্রচণ্ড জোরে বুলেটের বেগে উপরের ছাদের দিকে ছুটে গেল কুপার।
ধড়াম...
পর-পর দুইটা শব্দ হলো। একটা হলো ছাদে মাথা ঠুকার শব্দ, আর পরেরটা হলো, ভারী কিছু মেঝেতে পড়ার শব্দ। কুপারের মাথা ফেটে রক্তের স্রোত বেরোচ্ছে। অজ্ঞান হয়ে গেছে ও।
‘কুপার, কুপার...’ দৌড়ে গেল উইলিয়াম। কুপারের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ওর পালস দেখল। নাহ, ভাগ্য ভালো, বেঁচে আছে এখনো।
‘ও বেঁচে আছে, আমি ওর অস্তিত্ব টের পাচ্ছি এখনো...কিন্তু সেটা কতক্ষণের জন্যে সেটাই হলো আসল কথা...’ বলেই আরেকটা ঠাণ্ডা নিষ্ঠুর হাসি উপহার দিল অ্যাঙ্গুইসিয়া।
‘তুমি...তুমি নিষ্ঠুরতায় তোমার পিতা আনুবিসকেও হার মানিয়েছো! তোমাকে আমি...’ ক্রোধের সাথে চিৎকার করে উঠল উইলিয়াম। ওর ভিতর এখন আর ভয় কাজ করছে না। ভয়ের জায়গা দখল করে নিয়েছে তীব্র ক্রোধ। অ্যাঙ্গুইসিয়াকে জিততে দেয়া যাবে না। কোনভাবেই না। আর কোন বন্ধুকেও মরতে দেয়া যাবে না। যেভাবেই হোক, সবাইকে নিয়ে এখান থেকে বেরোতেই হবে। যেভাবেই হোক।
‘আনুবিসের নিষ্ঠুরতার ছিটে ফোঁটাও তোমরা দেখোনি এখনো। আমিতো ওর নিষ্ঠুরতার স্রেফ সিকিভাগ পেয়েছি মাত্র। সে আমার উপর যথেষ্ট বিরক্ত। কারণ, আমি সামান্য কিছু মানুষের হাত থেকে নিজের সমাধিকে রক্ষা করতে পারিনি। তোমরা যখন সমাধিটা অপবিত্র করছিলে তখন আমি টের পেয়েছিলাম একটু দেরিতে। কারণ, তখন ঘুমুচ্ছিলাম আমি। ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর সাথে-সাথেই রওয়ানা দেই আমি। কিছুক্ষণের মাঝেই সমাধিতে গিয়ে উপস্থিত হই। যেয়ে দেখি যে আমার সমাধিতে আমার মমিটা নেই। রাগে ফেটে পড়েছিলাম আমি। প্রবেশ পথের মুখে দেখতে পেলাম এক শ্রমিকের লাশ পড়ে আছে। ওকে টেনে হিঁচড়ে বালির ভেতর নিয়ে গেলাম। এরপর সম্পুর্ন ভিন্ন এক পথে আবার ফিরে এলাম এই স্থানে। তোমাদেরকে না পেয়ে ওকে দিয়েই উদর পুর্তি করলাম। অপেক্ষা করতে লাগলাম কবে তোমরা ফিরবে। কিন্তু পরের দিন খুব সকালে আমার ঘুম ভাঙ্গার আগেই তোমরা ওকে নিয়ে ফিরে গেলে। আমি কিছুই করতে পারলাম না।’
‘আর তাই আনুবিস আমাকে শাসিয়ে গেছে যে এবার যদি তোমাদেরকে শায়েস্তা করতে না পারি, তাহলে সে আমাকে আর নিজের মেয়ে বলেই পরিচয় দেবে না, সাহায্য করাতো দূরে থাক,’ নিচু স্বরে বলল অ্যাঙ্গুইসিয়া।
‘এখন, অনেক কথা হলো। খেলা শুরু হোক, এই...সবাই দূরে সর,’ দানবগুলোকে আদেশ দিল অ্যাঙ্গুইসিয়া। ‘এই তুই, না তোর পাশের জন, হ্যাঁ তুই, তুই প্রথমে লড়বি উইলিয়ামের সাথে,’ বলেই বুড়োটাকে ইঙ্গিত করল সে।
এবার উইলিয়ামের অবাক হওয়ার পালা। ‘তুমি এই হাড় জিরজিরে বুড়োটাকে আমার সাথে মারামারি করতে পাঠাচ্ছো? ওকে তো এক ঘা লাগিয়ে দিলে আর উঠার শক্তিই পাবে না,’ প্রচণ্ড বিস্মিত হয়ে বলল উইলিয়াম।
হা-হা করে হেসে উঠল অ্যাঙ্গুইসিয়া। ‘চেষ্টা করেই দেখো না, লাগাতে পারো কি না,’ বিদ্রুপ করল ও।
বুড়োটা বৃত্তের মাঝখানে এসে গেছে। দুই তিন সেকেন্ড উইলিয়ামকে দেখে নিয়ে মাথাটা একটু এদিক-ওদিক দোলাল ও। এরপর টলতে-টলতে সোজা হাঁটা দিল উইলিয়ামের দিকে। উইলিয়াম বুঝতে পারছে না, যে বুড়োটা কেন অ্যাঙ্গুইসিয়ার সাথে যোগ দিয়েছে। তবে দেখে মনে হচ্ছে যে অ্যাঙ্গুইসিয়া ওকে হিপনোটাইজ করেছে। এখন ওকে দিয়ে তার আদেশ পালন করিয়ে নিচ্ছে। বুড়োটার জন্যে খুব মায়া হতে লাগল ওর।
