āϰāĻŦিāĻŦাāϰ, ā§Ģ āύāĻ­েāĻŽ্āĻŦāϰ, ⧍ā§Ļā§§ā§­

3564 (8)

গল্পঃ দ্য সার্পেন্ট গডেস
লেখকঃ অচেনা গল্পের শেষ লাইন
চ্যাপ্টার ৮:দ্য আল্টিমেট সেক্রিফাইস .
জায়গাটা সামনের দিকে সমতল, ডানে আর বামে
কিছু উঁচু-উঁচু ঢিবি। কিছুদূর সামনেই একটা খাদ। সেই
খাদটা প্রায় ২০ মিটার এর মত চওড়া। খাদের অপরপাশে
ঠিক একই রকম একটা সমতল ভূমি। সেটার একদম শেষ
মাথায় একটা গোলাকার সিঁড়ি। সেটা ঘুরে সোজা
উপরের দিকে উঠে গেছে।
খাদটার ঠিক সামনেই চোখ বন্ধ করে হাত মুষ্ঠি বদ্ধ
অবস্থায় অদ্ভুত ভঙ্গিমায় শুন্যে দাঁড়িয়ে আছে
অ্যাঙ্গুইসিয়া। তার ডান পাশে একটু দূরে বসে আছে
ম্যাক্স।
‘তাহলে অবশেষে জায়গাটা খুঁজে পেলে উইলিয়াম?’
বিদ্রুপের স্বরে বলল অ্যাঙ্গুইসিয়া। ওর পিউপিল এবং
আইরিশবিহীন সম্পুর্ণ কালো চোখ দুটো খুলল অবশেষে।
‘হ্যাঁ অ্যাঙ্গুইসিয়া, আসতেই হলো। আমাদের যাওয়ার
রাস্তা ঠিক এদিকেই তো, তাই! তা এখন সরে দাঁড়াও,
তুমি আমাদের যাওয়ার রাস্তা ব্লক করে দাঁড়িয়ে
আছো,’ উইলিয়াম পাল্টা জবাব দিল।
হা হা করে হেসে উঠল অ্যাঙ্গুইসিয়া। ওর হাসিটা
ধীরে-ধীরে ভয়ঙ্কর হচ্ছে।
‘নাও সরে দাঁড়ালাম। যাও দেখি এবার,’ বলেই সরে এক
পাশে চলে গেল অ্যাঙ্গুইসিয়া।
কারোই মনে হচ্ছে সামনে যাওয়ার খায়েশ নেই।
উইলিয়াম এক পা এক পা করে খুব সাবধানে হেঁটে গেল
সামনের দিকে। খাদটার একদম কিনারায় এসে নিচের
দিকে তাকাল।
মাথা ঘুরে গেল উইলিয়াম এর। অনেক-অনেক গভীর
একটা খাদ। তার নিচেই ফুটন্ত লাভা। আনুবিসের আরেক
নিদর্শন। সাথে-সাথে পেছনে সরে এলো উইলিয়াম।
অ্যাঙ্গুইসিয়া আবার হাসা শুরু করে দিল। হাসির
কারণে ওর লম্বা কালো রঙের জিহ্বাটা বারবার বাইরে
বেরিয়ে আসছে।
‘কি হলো, ভয় পেয়ে গেলে নাকি? যাবে না?’
অ্যাঙ্গুইসিয়া জিজ্ঞেস করল।
‘তাহলে এই কারণেই গুহাটা থেকে কেউ বেরোতে
পারতো না...কারণ সবাই এই জায়গাটায় এসে আটকে
যেতো, সামনে যেতে পারতো না আর! এই কারণেই ক্ষুধা
তৃষ্ণায় মারা যেত সবাই,’ উইলিয়াম ধীরে-ধীরে বলল।
‘তোমাদের কপালেও ঠিক একই পরিণতি অপেক্ষা
করছে,’ হিসহিস করে বলল অ্যাঙ্গুসিয়া। বলার সময় ওর
লম্বা কালো জিহ্বাটা বারবার বেরিয়ে আসছিল। মনে
হচ্ছে যেন আর অপেক্ষা করতে রাজি না সে।
‘আমাদের পরিণতি নিয়ে ভাবতে হবে না তোমার।
তুমি তোমার পরিনতি নিয়ে ভাবো...ইডিয়ট ডাইনী...’
ইথেন চিৎকার করে উঠল।
ধপ করে সবগুলো মশাল নিভে গিয়ে জায়গাটাকে গাঢ়
অন্ধকারে নিমজ্জিত করে দিল। অল্প যেটুকু দেখা
যাচ্ছে, সেটুকু শুধুমাত্র ফসফোরেসেন্ট এর জন্যে। ওরা
সবাই ভয় পেয়ে দুই তিন পা পিছিয়ে এলো। শব্দ করে-
করে পা ফেলে অ্যাঙ্গুইসিয়া এগিয়ে আসছে ওদের
দিকে। ওর কালো চোখটা সরু হয়ে এলো। এরপর ইথেনের
দিকে এক হাত বাড়িয়ে হাতের মুষ্ঠী বদ্ধ করল সে। ইথেন
গলায় হাত দিয়ে গর-গর শব্দ করতে লাগল। ওর নিঃশ্বাস
আটকে আসছে।
‘ওকে ছাড় ডাইনী, তুই ওকে ছাড় এখুনি...’ এক বুড়ো
নাবিক চিৎকার করে উঠল।
বুম...