যদিও ওর সেই অনুভূতি আর থাকল না। বুড়োটা কাছে আসতেই প্রচণ্ড এক দুর্গন্ধ টের পেল। বমি চলে আসছে ওর। ভাবল, এক পাশে দৌড় দেবে। কিন্তু বুড়োটা ওকে সেই সুযোগ দিল না। দুই হাত দিয়ে উইলিয়ামের গলা চেপে ধরল। অসম্ভব জোর বুড়োর গায়ে! বুড়ো হাড়ে এত জোর এলো কোথা থেকে? একে তো তীব্র গন্ধে বমি আসছে তার উপর বুড়োটা ওর গলা চিপে ধরায় নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। মরিয়া হয়ে তলোয়ারের হাতল দিয়ে বুড়োটার মাথায় খুব জোরে একটা বারি দিল। কি আশ্চর্য! বুড়োটার যেন কোন অনুভূতিই নেই। ছেড়ে তো দিলই না, উল্টো ওকে ধরে খুব জোরে মাটিতে একটা আছাড় দিল। ধড়াম করে মাটিতে পড়ল উইলিয়াম।
বুড়োটা টলতে-টলতে এগিয়ে আসছে। নাহ, আর মায়া দেখিয়ে কাজ নেই। বেশি মায়া দেখালে সে নিজেই মারা পড়বে এর হাতে। সমস্ত শক্তি দিয়ে তলোয়ারটা হাতল পর্যন্ত ঢুকিয়ে দিল বুড়োটার পেটে।
কিন্তু একি! বুড়োটার শরীর থেকে এক ফোঁটাও রক্ত পড়ছে না। যেন কিছু একটা ওর সমস্ত রক্ত আগেই শুষে নিয়েছে! কোন অনুভূতিই হচ্ছে না বুড়োটার। ঐ অবস্থাতেও এক হাত বাড়িয়ে উইলিয়ামের গলা চিপে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে ক্রমাগত।
হিসহিস করে হেসে উঠল অ্যাঙ্গুইসিয়া। যেন এতক্ষণ ধরে এই ব্যাপারটার জন্যেই সে অপেক্ষা করছিল।
‘ওকে তুমি কি ভেবেছিলে? জীবিত মানুষ? ও জীবিত নয়...মৃত! সবার প্রথমে আমি এই বুড়োটাকেই হত্যা করি। তবে ওকে এবসর্ব করিনি। শুধু ওর শরীরের সমস্ত রক্ত শুষে নিয়েছি। এরপর ওকে আমি আমার নিজস্ব ক্ষমতায় আবার জাগিয়েছি। তারপর তাকে পাঠিয়ে দিয়েছি সোজা তোমাদের কাছে, যাতে সে তোমাদেরকে পথ দেখিয়ে এখানে নিয়ে আসতে পারে।’
আতঙ্কিত উইলিয়ামের মুখ থেকে একটা ভয়াবহ আর্তনাদ বেরিয়ে এলো। যেই লোকটার সাথে ওরা এই বিশাল পথ পাড়ি দিয়ে এসেছে, যার সাথে সে এখন লড়াই করছে, সে মৃত মানুষ! একটা জম্বি!
ধক করে পচা গন্ধটা আবার নাকে লাগল। সাথে-সাথে শরীরের পুরো শক্তি দিয়ে বুড়োটার পেট থেকে এক টানে তলোয়ারটা খুলে নিলো উইলিয়াম। তলোয়ারটা খুলে নেয়ার সাথে-সাথেই বুড়োটা একটা পচা গলা হাত বাড়িয়ে দিয়ে উইলিয়ামের গলা চিপে ধরতে চাইল।
স্লেশ...
শরীরের পুরো শক্তি দিয়ে তলোয়ারটা চালিয়ে দিয়েছে উইলিয়াম। বুড়োটার মাথাটা এখন মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। হাটু ভেঙ্গে মেঝেতে পড়ে গেল উইলিয়াম। জীবনের প্রথম হত্যা করলো সে। অবশ্য...একে ঠিক হত্যাও বলা যায় কিনা, তাও বুঝতে পারছে না সে। কারণ, যাকে হত্যা করেছে, সে তো ঠিক...জীবিত নয়...
হাত তালি দিয়ে উঠল অ্যাঙ্গুইসিয়া। যেন এই ভয়াবহ ব্যাপারটাতে সে খুব মজা পেয়েছে।
‘সাবাস উইলিয়াম, তলোয়ার তো ভালোই চালাতে পারো। সাহস আছে তোমার, মানতেই হয়। তবে কি জানো, শত্রুর মাথা লক্ষ্য করে তলোয়ার চালাতে যতটা সাহস দরকার হয়, বন্ধুর মাথা লক্ষ্য করে তলোয়ার চালাতে তার চেয়েও বেশি সাহসের দরকার হয়। দেখা যাক, উইলিয়াম দ্য গ্রেট এর সেই সাহস আছে কি ন,’ বিদ্রুপ করল অ্যাঙ্গুইসিয়া।
এরপর ভিড়ের ভেতর থাকা দানবদের দিকে আঙ্গুল তুললো সে, ‘এই তুই...না, তুই না, তোর ডান পাশের জন, হ্যাঁ তুই...তুইই এখন লড়াই করবি উইলিয়াম দ্য গ্রেট এর সাথে।’
দানবটা উইলিয়ামের দিকে এগিয়ে এলো। বাকিরা গোল হয়ে আবার একটা বৃত্ত গঠন করেছে। বৃত্তের মাঝখানে উইলিয়াম আর সেই দানবটা। দানবটা আর কেউ নয়, সে হচ্ছে, জ্যাকসন। অ্যাঙ্গুইসিয়া আন্তাজে কাউকে সিলেক্ট করেনি, বুঝে শুনেই করেছে।
দানব জ্যাকসন একটা গর্জন দিয়ে তেড়ে এলো উইলিয়ামের দিকে। উইলিয়াম এক ঝটকায় সরে গেল। সবুজ দানবটা সোজা ধাক্কা খেল পেছনের দেয়ালে। উইলিয়াম ইতস্তত করছিল। দানবটা দেয়ালে মাথা দিয়ে আছে। সম্ভবত ওটার মাথা ঘুরছে এখন। এই সুযোগ ওকে আঘাত করার। কিন্তু উইলিয়াম পারছে না। নিজের বেষ্ট ফ্রেন্ডকে মানুষ কিভাবে খুন করে?
জ্যাকসন ওর দুর্বলতার সুযোগ নিলো। এক ধাক্কায় ওকে ফেলে দিল মেঝেতে। পেটে খুব জোরে লেগেছে ওর। দাঁড়াতেই পারছে না। একটা হাত তুলে ঘুষি পাকিয়ে দানবটা ছুটে এলো ওর দিকে।
‘জ্যাকসন, জ্যাকসন, আমার কথা শোন! এটা আমি...উইলিয়াম...প্লিজ...’ উইলিয়াম আকুতি করতে লাগল। জ্যাকসন এর হাত হঠাত শুন্যেই থেমে গেল। কি যেন ভাবছে ও।
‘না...তুমি ওর কথা শুনবে না, তুমি আমার কথা শুনবে...’ হিসহিসিয়ে উঠল অ্যাঙ্গুইসিয়া।
জ্যাকসন সাথে-সাথে গর্জন করে একটা ঘুষি মারল মেঝেতে। কিন্তু ঘুষিটা উইলিয়ামের গায়ে না লেগে ঠিক এক ইঞ্চি পাশে মেঝেতে গিয়ে আঘাত করল। মেঝেতে একটা মাঝারি আকৃতির গর্ত হয়ে গেল। সাথে-সাথে অবাক হয়ে জ্যাকসনের বিশাল বড় চোখগুলোর দিকে তাকাল ও। এরপর গড়িয়ে সরে গেল অপর পাশে। জ্যাকসন আরেকটা ঘুষি মেরে বসেছে ওকে। তবে ঘুষি মারার আগে ওর হাত পাকানো দেখেই সে বুঝে নিয়েছে ঘুষিটা কোনদিকে আসছে।
অট্টহাসি হাসতে লাগল অ্যাঙ্গুইসিয়া। ও এতক্ষণে মজা পেয়ে গেছে। শিকার তো ওর হাতেই বন্দি। এবং ওরা কোনদিনও এখান থেকে বেরোতে পারবে না। অতএব, শিকারের সাথে কিছুক্ষণ মজা করাই যাক। ক্ষতি নেই তো।
উইলিয়াম এক লাফে উঠে দাঁড়িয়েছে। জ্যাকসন এবার বিকট এক গর্জন দিয়ে উইলিয়ামের দিকে তেড়ে এলো। উইলিয়াম তলোয়ারটা তুলল, কোপ দিতে দিতেও থেমে গেল, আর এই সুযোগে জ্যাকসন ওকে আকাশে তুলে ফেলল। এরপর সোজা ছুঁড়ে দিলো দেয়ালের দিকে। ধড়াম করে ধাক্কা খেল উইলিয়াম। সৌভাগ্যবশত
কুপারের মত মাথা লাগেনি দেয়ালে। স্রেফ পিঠটা লেগেছে। যতটা আঘাত পাবে ভেবেছিল ততটা পায়নি।
কিছু বুঝে উঠার আগেই জ্যাকসন ওকে দুই হাতে তুলে নিয়ে আবারও একটা আছাড় মারল দেয়ালের সাথে। আবারও দড়াম করে জোরে-শোরে একটা আওয়াজ হলো। একবার, দুইবার, তিনবার...উইলিয়ামকে গুনে-গুনে তিন বার দেয়ালের সাথে প্রচণ্ড শব্দ করে ধাক্কা মারল জ্যাকসন। জ্ঞান হারাল উইলিয়াম।
***
আশেপাশে শুনশান নিরবতা। তার মাঝেই কেউ একজন ওকে ডাকছে, ‘উইলিয়াম, উইলিয়াম? শুনতে পাচ্ছিস আমার কথা?’
ধীরে-ধীরে চোখ খুলল উইলিয়াম। ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আছে ইথেন।
‘ইথেন? তুই বেঁচে আছিস? আমি তো ভাবলাম ঐ ডাইনিটা তোকে...’ খুশিতে চিৎকার করে উঠল উইলিয়াম।
‘আমার কপাল ভালো যে আমাকে সে খায়নি। ও বলে দিয়েছে যে আমাকে হত্যা করবে এদের সবাইকে মারার পর, একদম তোর চোখের সামনেই। তোকে নিয়ে ওর অনেক প্ল্যান আছে বলল। যাই হোক, এখানে আমরা এই কয়জন আছি এখন। এখান থেকে যদি বেরোতে না পারি, তাহলে ধীরে-ধীরে ওর পেটেই যেতে হবে সবাইকে...’ বলেই ভয়ে শিউরে উঠল ইথেন।
মাথাটা চক্কর দিচ্ছে উইলিয়ামের। আশেপাশে তাকাল সে, একটা সেল এর ভিতর বন্দি আছে ওরা। সেলের গেট তালা মারা। এই সেলে আছে ৫ জন। উইলিয়াম, ইথেন, ক্যাপ্টেন কুপার আর দুই জন ভীত সন্ত্রস্ত নাবিক। কুপারের জ্ঞান ফিরেনি। মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে আছে।
‘এখান থেকে বেরোতেই হবে...আমার ঐ শয়তানটার পেটে যাওয়ার কোন ইচ্ছাই নেই...’ উইলিয়াম বলল ইথেনকে।
আবারও শিউরে উঠল ইথেন। সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য উইলিয়াম দেখেনি। ইথেন দেখেছে। চোখের সামনে কিভাবে সাপটা ওর বন্ধুদেরকে গিলে ফেলল তা তাকে নিজের চোখে দেখতে হয়েছিল। উফ! কি ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্য...ভাবতেই ভয়ে সারা গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে! সবার আগে মেরেছিল ঐ বুড়োটাকে। শুষে নিয়েছিল ওর সমস্ত
রক্ত। এরপর একে-একে হত্যা করে বাকিদেরকে। এখন শুধু বেঁচে আছে এই সেলের পাঁচ জন, আর সেই সাত দানব, যাদের ভেতর জ্যাকসনও আছে।
ইথেন ক্রমাগত সেলের গ্রিল ধরে নাড়াচ্ছে। আর একটু পর-পর মাথা নেড়ে-নেড়ে বলছে, ‘শেষ, সব শেষ, আমরা আটকা পড়ে গেছি এখানে। আমাদের অভিযান এখানেই শেষ!’