ঠিক যেন পারমানবিক বিস্ফোরণ হলো। নাবিকটার
দেহ খণ্ড-খণ্ড হয়ে মাংস আর রক্ত চারদিকে ছড়িয়ে
ছিটিয়ে পড়ল। রক্তে আশেপাশের সবার জামা ভিজে
গেছে। পোড়া মাংসের গন্ধে চারপাশ ভারী হয়ে
গেছে।
বিস্ফোরণের পুরো ধাক্কাটাই নাবিকটার উপর দিয়ে
গেছে। কিন্তু ওর কয়েক ফুটের মধ্যে যারা ছিলো ওরাও
চারপাশে ছিটকে পড়েছে। অ্যাঙ্গুইসিয়া এখন আর
হাসছে না। প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে ও। ইথেনকে
এখনও ছাড়েনি সে। ধীরে-ধীরে নীল হয়ে যাচ্ছে ইথেন।
সাথে-সাথে কোমরের খাপ থেকে তলোয়ার বের করে
অ্যাঙ্গুসিয়ার দিকে দৌড় দিল উইলিয়াম। ওর শরীর লক্ষ
করে সর্বশক্তি দিয়ে চালিয়ে দিল তলোয়ারটা। কিন্তু
এক সেকেন্ড এর ৩ ভাগের এক ভাগ সময়ের ভেতরেই
অ্যাঙ্গুইসিয়া গায়েব হয়ে গেল। সাথে-সাথে ইথেন
মাটিতে পড়ে গেল। খুব দ্রুত শ্বাস নিতে লাগল ও।
উইলিয়াম এদিক-ওদিক দেখছে। কোথায়
অ্যাঙ্গুইসিয়া?
‘উইলিয়াম...তোর পেছনে...,’ চেঁচিয়ে উঠল কুপার।
সাথে-সাথেই অন্ধের মত বাম পাশে লাফ দিল
উইলিয়াম। যা আছে কপালে।
ধুম...
প্রচণ্ড শব্দ হলো ঠিক আগেরবারের মত। উইলিয়াম ঠিক
যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সেখানকার মাটি ভেঙ্গে
সোজা খাদের ভেতরের লাভাতে গিয়ে পড়ল। হিসহিস
শব্দ করে কয়েক মিটার লাফিয়ে উঠল লাভাগুলো।
হঠাত অ্যাঙ্গুইসিয়া আর্তনাদ করে উঠল। উইলিয়াম
ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল। ওর ঠিক পেছনেই মধ্য আকাশে ভেসে
ছিল অ্যাঙ্গুইসিয়া। কিন্তু এবার ওকে আর কোন সুযোগ
না দিয়ে জ্যাকসন ওর গলাটা চিপে ধরেছে। গলার হাড়
ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করছে ওর।
ওয়াম...
জ্যাকসন উড়ে গেল বাম দিকে। যুদ্ধে এসে গেছে
ম্যাক্স। দানবীয় এক ঘুষিতেই জ্যাকসনকে কাত করে
দিয়েছে ও। জ্যাকসন মাটি থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে
ততক্ষণে। ম্যাক্স জ্যাকসনের দিকে তাকিয়ে বিশাল এক
হুঙ্কার দিয়ে সোজা ধেয়ে এলো। দুই দানবই একে অপরের
দিকে তীব্র বেগে ধেয়ে আসছে।
বুম...
দুই দানবই একই সাথে এক জন আরেকজনের মুষ্ঠী বদ্ধ
হাতে ঘুষি মেরেছে। ফল হলো ভয়াবহ। প্রচণ্ড এক ওয়েভ
তৈরি হলো। আশেপাশের যারা আছে তারা সবাই
ছিটকে পড়ল। শুধু অ্যাঙ্গুসিয়া ছাড়া। অদ্ভুতভাবে
নিজের মুখের সামনে হাত দুটো ক্রশ আকারে দিয়ে
রেখেছে ও। পুরো গুহাটা কেঁপে উঠল। সিলিং থেকে
মাটি খসে-খসে পড়ছে।
নাবিকরা দেখল এই সুযোগ। সবাই মিলে একসাথে গুলি
করল অ্যাঙ্গুইসিয়াকে। গুলির শব্দে চারপাশ কেঁপে উঠল।
কিন্তু অ্যাঙ্গুইসিয়া ওখানে নেই! কোথায় ও? সবাই
ওকে খুঁজতে লাগল। কিন্তু যায়গাটা বেশ অন্ধকার।
ভালোভাবে দেখাও যাচ্ছে না।
হঠাত সবার পেছনে পড়ে থাকা এক নাবিক আর্তনাদ
করে উঠল। সবাই ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল সেদিকে।
অ্যাঙ্গুইসিয়া ওর গলাটা চিপে ধরে ওকে শুন্যে তুলে
নিয়েছে। এরপর ওকে নিয়ে ভাসতে-ভাসতে সোজা
কয়েক ফুট উপরে উঠে গেল। এরপর ওরা নিজেদের চোখের
সামনে খুব ভয়ঙ্কর এক দৃশ্য দেখল।
অ্যাঙ্গুইসিয়ার কালো রঙের জিহ্বাটা ধীরে-ধীরে
বেরিয়ে আসছে ওর মুখ থেকে। নাবিকটা প্রচণ্ড ভয়ে
থরথর করে কাঁপছে আর জিহবাটার দিকে তাকিয়ে
আছে। জিহ্বাটা হঠাত লম্বাটে আকার ধারণ করল। ওটার
আগায় একটা চোষক এর মত তৈরি হলো। চোষকের ভেতর
থেকে কাঁটা বেরিয়ে এলো একটা। ওটা দেখে সাথে-
সাথে নাবিকটা বিকট একটা চিৎকার দিয়ে উঠল। কিছু
বুঝে উঠার আগেই ধুপ করে ওটা বসে গেল নাবিকটার
গলায়। অ্যাঙ্গুইসিয়া শুষে নিতে লাগল ওর সমস্ত রক্ত।
নাবিকটা মৃত্যু ভয়ে কেঁদে দিল।
‘জলদি ওটাকে নামাও ওখান থেকে, শুট হার, কুইক...’
উইলিয়াম আর কুপার একসাথে চেঁচিয়ে উঠল।
ধুম, ধুম, ধুম...