সাথে-সাথে সেলের ওপাশে অন্ধকারের ভেতর থেকে কে যেন মোটা কর্কশ গলায় টেনে-টেনে শব্দ করে উঠল। যেন মনে হচ্ছে উইলিয়ামের নাম ধরে ডাকার চেষ্টা করছে, কিন্তু ঠিকভাবে উচ্চারণ করতে পারছে না। ওরা দুইজনেই সেলের গেটের দিকে তাকাল। জ্যাকসন এসে দাঁড়িয়েছে ওদের সেলের সামনে!
‘জ্যাকসন! তোর জন্যেই অপেক্ষা করছিলাম এতক্ষণ,’ মুচকি হেসে বলল উইলিয়াম। ইথেন হা করে তাকিয়ে রইল। ও কিছুই বুঝতে পারছে না। জ্যাকসন একটা মৃদু ঘোঁত-ঘোঁত শব্দ করল যেন সে বলতে চাইছে যে দেরি করার জন্যে সে দুঃখিত।
এক ঝটকায় সেলের দরজা খুলে ফেলল জ্যাকসন। ওর কাছে যেন লোহার গ্রিলগুলো স্রেফ ম্যাচের কাঠি ছাড়া আর কিছুই নয়।
‘চল, যাওয়ার সময় হয়েছে,’ ইথেনের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলল উইলিয়াম।
‘উইলিয়াম আমি তো কিছুই বুঝতে...’ ইথেন অবাক হয়ে বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু তার আগেই উইলিয়াম কথা বলে উঠল। ‘যেতে-যেতে ব্যাখ্যা করবো। এখন আয়, আপাতত জাহাজের কাছেই চল। সেখানে বসেই পরবর্তি করণীয় ঠিক করবো।’ জ্যাকসন ঘোঁত-ঘোঁত করে একটা শব্দ করল। সম্ভবত বুঝালো যে দেরি করাটা ওর একদম পছন্দ হচ্ছে না।
অন্ধকার একটা টানেল দিয়ে হাঁটছে ওরা। বিন্দুমাত্র লাইটও নেই। ক্যাপ্টেনকে কোলে তুলে নিয়েছে জ্যাকসন। বেচারার এখনো জ্ঞান ফেরেনি। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ হাঁটতে-হাঁটতে ওরা একটা কর্নার ঘুরল এবং সামনেই আলো দেখতে পেল। আলো আসছে পাথরের খোলা দরজা দিয়ে। ওরা সেই দরজা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল। এই দরজাটা খুলেই নিশ্চয়ই জ্যাকসন একটু আগে ঐ টানেলের ভেতর গিয়েছিল, উইলিয়াম মনে-মনে ভাবল।
দরজা দিয়ে বেরিয়েই দেখল যে ওরা একটা ছোট রুমের ভেতর দাঁড়িয়ে আছে, রুমটার মেঝে মার্বেল পাথরের তৈরি। ওদের হাতের ডানে একটা টানেল, আর বামে আরেকটা টানেল। জ্যাকসন ওদেরকে পথ দেখিয়ে বামের টানেলের ভেতর নিয়ে গেল। টানেলটা ক্রমাগত ঢালু হয়ে নিচের দিকে নামছে। টানেল ধরে নিচে নামতে-নামতে ওরা একসময় পায়ের নিচে পানির স্পর্শ পেল। ছলাত-ছলাত শব্দ করে-করে সামনে এগোচ্ছিলো ওরা। বুকটা ঢিপ-ঢিপ করছিল। প্রতিমুহুর্তে একটাই আশংকা। এই না জানি অ্যাঙ্গুইসিয়া দেখে ফেলে ওদের। সামান্য শব্দেও ওরা কেঁপে-কেঁপে উঠছিল।
এরপর ওরা আরেকটা কর্নার ঘুরল এবং সাথে-সাথেই উইলিয়াম বুঝতে পারল যে ওরা কোথায় এসেছে। এটা পানিতে তলিয়ে থাকা সেই স্থান যেখান দিয়ে ওরা বুড়োটার সাথে অ্যাঙ্গুইসিয়ার কাছে গিয়েছিল। ঐ সময় ওরা যে টানেল ধরে এগিয়েছিল তার ডান পাশে আরেকটা টানেল ছিল। এতক্ষণ ঐ ডান পাশের টানেলেই ছিল ওরা।
বিশাল দরজাটা এক ধাক্কায় খুলে ফেলল জ্যাকসন। ওরা এখন সেই ব্রিজের উপর দিয়ে হাঁটছে, যার নিচে লাভা ফুটছে। হাঁটতে-হাঁটতে উইলিয়াম ভাবছিল যে হয় ওরা মাটির অনেক-অনেক নিচে আছে, অথবা একটা সুপ্ত আগ্নেয়গিরির ভেতর আছে, অথবা একটা বিশাল গুহার ভেতর আছে, যাকে আনুবিস তার নিজস্ব ক্ষমতায় আপন ভঙ্গিমায় সাজিয়েছে, এবং অবশ্যই, খুব ভয়ঙ্করভাবে...
‘আমি এখনো বুঝলাম না যে তুই কিভাবে জানলি জ্যাকসন আমাদেরকে বাঁচাতে আসবে?’