পরপর অনেকগুলো গুলি ছুটে এলো অ্যাঙ্গুইসিয়ার
দিকে। কিন্তু অ্যাঙ্গুইসিয়া এত দ্রুত মুভ করল যে ওরা
চোখেও দেখল না ওকে। নাবিকটাকে এক হাতে ধরে
রেখেছে সে আগের মতই। এখনো শুষে যাচ্ছে ওর রক্ত।
আবারও পাগলের মত গুলি চালাল ওরা। আবারও অদৃশ্য
হয়ে গেল অ্যাঙ্গুইসিয়া। এবার গিয়ে দাঁড়াল ওদের ঠিক
পেছনের দিকে। উইলিয়াম ওর শটগান থেকে আরেকটা
গুলি চালাল। অ্যাঙ্গুইসিয়ার শরীর ভেদ করে ওপাশের
দেয়ালে গিয়ে বিঁধল গুলিটা। যেন ওর পুরো শরীরটাই এক
সেকেন্ড এর জন্যে ট্রান্সপারেন্ট হয়ে গিয়েছে। ও
ট্রান্সপারেন্ট হয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই নাবিকটা ওর
হাত থেকে পড়ে গেল। প্রায় মাটিতে এসে পড়েছে
নাবিকটা...এখুনি ভয়ানকভাবে মাটিতে ধাক্কা খাবে
সে...
চোখের পলকেই উড়ে এলো অ্যাঙ্গুইসিয়া। নাবিকটা
মাটিতে পড়ার ঠিক আগ মুহুর্তেই বাজ পাখির মত এক
হাতে লুফে নিলো ওকে। এরপর সোজা নিয়ে চলে গেল
অন্ধকার কোণার দিকে। এরপর আবারও শুষে নিতে লাগল
ওর সমস্ত রক্ত।
এদিকে ওদের গুলি ফুরিয়ে আসছে। ওরা বুঝল, গুলি
করে আসলেই আর লাভ নেই। যা হবার তা এতক্ষণে হয়ে
গেছে। ওদের আর কিছুই করবার নেই।
ধীরে-ধীরে চকের মত সাদা হয়ে গেল নাবিকটা। ওর
চোখ দিয়ে শেষ একটা অশ্রুবিন্দু গড়িয়ে পড়ল মাটিতে।
এরপরেই ওর হাত নেতিয়ে পড়ল। মারা গেছে ও।
চোষকটা মুখের ভেতর গুটিয়ে নিয়েছে অ্যাঙ্গুইসিয়া।
ওর মুখের এখানে সেখানে নাবিকটার রক্ত লেগে আছে।
এক হাতে নাবিকটার মৃত দেহটাকে উপরে উঠালো ও।
এরপর প্রচণ্ড জোরে একটা চিৎকার করে সোজা ছুঁড়ে
দিল খাদের দিকে। খড় কুটোর মত উড়ে যাচ্ছে মৃত
দেহটা। এরপর কাটা গাছের মত খাদটার ভেতর পড়ে
গেল। লাভাগুলো আবারও হিস হিসিয়ে উঠলো। যেন
অনেক দিনের ক্ষুধার্ত জানোয়ার ওগুলো। শিকারকে
পেয়ে খুব খুশি।
ওদিকে দানব দুইটার সেদিকে খেয়াল নেই। প্রচণ্ড
আক্রোশ নিয়ে ওরা একজন আরেকজনের উপর ঝাঁপিয়ে
পড়েছে। জ্যাকসনকে মারতে-মারতে রক্তাত করে
ফেলেছে ম্যাক্স। এই বিশালদেহী দানবের সাথে
জ্যাকসনও পারছে না। ম্যাক্স এরও কপালে আর মুখে রক্ত
লেগে আছে। কিন্তু সেটা জ্যাকসনের তুলনায় কিছুই না।
জ্যাকসনের কাঁধ চিপে ধরে ওকে সর্ব শক্তি দিয়ে
চাপ দিল ম্যাক্স। ধুপ করে হাঁটু গেড়ে মাটিতে পড়ে গেল
জ্যাকসন। মাথাটা দুর্বলভাবে দুলছে ওর। যেন ওর আর
কিছুই করার শক্তি নেই। ঐ অবস্থাতেই জ্যাকসনকে
একের পর এক ঘুষি মেরে চলেছে ম্যাক্স। প্রতিটা ঘুষির
সাথে-সাথে জ্যাকসনের রক্ত এদিক-ওদিক
বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ছে। কিন্তু ম্যাক্স
এর সেদিকে কোন নজর নেই। জ্যাকসনের রক্তে হাত
ভিজে গেছে ওর। এরপরও প্রচণ্ড আক্রোশে জ্যাকসনকে
একের পর এক ঘুষি মেরেই চলেছে সে।
হঠাত অবিশ্বাস্য দ্রুততায় ম্যাক্স এর হাতটা ধরে
ফেলল জ্যাকসন। এরপর ওর অপর হাতটাও ধরলো শক্ত
করে। দানবদেরকে বোঝা আসলেই অনেক কঠিন। ওদের
অবিশ্বাস্য শক্তির হয়তো আসলেই কোন সীমারেখা
নেই!
নিজের গায়ের সর্বশক্তি প্রয়োগ করল জ্যাকসন।
ধীরে-ধীরে মাটি থেকে উঠে আসছে ও। এরপর প্রচণ্ড
জোরে একটা গর্জন করে ম্যাক্সকে দুই হাতে তুলে কোমর
সমান উচ্চতায় লাট্টুর মত শুন্যে ঘুরালো কয়েকবার। এরপর
পশুর মত আরেকটা গর্জন করে ওকে ছুঁড়ে ফেলে দিল
গুহাটার দেয়ালের দিকে।
ধুম...