‘ব্যাপারটা পুরোটাই আমার আন্দাজ ছিল। আমার এখনো মনে আছে, প্রথমবার জ্যাকসন আমাকে ঘুষি দিতে গিয়েও কি মনে করে যেন থেমে গিয়েছিল। এরপর দ্বিতীয়বার যখন ঘুষি দিয়েছিল তখন ঘুষিটা আমার এক ইঞ্চি পাশ দিয়ে যায়। অথচ এতো কাছ থেকে ঘুষি মিস করার কথা নয় জ্যাকসনের। আমার কেন যেন মনে হচ্ছিল যে জ্যাকসন আমাকে ইচ্ছা করেই মারছিল না। শুধু অভিনয় করছিল।’
‘ব্যাপারটা আমি পুরোপুরি শিউর হলাম, যখন জ্যাকসন আমাকে দেয়ালে ধাক্কা দেয়ার সময় ইচ্ছা করেই একটা হাত আমার পিঠের পেছনে দিয়ে রেখেছিল। যাতে জোরে-জোরে আওয়াজ হলেও আমি খুব বেশি ব্যথা না পাই। ওর বিশাল শরীর দিয়ে পুরো দৃশ্যটাই সে অ্যাঙ্গুইসিয়ার কাছ থেকে ঢেকে রেখেছিল। আমার তখন বারবার মনে হচ্ছিল যে ও চাচ্ছে আমি যাতে অজ্ঞান হওয়ার ভান করি। আমিও তাই করলাম। তাছাড়া অ্যাঙ্গুসিয়া আমাদের সামনে আসার পর পরেই চাইলে আমাকে আর কুপারকে মেরে ফেলতে পারতো। কিন্তু মারেনি। উল্টো আমাকে সে বুড়োটা আর জ্যাকসনের সাথে মারামারি করতে দিয়ে অমানুষিক মজা নিচ্ছিল। তখনই আমি বুঝেছিলাম যে
সে আমাকে এত তাড়াতাড়ি মারবে না। আগে আমার চোখের সামনে আমার সব কাছের মানুষকে মারবে, এরপর সব শেষে আমাকে তীব্র কষ্ট দিয়ে মারবে।’
‘তাই আমি জানতাম যে, আমি অজ্ঞান হয়ে গেলেও অ্যাঙ্গুইসিয়া আমাকে সাথে-সাথে মেরে ফেলবে না। আমার জ্ঞান ফেরা পর্যন্ত সে অপেক্ষা করবে। তাই আমি রিস্কটা নিলাম, অজ্ঞান হওয়ার ভান করলাম। এরপর সে জ্যাকসনের মাধ্যমে আমাকে তুলে এই সেল এর ভেতর ছুঁড়ে দিল। ভেবেছিল, পরে আমাকে শায়েস্তা করবে। কিন্তু দেখ, কি কপাল ওর! ওরই প্ল্যান, ওরই উপর ব্যাকফায়ার করল,’ উইলিয়াম একগাল হেসে বলল।
‘পুরো ব্যাপারটা থেকে আমি একটা জিনিস শিখলাম, শুনবি?’ ইথেন চট করে বলল।
‘কি বল?’ উইলিয়াম জিজ্ঞেস করল।
‘শত্রুকে কখনও সেকেন্ড চান্স দিতে নেই, সময় থাকতেই তাকে খতম করে দিতে হয়,’ বলেই হাহা করে হাসা শুরু করে দিল ইথেন। সবাই একযোগে হাসা শুরু করে দিল। অন্য সবার সাথে-সাথে জ্যাকসনও নাক দিয়ে অদ্ভুত একটা ঘর-ঘর শব্দ করল যেটা হাসি না হয়েই যায় না।
ওরা প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে হাঁটার পর ওদের জাহাজের কাছে চলে এলো। ক্যাপ্টেনকে মাটিতে রাখল জ্যাকসন। উইলিয়াম জাহাজের দড়ি ধরে ঝুলতে-ঝুলতে ডেকের উপরে উঠে গেল। এরপর সোজা গেল ক্যাপ্টেনের কেবিনের দিকে। খানিকক্ষণ বাদে দেখা গেল সে একটা মসৃণ কাঠ নামিয়ে দিয়েছে নিচের ঢিবিটার উপর। ওটার উপর দিয়ে হেঁটে-হেঁটে সবাই ডেকে গিয়ে উঠল।
কুপারকে তার রুমের বিছানাতে শোয়ানো হয়েছে। উইলিয়াম ফার্স্ট এইড কিট থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ক্যাপ্টেন এর ক্ষত পরিষ্কার করে দিল। এরপর খুব সুন্দরভাবে একটা গজ ব্যান্ডেজ দিয়ে ওর মাথাটা বেঁধে দিল।
ঠান্ডা লাগছে সবার। মনে হচ্ছে যেন খুব দ্রুত তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। অথচ ঘণ্টাখানেক আগেও এতটা ঠান্ডা ছিল না জায়গাটাতে।
সবাই মিলে গোল হয়ে বসেছে ক্যাপ্টেন এর বিছানার পাশে। ওর জ্ঞান ফিরেছে আধা ঘণ্টা হলো। সবাই মিলে ওদের পরবর্তী পরিকল্পনা ঠিক করছে।