যেন একটা বিস্ফোরন হলো। গুহার দেয়ালটা ভয়ঙ্কর
শব্দ করে ভেঙ্গে পড়লো ম্যাক্স এর গায়ের উপর। দৌড়ে
গেল জ্যাকসন। মাটিতে পড়ে থাকা ম্যাক্সকে দানবীয়
আক্রোশে একের পর এক ঘুষি মারতে লাগল। ততক্ষণে
অচেতন হয়ে গেছে ম্যাক্স। কিন্তু সাধ মেটেনি
জ্যাকসনের। আরও বার কয়েক ঘুষি মেরে হাতটা ম্যাক্স
এর রক্তে একদম রক্তাক্ত করে ফেলল। এরপর ম্যাক্সকে
শেষ বারের মত ধড়াম করে একটা ঘুষি মেরে উঠে
দাঁড়ালো।
এরপর সোজা তেড়ে এলো অ্যাঙ্গুইসিয়ার দিকে।
অ্যাঙ্গুইসিয়া জ্যাকসনের উন্মত্ত রুপ দেখে কয়েক পা
পিছিয়ে এলো। ভয় পেয়েছে ও। জ্যাকসন ওর বিশাল সবুজ
হাতটা বাড়িয়ে ঘুষি চালাল অ্যাঙ্গুইসিয়ার শরীর
বরাবর। কিন্তু সাথে-সাথে অ্যাঙ্গুইসিয়া সরে গেল।
রেগে-মেগে আবার ঘুষি চালাল জ্যাকসন। আবারও
অনেক আগেই সরে গেল অ্যাঙ্গুইসিয়া। বারবার জ্যাকসন
পাগলের মত ঘুষি চালাচ্ছে আর প্রত্যেকবারই অনেক
আগেই সরে যাচ্ছে অ্যাঙ্গুইসিয়া। ওর অসম্ভব দ্রুত গতির
কাছে জ্যাকসন বারবার ধরা খেয়ে যাচ্ছে। রাগে,
দুঃখে মাটিতে ঘুষি দিতে লাগল জ্যাকসন। মাটিতে
মাঝারি আকারের একটা গর্ত হয়ে গেল।
হঠাত কোনরূপ আগাম বার্তা না দিয়ে জ্যাকসন
অবিশ্বাস্য দ্রুততায় ঘুরে আরেকটা ঘুষি মেরে দিল ঠিক
অ্যাঙ্গুইসিয়ার বরাবর। এবার গায়েব হয়ে গেল
অ্যাঙ্গুইসিয়া। কিন্তু পরমুহুর্তেই ফিরে এলো সে।
জ্যাকসনের ঠিক পেছনেই মধ্য আকাশে ভাসছে
অ্যাঙ্গুইসিয়া। জ্যাকসন ঘাড় ঘুরালো।
বুম...
প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হলো। উইলিয়াম ভয়ে চোখ বন্ধ করে
ফেলল। ওর মনে পড়ে গেল যে বুড়ো নাবিকটা কিভাবে
বিস্ফোরণের ধাক্কায় শত-শত টুকরোয় ভাগ হয়ে
গিয়েছিল।
চোখ খুললো উইলিয়াম। মুখের উপর ক্রশ এর মত করে
দুহাত দিয়ে মাটিতে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে জ্যাকসন।
বিস্ফোরণটা ওকে এক চুলও নড়াতে পারেনি।
‘জানোয়ার! তোকে দেখে নেব আমি...’ প্রচণ্ড
বিরক্তিতে কঁকিয়ে উঠল অ্যাঙ্গুইসিয়া।
গালি খেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে গেল জ্যাকসন। সোজা লাফ
দিল আকাশের দিকে। মধ্য আকাশেই লুফে নিলো
অ্যাঙ্গুইসিয়াকে। এরপর সোজা ছুঁড়ে দিল গুহার
দেয়ালের দিকে। আবারও একটা ছোট-খাট বিস্ফোরন
হলো। অ্যাঙ্গুইসিয়া উড়ে গিয়ে গুহার দেয়ালে ধাক্কা
খেলো। গুহার মাটির দেয়াল ভেঙ্গে ওর গায়ের উপর
পড়ে ওকে চাপা দিয়ে দিল।
‘জ্যাকসন, সময় নেই, ও উঠে পড়ার আগেই ওকে লাভার
ভেতর ফেলে দে...জলদি...’ চিৎকার করে উঠল ইথেন।
জ্যাকসন এক দৌড়ে ধ্বংসস্তূপের কাছে পৌঁছে গেল।
বড়-বড় মাটির দলা সরিয়ে অ্যাঙ্গুইসিয়াকে তুলে নিলো
সেখান থেকে। এরপর সোজা দৌড় দিলো খাদের দিকে।
খাদের কাছাকাছি এসে লক্ষ্য স্থির করে ছুঁড়ে দিল
অ্যাঙ্গুইসিয়াকে। পড়ে যাচ্ছে...দ্রুত পড়ে যাচ্ছে
অ্যাঙ্গুইসিয়া। আর মাত্র কয়েক মিটার দূরত্বে আছে
লাভা...ওগুলো যেন ওরই অপেক্ষায় আছে...
ঝট করে চোখ খুলে গেল ওর। চোখের নিমিষেই উধাও
হয়ে গেল। এরপর কিছু বুঝে উঠার আগেই সোজা এসে
দাঁড়ালো জ্যাকসনের পেছনে। জ্যাকসন ততক্ষণে
অ্যাঙ্গুইসিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে খাদের উল্টো
দিকে উইলিয়ামদের কাছে ফিরে যাচ্ছিল।
‘জ্যাকসঅঅঅঅন...সাবধাআআআআন...’ পুরো শক্তি
দিয়ে চেঁচিয়ে উঠল উইলিয়াম। ওরা কেউ কল্পনাও করতে
পারেনি যে অ্যাঙ্গুইসিয়া আবার ফিরে আসবে।
বুম...