ব্যাপারটা খুব ইন্টারেস্টিং তাই না? আমরা ঐ স্থান থেকে মুক্তি পেলাম আরও দুই ঘণ্টা আগে। এখনো অ্যাঙ্গুইসিয়ার কোন পাত্তা নেই। সে কি এখনো জানে না যে আমরা বেরিয়ে গেছি ঐ স্থান থেকে?’ ইথেন সবার উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করল।
‘হুম। তবে আমি আপাতত অন্য একটা ব্যাপার নিয়ে ভাবছি। আমরা যখন এই স্থানে এলাম তখন কিন্তু জায়গাটার তাপমাত্রা এখনকার চেয়ে বেশি ছিল। কিন্তু এখন দেখ, হঠাত করেই যেন জায়গাটার তাপমাত্রা হু হু করে কমছে। তাপমাত্রা অবশ্য হ্রাস পেতেই পারে। হয়তো এখন বাইরের পৃথিবীতে রাত, তাই বাইরের ঠান্ডা বাতাস এই গুহাটার ভেতর এসে প্রবেশ করায় তাপমাত্রা কমে গেছে। কিন্তু সেটার দ্বারা তাপমাত্রার এতটা কমে যাওয়া ব্যাখ্যা করা যায় না। এটা একমাত্র সম্ভব যদি এই গুহাটার বাইরের স্থানটা হয় একটা মরুভূমি। কারণ, একমাত্র সেখানেই রাতের বেলা তাপমাত্রা হঠাত করে এতটা হ্রাস পেয়ে যায়,’ উইলিয়াম ভ্রু কুঁচকে ভাবতে-ভাবতে বলল।
‘আসলেই তো! এটা নিশ্চয়ই ইজিপ্ট!’ ইথেন চিৎকার করে উঠল।
‘হুম আসলেই ইজিপ্ট...অ্যাঙ্গুইসিয়ার কাছে যাওয়ার সময় আশেপাশের দেয়ালে হায়ারোগ্লিফ দেখেছি। আমি নিশ্চিত যে এটা ইজিপ্ট,’ উইলিয়াম বলল। প্রায় সাথে সাথেই ওর কপাল এর চামড়া ভাঁজ হয়ে এলো। কি যেন ভাবছে ও। হঠাত ও উত্তেজিত হয়ে চেঁচিয়ে উঠল।
‘পেয়েছি! পেয়েছি!’ উইলিয়াম চেঁচিয়ে উঠল।
‘কি পেয়েছিস?’ কুপার জিজ্ঞেস করল।
‘গুহাটা থেকে বেরোনোর রাস্তা!’ উইলিয়াম উত্তেজিত হয়ে নিজের হাতের উপর দড়াম করে কিল দিয়ে বলল।
‘কিভাবে পেয়েছিস?’ ইথেন জিজ্ঞেস করল।
‘অ্যাঙ্গুইসিয়া বলেছিল যে এই জায়গা থেকে বেরোনোর কোন রাস্তাই নেই। কিন্তু তাই যদি হয় তাহলে এই স্থানের তাপমাত্রা এত কমছে কিভাবে? ব্যাপারটা শুধুমাত্র তখনই সম্ভব যখন গুহার মুখ দিয়ে বাইরের ঠান্ডা বাতাস ভেতরে প্রবেশ করবে। সবচেয়ে বড় কথা কি জানিস? এখান থেকে বের হওয়ার যদি আসলেই কোন রাস্তা না থাকতো তাহলে আমরা ৫ মিনিটের ভিতরেই অক্সিজেনের অভাবে মারা যেতাম। অতএব এটা প্রমাণিত যে অ্যাঙ্গুইসিয়া মিথ্যা বলেছে আমাদেরকে। এই জায়গাটা থেকে অবশ্যই বেরোনোর রাস্তা আছে, এবং সেই রাস্তাটা কোন জায়গায় গিয়ে খোলে, সেটাও মনে হয় আমি ধরতে পারছি।’
‘তোর মনে আছে কুপার, সে আমাদেরকে কি বলেছে? সে বলেছিল যে আনুবিস যে রাতে ওকে গ্রামের মানুষদের হাত থেকে বাঁচিয়েছিল, সেই রাতের পর থেকেই সাপটাকে আনুবিস এই জায়গাটায় থাকতে দিয়েছিল। আর অ্যাঙ্গুইসিয়া দাবি করেছিল যে এরপর থেকে সে যখনই কোন বাচ্চাকে ঐ গুহাটার প্রবেশ পথে নিয়ে আসতো, তখন নাকি সে সাপটাকে ঐ গুহায় দেখতো না, কারণ সাপটা ঐ রাতের পর থেকে ঐ গুহায় থাকতো না। থাকতো এই স্থানে। এবং অ্যাঙ্গুইসিয়া ওকে ডাক দেয়া মাত্রই সে নাকি কিছুক্ষণের মাঝেই কোথা থেকে যেন ঐ গুহাটায় এসে হাজির হতো! হাহ! মঘের মুল্লুক নাকি! সাপটা কি আলাদিনের প্রদীপের জিনি, যে সে ওখানে না থাকার পরও ওকে ডাক দিলেই কিছুক্ষণের মাঝেই হাজির হয়ে যাবে? আসল কথা হচ্ছে যে সে আমাদের কাছ থেকে একটা তথ্য লুকাচ্ছিলো...’
‘কি তথ্য লুকাচ্ছিলো?’