যেন অনেকগুলো বোমার বিস্ফোরণ হয়েছে। জ্যাকসন
প্রস্তুত ছিল না এবার। বিস্ফোরণের ধাক্কায় সোজা
উড়ে গেল গুহার অপরদিকে...খুব জোরে ঐ পাশের
দেয়ালে আঘাত করল। এরপর জ্ঞান হারাল।
সাথে-সাথে সবাই এক সাথে ধেয়ে এলো
অ্যাঙ্গুইসিয়ার দিকে। একের পর এক গুলির শব্দ আর
তলোয়ারের ঝলকানিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠল।
এই মুহুর্তে একই সাথে ৮ জনের সঙ্গে লড়াই করছে
অ্যাঙ্গুইসিয়া। কিন্তু ওরা এত জন মিলেও ওর কিছুই
করতে পারছে না। এত দ্রুত সে চলাফেরা করছে যে ওর
মুভমেন্টই চোখে দেখছে না ওরা। একবার এখানে, তো
তার ঠিক পরমুহুর্তেই আবার অন্যখানে। এক জায়গায়
বেশিক্ষণ থাকছেও না।
হঠাত সে আবার গায়েব হয়ে গেল ওদের চোখের
সামনে থেকে। সাথে-সাথেই আবার ফিরে এলো
একমুহুর্তের জন্যে অসাবধান হওয়া ক্যাপ্টেন এর সামনে।
গলা চিপে ধরলো ওর। সাথে-সাথে উইলিয়ামের শটগান
থেকে একটা গুলি বেরিয়ে এলো। আবারও গায়েব হয়ে
গেল অ্যাঙ্গুইসিয়া।
এবার কোথায় শয়তানটা? এদিক ওদিক খুঁজেও ওকে
পেল না উইলিয়াম।
ঠিক সেই মুহুর্তেই গলায় প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হলো। কেউ
একজন ওকে পেছন থেকে চেপে ধরেছে। শ্বাসনালিতে
প্রচণ্ড চাপ পড়ছে। মনে হচ্ছে যেন এখুনি ফেটে যাবে।
ছটফট করতে লাগল উইলিয়াম। কিন্তু আক্রমণকারীর
গায়ে পশুর মত শক্তি। উইলিয়ামের কানে এলো নরম
হিসহিস শব্দ। এখুনি হয়তো ওর চোষকটা বসিয়ে দেবে
উইলিয়ামের গলায়। শুষে নেবে ওর সমস্ত রক্ত।
পেছন থেকে লাফ দিয়ে অ্যাঙ্গুইসিয়ার গলা চিপে
ধরলো ইথেন। অ্যাঙ্গুইসিয়া গড়-গড় শব্দ করে উঠল।
সাথে-সাথে প্রচণ্ড একটা বাতাস যেন ধাক্কা দিল
ইথেন আর উইলিয়ামকে। দুই জনেই ছিটকে পড়ল দুই দিকে।
‘লাভ নেই উইলিয়াম, আমাকে মারতে পারবে না
তোমরা। কিছুতেই না...’ অ্যাঙ্গুইসিয়া চিৎকার করে
উঠল।
এক নাবিক তলোয়ার উঁচিয়ে উন্মত্ত চিৎকার করতে-
করতে অ্যাঙ্গুইসিয়ার দিকে ছুটে এলো। তলোয়ারের
সামনের দিকটা অ্যাঙ্গুইসিয়ার পেটে ঢুকিয়ে দিল
হাতলসহ। কিন্তু ও একটু দেরি করে ফেলেছে।
অ্যাঙ্গুইসিয়া তার ঠিক আগ মুহুর্তেই নিজেকে
ট্রান্সপারেন্ট করে ফেলেছে। ভয়ঙ্কর একটা হাসি
উপহার দিল সে নাবিকটার দিকে তাকিয়ে। সে হাসি
দেখে ভয়ে গায়ের লোম দাড়িয়ে গেল নাবিকটার।
মুহুর্তেই চোষক বেরিয়ে এলো অ্যাঙ্গুইসিয়ার মুখ
থেকে। কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই চোষকের মুখে
লাগানো কাঁটাটা সোজা নাবিকটার গলার রক্তনালির
এক পাশ দিয়ে ঢুকিয়ে আরেক পাশ দিয়ে বের করল সে।
প্রচণ্ড এক টানে ছিঁড়ে ফেলল ওর রক্তনালী। তাজা রক্ত
ছিটকে এসে ওর মুখে পড়ল। এরপর সোজা মুখ ঢুকিয়ে দিল
ঐ নাবিকের গলায়। অদ্ভুতভাবে শব্দ করে-করে টেনে
নিতে লাগল ওর সমস্ত রক্ত।
এরপর নাবিকটাকে এক হাতে শুন্যে উঁচিয়ে ধরলো,
সোজা নিয়ে চলল খাদটার ঠিক উপরে। এরপর ওর মাথা
লক্ষ্য করে ওর অপর হাতটা ছুরির মত সাঁই করে চালিয়ে
দিল। সাথে-সাথে নাবিকটার মাথাটা উড়ে গিয়ে
সোজা পড়লো লাভার ভেতরে। উত্তপ্ত লাভা গলিয়ে
দিল ওর কাটামুন্ডুটাকে। এরপর ওর ধড়হীন শরীরটাকে
সোজা ছুঁড়ে দিল নিচে। উত্তপ্ত লাভার ভেতরে হারিয়ে
গেল অসহায় নাবিকের শরীরটা।
নাবিকরা সবাই পালাতে শুরু করেছে ততক্ষণে। ওরা
দরকার হলে ক্ষুধা তৃষ্ণায় মরবে, কিন্তু এই রকম ভয়াবহ
মৃত্যু কেই বা চায়?