‘এই গুহা থেকে বেরোনোর রাস্তা। দেখ, যদি এমন হয় যে এইটাই সেই গুহা, যেই গুহায় অ্যাঙ্গুইসিয়া বলির জন্যে আনা বাচ্চাদের হাত পা বেঁধে ছেড়ে দিতো, যেই গুহায় সাপটা থাকতো? হয়তো আনুবিস অনেক আগেও এই গুহাটা ব্যবহার করেছে মানুষকে শাস্তি দেয়ার জন্যে, এবং তর্কের খাতিরে আমি ধরে নিলাম যে তখন এখান থেকে বের হওয়ার আসলেই কোন রাস্তা ছিল না। তাহলে মানুষগুলো ক্ষুধা তৃষ্ণায় নয়, বরং অক্সিজেনের অভাবে মারা যেত। সে কিন্তু অক্সিজেনের অভাবে শ্বাস বন্ধ হয়ে মরার কথা বলেনি, ক্ষুধা তৃষ্ণায় মারা যাওয়ার কথা বলেছিল। আসলে আগের কথাগুলো মিথ্যা বললেও এটা সে সত্যিই বলেছে। আর এতগুলো যুক্তিযুক্ত কথা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে এই জায়গাটা থেকে বেরোনোর রাস্তা আগেও ছিল, এখনো আছে, আর সেই রাস্তাটা হচ্ছে সেই পাহাড়ের গুহাটার প্রবেশ পথ, যেখানে অ্যাঙ্গুইসিয়া বাচ্চাদের বলি দেয়ার জন্যে নিয়ে আসতো,’ উইলিয়াম ওর দীর্ঘ বক্তৃতা শেষ করল।
‘উরিব্বাস! এত কিছু তোর মাথায় কিভাবে ঘোরে? অ্যাঙ্গুইসিয়া যখন কথাগুলো বলছিল তখন সেখানে আমিও ছিলাম। কিন্তু আমি তো কিছুই ধরতে পারিনি। সে যদি আমার কানের কাছে কথাটা একশবারও বলতো, তাহলেও বোধ হয় আমি কানেকশানটা বুঝতে পারতাম না,’ বিস্মিত হয়ে বলল কুপার। সেই ছোটবেলা থেকে উইলিয়ামকে সে দেখছে। আর যতই দেখছে, ততই অবাক হচ্ছে। ছেলেটার মাথা সেই রকম খেলে। বিশ্লেষনী ক্ষমতা এক কথায় অসাধারণ।
‘কিন্তু সেই পথটা আমরা খুঁজে পাবো কিভাবে? এখানে কয়েকশ ছোট-বড় টানেল আছে। এতগুলা দেখার
সময় তো নেই,’ অল্প বয়সী এক নাবিক বলে উঠল। সে এতক্ষণ ধরে একটা কথাও বলেনি। বসে-বসে উইলিয়ামের বিশ্লেষণী ক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করেছে।
‘সেটাও বের করা অসম্ভব কিছু নয়। একটা সম্ভাবনা আমার মাথায় ইতিমধ্যেই উঁকি দিয়েছে। কিন্তু সেটা এখন বলবো না। আগে আরেকটু নিশ্চিত হয়ে নেই,’ উইলিয়াম জবাব দিল।
‘আচ্ছা, একটা কথা আমার মাথায় এখনো ঢুকছে না। বাকি দানবগুলো সব অ্যাঙ্গুইসিয়ার কথা শুনতে বাধ্য হলেও, জ্যাকসন কিন্তু ওর কথা শুনছে না। কেন?’ ইথেন জিজ্ঞেস করল।
‘এটা তো জ্যাকসনই আমাদেরকে বলতে পারবে, কি জ্যাকসন, বলবি না?’ উইলিয়াম জানতে চাইলো। জ্যাকসন আবারও ঘোঁত করে একটা শব্দ করল। দানবীয় ডিকশনারিতে এর অর্থ কি কে জানে।
‘বেচারার কণ্ঠস্বরকে আপাতত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, ও যখন সুস্থ হয়ে যাবে তখন সে নিজেই আমাদেরকে বলবে আশা করি,’ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল উইলিয়াম।
‘কিন্তু ব্যাপারটা এখুনি জানা জরুরী, কারণ আমাদের বাকি নাবিকদেরকেও অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে হবে। সেই জন্যেই এটা জানা জরুরী যে জ্যাকসন কিভাবে ঐ সবুজ জিনিসটার নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসলো,’ ইথেন বলল।
এক কাজ করেন, উনার হাতে একটা কলম ধরিয়ে দিন, একটা বড়-সড় খাতা দিন উনাকে, উনি লিখে ফেলুক উনার কাহিনী,’ মধ্যবয়সী এক নাবিক বলল। আইডিয়াটা খুব মনে ধরেছে জ্যাকসনের। একটু পরেই খুঁজে-খুঁজে একটা কলম আর একটা বেশ বড় খাতা এনে রাখলো মেঝেতে। জ্যাকসন কলমটা নিয়ে নাড়াচাড়া করে দেখলো প্রথমে। এরপর প্রথমে নিজের নাম লিখে দেখল, এত ছোট কলম দিয়ে লিখতে পারছে কি না। এরপর জ্যাকসন তার কাহিনী লেখা শুরু করল। সবাই গোল হয়ে জ্যাকসনের চারপাশে এসে ঝুঁকে পড়েছে। জ্যাকসন লিখে চলেছেঃ
‘সবুজ রঙের প্রাণীটা যখন আমার মুখের ভেতর ঢুকে গেল, এর পর পরেই আমি মাথায় খুব ভয়ানক একটা ব্যথার অনুভূতি টের পেলাম। মনে হচ্ছে যেন কিছু একটা আমার মাথার উপর চেপে বসেছে। আমাকে জোর করে নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু আমি তাকে টেনে সরিয়ে দিতে পারছি না। কারণ, সে আমার শরীরের ভিতরে ঢুকে বসে আছে। জিনিসটা যেই মুহুর্তে আমার ভেতরে ঢুকেছে ঠিক সেই মুহুর্ত থেকে আমার ভেতরের সমস্ত আশা, আকাঙ্খা
যেন কর্পুরের মত উবে গেল। প্রচণ্ড...প্রচণ্ড হতাশা আমাকে গ্রাস করল, বেঁচে থাকার কোন ইচ্ছাই ছিল না, আমার ভেতরের সমস্ত ইচ্ছা শক্তিকেই যেন সে শুষে নিয়েছিল।’
‘এরপর তো আমি ট্রান্সফরম হয়ে গেলাম। তারপর আনুবিস আমাদেরকে ডাকলো। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমি ওর প্রতিটা কথাই স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম। ও আমাদেরকে বলছিল যে আমরা ওর গোলাম, এবং চিরজীবন ওর গোলাম হয়েই আমাদেরকে থাকতে হবে, ও যা বলে শুনতে হবে, এবং এই অবস্থা থেকে আমাদের কোন মুক্তি নেই। এরপর সে আমাদেরকে বলল ঐ ঘুর্নির ভেতর লাফ দিতে। আমি লাফ দিতে চাইনি। কিন্তু বিশ্বাস করবি কিনা জানি না...কিছু একটা যেন আমাকে টেনে-টেনে ঐ ঘুর্নির ভেতর ফেলে দিল।’