সাথে-সাথে দরজার মুখে এসে দাঁড়াল অ্যাঙ্গুইসিয়া।
নাবিকরা ওকে দেখে থর-থর করে কাঁপতে লাগল। উল্টো
দিকে দৌড় লাগাল সবাই। চোখের নিমিষেই দুই জন
নাবিককে দুই হাতে ধরে মধ্য আকাশে তুলে ফেলল
অ্যাঙ্গুইসিয়া। এরপর কোন ভ্রুক্ষেপ না করেই সোজা
ছুঁড়ে দিল খাদের দিকে। লাভার ভেতর হারিয়ে গেল
আরও দুই জন হতভাগা নাবিক। এ দৃশ্য দেখে বাকি দুইজন
আরও ভয় পেয়ে যে যেদিকে পারে সেদিকে দৌড়াতে
শুরু করল। পালাতে থাকা নাবিকদের মধ্য থেকে আরও
এক নাবিককে তুলে নিলো অ্যাঙ্গুইসিয়া। এরপর চোখের
নিমিষেই ওর শরীরটাকে শুন্যে তুলে নিলো সে। মৃত্যু
ভয়ে প্রচণ্ড ছটফট করছে নাবিকটা। কিন্তু অ্যাঙ্গুইসিয়া
একটুও দয়া দেখাল না। এক হাতে ওর মাথা আর
অপরহাতে ওর কোমর ধরে ওকে মধ্য আকাশেই মট-মট করে
ভেঙ্গে ফেলতে লাগল। পশুর মত চেঁচাচ্ছে লোকটা।
কিন্তু নিষ্ঠুর শিরিশিরে হাসি দিয়ে যাচ্ছে
অ্যাঙ্গুইসিয়া।
বাকিদের বিস্ফারিত চোখের সামনেই লোকটার
শরীরটাকে ভেঙ্গে ফেলল ডেমি গডেস অ্যাঙ্গুইসিয়া।
এরপর ভাঙ্গা অংশ দুইটিকে দুই হাতে ধরে সোজা ছুঁড়ে
দিল উত্তাল লাভার ভেতরে।
উইলিয়াম ওর তলোয়ার নিয়ে সোজা তেড়ে এলো
অ্যাঙ্গুইসিয়ার দিকে। এতগুলো ভয়ঙ্কর মৃত্যু দেখার পর
মাথা আর কাজ করছে না ওর। তলোয়ারটা সোজা
অ্যাঙ্গুইসিয়ার ঘাড় লক্ষ্য করে চালিয়ে দিল ও।
তলোয়ারটা সোজা ওর গলার ভেতর দিয়ে বেরিয়ে
গেল। একটুও আঁচড় ফেলতে পারলো না।
‘আমি তোমাকে আবারও বলছি উইলিয়াম, চেষ্টা করে
লাভ নেই। আমাকে হত্যা করা দূরে থাক, আমার গায়ে
আঁচড় ও ফেলতে পারবে না তুমি,’ হিসহিস করে বলল
অ্যাঙ্গুইসিয়া। ‘এখনও তুমি যথেষ্ট স্ট্রং আছো দেখছি।
বাকিদের মতো ভেঙ্গে পড়নি। কেন উইলিয়াম, কেন?
আমি চাই তুমি এসব দেখে মাটিতে পড়ে মাথা কুটবে।
চিৎকার করবে, চেঁচামেচি করবে। আমার কাছে আকুতি
জানাবে তোমাকে ক্ষমা করে দেয়ার জন্যে। কেন
করছো না তুমি এমন? কেন...’
ভয়ঙ্করভাবে চিৎকার দিয়ে-দিয়ে কথাগুলো বলছিল
অ্যাঙ্গুইসিয়া। ওর প্রতিটি কথা সিলিঙে প্রতিধ্বনিত
হচ্ছিল। ভয়ঙ্কর ক্ষেপে গেছে সে।
‘আর কয়জনকে ভয়ানকভাবে হত্যা করলে তুমি ভয়
পাবে উইলিয়াম, আর কয়জন নাবিকের শরীরকে দুমড়ে-
মুচড়ে ভেঙ্গে ফেললে তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাইবে
উইলিয়াম? বল?’ ঘৃণাভরা দৃষ্টিতে উইলিয়ামকে দেখতে-
দেখতে বলল অ্যাঙ্গুইসিয়া।
‘সম্ভবত, তোমার খুব কাছের কেউ মারা যায়নি বলেই
তুমি এখনো এতোটা শক্ত আছো উইলিয়াম। চল তাহলে,
দেখি যে খুব কাছের কেউ মারা গেলে উইলিয়াম দ্য
গ্রেট এর কি অবস্থা হয়,’ বলেই মুখটা একটু বাঁকিয়ে
ভ্রুকুটি করল উইলিয়ামের দিকে তাকিয়ে।
পরমুহুর্তেই ইথেন আর কুপার দুইজনেই শুন্যে উঠে গেল।
অদৃশ্য কিছু একটা যেন ওদের গলা চিপে ধরেছে। প্রচণ্ড
হাঁসফাঁস করছে ওরা। হাওয়ায় ভাসতে-ভাসতে ইথেনের
দিকে এগিয়ে যাচ্ছে অ্যাঙ্গুইসিয়া। ওর খোলা মুখ
দিয়ে লম্বাকৃতির জিহ্বাটা বেরিয়ে এসেছে। চোষকটা
প্রায় ইথেনের গলার কাছাকাছি চলে এসেছে...
‘নাআআআআআ...অ্যাঙ্গুইসিয়া...প্লিজ স্টপ ইট! আমি
আর সহ্য করতে পারছি না! আর দেখলে আমার মাথা
ফেটে যাবে,’ মাথা চেপে ধরে হাঁটু গেড়ে মাটিতে পড়ে
গেল উইলিয়াম। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল ও।
চোষকটা মাঝ পথেই থেমে গেল। অ্যাঙ্গুইসিয়া ঘাড়
ঘুরিয়ে উইলিয়ামের দিকে তাকাল। আত্মতৃপ্তির একটা
হাসি ফুটে উঠল ডেমি গডেস এর মুখ দিয়ে। সাথে-সাথেই
কাটা গাছের মত মাটিতে পড়ে গেল ইথেন আর কুপার।
ওরা মাটিতে পড়ে যেতেই আরও জোরে-শোরে কেঁদে
উঠল উইলিয়াম, ‘না, প্লিজ অ্যাঙ্গুইসিয়া, ওদেরকে
ছেড়ে দাও, ওরা কোন দোষ করেনি। পুরো আইডিয়াটা
আমারই ছিল। আমিই তোমার সমাধি অপবিত্র করেছি।
আমাকে ক্ষমা করে দাও দেবী! আমি বুঝতে পারিনি
তোমার কত ক্ষমতা। ক্ষমা করো দেবী, ক্ষমা করো
আমাকে। প্লিজ...আর নিতে পারছি না, সহ্য করতে
পারছি না, আর এসব দেখতে পারছি না...’
অ্যাঙ্গুইসিয়ার হাসি ধীরে-ধীরে চওড়া হচ্ছে। খুব
মজা পাচ্ছে পুরো ব্যাপারটায়।
‘আমি আর এসব দেখতে পারবো না, আমি মৃত্যু চাই,
মৃত্যু! আমাকে মৃত্যু দাও হে ডেমি গডেস...হে মহা
শক্তিশালী সারপেন্ট গডেস...আমাকে হত্যা করে এই
তীব্র মানসিক যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দাও, প্লিজ, হাত
জোড় করি তোমার কাছে,’ দু হাত জোড় করে বলল
উইলিয়াম।
‘তাহলে...অবশেষে...আমি উইলিয়াম দ্য গ্রেটকে
মানসিকভাবে ভেঙ্গে ফেলতে পেরেছি। আমারই জয়
হলো শেষমেশ,’ আত্মতৃপ্তির হাসি দিয়ে বলল
অ্যাঙ্গুইসিয়া।
‘হ্যাঁ দেবী, তুমিই জিতেছো, আমি হেরেছি...এখন
আমার শেষ অনুরোধটা রাখো প্লিজ,’ উইলিয়াম চোখ
মুছতে-মুছতে বলল।
‘অবশ্যই মাই ডিয়ার উইলিয়াম, বলে ফেল,’ ক্ষুধার্ত
দৃষ্টিতে উইলিয়ামকে দেখতে-দেখতে বলল
অ্যাঙ্গুইসিয়া।
‘আমি নাবিকদের মত ভয়ঙ্করভাবে মরতে চাই না।
আমি অমর হতে চাই। তুমি তোমার ভেতর আমাকে শুষে
নাও। তোমার সেই ভয়ঙ্কর সর্প আকৃতি ধারণ করো।
আমাকে তোমার ভেতর নিয়ে নাও। আমি তোমার
অস্তিত্বের সাথে এক হয়ে থাকতে চাই। অমর হয়ে
থাকতে চাই আমি,’ উইলিয়াম বলল।
অ্যাঙ্গুইসিয়া চোখ পিটপিট করে ভাবছিল
উইলিয়ামের অদ্ভুত অনুরোধের কথা।
‘ভেবে দেখ অ্যাঙ্গুইসিয়া। আমি কোন সাধারণ মানুষ
নই, আমার বুদ্ধিমত্তা সাধারণ মানুষের চেয়েও অনেক-
অনেক উপরে। আমার ভেতর এমন জ্ঞান আছে যা তুমি
কখনও স্বপ্নেও ভাবতে পারবে না। তোমার শক্তি আর
আমার বুদ্ধি এই দুয়ে মিলে তোমার তুল্য আর কেউ থাকবে
না এ ধরণীতে! ভেবে দেখ অ্যাঙ্গুইসিয়া, ভেবে
দেখো...’ অ্যাঙ্গুইসিয়ার সামনে মাথা নত করে বলল
উইলিয়াম।
অ্যাঙ্গুইসিয়া মাথাটা এদিক ওদিক দুলিয়ে কি যেন
ভাবল। জিহ্বাটা দিয়ে গালটা চাটল কিছুক্ষণ।
‘তুমি আসলেই খুব বুদ্ধিমান উইলিয়াম। বাকিদের মত
করুণভাবে মরার চেয়ে আমার অস্তিত্বের সাথে মিশে
গিয়ে অমর হয়ে থাকাটাই বেশি বুদ্ধিমানের কাজ, এটা
তুমি ধরতে পেরেছ। ঠিক আছে উইলিয়াম। আমি তোমার
শেষ অনুরোধটা রাখলাম। দেখ...মুখ তুলে
তাকাও...আমাকে দেখ...’ ভয়ঙ্কর একটা হাসি দিয়ে বলল
অ্যাঙ্গুইসিয়া।
উইলিয়াম মাথা তুলল। অ্যাঙ্গুইসিয়ার শরীরটা খুব দ্রুত
পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ওর শরীরটা পাইপের মত হয়ে
উপরে দিকে উঠে যাচ্ছে। চামড়া শক্ত হয়ে সবুজ রঙ ধারন
করেছে। মাথাটা লম্বাটে হয়ে যাচ্ছে। লম্বা-লম্বা দাঁত
দেখা যাচ্ছে ওর। চোখগুলো বড়-বড় হয়ে যাচ্ছে।
ওগুলোকে দেখতে এখন আগের চেয়েও ভয়ঙ্কর লাগছে।
বিশাল আকৃতির একটা সাপ দাঁড়িয়ে আছে
উইলিয়ামের সামনে। বিভাজিত জিহ্বাটা বের করে
হিসহিস শব্দ করে বাতাস টেনে-টেনে নিচ্ছে সে।
এরপর তার বিশাল মুখটা সে হা করল। ভয়ঙ্কর একটা
হিসহিস শব্দ করে সে এগিয়ে আসছে উইলিয়ামের দিকে।
আর বেশি সময় নেই হাতে...