‘এখানে আসার পর নিজের চোখে দেখলাম অসহায় নাবিকদেরকে কিভাবে ঐ দানবটা খেয়ে ফেলল। বিন্দুমাত্র মায়া নেই ওর ভেতরে। ও একটা পশু ছাড়া আর কিছুই না। আমি অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু কিছুই করতে পারলাম না। কারণ...ঐ জিনিসটা আমাকে ছাড়ছেই না। চিপে ধরে রেখেছে আমাকে। আমার মস্তিস্ককে।’
‘এরপর দেখলাম যে অ্যাঙ্গুইসিয়া ইথেনসহ আরো কয়েকজন নাবিককে না খেয়ে বন্দি করে রেখে দিল। ওর আসলে ক্ষিধেই ছিল না তখন। এরপর সে ইথেনকে বলল যে উইলিয়ামকে সে হত্যা করবে সবার শেষে। আর ইথেনকে হত্যা করবে উইলিয়ামের সামনেই। যাতে ওকে এই ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখতে হয়। যাতে উইলিয়াম মৃত্যুর আগে পাগল হয়ে যায়। সবচেয়ে কষ্ট দিয়ে মারবে উইলিয়ামকে, সেই জন্যেই ওকে মারবে সবার শেষে।’
‘এরপর সে বুড়োটার মৃত শরীরটাকে অদ্ভুত উপায়ে জীবিত করল। ওকে পাঠিয়ে দিল তোদেরকে পথ দেখিয়ে-দেখিয়ে ওর কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। আমাদের সাত জনকে সে একটা রুমে বন্দি করে রাখলো। আমি বুঝতে পারলাম যে এই সবুজ রঙের প্রাণীটার হাত থেকে নিজের শরীরের নিয়ন্ত্রণ না নিতে পারলে আমি, আমরা সবাই একসাথে মরবো। কিন্তু যদি একবার নিয়ন্ত্রণটা নিজের হাতে নিয়ে নিতে পারি, তাহলে এই বিশাল শরীরটাকে কাজে লাগিয়ে আমি নিজেই তোদেরকে মুক্ত করতে পারবো।’
এই পর্যন্ত লিখে জ্যাকসন একটু থামলো। হাত ব্যথা করছে ওর। হাতটা একটু মালিশ করে আবার লেখা শুরু করলঃ
‘এরপর আমি নিজের সমস্ত মানসিক শক্তি একত্র করলাম। জোর করে আমার নিয়ন্ত্রণ ঐ প্রাণীটার কাছ থেকে নিয়ে নিতে চাইলাম। সে উল্টো তারচেয়েও বেশি জোর খাটিয়ে আমাকে আঁকড়ে ধরে রাখলো। আমি শুনতে পেলাম যে সে আমাকে বোঝাচ্ছে, এইভাবে থাকলে আমি আজীবন সুখেই থাকবো, আনুবিসের গোলাম হতে পারার সৌভাগ্য সবার হয় না...আরও কিসব হাবিজাবি, কিন্তু আমি ওর কথা শুনলাম না। আরও জোর খাটালাম। কিন্তু কিছুতেই সে ছাড়ছিল না আমাকে। আমি তখন তোদের কথা ভাবলাম। আমার স্ত্রীর কথা ভাবলাম। আমার ছেলেমেয়েদের কথা ভাবলাম। ওরা আমার পথ চেয়ে বসে আছে। ওদের কাছে আমাকে যেতেই হবে। আর এই কথাগুলো ভাবার সাথে-সাথেই কোথা থেকে যেন প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির জোয়ার বয়ে গেল আমার ভেতরে। আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছা প্রবল হয়ে গেল। আর সাথে-সাথে মাথায় একটা ভোঁতা আর্তনাদ অনুভব করলাম। প্রাণীটা তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। আর থাকতে পারছে না আমার ভেতরে। আমার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে।’
‘কিন্তু এইবার আমি একটা রিস্ক নিলাম। ওকে বেরোতে দিলাম না। উল্টো ওকেই নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে দিলাম। কারণ, যেই মুহুর্তে সে বেরিয়ে আসবে, ঠিক সেই মুহুর্তেই আমি আবার ছোট হয়ে যাবো। তখন ঐ রুমে থাকা সব দানব আমাকে পিষে মেরে ফেলবে। তাছাড়া আমি তখন তোদেরকেও বাঁচাতে পারবো না। তোদেরকে বাঁচাতে হলে আমার এই বিশাল শরীর আর তার অসাধারণ ক্ষমতাটা লাগবে। ওকে আমি রেখে দিলাম আমার শরীরের ভেতরে। এখন সে আমাকে নয়, বরং আমিই ওকে নিয়ন্ত্রণ করি।’
জ্যাকসনের লেখা শেষ হলো। সবাই হতভম্ভ হয়ে দুই মিনিট চুপ করে রইলো। তারা বুঝতে পারছিল যে ওদের এখান থেকে বেরোনোর একমাত্র টিকেট, জ্যাকসন। ওদের সবার ভেতর আবার প্রাণের জোয়ার ফিরে এলো। বেঁচে থাকার আশা জ্বলজ্বল করে জ্বলতে লাগল ওদের ভেতরে।
To be continued........
āĻāϞ্āĻĒ āϏংāĻ্āϰāĻš āĻāϰা āĻāĻŽাāϰ āύেāĻļা। āϰোāĻŽাāύ্āĻিāĻ, āĻৌāϤিāĻ, āϰāĻŽ্āϝ, āĻৌāϤুāĻ āϏāĻš āĻšাāĻাāϰো āĻāϞ্āĻĒ āĻāĻে āĻāĻŽাāϰ āϏংāĻ্āϰāĻšে।
āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ā§Ģ āύāĻেāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§
3564 (6)
āĻāϰ āĻĻ্āĻŦাāϰা āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰা
Rahathossain1010100@gmail.com
āĻāĻ āϏāĻŽā§ে
⧧⧍:ā§Šā§Š AM

āĻāϤে āϏāĻĻāϏ্āϝāϤা:
āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝāĻুāϞি āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ (Atom)
āĻোāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāĻ:
āĻāĻāĻি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āĻ āĻāϰুāύ