কোমরের বেল্টের সাথে পেঁচানো রিভলভারটা
হেঁচকা টানে বের করে আনলো উইলিয়াম। এরপর একে-
একে ৬টা গুলি করল সে সাপটার খোলা মুখ লক্ষ্য করে।
অদ্ভুত শব্দ বের হচ্ছে ওটার মুখ থেকে। সাধারণ কোন
সাপ এরকম শব্দ করতে পারবে না। কেমন যেন পশুর মত
গর্জন করছে ডেমি গডেস অ্যাঙ্গুইসিয়া।
উইলিয়াম ভেবেছিল ও অ্যাঙ্গুইসিয়াকে কাবু করে
ফেলেছে। কিন্তু ওর ধারণা ভুল প্রমাণিত করে
অ্যাঙ্গুইসিয়া ঐ অবস্থায় খোলা মুখটা বাড়িয়ে
পাগলের মত ডাইভ দিল উইলিয়ামের দিকে। উইলিয়াম
একটুর জন্যে বেঁচে গেল। সরতে গিয়ে হাঁটুতে ব্যথা
পেয়েছে ও। এখন আর ওর পা দুটো কাজ করছে না।
অ্যাঙ্গুইসিয়া আবার ডাইভ দিল ওর দিকে। উইলিয়াম
যেন স্লো মোশনে দেখতে পেল পুরো ঘটনাটা।
অ্যাঙ্গুইসিয়ার বড়-বড় দাঁত এগিয়ে আসছে ওর দিকে।
ওকে ছিন্ন-ভিন্ন করে দেয়ার জন্যে...চোখ বন্ধ করে
ফেলল উইলিয়াম। চোখ বন্ধ করার ঠিক আগ মুহূর্তেই
দেখতে পেল একটা সবুজ হাত এগিয়ে আসছে...
জ্যাকসন আবার উঠে দাঁড়িয়েছে। দুই হাতে সাপটাকে
শক্ত করে ধরে রেখেছে। সাপটা উইলিয়ামের দিকে
যাওয়ার জন্যে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে লাগল। কিন্তু
জ্যাকসনের কারণে যেতে পারছে না। পশুর মত গর্জন
করতে-করতে ধ্বস্তাধস্তি করছে দুইজনেই।
সাপটা হঠাত লেজ দিয়ে জ্যাকসনকে খুব জোরে
একটা ধাক্কা দিল। জ্যাকসনের হাত ফস্কে গেল। এই
সুযোগে আবার খুব জোরে আরেকটা ধাক্কা মারল
অ্যাঙ্গুইসিয়া। জ্যাকসন তাল হারিয়ে ফেলেছে,
ব্যালেন্স হারিয়ে পড়ে যাচ্ছে সেই লাভাপূর্ণ খাদে...
যেন শুন্য থেকে একটা হাত ছুটে এলো। সবুজ, এবং
বিশাল। সেই হাতটা জ্যাকসনের হাতটা ধরে ফেলল।
এরপর চোখের নিমিষেই প্রচণ্ড হ্যাঁচকা টান দিয়ে
জ্যাকসনকে তুলে আনলো মাটির উপরে।
জ্যাকসনকে আড়াল করে অ্যাঙ্গুইসিয়ার সামনে এসে
দাঁড়াল ম্যাক্স। দুই দানবই একজন আরেকজনের দিকে
তাকিয়ে রণহুঙ্কার দিল একটা। এরপর প্রচণ্ড আক্রোশে
ঝাঁপিয়ে পড়ল একে অপরের উপর।
অ্যাঙ্গুইসিয়া বিশাল-বিশাল দাঁতগুলো বসিয়ে
দিয়েছে ম্যাক্স এর শরীরে। অবিরাম ধারায় রক্ত ঝরছে
ম্যাক্স এর শরীর থেকে। কিন্তু এরপরও সে দুই হাতে শক্ত
করে চিপে ধরে রেখেছে অ্যাঙ্গুইসিয়াকে। কিছুতেই
ছাড়ছে না। অ্যাঙ্গুইসিয়া ধীরে-ধীরে নিজের
শরীরটাকে পাকিয়ে ম্যাক্স এর পুরো শরীরটাকে
পেঁচিয়ে ধরলো। এরপর ম্যাক্স এর ঘাড়ে আরেকবার বিষ
দাঁতগুলো বসিয়ে দিল। তারপর আরেকবার, এরপর...আরও
একবার।
ম্যাক্স এর শরীরটা থরথর করে কেঁপে উঠল। শেষ
বারের মত মাথাটা এদিক-ওদিক ঘুরিয়ে কাকে যেন
খুঁজল। ক্যাপ্টেন কুপার এর দিকে দৃষ্টি স্থির হলো ওর।
কুপারের দিকে তাকিয়ে চোখ দুটো দুবার পিটপিট করল
ও। এরপর মুখ দিয়ে অস্ফুট একটা আওয়াজ বের করল
ম্যাক্স। যেন কিছু বলল ক্যাপ্টেনকে। এরপর গায়ের সমস্ত
শক্তি দিয়ে ধাক্কা দিল অ্যাঙ্গুইসিয়াকে। ধাক্কার
তীব্রতা সইতে না পেরে তাল হারিয়ে খাদে পড়ে গেল
অ্যাঙ্গুইসিয়া। তখনো ম্যাক্সকে পেঁচিয়ে ধরে
রেখেছিল সে। দুইজনই একসাথে পড়ল লাভার ভেতরে।
গলে যেতে লাগল উভয়ের শরীর। অ্যাঙ্গুইসিয়ার
চিৎকারকে ছাপিয়ে শোনা যাচ্ছে আরেকটা গর্জন।
ম্যাক্স এর শেষ গর্জন।
লাভায় ডুবে যাওয়ার আগ মূহুর্তে ডান হাতটা সামনে
বাড়িয়ে দিল ম্যাক্স। যেন সে যেতে চাচ্ছে না। থেকে
যেতে চাচ্ছে ওদের সাথে। ফিরে যেতে চাচ্ছে ওর
ফুটফুটে দুই শিশুর কাছে।
পরমুহুর্তেই হিসহিস শব্দ তোলা লাভার ভেতরে ডুবে
গেল ম্যাক্স। এক বিষণ্ণ নীরবতা ঘিরে ধরলো বেঁচে
যাওয়া মানুষগুলোকে।

(এরপর শেষ)

āĻ•োāύ āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āύেāχ:

āĻāĻ•āϟি āĻŽāύ্āϤāĻŦ্āϝ āĻĒোāϏ্āϟ āĻ•āϰুāύ